তিন মামলায় আসামি দুই শতাধিক ছাত্র
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় সাভার ও আশুলিয়া থানায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে দায়ের করা এসব মামলায় ২৬ ছাত্রের নাম উল্লেখ করে দুই শতাধিক ছাত্রকে আসামি করা হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা তাহমিদুল ইসলাম লিখনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় লিখনের মা সাভার থানায় একটি মামলা করেছেন।
এ ছাড়া ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ, ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগ এনে পুলিশ সাভার ও আশুলিয়া থানায় দুটি মামলা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও মামলা করতে যাচ্ছে।
এদিকে বুধবার রাত থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত হামলা-ভাঙচুরের পর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে আবাসিক হল ছেড়ে গেছেন ছাত্রীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আজ শনিবার সংবাদ সম্মেলন করবেন উপাচার্য। উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।'
জানা গেছে, বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ছাত্রলীগ নেতা লিখনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার ঘটনায় ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষের ১০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সাভার থানায় বৃহস্পতিবার মামলা করেন লিখনের মা কাজী জহুরা বেগম। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা রিয়াজ, লিটন, মনোয়ার হোসেন, তীলন, তানভীর, সাগর, শামীম, সাদেকুল ইসলাম নাহিদ ও আবদুল কাইয়ুম বিপুল।
সাভার থানার ওসি আসাদুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, পুলিশকে মারধর, প্রাইভেটকার ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার জন্য ১০ ছাত্রের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় প্রায় ২০০ ছাত্রের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার বাদী এসআই সাজ্জাদ জানান, লিখনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে আহত করা এবং এর জের ধরে বিক্ষোভ-ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধাদান ও পুলিশের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
আশুলিয়া থানার ওসি বদরুল আলম জানান, পুলিশের কাজে বাধাদান ও পুলিশকে মারধরের ঘটনায় ছয় ছাত্রের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ছাত্রদের বিরুদ্ধে এসআই বদরুল বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে মামলার আসামিদের নাম বলতে তিনি রাজি হননি। বাদী বদরুল জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর দায়ের করা মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অনেককে আসামি করা হয়েছে। তবে নাম প্রকাশ করা যাবে না।
এদিকে যাঁদের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যখন ঘটনা ঘটে তার ঘণ্টাখানেক আগে থেকে আমি ও লিটন ভাইসহ অন্যান্য হলের নেতৃবৃন্দ উপাচার্যের সঙ্গে তাঁর বাসভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের কিছু সমস্যার বিষয়ে আলোচনা করছিলাম। এ সময় প্রক্টর অধ্যাপক ড. তপন কুমার সাহাও উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।'
প্রক্টর তপন কুমার এ ব্যাপারে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যখন লিখন জখম হওয়ার খবর শুনি তার আগে থেকেই ছাত্রলীগের নেতারা উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করছিল। রিয়াজও সেখানে ছিল।'
শিক্ষার্থীশূন্য ক্যাম্পাস : গতকাল ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক পদচারণায় মুখর বিশ্ববিদ্যালটি একেবারেই শিক্ষার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে। সকালের দিকে দু-একজন ছাত্রকে দেখা গেছে ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে। পরিবহন সেক্টর ও হলগুলোর ফটকে তালা ও নোটিশ বোর্ডে ঝুলছে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের নোটিশ।
কর্তৃপক্ষের নির্দেশের পর বৃহস্পতিবার বিকেলেই অনেকে হল ছেড়ে যান। তবে দূরের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ইসলাম নগর, গেরুয়া অথবা আমবাগান এলাকায় পরিচিতজনের বাসায় রাত কাটিয়ে গতকাল সকালে বাড়ির পথ ধরেন।
আজ সংবাদ সম্মেলন : বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল জানানো হয়েছে, উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন আজ দুপুর ১২টায় সিনেট হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ক্যাম্পাস ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হবেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে ছাত্রলীগ নেতা লিখন জখম হওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্র নাহিদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে গেলে ছাত্র-পুলিশ দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। রাত ১২টা থেকে পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন ছাত্ররা। এ সময় তাঁরা ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনা ও পরিবহনে। লাঞ্ছিত করেন উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেন ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট মো. এমদাদুল হককে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঈদের ছুটি ৯ আগস্ট থেকে এগিয়ে এনে ২ আগস্ট নির্ধারণ করে। একই সঙ্গে ছাত্রদের ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা এবং ছাত্রীদের পরদিন শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়।
