সব মহলের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন by আবুল হাসান চৌধুরী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে লন্ডনে অবস্থানকালে বিবিসি এবং আল-জাজিরার সঙ্গে তিনটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গেও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচনের সময় একটি ছোট মন্ত্রিসভা
গঠনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাব দিয়েছেন। যদিও বিরোধীদলীয় নেতা প্রস্তাবটি সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধারণাটি প্রধানমন্ত্রী বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেননি। সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদের মেয়াদ শেষে সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রিসভার সদস্যদের পদত্যাগের পর রাষ্ট্রপতি বিদায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যদের পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং সরকার গঠন পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে বিরোধী দল থেকেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্য নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাই ধারণাটি সম্পূর্ণ নতুন বিধায় এটি নিয়ে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি।
আরো একটি কথা আমাদের মনে রাখতে হবে যে ১৯৯৫ সালে কমনওয়েলথ মহাসচিবের বিশেষ দূত স্যার নিনিয়ান আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি উভয় দলের সমন্বয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু এ প্রস্তাবে উভয় দল রাজি হলেও অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন সে বিষয়ে মতদ্বৈধতা হওয়ায় ওই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
তবে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের ফলে আলাপ-আলোচনার জন্য একটি নতুন প্লাটফর্ম সৃষ্টি হয়েছে বলে আমি মনে করি। সরকারি দল এবং বিরোধী দল উভয়ে নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে দলগত অবস্থানের ঊর্ধ্বে উঠে শুধু দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে যদি আলাপ-আলোচনা শুরু করে, তাহলে এর থেকে একটি সমাধান বেরিয়ে আসবে বলে আমি মনে করি। সরকার এ মুহূর্তে বিরোধী দলের ইতিবাচক সাড়ার অপেক্ষা করছে বলেই মনে হয়। যদিও এখন পর্যন্ত বিএনপি তাদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। আমি প্রায়ই একটি কথা বলি এবং দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সেটি হচ্ছে খোলামেলা মন নিয়ে আলোচনা করলে যত বড় সমস্যাই হোক না কেন, তার একটি যথার্থ, ন্যায়সংগত এবং গ্রহণযোগ্য সমাধান বেরিয়ে আসবে।
পরবর্তী নির্বাচনের আর খুব বেশিদিন বাকি নেই। তাই এখন থেকেই এ ব্যাপারে কাজ শুরু করতে হবে। আলাপ-আলোচনার বিভিন্ন পর্যায়ে সমাজের বিশিষ্ট নাগরিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ রাজনীতি এবং সংবিধান বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মতামত নেওয়া যেতে পারে। সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হওয়া উচিত। বিরোধী দল দীর্ঘদিন সংসদে অনুপস্থিত। এ ব্যাপারে সরকারকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে, যাতে বিরোধী দল সংসদে আসতে পারে। সবচেয়ে বড় ও প্রধান কথা হলো, আলোচনার কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্রের প্রধান একটি শর্ত আলোচনা। আলোচনাই এ সমস্যার সমাধানের একমাত্র পথ বলে আবারও আমি উল্লেখ করতে চাই।
লেখক : সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধারণাটি প্রধানমন্ত্রী বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেননি। সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদের মেয়াদ শেষে সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রিসভার সদস্যদের পদত্যাগের পর রাষ্ট্রপতি বিদায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যদের পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং সরকার গঠন পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে বিরোধী দল থেকেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্য নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাই ধারণাটি সম্পূর্ণ নতুন বিধায় এটি নিয়ে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি।
আরো একটি কথা আমাদের মনে রাখতে হবে যে ১৯৯৫ সালে কমনওয়েলথ মহাসচিবের বিশেষ দূত স্যার নিনিয়ান আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি উভয় দলের সমন্বয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু এ প্রস্তাবে উভয় দল রাজি হলেও অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন সে বিষয়ে মতদ্বৈধতা হওয়ায় ওই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
তবে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের ফলে আলাপ-আলোচনার জন্য একটি নতুন প্লাটফর্ম সৃষ্টি হয়েছে বলে আমি মনে করি। সরকারি দল এবং বিরোধী দল উভয়ে নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে দলগত অবস্থানের ঊর্ধ্বে উঠে শুধু দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে যদি আলাপ-আলোচনা শুরু করে, তাহলে এর থেকে একটি সমাধান বেরিয়ে আসবে বলে আমি মনে করি। সরকার এ মুহূর্তে বিরোধী দলের ইতিবাচক সাড়ার অপেক্ষা করছে বলেই মনে হয়। যদিও এখন পর্যন্ত বিএনপি তাদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। আমি প্রায়ই একটি কথা বলি এবং দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সেটি হচ্ছে খোলামেলা মন নিয়ে আলোচনা করলে যত বড় সমস্যাই হোক না কেন, তার একটি যথার্থ, ন্যায়সংগত এবং গ্রহণযোগ্য সমাধান বেরিয়ে আসবে।
পরবর্তী নির্বাচনের আর খুব বেশিদিন বাকি নেই। তাই এখন থেকেই এ ব্যাপারে কাজ শুরু করতে হবে। আলাপ-আলোচনার বিভিন্ন পর্যায়ে সমাজের বিশিষ্ট নাগরিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ রাজনীতি এবং সংবিধান বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মতামত নেওয়া যেতে পারে। সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হওয়া উচিত। বিরোধী দল দীর্ঘদিন সংসদে অনুপস্থিত। এ ব্যাপারে সরকারকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে, যাতে বিরোধী দল সংসদে আসতে পারে। সবচেয়ে বড় ও প্রধান কথা হলো, আলোচনার কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্রের প্রধান একটি শর্ত আলোচনা। আলোচনাই এ সমস্যার সমাধানের একমাত্র পথ বলে আবারও আমি উল্লেখ করতে চাই।
লেখক : সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
No comments