জাবিতে সংঘর্ষের নেপথ্যে সম্ভাব্য চার কারণ by ইমন রহমান
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মীর মশাররফ হোসেন হলে ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ, ছাত্রদের ওপর পুলিশের বৃষ্টির মতো রাবার বুলেট নিক্ষেপ এবং পরবর্তী সময়ে ছাত্ররা ক্যাম্পাস ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে, তার নেপথ্যে রয়েছে বেশ কিছু কারণ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহল ও মতাদর্শের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে বেরিয়ে এসেছে নানামুখী মন্তব্য।
ক্যাম্পাসের এই অপ্রীতিকর ঘটনায় ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতির বলির পাঁঠা হয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের সচেতন মহলের ধারণা এমনটাই। তাদের মতে, ঘটনার সূত্রপাতের পর স্বার্থান্বেষী নানা মহল ফায়দা নিতে আন্দোলনের পেছন থেকে হাওয়া দিয়েছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগ পুঁজি করে ক্যাম্পাসে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ঘটনা শুরুর পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে প্রকাশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হলেও প্রশাসনের বাইরে দায়িত্বশীল কোনো শিক্ষক এগিয়ে আসেননি।
বুধবার রাত থেকে শুরু করে পরের দিন দুপুর পর্যন্ত চলা সংঘর্ষের সময় প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের কিছু ছাত্রকে আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা গেছে। এরাই মূলত সব ভাঙচুরে নেতৃত্ব দিয়েছে। সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে এই ছাত্ররাই বাধা দেয় এবং সাধারণ ছাত্রদের উসকে দেয়। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করেছে ছাত্ররা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় বেশির ভাগ সাধারণ শিক্ষার্থীই মর্মাহত।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে মূল যে কারণগুলো উল্লেখ করা হচ্ছেম তার মধ্যে অন্যতম হলো উপাচার্য পদটি নিয়ে সৃষ্ট সংকট। এ ছাড়া রয়েছে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কারণ।
অতিথি উপাচার্যকে মানতে না পারা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর এখানকার শিক্ষকদের একটি অংশ ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা এই নিয়োগকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য কলঙ্কজনক বলে মন্তব্য করে। মূলত তারাই বিভিন্ন সময় নতুন উপাচার্যের স্বাভাবিক কাজে নিয়মের তোয়াক্কা না করে বাধা দেয়। সর্বশেষ উপাচার্য নির্বাচন ঠেকাতে শিক্ষকদের এই অংশটি টানা পাঁচ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখে। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে নির্বাচন হলে ড. আনোয়ার হোসেন জাবির নির্বাচিত উপাচার্য হন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্ষুব্ধ শিক্ষকদের অংশটি ড. আনোয়ার হোসেনকে উপাচার্য হিসেবে ব্যর্থ প্রমাণ করতেই ছাত্রদের সংঘর্ষে হাওয়া দেয়। ছাত্রদের বিক্ষোভের সময় ক্যাম্পাসে শিক্ষক ক্লাবের সামনে আন্দোলনকারীদের কারো কারো সঙ্গে ওইসব শিক্ষককে একান্তে কথা বলতে দেখা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, এর পরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
ডিন নির্বাচন : ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন শেষ হওয়ার পর গত ২ আগস্ট ডিন নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এমনিতেই উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। এ অবস্থায় যাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত, তাঁরা চাচ্ছিলেন নির্বাচন বানচাল করতে। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁরা শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-আন্দোলন উসকে দেন।
ছাত্রলীগের অন্তঃকোন্দল : ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে। ছাত্রলীগকর্মী নাহিদের বান্ধবী প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগ নেতা লিখনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পক্ষে নানা তথ্য-প্রমাণও জমা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা লিখনের সাক্ষাৎকার নেন। তাঁরা অভিযোগের কিছু সত্যতাও খুঁজে পান বলে জানা গেছে। এর এক দিনের মাথায় লিখনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ দিকে মীর মশাররফ হোসেন হল থেকে পুলিশ নাহিদকে আটক করতে গেলে ওই হলের লিখন সমর্থিত কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে ওঠে।
সুযোগ নিয়েছে ছাত্রদল : বিশ্ববিদ্যালয়ে এই অপ্রীতিকর ঘটনার সূত্রপাত ঘটিয়েছে ছাত্রলীগ। প্রকাশ্যে তাদের তৎপরতাও ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর ব্যাপক ভাঙচুরে ছাত্রদলের জুনিয়র কর্মীরা ব্যাপকভাবে সক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তাদের সঙ্গে যোগ দেয় বিভিন্ন সংগঠনে ঘাপটি মেরে থাকা শিবিরকর্মীরাও। আর ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ফুঁসে ওঠলে তা কাজে লাগায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ জন্যই সাংবাদিকদের ছবি তোলায় বাধা দেওয়া হয়।
