সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক তাদের ধরতে হবে- পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনীতে প্রধানমন্ত্রী

সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক তাদের গ্রেফতার করতে হবে। সেৰেত্রে কে কোন দলের তা দেখা হবে না। বর্তমান সরকার জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। এজন্য পুলিশ সদস্যদের দৰতা, স্বচ্ছতা, নিরপেৰতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে এ দায়িত্ব পালন করতে আহ্বান জানান তিনি।


আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী সংস্থাগুলোর কর্মকা-ের ওপরই দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নির্ভর করে বলেও তিনি মনত্মব্য করেন।
মঙ্গলবার পুলিশ সপ্তাহ-২০১০-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশ বাহিনীকে এ নির্দেশ দেন। এর আগে তিনি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। সেৰেত্রে আইনশৃঙ্খলা রৰাকারী বাহিনীকে যে কোন মূল্যে সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। কে কোন দলের তা দেখার সুযোগ নেই। বর্তমান সরকার জনগণের সরকার। তাই জনগণের যাতে ভাল হয় সেভাবেই কাজ করতে হবে। তিনি জানান, প্রতিটি থানা ও জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ইন্টারনেট সংযোগসহ দ্রম্নত কম্পিউটার সরবরাহ করা হবে। গড়ে তোলা হবে আধুনিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি। জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে পুলিশ বাহিনীতে ৩২ হাজার লোক নিয়োগ করা হবে। এছাড়া অবকাঠামো উন্নয়ন, পুলিশের সম্মান বৃদ্ধি, যানবাহন সমস্যা দূরীকরণ, টাইম স্কেলে বৈষম্য দূরীকরণ, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে চাকরিচু্যত পুলিশ সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালসহ বেতন, ভাতা ও রেশন প্রদান, চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণসহ পুলিশ বিভাগের উন্নয়নে প্রায় ৫শ' কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। পুলিশের আইজিপিকে আবার থ্রিস্টার জেনারেলের পদমর্যাদা দেয়ার প্রক্রিয়া শুরম্ন হয়েছে বলেও তিনি জানান।
্এর আগে তিনি মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর যোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, পুলিশ বিভাগের উন্নয়নের জন্য ৪শ' ৮৭ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে দেশের ৫শ' ৯৯টি থানায় দু'টি করে পিকআপ ভ্যান ও মোটরসাইকেল দেয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারীকে দলমত নির্বিশেষে আইনের আওতায় আনারও নির্দেশ দেন তিনি। আগামীতে ভাল কাজের জন্য পুলিশকে পুরস্কৃত এবং মন্দ কাজের জন্য তিরস্কার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। আওয়ামী লীগের ভিশন-২০২১ বাসত্মবায়নে পুলিশের সহায়তা একানত্ম দরকার। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে অন্যায়ভাবে চাকরিচু্যত প্রায় ২শ' পুলিশ সদস্যকে চাকরিতে পুনর্বহালের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ বিভাগের উন্নয়নে ৪শ' ৮৭ কোটি টাকার বিশেষ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এএসআই, সার্জেন্ট ও সাব ইন্সপেক্টরদের পদমর্যাদা তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণী ও ইন্সপেক্টরদের পদমর্যাদা দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কনস্টেবল পদমর্যাদার সদস্যদের টাইম স্কেল বৈষম্য দূর করতে সরকার দ্রম্নত ব্যবস্থা নিচ্ছে। টু্যরিস্ট ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গঠনে কাজ চলছে। পরে তিনি কর্মৰেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য মনোনীত পুলিশ সদস্যদের পদক পরিয়ে দেন।
পরে উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কথা শোনেন। র্যাব মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার পুলিশ সংস্কার কর্মসূচীতে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানদের সংযুক্তকরণ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার নজরম্নল ইসলাম পরিবেশ পুলিশ গঠন, ডিএমপির মিরপুর জোনের ডিসি লুৎফুল কবীর পুলিশ বাহিনীকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করাসহ পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসার মান উন্নত করা, ডিএনএ ল্যাবরেটরি স্থাপন, মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্যদের জন্য কল্যাণ সমিতি গঠনসহ নানা প্রসত্মাব রাখা হয়। এসব বিষয় বিশেষ গুরম্নত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু ও স্বরাষ্ট্র সচিব আব্দুস সোবহান শিকদার। স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, বিগত জোট সরকার পরিকল্পিতভাবে পুলিশের মনোগ্রাম থেকে পাল তোলা নৌকা তুলে দিয়েছিল। পুলিশের মনোগ্রাম পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। পুলিশকে দেশপ্রেম, সততা, ঐকানত্মিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি। পুলিশের নানা সমস্যা পর্যায়ক্রমে সমাধান করার প্রক্রিয়া শুরম্ন হয়েছে বলেও তিনি জানান। পুলিশের আইজিপিকে আবার থ্রিস্টার জেনারেলের পদমর্যাদা দেয়ার প্রক্রিয়া শুরম্ন হয়েছে। এর আগে পুলিশের আইজি নূর মোহাম্মদ পুলিশের নানা অভাব-অভিযোগ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পুলিশ সব সময়ই চায় জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে। কিন্তু নানা অভাবের কারণে পুলিশ ইচ্ছা করলেও তা পারে না। এত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও পুলিশের প্রতিটি সদস্যকে তিনি ধৈর্য্য, সাহসিকতা, সততা, নিষ্ঠা, আনত্মরিকতা ও দৰতার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন।

No comments

Powered by Blogger.