অলিম্পিকের মহোৎসবে-এ-ও কি একটা কষ্ট নয়? by উৎপল শুভ্র
জীবনে যত কষ্টের অভিজ্ঞতা হয়েছে, এটিও বোধ হয় তার মধ্যে থাকবে। সামনে রজার ফেদেরার খেলছেন আর তা দেখা বাদ দিয়ে মাথা গুঁজে লিখতে হচ্ছে! এই লেখাটা যখন শুরু করছি, নির্ধারক তৃতীয় সেটে ১৪-১৪ গেমে সমতা। দর্শক-সাংবাদিকেরা কেউ উইম্বলডন সেন্টার কোর্ট থেকে চোখ সরাতে পারছেন না।
চোখ সরাতে আমারও সমস্যা হচ্ছে, কিন্তু উপায় তো নেই। ঘড়ির কাঁটা ঝড়ের বেগে ডেডলাইনের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে (বিশ্বাস করুন, এই সময়ে ঘড়ির কাঁটাটা তাড়াতাড়িই ঘোরে)। চাকরিটা তো বাঁচাতে হবে।
উইম্বলডনে আসাটাই বড় একটা ঝুঁকি নিয়ে। কিংস ক্রসের পাশে যে হোটেলে থাকি, সেখান থেকে রাসেল স্কয়ারে অলিম্পিকের ট্রান্সপোর্ট হাবে আসতে দুই মিনিট দেরি হয়ে যাওয়ায় বাস মিস করলাম। উইম্বলডনের পরের বাসের জন্য আধঘণ্টা অপেক্ষা। দূরও অনেক। বাসে প্রায় এক ঘণ্টা লাগে। ‘যাব কি যাব না’ সংশয়ে পড়ে গেলাম। বাংলাদেশে প্রায় বিকেল চারটা। গেলে লিখবটা কখন। আমার চোখেমুখে উৎকণ্ঠা দেখে স্বেচ্ছাসেবকদের একজনের মনে হলো, নির্ঘাত আমার দেশের কারও খেলা আছে। সেটি মিস করে ফেলার আশঙ্কায় আমার মধ্যে অমন অস্থিরতা।
তাঁকে কীভাবে বুঝাই, নিজের দেশের কেউ না থাকলেই বা কী, অন্য কারও খেলা মিস করার আশঙ্কাও তো এমন অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে। বিশেষ করে যদি সেই খেলোয়াড়ের নাম রজার ফেদেরার হয়। ফেদেরারের খেলা এই প্রথম দেখছি না। তবে এর আগে যা দেখেছি, সেটিকে দেখা বলে কিনা সন্দেহ। এথেন্স অলিম্পিকে আমি যখন ফেদেরারের কোর্টে গিয়ে দাঁড়িয়েছি, তখন তিনি পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে। মিনিট কয়েক বোধহয় খেলা হয়েছিল এরপর।
কাল যখন হন্তদন্ত হয়ে প্রেসবক্সে ঢুকলাম, তখন প্রথম সেট চলছে। স্কোর ৩-৩। তখন থেকেই খেলা দেখা আর লেখার মধ্যে লুকোচুরি খেলা। এই গেমটা দেখি বলে ল্যাপটপের কি-বোর্ড থেকে হাত সরাই, খেলায় মজে গিয়ে দুই গেম দেখে ফেলি। ফেলার পর নিজেই নিজেকে শাসন করি। অদ্ভুত একটা কথাও মনে হয়। আহা, অলিম্পিকে এসে যদি লিখতে না হতো। শুধু মনভরে খেলা দেখতে পারতাম। চারপাশে এত সব বিশ্বমানের খেলার হাতছানি, লেখার সময়টা মনে হয় ‘অপচয়’!
কাল উইম্বলডনে ছুটে আসার পেছনে ফেদেরার একটা আকর্ষণ। বড় আকর্ষণই। তবে অলিম্পিকে আরও অনেক খেলার হাতছানি উপেক্ষা করে অনেকটা দূরে টেনিস দেখতে আসার মূল কারণটা অন্য। গত মঙ্গলবার প্রথম দেখাতেই যে উইম্বলডনের প্রেমে পড়ে গেছি!