ক্যাম্পাসের এই অপ্রীতিকর ঘটনায় ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতির বলির পাঁঠা হয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের সচেতন মহলের ধারণা এমনটাই। তাদের মতে, ঘটনার সূত্রপাতের পর স্বার্থান্বেষী নানা মহল ফায়দা নিতে আন্দোলনের পেছন থেকে হাওয়া দিয়েছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগ পুঁজি করে ক্যাম্পাসে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ঘটনা শুরুর পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে প্রকাশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হলেও প্রশাসনের বাইরে দায়িত্বশীল কোনো শিক্ষক এগিয়ে আসেননি।
বুধবার রাত থেকে শুরু করে পরের দিন দুপুর পর্যন্ত চলা সংঘর্ষের সময় প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের কিছু ছাত্রকে আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা গেছে। এরাই মূলত সব ভাঙচুরে নেতৃত্ব দিয়েছে। সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে এই ছাত্ররাই বাধা দেয় এবং সাধারণ ছাত্রদের উসকে দেয়। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করেছে ছাত্ররা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় বেশির ভাগ সাধারণ শিক্ষার্থীই মর্মাহত।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে মূল যে কারণগুলো উল্লেখ করা হচ্ছেম তার মধ্যে অন্যতম হলো উপাচার্য পদটি নিয়ে সৃষ্ট সংকট। এ ছাড়া রয়েছে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কারণ।
অতিথি উপাচার্যকে মানতে না পারা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর এখানকার শিক্ষকদের একটি অংশ ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা এই নিয়োগকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য কলঙ্কজনক বলে মন্তব্য করে। মূলত তারাই বিভিন্ন সময় নতুন উপাচার্যের স্বাভাবিক কাজে নিয়মের তোয়াক্কা না করে বাধা দেয়। সর্বশেষ উপাচার্য নির্বাচন ঠেকাতে শিক্ষকদের এই অংশটি টানা পাঁচ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখে। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে নির্বাচন হলে ড. আনোয়ার হোসেন জাবির নির্বাচিত উপাচার্য হন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্ষুব্ধ শিক্ষকদের অংশটি ড. আনোয়ার হোসেনকে উপাচার্য হিসেবে ব্যর্থ প্রমাণ করতেই ছাত্রদের সংঘর্ষে হাওয়া দেয়। ছাত্রদের বিক্ষোভের সময় ক্যাম্পাসে শিক্ষক ক্লাবের সামনে আন্দোলনকারীদের কারো কারো সঙ্গে ওইসব শিক্ষককে একান্তে কথা বলতে দেখা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, এর পরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
ডিন নির্বাচন : ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন শেষ হওয়ার পর গত ২ আগস্ট ডিন নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এমনিতেই উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। এ অবস্থায় যাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত, তাঁরা চাচ্ছিলেন নির্বাচন বানচাল করতে। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁরা শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-আন্দোলন উসকে দেন।
ছাত্রলীগের অন্তঃকোন্দল : ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে। ছাত্রলীগকর্মী নাহিদের বান্ধবী প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগ নেতা লিখনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পক্ষে নানা তথ্য-প্রমাণও জমা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা লিখনের সাক্ষাৎকার নেন। তাঁরা অভিযোগের কিছু সত্যতাও খুঁজে পান বলে জানা গেছে। এর এক দিনের মাথায় লিখনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ দিকে মীর মশাররফ হোসেন হল থেকে পুলিশ নাহিদকে আটক করতে গেলে ওই হলের লিখন সমর্থিত কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে ওঠে।
সুযোগ নিয়েছে ছাত্রদল : বিশ্ববিদ্যালয়ে এই অপ্রীতিকর ঘটনার সূত্রপাত ঘটিয়েছে ছাত্রলীগ। প্রকাশ্যে তাদের তৎপরতাও ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর ব্যাপক ভাঙচুরে ছাত্রদলের জুনিয়র কর্মীরা ব্যাপকভাবে সক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তাদের সঙ্গে যোগ দেয় বিভিন্ন সংগঠনে ঘাপটি মেরে থাকা শিবিরকর্মীরাও। আর ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ফুঁসে ওঠলে তা কাজে লাগায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ জন্যই সাংবাদিকদের ছবি তোলায় বাধা দেওয়া হয়।
No comments