পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়-আসন শূন্যকরণের সুযোগ বন্ধ হোক by তুহিন ওয়াদুদ
আমাদের দেশে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীতে যতজন ‘এ’ প্লাস অর্জন করা শিক্ষার্থী পাওয়া যায়, উচ্চশিক্ষার জন্য ততগুলো আসন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। সব সময়ই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত আসন না থাকা নিয়ে অনেক কথা বলা হলেও প্রতিবছর যে পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে অনেকগুলো আসন শূন্য থাকে, সে বিষয়টি নিয়ে কখনোই কোনো
পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। যাতে করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আসন শূন্য না থাকে, সে জন্য আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা থেকেই আসন শূন্যকরণ পদ্ধতি রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজসহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর আসনসংখ্যা বাড়ছে। তার সঙ্গে বাড়ছে উচ্চমাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীর সংখ্যাও। যেমন, গত বছরে এ প্লাস পাওয়া শিক্ষার্থী ছিল প্রায় ৪০ হাজার; এ বছর তা হয়েছে প্রায় ৬১ হাজার। প্রতিবছরেই তুলনামূলক অধিক হারে বাড়ছে এ প্লাসের সংখ্যা। শিক্ষার্থীরা ভালো ফল করছেন, সেটাকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। প্রতিবছর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যতসংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি হন, তাঁর অনেকেই পূর্ববর্তী শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। যাঁরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একবার ভর্তি হন, তাঁদের দ্বিতীয়বারও ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ থাকার কারণে প্রতিবছর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ শতাংশ (আনুমানিক গড় হিসাব) আসন শূন্য থাকে। বিষয়টি রীতিমতো ভাবার মতো। যেখানে পাসের আনুপাতিক হারের তুলনায় আসনসংখ্যা অত্যন্ত সীমিত, সেখানে প্রতিবছর প্রায় ১০ শতাংশ হারে আসন শূন্য থাকবে—এটা আমাদের কাম্য নয়। ধরা যাক, একজন শিক্ষার্থী ‘ক’, তিনি ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে তাঁর আরও একবার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ আছে। তিনি তখন পরের বছরে চেষ্টা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোনো একটি বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের আসনটি শূন্য করে চলে গেলেন। এ আসনটি শূন্যই থেকে যায়। অথচ তাঁকে পড়ানোর জন্য আলাদা কোনো শিক্ষকের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন নেই আলাদা কোনো অবকাঠামোসহ অনেক কিছুই। একই ব্যয় আর একই সময়ে তাঁদের লেখাপড়া সম্পন্ন করা সম্ভব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়তো এই বাস্তবতা তুলনামূলক অনেক কম। তবুও নাট্যকলার মতো বিভাগকে অসুবিধায় পড়তেই হয়। কিন্তু দেশের অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়েই এই সমস্যা অনেক। বিশেষ করে নবীন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই বাস্তবতা আরও অনেক কঠিন। বুয়েট ও মেডিকেল কলেজগুলোতেও এই সংকট তুলনামূলক অনেক কম। এ সমস্যা সমাধানকল্পে হয়তো বলা যায় যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু শিক্ষার্থী ভর্তি করে রাখা যেতে পারে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরপরই যখন ক্লাস শুরু হয়, তখন তো সবাই ক্লাস করেন। তখন দেখা যাবে যে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীদের স্থান সংকুলান করানো সম্ভব হবে না। তা ছাড়া কতটি আসন শূন্য হবে, তা-ও নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। কেউ যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হন, তাঁকে দুবার পরীক্ষা দেওয়া থেকে বঞ্চিত করাটাও যুক্তিসংগত হয় না। এ অবস্থায় একটি প্রস্তাবনা রয়েছে। হয়তো সেটি আপাতদৃষ্টিতে রূঢ় মনে হবে, কিন্তু তা মানতে পারলে আশা করি, প্রতিবছর যে আসনগুলো শূন্য থাকে, তা বন্ধ করা সম্ভব হবে। আসন শূন্য থাকে মূলত দুটি কারণে। এক. পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে না পারা, আর দ্বিতীয় হচ্ছে, পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হতে না পারা। যদি নিয়ম করা যায় যে যিনি একবার যেকোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবেন, তিনি আর দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন না, তাহলেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। আপাতদৃষ্টিতে কথাটা রূঢ়, এ জন্য যে একজন শিক্ষার্থী তো নিশ্চিত করে বলতে পারেন না যে তিনি পরের বছরে কোথাও ভর্তির সুযোগ পাবেন কি না। আর তা ছাড়া অপছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং অপছন্দের বিষয়ে কেন তাঁকে পড়তে বলা। এখন