চরাচর-সিডও সনদ : নারীর মুক্তি by তামান্না ইসলাম অলি
সিডও সনদ। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি মৌলিক চুক্তি। একটি বৈশ্বিক দলিল। এটি একটি অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগত অধিকার সনদ। এতে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে। তাই সিডওকে 'ইন্টারন্যাশনাল বিল অব রাইটস ফর ওম্যান' বলা হয়। আজ ৩ সেপ্টেম্বর।
আন্তর্জাতিক সিডও দিবস। সারা বিশ্বে ১৮৬টি দেশ এবার এ দিনটির ৩৩তম বার্ষিকী উদ্যাপন করছে। ১৯৭৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রথম এ দিনটি পালন করা হয়। এতে স্বাক্ষর করার জন্য জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানায়। ১৯৮০ সালের ১ মার্চ থেকে ১৯৮১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্বাক্ষর করা হয়। তাই এ দিনটিকে সিডও দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
যুগ যুগ ধরে আমাদের আর্থ-সামাজিক কাঠামোর মধ্যে চলছে শোষণ-বঞ্চনা। আর এর প্রথম শিকার নারী। এখনো বেশির ভাগ পুরুষের ক্ষেত্রে মেলেনি নারীর স্বীকৃতি। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা উঠে এলেও মানসিক স্বীকৃতি পায়নি। তাই প্রণয়ন করা হয়েছে নারীনীতি। তৈরি হয়েছে সিডও সনদ। এই সনদের মূল লক্ষ্য হলো, মানুষের মৌলিক অধিকার, মর্যাদা ও মূল্যবোধের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা। আর নারীর অধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা। এই সনদের ৩০টি ধারা তিনটি মৌলিক নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। ১ থেকে ১৬ ধারা নারী-পুরুষের সমতা-সম্পর্কিত। সিডও কর্মপন্থা ও দায়িত্ব বিষয়ে বর্ণনা করা আছে ১৭ থেকে ২২ ধারায়। আর ২৩ থেকে ৩০ ধারায় আছে সিডও প্রশাসন-সংক্রান্ত বিষয়ে। তবে মূল ধারা হিসেবে বিবেচিত হয় ১ থেকে ১৬ ধারাকে। বাংলাদেশ ১৯৮৪ সালের ৬ নভেম্বর সিডও সনদ অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে আপত্তি জানিয়ে অনুমোদন করেনি ২ ও ১৬.১(গ) ধারা। তবে এই দুটি ধারায় অনুমোদন না দেওয়ার জন্য দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী বঞ্চিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক আইন ও সংবিধান স্বীকৃত অধিকার থেকে। তবে বিশ্বের আটটি মুসলিম প্রধান দেশ এতে স্বাক্ষর করেছে কোনো আপত্তি ছাড়াই। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার মনে করছে, এ ধারা দুটি দেশের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিষয়ের ওপর প্রভাব ফেলবে। সিডও কমিটির কিছু সুপারিশ আছে বাংলাদেশের জন্য। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আইনে সিডও সনদের ধারা অন্তর্ভুক্তি, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, পারিবারিক আইন প্রণয়ন, সংসদে নারীদের সরাসরি অংশগ্রহণ ও বাল্যবিবাহ নিয়ন্ত্রণ। তবে আশার কথা এই যে দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের নারীরা এগিয়ে আছে অনেক দূর। একটি নিম্ন আয়ের দেশ হিসেবে প্রজনন, নারী শিক্ষা ও মাতৃমৃত্যু হার রোধে এ দেশ অনেকটা এগিয়ে গেছে। তাই বলা যায়, এ দেশের নারীরা সামনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। এখন তাদের প্রয়োজন আর একটু আইনগত সুযোগ।
তামান্না ইসলাম অলি
যুগ যুগ ধরে আমাদের আর্থ-সামাজিক কাঠামোর মধ্যে চলছে শোষণ-বঞ্চনা। আর এর প্রথম শিকার নারী। এখনো বেশির ভাগ পুরুষের ক্ষেত্রে মেলেনি নারীর স্বীকৃতি। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা উঠে এলেও মানসিক স্বীকৃতি পায়নি। তাই প্রণয়ন করা হয়েছে নারীনীতি। তৈরি হয়েছে সিডও সনদ। এই সনদের মূল লক্ষ্য হলো, মানুষের মৌলিক অধিকার, মর্যাদা ও মূল্যবোধের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা। আর নারীর অধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা। এই সনদের ৩০টি ধারা তিনটি মৌলিক নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। ১ থেকে ১৬ ধারা নারী-পুরুষের সমতা-সম্পর্কিত। সিডও কর্মপন্থা ও দায়িত্ব বিষয়ে বর্ণনা করা আছে ১৭ থেকে ২২ ধারায়। আর ২৩ থেকে ৩০ ধারায় আছে সিডও প্রশাসন-সংক্রান্ত বিষয়ে। তবে মূল ধারা হিসেবে বিবেচিত হয় ১ থেকে ১৬ ধারাকে। বাংলাদেশ ১৯৮৪ সালের ৬ নভেম্বর সিডও সনদ অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে আপত্তি জানিয়ে অনুমোদন করেনি ২ ও ১৬.১(গ) ধারা। তবে এই দুটি ধারায় অনুমোদন না দেওয়ার জন্য দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী বঞ্চিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক আইন ও সংবিধান স্বীকৃত অধিকার থেকে। তবে বিশ্বের আটটি মুসলিম প্রধান দেশ এতে স্বাক্ষর করেছে কোনো আপত্তি ছাড়াই। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার মনে করছে, এ ধারা দুটি দেশের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিষয়ের ওপর প্রভাব ফেলবে। সিডও কমিটির কিছু সুপারিশ আছে বাংলাদেশের জন্য। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আইনে সিডও সনদের ধারা অন্তর্ভুক্তি, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, পারিবারিক আইন প্রণয়ন, সংসদে নারীদের সরাসরি অংশগ্রহণ ও বাল্যবিবাহ নিয়ন্ত্রণ। তবে আশার কথা এই যে দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের নারীরা এগিয়ে আছে অনেক দূর। একটি নিম্ন আয়ের দেশ হিসেবে প্রজনন, নারী শিক্ষা ও মাতৃমৃত্যু হার রোধে এ দেশ অনেকটা এগিয়ে গেছে। তাই বলা যায়, এ দেশের নারীরা সামনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। এখন তাদের প্রয়োজন আর একটু আইনগত সুযোগ।
তামান্না ইসলাম অলি
No comments