সাবেক ৪২ আমলার সচিবালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা by রোজিনা ইসলাম
‘রিটায়ার্ড সিভিল অফিসার্স ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের ৪২ জন সাবেক আমলা। প্রশাসনে রাজনৈতিক নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন বন্ধ করতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চান তাঁরা।
ফাউন্ডেশনের বেশির ভাগ সদস্য বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সচিবসহ শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা ছিলেন। সরকার বলছে, প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা ছড়াতে ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের রক্ষা করতেই এই ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে। সরকার তাঁদের গতিবিধির ওপর নজর রাখছে। তাঁদের সচিবালয়ে প্রবেশে নিষেধ করা হয়েছে।
এ সংগঠনের প্রথম বৈঠক হয় গত ১৪ জুলাই রাজধানীর নয়াপল্টনে একটি হোটেলে। বৈঠকের পাঁচ দিন পর ১৯ জুলাই সংগঠনের আহ্বায়ক সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ এস এম আবদুল হালিম ও সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব এস এম জহুরুল ইসলামসহ অবসরে যাওয়া ৩১ কর্মকর্তার সচিবালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি কোনো পদস্থ কর্মকর্তা অবসরে গেলেও তাঁর সচিবালয়ে প্রবেশের পাস বহাল রাখা হয়। উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা অবসরে গেলে তিন বছর পর্যন্ত এবং যুগ্ম সচিব থেকে ওপরের পর্যায়ের কর্মকর্তারা আজীবন সচিবালয়ে প্রবেশের পাস পেয়ে থাকেন।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সচিব বা যুগ্ম সচিব পদ থেকে অবসর নিলেও সাবেক এই আমলাদের এখনো প্রশাসনে প্রভাব রয়েছে। আর এই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা প্রশাসনকে অস্থিতিশীল করতে চাইছেন বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। উত্তরা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত বেশির ভাগ কর্মকর্তাই এ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে রয়েছেন। তাঁরা সচিবালয়ে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন, যে কারণে তাঁদের সচিবালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিতে হয়েছে।’
নয়াপল্টনে একটি কার্যালয় ভাড়া নিয়েছে সংগঠনটি। প্রথম দিকে কয়েকজন সাবেক সচিব মিলে সংগঠনটি গঠন করলেও এখন সদস্য সংখ্যা ৪২। চারদলীয় জোট সরকারের সময়ের মন্ত্রিপরিষদ সচিব আবদুল হালিমের নেতৃত্বে এ ফাউন্ডেশন গড়ে তোলা হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত আছেন সাবেক যোগাযোগসচিব ইসমাইল জবিউল্লহ, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব এস এম জহুরুল ইসলাম, সাবেক তথ্যসচিব হায়দার আলী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম। সচিবদের মধ্যে আরও আছেন নাসিরউদ্দিন আহমেদ, ফজলুর রহমান, আবু মো. মনিরুজ্জামান খান, আবদুল মতিন চৌধুরী, এম মতিউর রহমান, সুজাউদ্দিন আহমেদ, শেখ এনায়েত উল্লা্লহ প্রমুখ।
আবদুল হালিম প্রথম আলোকে জানান, প্রশাসনের বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তাঁরা সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য এ সংগঠন গড়ে তুলেছেন। এটি অরাজনৈতিক সংগঠন। এ ধরনের পেশাভিত্তিক ও সামাজিক সংগঠন করার অধিকার দেশের প্রত্যেক নাগরিকের আছে। তিনি জানান, প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা তাঁদের উদ্দেশ্য নয়।
তবে সংগঠনের একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে জানান, গণপদোন্নতি ও পদোন্নতি-বঞ্চনার কারণে প্রশাসনের শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। পদের চেয়ে দ্বিগুণ-তিন গুণ সংখ্যায় পদোন্নতি দেওয়াসহ পদোন্নতির ক্ষেত্রে দলীয়করণ করে যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি-বঞ্চিত করা হয়েছে। অনেক কর্মকর্তাকে দীর্ঘসময় ধরে ওএসডি করে রাখা হয়েছে। তাঁরা এ সংগঠনের মাধ্যমে সবাইকে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বলবেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সরকারি নিয়মে প্রশাসনে কর্মরত ছিলেন, এমন কর্মকর্তারা এভাবে একত্র হতে পারেন না। এ ছাড়া বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে এসে বিএনপিপন্থী হিসেবে পরিচিত সাবেক আমলাদের জোট বাঁধা অবশ্যই সন্দেহজনক। এ কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই এ কর্মকর্তাদের সচিবালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তিনি জানান, সাবেক এই আমলাদের গতিবিধি লক্ষ্য করা হচ্ছে। ষড়যন্ত্রের প্রমাণ মিললেই সরকার ব্যবস্থা নেবে।