বাস্তবতা হচ্ছে যে তাঁকে এটুকু সুবিধা দিতে গিয়ে যদি প্রায় ১০ শতাংশ আসন শূন্য রাখতে হয়, তাহলে সেটা আরও অমানবিক। একজন শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলে তাঁর মানসিক অবস্থাও যেমন বিপর্যস্ত হয়, তেমনি জাতি গঠনেও তিনি পিছিয়ে পড়েন। প্রস্তাবিত এই নিয়ম থাকলে কোনো আসনই হয়তো শূন্য থাকবে না। এই নিয়ম বাস্তবায়ন করাটা অত্যন্ত সহজ। যখন একজন শিক্ষার্থী কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগে ভর্তি হবেন, তখন তাঁর সনদ ওই বিভাগে জমা থাকলে তিনি আর তা করতে পারবেন না। কিংবা যদি ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার রোল-রেজিস্ট্রেশন নম্বর এমন পদ্ধতিতে ইন্টারনেটে দেওয়া থাকে যে পরের বছর আবেদন করতে হলে দ্বিতীয়বার ভর্তির চেষ্টা করলে পদ্ধতি তাঁকে নতুন রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেবে না। তাতে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করলেও সম্ভব হবে না। এই পদ্ধতিতে যাঁরা এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর অন্য একজনের জন্য দুর্নীতি করে সহায়ক পরীক্ষার্থী হয়ে পরীক্ষা দিয়ে থাকেন, তাঁদের অনেকই আর সে সুযোগ পাবেন না। তবে যাঁরা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রথমবার ভর্তির সুযোগ পাননি, তাঁদের জন্য পুনর্বার ভর্তির সুযোগ থাকতে হবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসনসংখ্যা কম থাকার কারণে বাধ্য হয়ে অনেককেই যেতে হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আবার অনেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজে। আমাদের দেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যে লেখাপড়া করানো হয়, তার মান প্রশ্নবিদ্ধ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিত্তবানদের যাওয়ার সুযোগ থাকলেও অন্যদের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে দেখা যায়, অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এরূপ পরিস্থিতিতে প্রথম বছর যাঁরা সরকারি মেডিকেল কলেজসহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন, তাঁরা যেন পরবর্তী বছরে ভর্তি পরীক্ষার অযোগ্য বলে বিবেচিত হন, সে বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত থাকা জরুরি। যে সিদ্ধান্ত দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অবশ্যপালনীয়। চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার তারিখও নির্ধারণ শুরু হয়েছে। ফরম ছাড়ার আগেই এ সিদ্ধান্ত হওয়া প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বায়ত্তশাসন থাকলেও এ নিয়ম বাস্তবায়নের জন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিন্ন নিয়ম থাকতে হবে। তাহলেই কেবল সম্পূর্ণ ফল লাভ করা যাবে।
তুহিন ওয়াদুদ: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
wadudtuhin@gmail.com
দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজসহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর আসনসংখ্যা বাড়ছে। তার সঙ্গে বাড়ছে উচ্চমাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীর সংখ্যাও। যেমন, গত বছরে এ প্লাস পাওয়া শিক্ষার্থী ছিল প্রায় ৪০ হাজার; এ বছর তা হয়েছে প্রায় ৬১ হাজার। প্রতিবছরেই তুলনামূলক অধিক হারে বাড়ছে এ প্লাসের সংখ্যা। শিক্ষার্থীরা ভালো ফল করছেন, সেটাকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। প্রতিবছর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যতসংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি হন, তাঁর অনেকেই পূর্ববর্তী শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। যাঁরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একবার ভর্তি হন, তাঁদের দ্বিতীয়বারও ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ থাকার কারণে প্রতিবছর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ শতাংশ (আনুমানিক গড় হিসাব) আসন শূন্য থাকে। বিষয়টি রীতিমতো ভাবার মতো। যেখানে পাসের আনুপাতিক হারের তুলনায় আসনসংখ্যা অত্যন্ত সীমিত, সেখানে প্রতিবছর প্রায় ১০ শতাংশ হারে আসন শূন্য থাকবে—এটা আমাদের কাম্য নয়। ধরা যাক, একজন শিক্ষার্থী ‘ক’, তিনি ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে তাঁর আরও একবার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ আছে। তিনি তখন পরের বছরে চেষ্টা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোনো একটি বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের আসনটি শূন্য করে চলে গেলেন। এ আসনটি শূন্যই থেকে যায়। অথচ তাঁকে পড়ানোর জন্য আলাদা কোনো শিক্ষকের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন নেই আলাদা কোনো অবকাঠামোসহ অনেক কিছুই। একই ব্যয় আর একই সময়ে তাঁদের লেখাপড়া সম্পন্ন করা সম্ভব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়তো