প্রধানমন্ত্রীর ইফতারে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের মিলনমেলা

গণভবনে যেন বুদ্ধিজীবীদের মেলা। বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, শিল্পী, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ীসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল শ্রেণীপেশার বিশিষ্টজনের পদচারণায় শুক্রবার মুখরিত হয়ে উঠেছিল প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবন চত্বর।


দীর্ঘদিন পর একে অপরের দেখা পেয়ে সবাই পরস্পরের কুশলাদী বিনিময়ে যেন মেতে উঠেছিলেন। বিশালাকার প্যান্ডেল ঘুরে ঘুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাঁর আমন্ত্রণে ইফতার মাহফিলে যোগ দিতে আসা বিশিষ্টজনদের সঙ্গে কুশলাদী বিনিময় করেন।
একদম সামনের সারিতে বসেছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক ও প্রবীণ চিত্রশিল্পী অধ্যাপক মুস্তফা মনোয়ার। প্রধানমন্ত্রীর চোখে পড়ে তাঁদের দু’জনকে। সামনে গিয়েই প্রধানমন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিক-উল-হককে সালাম দিয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চান। এই প্রবীণ আইনজ্ঞ জবাবে প্রধানমন্ত্রীরও কুশলাদী জানতে চান। এমনিভাবে প্রধানমন্ত্রী ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার শীর্ষস্থানীয় বিশিষ্টজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে আসা বিভিন্ন শ্রেণীপেশার ব্যক্তির এই মিলনমেলা ভেঙ্গে যায় ইফতার মাহফিলের পর।
বিকেল সাড়ে চারটার পর থেকেই বিভিন্ন শ্রেণীপেশার বিশিষ্টজন আসতে শুরু করেন গণভবনে। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এই ইফতার মাহফিলে অন্য দিনের মতো ছিল না নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি। গণভবনের গেট থেকেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তরা আগত অতিথিদের অভ্যর্থনা জানিয়ে গণভবনের অভ্যন্তরে নির্মিত বিশাল প্যান্ডেলে নিয়ে যান।
ইফতার মাহফিলের শুরুতেই কোরান তিলাওয়াত করেন ক্বারী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। এরপর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের শহীদ, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ, শহীদ জাতীয় চার নেতা, ২১ আগস্টের শহীদসহ সকল গণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মোঃ সালাউদ্দিন আহমেদ।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম নুরুল ইসলাম, সব্যসাচি লেখক সৈয়দ শামসুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী, এফবিসিসিআই সভাপতি একে আজাদ, বিএমএ’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হাসান, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সভাপতি প্রকৌশলী নুরুল হুদা, বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক ড. এসএম নজরুল ইসলাম, এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান ও ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে গণভবনের ইফতার মাহফিলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব) কেএম শফিউল্লাহ বীরউত্তম, সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব) সিআর দত্ত বীরউত্তম, অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান, ব্যবসায়ী নেতা আনিসুল হক ও ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ, প্রবীণ আইনজীবী আমীর উল ইসলাম, আবদুল বাসেত মজুমদার, সৈয়দ রেজাউর রহমান, শম রেজাউল করিম, ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান, নাট্যব্যক্তিত্ব ম হামিদ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত।
আরও উপস্থিত ছিলেন ইত্তেফাক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারোয়ার, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট সম্পাদক মাহবুব আলম, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, এটিএনের ফরিদুর রেজা সাগর, শাইখ সিরাজ, বাসসের প্রধান সম্পাদক ইহসানুল করিম, সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, বৈশাখী টিভির মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, একাত্তরের মোজাম্মেল বাবু, দেশ টিভির আসাদুজ্জামান নূর এমপি, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, সাংবাদিক নেতা আবদুল জলিল ভূঁইয়া, আলমগীর হোসেন, ওমর ফারুক, শাবান মাহমুদ, সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাজ্জাদ আলম খান তপু, শিল্পী এন্ড্রো কিশোর, রফিকুল ইসলাম, আবিদা সুলতানা, ফকির আলমগীরসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার তিন শতাধিক বিশিষ্টজন।
ইফতার মাহফিলে শেখ ফজলুল করিম সেলিম, তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আফম রুহুল হক, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন আহমেদ, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের উল্লেখযোগ্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.