নতুন বছর_ সেরেনার প্রত্যাশা শীর্ষ আসন ধরে রাখা by রম্নমেল খান

বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম জনপ্রিয় স্পোর্টস ইভেন্ট লন টেনিস। ২০০৯ সালে এই খেলাটিতে এত বেশি ঘটন-অঘটন ঘটেছে যে, বিগত বছরে ততটা পরিলতি হয়নি। সাফল্য, বিতর্ক, সমালোচনা, জরিমানা, বহিষ্কার, ড্রাগ, র্যাঙ্ক পুনরম্নদ্ধার, প্রত্যাবর্তন, পুরস্কার_ সব মিলিয়ে এ বছরটা টেনিস অঙ্গনের জন্য ছিল দারম্নণ সরগরম।


সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছেন মহিলাদের পাওয়ার টেনিসের প্রবক্তা যুক্তরাষ্ট্রের সেরেনা উইলিয়ামস। সবসময় লাইমলাইটে বা মিডিয়ার কাছে 'হট আইটেম' হবার জন্য যা যা করা দরকার, তার প্রায় সবই করেছেন। যাতে ইতিবাচক-নেতিবাচক দু'রকম কর্মকা-ই রয়েছে। পজেটিভ এ্যাচিভমেন্ট হচ্ছে_ অনেক দিন পর নিজের হারানো শীর্ষ আসনটি (এক নম্বর র্যাঙ্কিং) আবারও নিজের অধিকারে নিয়ে এসেছেন। এ জন্য তাকে বছরের প্রায় শেষ পর্যনত্ম অপো করতে হয়। তা ছাড়া জিতেছেন অস্ট্রেলিয়ান ও ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা, যা তার একক গ্র্যান্ডসস্নাম শিরোপাকে উন্নীত করেছে ১১টিতে। বড় বোন ভেনাস উইলিয়ামসের সঙ্গে জুটি বেঁধে পেয়েছেন নজরকাড়া সাফল্য। জেতেন অস্ট্রেলিয়ান, ফ্রেঞ্চ ও 'টেনিসের বিশ্বকাপখ্যাত' উইম্বল্ডন ওপেনের শিরোপা। তা ছাড়া বছর শেষের টুর্নামেন্ট 'দোহা ওপেনের' শিরোপাও করায়ত্ত করেন তিনি। এই শিরোপা জিতেই তিনি ফিরে পান তার হারানো এক নম্বর আসনটি। ডিসেম্বরে তিনি তার টেনিস কোর্টের নৈপুণ্যের আলোকে একে একে বর্ষসেরা মহিলা টেনিস পেস্নয়ারের পুরস্কারে ভূষিত হন টেনিস এক্স ডট কম, সেকেন্ড লাইফ ডট কম, আইটিএফ- এর। সবচেয়ে বড় পুরস্কারটি পান বিশ্বের অন্যতম সেরা সংবাদ সংস্থা 'এপি'র বর্ষসেরা মহিলা ক্রীড়াবিদ হয়ে। সাফল্যের পাশাপাশি প্রচুর বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছেন সেরেনা। সেপ্টেম্বরে ইউএস ওপেনের সেমিতে এক লাইনজাজের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করে ওই টুর্নামেন্ট থেকে বহিষ্কার ও ১০ হাজার ডলার জরিমানার শিকার হন। পরে বিশ্ব টেনিস সংস্থা তাকে আরও ৮২,৫০০ ডলার জরিমানা করে, যা টেনিসের ইতিহাসে রেকর্ড অঙ্কের জরিমানা। ইএসপিএন ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে নগ্ন হয়ে ছবি তুলে আলোচিত ও সমালোচিত হন, এক নম্বর খেলোয়াড় রাশিয়ার দিনারা সাফিনার শীর্ষ অবস্থান নিয়ে সমালোচনা করে খবরের শিরোনাম হন।
পুরম্নষ টেনিসে রজার ফেদেরারও বছরটা শেষ করেন এক নম্বর আসনটি ধরে রেখে। তিনি জেতেন উইম্বল্ডন ও ফ্রেঞ্চ ওপেন। তিনিও তবে ঘরের মাঠে 'সুইস ওপেনে' ব্যর্থ হন। এ বছর টেনিস থেকে অবসর নেন দুই সাবেক এক নম্বর র্যাঙ্কধারী রাশিয়ার মারাত সাফিন ও ফ্রান্সের এমেলি মরেসমো। ১৬ ও ১২ মাস পর অবসর ভেঙ্গে ফিরে আসেন দুই বেলজিক কিম কিস্টার্স ও জাস্টিন হেনিন। কিস্টার্স ফিরে এসেই ইউএস ওপেনের শিরোপা জিতে টেনিসপ্রেমীদের তাক লাগিয়ে দেন। আরও দুই বেলজিক ইয়ানিনা উইকমেয়ার ও ম্যালিসা সময়মতো ড্রাগ টেস্টে হাজিরা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এক বছরের জন্য বহিষকৃত হন। এক যুগ আগে নিষিদ্ধ মাদক 'ক্রিস্টাল মিথে' আসক্তির স্বীকারোক্তি দিয়ে আলোচনার ঝড় তোলেন যুক্তরাষ্ট্রের আন্দ্রে আগাসি, এ ব্যাপারটি তিনি প্রকাশ করেন তার লিখিত আত্মজীবনীতে। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও টেনিসে না ফেরার ঘোষণা দেন 'সুইস মিস' মার্টিনা হিঙ্গিস। ভারতের জনপ্রিয় খেলোয়াড় সানিয়া মির্জা এ বছরই বিয়ে ও দ্বৈতে গ্র্যান্ডসস্নাম শিরোপা লাভ করেন। ব্রিটিশ টেনিস তারকা এ্যান্ডি মারে বান্ধবীর চেয়ে ভিডিও গেমসে আসক্ত হয়ে পড়েন। বছরটাকে ইনজুরির বছর বললে ভুল হবে না। এর আগ্রাসন থেকে রেহাই পাননি মারিয়া শারাপোভা, সেরেনা উইলিয়ামস, দিনারা সাফিনা, ক্যারোলিন ওজনিয়াকি, রাফায়েল নাদাল, রজার ফেদেরারসহ আরও অনেকেই।

No comments

Powered by Blogger.