আদভানি ও সুষমার মধ্যে মতভিন্নতার আভাস- মনমোহনের পদত্যাগের দাবি থেকে সরে আসছে বিজেপি?

কয়লাখনি কেলেঙ্কারির দায় কাঁধে নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের পদত্যাগের দাবিতে অনড় অবস্থান থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। গতকাল রোববার বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা এল কে আদাভানি এক ব্লগ পোস্টে এই ইঙ্গিত দেন।


ভারতের লোকসভার বিরোধীদলীয় নেত্রী সুষমা স্বরাজ গতকাল সকালে টুইটার বার্তায় বলেন, যদি সরকার কয়লা ব্লক বণ্টন বাতিল করে এবং কয়লাখনি কেলেঙ্কারি-সংক্রান্ত অবাধ ও নিরপেক্ষ তদন্তের প্রতিশ্রুতি দেয়, তা হলে পার্লামেন্টে আলোচনা শুরু করা যেতে পারে। সুষমার এই বার্তার পরই আদভানি আগের অনড় অবস্থান থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দেন। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
ব্লগ পোস্টে আদভানি বলেন, ‘কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে পার্লামেন্টে অচলাবস্থা নিরসনে এনডিএ জোট সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে করা সব বরাদ্দ সরকারকে বাতিল করতে হবে। স্ক্রিনিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসব বরাদ্দের বিচারিক তদন্ত করতে হবে।
কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনায় প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের পদত্যাগের দাবিতে অনড় অবস্থানে ছিল বিজেপি। এই সময়ের মধ্যে পার্লামেন্টের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
তবে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছেন বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা আদভানি। তিনি বলেন, কয়লাখনি কেলেঙ্কারির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং পার্লামেন্টে যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা মেনে নেওয়া যায় না।
অপর দিকে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি থেকে বিজেপির সরে আসার খবর নাকচ করে দিয়েছেন সুষমা স্বরাজ। বিজেপির এই নেত্রী গতকাল বলেছেন, বিজেপি সরে আসেনি। পার্লামেন্ট সচল রাখতে সরকারকে একটা সুযোগ দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি (সোনিয়া) উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে পার্লামেন্টে বিতর্কে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।’
সুষমা স্বরাজ বলেন, ‘আমি সোনিয়াকে জানিয়ে দিয়েছি, সরকারকে আগে কয়লাখনি বরাদ্দ বাতিল করতে হবে। কয়লাখনি কেলেঙ্কারির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশ দিতে হবে।’ তিনি বলেন, এ বিষয়ে সোনিয়া তাঁকে পরে জানাবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি এখনো অমীমাংসিতই রয়ে গেছে।
সুষমা আরও বলেন, ‘কয়লাখনি কেলেঙ্কারিতে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবির অবস্থান থেকে বিজেপি সরে এসেছে—এ ধরনের ব্যাখ্যা ভুল। পার্লামেন্টকে সচল করে তুলতে আমরা সরকারকে দুটি শর্ত দিয়েছি। মনমোহন কয়লামন্ত্রী থাকাকালে ওই কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে। এর দায় নিয়ে এখন তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে হবে। আমরা পার্লামেন্টে বিতর্কে অংশ নিলেও এই দাবিই জানাব।’
গত শনিবার রাতে অন্য একটি টুইটার বার্তায় সুষমা বলেন, আগামী ৭ সেপ্টেম্ব পার্লামেন্টের বর্ষাকালীন অধিবেশন শেষ হবে। অধিবেশন শেষে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নামবে তাঁর দল। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া ও হিন্দুস্থান টাইমস অনলাইন।

No comments

Powered by Blogger.