তরুণ বয়সে স্বপ্ন ছিল, সব কটি গ্র্যান্ড স্লাম টেনিস টুর্নামেন্ট কাভার করব। এখন পর্যন্ত একটাও হয়নি। উইম্বলডনে তো দুবার হতে হতে শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনা বদলাতে হয়েছে। কোনো কিছু টেলিভিশনে এত দেখার পর, তা নিয়ে এত পড়ার পর চোখের দেখায় আশাহত হওয়ার একটা ভয় থাকে। উইম্বলডনের ক্ষেত্রে হলো উল্টোটা। সবকিছু এমন সাজানো-গোছানো, সবকিছুতেই এমন একটা আভিজাত্যের ছাপ যে কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেলাম। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ইতিহাস। অল-ইংল্যান্ড টেনিস ক্লাবের মূল ভবনে এখনো ঢুকিনি। এর বাইরে যা দেখলাম, তাতেই তো মুগ্ধ।
প্রেস কনফারেন্স রুমটা থেকে বেরিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই স্বাগত জানাচ্ছেন বিওন বোর্গ, মরিন কনোলি, মার্টিনা নাভ্রাতিলোভারা। একাধিকবার যাঁরা চ্যাম্পিয়ন হচ্ছেন, তাঁদের একাধিক ছবি। বাইরের দেয়ালে এখনো শোভা পাচ্ছে গত উইম্বলডনের বিস্তারিত ফলাফল। সবুজ বোর্ডে প্রথম রাউন্ড থেকে ফাইনাল পর্যন্ত কে কার সঙ্গে খেলেছে, স্কোরসহ সব বিস্তারিত। সবকিছুতেই একটা স্নিগ্ধ রুচির পরশ।
অনেক হয়েছে। ১৭-১৭ অবস্থায় দেল পোত্রোকে ব্রেক করে এখন ফেদেরার সার্ভিস করছেন। এই গেমটা জিতলেই উঠে যাবেন ফাইনালে। আহা, ফিফটিন অল হয়ে গেল যে! এখানেই শেষ। এখন খেলা দেখি।
উইম্বলডনে আসাটাই বড় একটা ঝুঁকি নিয়ে। কিংস ক্রসের পাশে যে হোটেলে থাকি, সেখান থেকে রাসেল স্কয়ারে অলিম্পিকের ট্রান্সপোর্ট হাবে আসতে দুই মিনিট দেরি হয়ে যাওয়ায় বাস মিস করলাম। উইম্বলডনের পরের বাসের জন্য আধঘণ্টা অপেক্ষা। দূরও অনেক। বাসে প্রায় এক ঘণ্টা লাগে। ‘যাব কি যাব না’ সংশয়ে পড়ে গেলাম। বাংলাদেশে প্রায় বিকেল চারটা। গেলে লিখবটা কখন। আমার চোখেমুখে উৎকণ্ঠা দেখে স্বেচ্ছাসেবকদের একজনের মনে হলো, নির্ঘাত আমার দেশের কারও খেলা আছে। সেটি মিস করে ফেলার আশঙ্কায় আমার মধ্যে অমন অস্থিরতা।
তাঁকে কীভাবে বুঝাই, নিজের দেশের কেউ না থাকলেই বা কী, অন্য কারও খেলা মিস করার আশঙ্কাও তো এমন অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে। বিশেষ করে যদি সেই খেলোয়াড়ের নাম রজার ফেদেরার হয়। ফেদেরারের খেলা এই প্রথম দেখছি না। তবে এর আগে যা দেখেছি, সেটিকে দেখা বলে কিনা সন্দেহ। এথেন্স অলিম্পিকে আমি যখন ফেদেরারের কোর্টে গিয়ে দাঁড়িয়েছি, তখন তিনি পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে। মিনিট কয়েক বোধহয় খেলা হয়েছিল এরপর।
কাল যখন হন্তদন্ত হয়ে প্রেসবক্সে ঢুকলাম, তখন প্রথম সেট চলছে। স্কোর ৩-৩। তখন থেকেই খেলা দেখা আর লেখার মধ্যে লুকোচুরি খেলা। এই গেমটা দেখি বলে ল্যাপটপের কি-বোর্ড থেকে হাত সরাই, খেলায় মজে গিয়ে দুই গেম দেখে ফেলি। ফেলার পর নিজেই নিজেকে শাসন করি। অদ্ভুত একটা কথাও মনে হয়। আহা, অলিম্পিকে এসে যদি লিখতে না হতো। শুধু মনভরে খেলা দেখতে পারতাম। চারপাশে এত সব বিশ্বমানের খেলার হাতছানি, লেখার সময়টা মনে হয় ‘অপচয়’!
কাল উইম্বলডনে ছুটে আসার পেছনে ফেদেরার একটা আকর্ষণ। বড় আকর্ষণই। তবে অলিম্পিকে আরও অনেক খেলার হাতছানি উপেক্ষা করে অনেকটা দূরে টেনিস দেখতে আসার মূল কারণটা অন্য। গত মঙ্গলবার প্রথম দেখাতেই যে উইম্বলডনের প্রেমে পড়ে গেছি!
তরুণ বয়সে স্বপ্ন ছিল, সব কটি গ্র্যান্ড স্লাম টেনিস টুর্নামেন্ট কাভার করব। এখন পর্যন্ত একটাও হয়নি। উইম্বলডনে তো দুবার হতে হতে শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনা বদলাতে হয়েছে। কোনো কিছু টেলিভিশনে এত দেখার পর, তা নিয়ে এত পড়ার পর চোখের দেখায় আশাহত হওয়ার একটা ভয় থাকে। উইম্বলডনের ক্ষেত্রে হলো উল্টোটা। সবকিছু এমন সাজানো-গোছানো, সবকিছুতেই এমন একটা আভিজাত্যের ছাপ যে কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেলাম। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ইতিহাস। অল-ইংল্যান্ড টেনিস ক্লাবের মূল ভবনে এখনো ঢুকিনি। এর বাইরে যা দেখলাম, তাতেই তো মুগ্ধ।
প্রেস কনফারেন্স রুমটা থেকে বেরিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই স্বাগত জানাচ্ছেন বিওন বোর্গ, মরিন কনোলি, মার্টিনা নাভ্রাতিলোভারা। একাধিকবার যাঁরা চ্যাম্পিয়ন হচ্ছেন, তাঁদের একাধিক ছবি। বাইরের দেয়ালে এখনো শোভা পাচ্ছে গত উইম্বলডনের বিস্তারিত ফলাফল। সবুজ বোর্ডে প্রথম রাউন্ড থেকে ফাইনাল পর্যন্ত কে কার সঙ্গে খেলেছে, স্কোরসহ সব বিস্তারিত। সবকিছুতেই একটা স্নিগ্ধ রুচির পরশ।
অনেক হয়েছে। ১৭-১৭ অবস্থায় দেল পোত্রোকে ব্রেক করে এখন ফেদেরার সার্ভিস করছেন। এই গেমটা জিতলেই উঠে যাবেন ফাইনালে। আহা, ফিফটিন অল হয়ে গেল যে! এখানেই শেষ। এখন খেলা দেখি।
No comments