এই বাস্তবতা তুলনামূলক অনেক কম। তবুও নাট্যকলার মতো বিভাগকে অসুবিধায় পড়তেই হয়। কিন্তু দেশের অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়েই এই সমস্যা অনেক। বিশেষ করে নবীন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই বাস্তবতা আরও অনেক কঠিন। বুয়েট ও মেডিকেল কলেজগুলোতেও এই সংকট তুলনামূলক অনেক কম। এ সমস্যা সমাধানকল্পে হয়তো বলা যায় যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু শিক্ষার্থী ভর্তি করে রাখা যেতে পারে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরপরই যখন ক্লাস শুরু হয়, তখন তো সবাই ক্লাস করেন। তখন দেখা যাবে যে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীদের স্থান সংকুলান করানো সম্ভব হবে না। তা ছাড়া কতটি আসন শূন্য হবে, তা-ও নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। কেউ যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হন, তাঁকে দুবার পরীক্ষা দেওয়া থেকে বঞ্চিত করাটাও যুক্তিসংগত হয় না। এ অবস্থায় একটি প্রস্তাবনা রয়েছে। হয়তো সেটি আপাতদৃষ্টিতে রূঢ় মনে হবে, কিন্তু তা মানতে পারলে আশা করি, প্রতিবছর যে আসনগুলো শূন্য থাকে, তা বন্ধ করা সম্ভব হবে। আসন শূন্য থাকে মূলত দুটি কারণে। এক. পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে না পারা, আর দ্বিতীয় হচ্ছে, পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হতে না পারা। যদি নিয়ম করা যায় যে যিনি একবার যেকোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবেন, তিনি আর দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন না, তাহলেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। আপাতদৃষ্টিতে কথাটা রূঢ়, এ জন্য যে একজন শিক্ষার্থী তো নিশ্চিত করে বলতে পারেন না যে তিনি পরের বছরে কোথাও ভর্তির সুযোগ পাবেন কি না। আর তা ছাড়া অপছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং অপছন্দের বিষয়ে কেন তাঁকে পড়তে বলা। এখন বাস্তবতা হচ্ছে যে তাঁকে এটুকু সুবিধা দিতে গিয়ে যদি প্রায় ১০ শতাংশ আসন শূন্য রাখতে হয়, তাহলে সেটা আরও অমানবিক। একজন শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলে তাঁর মানসিক অবস্থাও যেমন বিপর্যস্ত হয়, তেমনি জাতি গঠনেও তিনি পিছিয়ে পড়েন। প্রস্তাবিত এই নিয়ম থাকলে কোনো আসনই হয়তো শূন্য থাকবে না। এই নিয়ম বাস্তবায়ন করাটা অত্যন্ত সহজ। যখন একজন শিক্ষার্থী কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগে ভর্তি হবেন, তখন তাঁর সনদ ওই বিভাগে জমা থাকলে তিনি আর তা করতে পারবেন না। কিংবা যদি ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার রোল-রেজিস্ট্রেশন নম্বর এমন পদ্ধতিতে ইন্টারনেটে দেওয়া থাকে যে পরের বছর আবেদন করতে হলে দ্বিতীয়বার ভর্তির চেষ্টা করলে পদ্ধতি তাঁকে নতুন রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেবে না। তাতে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করলেও সম্ভব হবে না। এই পদ্ধতিতে যাঁরা এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর অন্য একজনের জন্য দুর্নীতি করে সহায়ক পরীক্ষার্থী হয়ে পরীক্ষা দিয়ে থাকেন, তাঁদের অনেকই আর সে সুযোগ পাবেন না। তবে যাঁরা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রথমবার ভর্তির সুযোগ পাননি, তাঁদের জন্য পুনর্বার ভর্তির সুযোগ থাকতে হবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসনসংখ্যা কম থাকার কারণে বাধ্য হয়ে অনেককেই যেতে হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আবার অনেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজে। আমাদের দেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যে লেখাপড়া করানো হয়, তার মান প্রশ্নবিদ্ধ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিত্তবানদের যাওয়ার সুযোগ থাকলেও অন্যদের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে দেখা যায়, অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এরূপ পরিস্থিতিতে প্রথম বছর যাঁরা সরকারি মেডিকেল কলেজসহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন, তাঁরা যেন পরবর্তী বছরে ভর্তি পরীক্ষার অযোগ্য বলে বিবেচিত হন, সে বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত থাকা জরুরি। যে সিদ্ধান্ত দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অবশ্যপালনীয়। চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার তারিখও নির্ধারণ শুরু হয়েছে। ফরম ছাড়ার আগেই এ সিদ্ধান্ত হওয়া প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বায়ত্তশাসন থাকলেও এ নিয়ম বাস্তবায়নের জন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিন্ন নিয়ম থাকতে হবে। তাহলেই কেবল সম্পূর্ণ ফল লাভ করা যাবে।
তুহিন ওয়াদুদ: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
wadudtuhin@gmail.com
No comments