এদিকে বুধবার রাত থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত হামলা-ভাঙচুরের পর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে আবাসিক হল ছেড়ে গেছেন ছাত্রীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আজ শনিবার সংবাদ সম্মেলন করবেন উপাচার্য। উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।'
জানা গেছে, বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ছাত্রলীগ নেতা লিখনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার ঘটনায় ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষের ১০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সাভার থানায় বৃহস্পতিবার মামলা করেন লিখনের মা কাজী জহুরা বেগম। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা রিয়াজ, লিটন, মনোয়ার হোসেন, তীলন, তানভীর, সাগর, শামীম, সাদেকুল ইসলাম নাহিদ ও আবদুল কাইয়ুম বিপুল।
সাভার থানার ওসি আসাদুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, পুলিশকে মারধর, প্রাইভেটকার ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার জন্য ১০ ছাত্রের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় প্রায় ২০০ ছাত্রের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার বাদী এসআই সাজ্জাদ জানান, লিখনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে আহত করা এবং এর জের ধরে বিক্ষোভ-ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধাদান ও পুলিশের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
আশুলিয়া থানার ওসি বদরুল আলম জানান, পুলিশের কাজে বাধাদান ও পুলিশকে মারধরের ঘটনায় ছয় ছাত্রের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ছাত্রদের বিরুদ্ধে এসআই বদরুল বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে মামলার আসামিদের নাম বলতে তিনি রাজি হননি। বাদী বদরুল জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর দায়ের করা মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অনেককে আসামি করা হয়েছে। তবে নাম প্রকাশ করা যাবে না।
এদিকে যাঁদের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যখন ঘটনা ঘটে তার ঘণ্টাখানেক আগে থেকে আমি ও লিটন ভাইসহ অন্যান্য হলের নেতৃবৃন্দ উপাচার্যের সঙ্গে তাঁর বাসভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের কিছু সমস্যার বিষয়ে আলোচনা করছিলাম। এ সময় প্রক্টর অধ্যাপক ড. তপন কুমার সাহাও উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।'
প্রক্টর তপন কুমার এ ব্যাপারে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যখন লিখন জখম হওয়ার খবর শুনি তার আগে থেকেই ছাত্রলীগের নেতারা উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করছিল। রিয়াজও সেখানে ছিল।'
শিক্ষার্থীশূন্য ক্যাম্পাস : গতকাল ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক পদচারণায় মুখর বিশ্ববিদ্যালটি একেবারেই শিক্ষার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে। সকালের দিকে দু-একজন ছাত্রকে দেখা গেছে ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে। পরিবহন সেক্টর ও হলগুলোর ফটকে তালা ও নোটিশ বোর্ডে ঝুলছে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের নোটিশ।
কর্তৃপক্ষের নির্দেশের পর বৃহস্পতিবার বিকেলেই অনেকে হল ছেড়ে যান। তবে দূরের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ইসলাম নগর, গেরুয়া অথবা আমবাগান এলাকায় পরিচিতজনের বাসায় রাত কাটিয়ে গতকাল সকালে বাড়ির পথ ধরেন।
আজ সংবাদ সম্মেলন : বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল জানানো হয়েছে, উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন আজ দুপুর ১২টায় সিনেট হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ক্যাম্পাস ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হবেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে ছাত্রলীগ নেতা লিখন জখম হওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্র নাহিদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে গেলে ছাত্র-পুলিশ দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। রাত ১২টা থেকে পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন ছাত্ররা। এ সময় তাঁরা ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনা ও পরিবহনে। লাঞ্ছিত করেন উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেন ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট মো. এমদাদুল হককে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঈদের ছুটি ৯ আগস্ট থেকে এগিয়ে এনে ২ আগস্ট নির্ধারণ করে। একই সঙ্গে ছাত্রদের ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা এবং ছাত্রীদের পরদিন শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়।
No comments