কয়লাখনির কারণে হুমকির মুখে বাঘের অস্তিত্ব
ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ভারতে একের পর এক কয়লাখনি চালু করা হচ্ছে। এতে দেশটিতে বাঘের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিস। ভারতে কয়েক দিন আগে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের পর সরকারের ওপর যখন নতুন নতুন কয়লাখনি স্থাপনের চাপ বাড়ছে, ঠিক তখন এ হুঁশিয়ারি দিল গ্রিনপিস।
গত বুধবার প্রকাশিত সংগঠনটির এক প্রতিবেদনে বন্য প্রাণী সংরক্ষণের স্বার্থে নতুন করে কয়লাখনির অনুমোদন না দেওয়ার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
গ্রিনপিসের কর্মী আশীষ ফার্নান্দেজ বলেন, ‘কয়লাখনি এরই মধ্যে মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরসহ অনেক স্থানের বাঘের জীবনকে প্রভাবিত করা শুরু করেছে। সংকটে পড়া অন্য স্থানগুলোর অবস্থাও একই রকম বিপজ্জনক।’
ভারতের উত্তপ্ত বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা বিষয়গুলোর একটি বাঘ সংরক্ষণ। উন্নয়নের জন্য দেশটিতে কয়লাখনি স্থাপনের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ যেমন জরুরি হয়ে উঠেছে, তেমনি এ ধরনের পদক্ষেপে হুমকিতে পড়েছে বাঘ ও অন্যান্য বন্য প্রাণীর সংরক্ষণ। দেশটিতে নয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন গতিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে গত মার্চে। এ ছাড়া দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা বেশ কয়েক কোটি। এ অবস্থায় এক দিকে নতুন কয়লাখনি স্থাপন ও অন্যদিকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ—এই দুই বিষয় নিয়ে দেখা দিয়েছে দ্বন্দ্ব।
সমীক্ষা অনুযায়ী, বিশ্বের বাঘের অর্ধেকেরও বেশির বসবাস ভারতে। বাঘের এ সংখ্যা এক হাজার ৭০৬টি। কিন্তু ১০০ বছর আগেও এটি ছিল এক লাখে। এশিয়ার উদীয়মান শক্তির এই দেশটিতে গত পাঁচ বছরে কয়লাখনি স্থাপন ও কয়লাচালিত বিদ্যুতের উৎপাদন অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে গেছে। এতে দেশটির বিপন্নপ্রায় জীবজন্তুর অস্তিত্বও পড়েছে আগের চেয়ে বেশি হুমকিতে।
গত সপ্তাহের বিদ্যুৎ বিপর্যয় ও চলমান বিদ্যুৎ-ঘাটতির জের ধরে নতুন খনি স্থাপনের জন্য ভারত সরকার এই মুহূর্তে প্রচণ্ড চাপের সম্মুখীন। অব্যাহত বিদ্যুৎ-ঘাটতিকে দেশটির দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গ্রিনপিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানির চাহিদা পূরণে ভারত কয়লার ওপর নির্ভরতা অব্যাহত রাখলে বন্য প্রাণীর জীবন হুমকিতে পড়া মধ্য ভারতের স্থানগুলোর পরিস্থিতি আরও কয়েক গুণ ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। এ অঞ্চলে দেশটির ৮০ শতাংশ কয়লার মজুদ রয়েছে। আর ৩৫ শতাংশ বাঘেরও বাস এ অঞ্চলে। রয়টার্স।
No comments