অস্ত্রের মুখে আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান অপহরণ- লক্ষ্মীপুরে সড়ক অবরোধ ॥ ২০ গাড়ি ভাংচুর, আহত ২০

সদর উপজেলার বশিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগ সহসভাপতি আবুল কাশেম জেহাদীকে শনিবার রাতে সন্ত্রাসীরা স্থানীয় পোদ্দার বাজার থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করেছে। এ ঘটনায় বশিকপুর ইউপির পোদ্দার বাজারে ব্যবসায়ীরা রবিবার সকাল থেকে দোকানপাট বন্ধ রেখে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে।


পরে বিক্ষোভকারীরা লক্ষ্মীপুর-ঢাকা মহাসড়কের মান্দারী ও চন্দ্রগঞ্জ বাজারে ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ সৃষ্টি করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং সিএনজি ও ট্রাকযোগে অপহৃত কাশেম জেহাদীর সমর্থকরা দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরে এসে বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলকারীরা জেলা শহরের উত্তর বাসস্ট্যান্ড, মান্দারী, চন্দ্রগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে এনডিসির গাড়িসহ অন্তত ২০টি গাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় অন্তত ২০ জন পথচারী আহত হন। পরে জেলা শহরে পৌর মেয়র এম এ তাহেরের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে দুপুরে জেলা আ’লীগ ও জেলা ইউনিয়ন পরিষদ সমিতির নেতৃবৃন্দ সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার জন্য স্থানীয় সন্ত্রাসী লাদেন মাসুম গ্রুপকে দায়ী করে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জিহাদীকে উদ্ধার ও জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার দাবি করে। নতুবা কঠিন কর্মসূচীর ঘোষণার হুমকির হুঁশিয়ারি প্রদান করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, রাত আনুমানিক ১১টার সময় একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মাইক্রোবাসযোগে পোদ্দার বাজারে অবস্থিত বশিকপুর ইউপি পরিষদের সামনে ফাঁকা গুলি করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ সময় বাজারে উপস্থিত লোকজনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে তারা দিগি¦দিক ছোটাছুটি করে। মুহূর্তেই চেয়ারম্যান কাশেম জেহাদীকে সন্ত্রাসীরা টেনে হিঁচড়ে মাইক্রোতে তুলে পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী জেলার চাটখিলের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে পুলিশ খবর পেয়ে জেলা ও জেলার বাইরে বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট ও ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করতে পারেনি।
অন্যদিকে ওই চেয়ারম্যানকে না পেয়ে তার বাড়িতে পরিবার পরিজনের মাঝে চলছে শোকের মাতম ও আহাজারি। স্থানীয় লোকজনের ধারণা, সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণ করে হত্যার পর তার লাশ গুম করে ফেলেছে।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মনিরুজ্জামান ইউপি চেয়ারম্যান অপহরণের বিষয়টি প্রসঙ্গে বলেন, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। তাকে উদ্ধারের চেষ্টায় পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে রবিবার দুপুরে জেলা ইউনিয়ন পরিষদ ফোরাম উদ্যোগে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সমিতির সভাপতি মীর শাহ আলমের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, জেলা পরিষদের প্রশাসক একেএম শাহজাহান কামাল, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম আলাউদ্দিন, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহের, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মহিউদ্দিন বকুল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও জেলা ইউনিয়ন পরিষদ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির পাটোয়ারী।
বক্তরা এ ঘটনার জন্য স্থানীয় সন্ত্রাসী মাদক সম্রাট লাদেন মাসুম গ্রুপকে দায়ী করে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চেয়ারম্যান আবুল কাসেমকে উদ্ধার ও জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার দাবি করেন।

No comments

Powered by Blogger.