এ ধরনের সংগঠনের বৈধতার বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আকবর আলি খান প্রথম আলোকে জানান, সাবেক আমলারা কোনো সংগঠন গঠন করতে পারবেন না, এমন কোনো আইন নেই। তবে সরকারের কাছে যদি তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো স্পষ্ট তথ্য থাকে, তাহলে তথ্যানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারে। তিনি জানান, প্রয়োজনে সরকার একটি নীতমালাও করতে পারে যে অবসরে যাওয়ার কত দিন পর সংগঠন করা যাবে। আর সচিবালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়ে সাবেক আমলারা আপিল করতে পারেন। তাঁরা আইনি প্রক্রিয়ায় এগোতে পারেন।
এ সংগঠনের প্রথম বৈঠক হয় গত ১৪ জুলাই রাজধানীর নয়াপল্টনে একটি হোটেলে। বৈঠকের পাঁচ দিন পর ১৯ জুলাই সংগঠনের আহ্বায়ক সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ এস এম আবদুল হালিম ও সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব এস এম জহুরুল ইসলামসহ অবসরে যাওয়া ৩১ কর্মকর্তার সচিবালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি কোনো পদস্থ কর্মকর্তা অবসরে গেলেও তাঁর সচিবালয়ে প্রবেশের পাস বহাল রাখা হয়। উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা অবসরে গেলে তিন বছর পর্যন্ত এবং যুগ্ম সচিব থেকে ওপরের পর্যায়ের কর্মকর্তারা আজীবন সচিবালয়ে প্রবেশের পাস পেয়ে থাকেন।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সচিব বা যুগ্ম সচিব পদ থেকে অবসর নিলেও সাবেক এই আমলাদের এখনো প্রশাসনে প্রভাব রয়েছে। আর এই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা প্রশাসনকে অস্থিতিশীল করতে চাইছেন বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। উত্তরা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত বেশির ভাগ কর্মকর্তাই এ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে রয়েছেন। তাঁরা সচিবালয়ে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন, যে কারণে তাঁদের সচিবালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিতে হয়েছে।’
নয়াপল্টনে একটি কার্যালয় ভাড়া নিয়েছে সংগঠনটি। প্রথম দিকে কয়েকজন সাবেক সচিব মিলে সংগঠনটি গঠন করলেও এখন সদস্য সংখ্যা ৪২। চারদলীয় জোট সরকারের সময়ের মন্ত্রিপরিষদ সচিব আবদুল হালিমের নেতৃত্বে এ ফাউন্ডেশন গড়ে তোলা হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত আছেন সাবেক যোগাযোগসচিব ইসমাইল জবিউল্লহ, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব এস এম জহুরুল ইসলাম, সাবেক তথ্যসচিব হায়দার আলী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম। সচিবদের মধ্যে আরও আছেন নাসিরউদ্দিন আহমেদ, ফজলুর রহমান, আবু মো. মনিরুজ্জামান খান, আবদুল মতিন চৌধুরী, এম মতিউর রহমান, সুজাউদ্দিন আহমেদ, শেখ এনায়েত উল্লা্লহ প্রমুখ।
আবদুল হালিম প্রথম আলোকে জানান, প্রশাসনের বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তাঁরা সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য এ সংগঠন গড়ে তুলেছেন। এটি অরাজনৈতিক সংগঠন। এ ধরনের পেশাভিত্তিক ও সামাজিক সংগঠন করার অধিকার দেশের প্রত্যেক নাগরিকের আছে। তিনি জানান, প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা তাঁদের উদ্দেশ্য নয়।
তবে সংগঠনের একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে জানান, গণপদোন্নতি ও পদোন্নতি-বঞ্চনার কারণে প্রশাসনের শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। পদের চেয়ে দ্বিগুণ-তিন গুণ সংখ্যায় পদোন্নতি দেওয়াসহ পদোন্নতির ক্ষেত্রে দলীয়করণ করে যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি-বঞ্চিত করা হয়েছে। অনেক কর্মকর্তাকে দীর্ঘসময় ধরে ওএসডি করে রাখা হয়েছে। তাঁরা এ সংগঠনের মাধ্যমে সবাইকে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বলবেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সরকারি নিয়মে প্রশাসনে কর্মরত ছিলেন, এমন কর্মকর্তারা এভাবে একত্র হতে পারেন না। এ ছাড়া বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে এসে বিএনপিপন্থী হিসেবে পরিচিত সাবেক আমলাদের জোট বাঁধা অবশ্যই সন্দেহজনক। এ কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই এ কর্মকর্তাদের সচিবালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তিনি জানান, সাবেক এই আমলাদের গতিবিধি লক্ষ্য করা হচ্ছে। ষড়যন্ত্রের প্রমাণ মিললেই সরকার ব্যবস্থা নেবে।
এ ধরনের সংগঠনের বৈধতার বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আকবর আলি খান প্রথম আলোকে জানান, সাবেক আমলারা কোনো সংগঠন গঠন করতে পারবেন না, এমন কোনো আইন নেই। তবে সরকারের কাছে যদি তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো স্পষ্ট তথ্য থাকে, তাহলে তথ্যানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারে। তিনি জানান, প্রয়োজনে সরকার একটি নীতমালাও করতে পারে যে অবসরে যাওয়ার কত দিন পর সংগঠন করা যাবে। আর সচিবালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়ে সাবেক আমলারা আপিল করতে পারেন। তাঁরা আইনি প্রক্রিয়ায় এগোতে পারেন।
No comments