বইয়ের পোকা

তাহার আসল নামটি যে কি ছিল, তাহা ভুলিয়াই গিয়াছি—কারণ আমরা সকলেই তাহাকে ‘পালোয়ান’ বলিয়া ডাকিতাম। এমনকি মাস্টার মহাশয়েরা পর্যন্ত তাহাকে ‘পালোয়ান’ বলিতেন। কবে কেমন করিয়া তাহার এরূপ নামকরণ হইল, তাহা মনে নাই; কিন্তু নামটি যে তাহাকে বেশ মানাইয়াছিল, এ কথা স্কুলসুদ্ধ সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করিত।


প্রথমত, তাহার চেহারাটি ছিল একটু অতিরিক্ত রকমের হূষ্টপুষ্ট। মোটা সোটা হাত পা, ব্যাঙের মত গোবদ্া গলা—তাহার উপরেই গোলার মত মাথাটি—যেন ঘাড়ে পিঠে এক হইয়া গিয়াছে। তার উপর সে কলিকাতায় গিয়া স্বচক্ষে কাল্লু ও করিমের লড়াই দেখিয়া আসিয়াছিল, এবং বড় বড় কুস্তির এমন আশ্চর্য রকম বর্ণনা দিতে পারিত যে, শুনিতে শুনিতে আমাদেরই রক্ত গরম হইয়া উঠিত। এক এক দিন উৎসাহের চোটে আমরাও তাল ঠুকিয়া স্কুলের উঠানে কুস্তি বাধাইয়া দিতাম। পালোয়ান তখন পাশে দাঁড়াইয়া নানারকম অঙ্গভঙ্গী করিয়া আমাদের প্যাঁচ ও কায়দা বাত্লাইয়া দিত। মাখনলাল আমার চাইতে আড়াই বছরের ছোট, কিন্তু পালোয়ানের কাছে ‘ল্যাংমুচকির’ প্যাঁচ শিখিয়া যেদিন আমায় চিৎপাত করিয়া ফেলিল, সেই দিন হইতে সকলেরই বিশ্বাস হইল যে পালোয়ান ছোকরাটা আর কিছু না বুঝুক কুস্তিটা বেশ বোঝে।
শিশুতোষ একটি গল্পের শুরুর অংশ এটি। বলতে হবে গল্পটি ও এর লেখকের নাম কী?

No comments

Powered by Blogger.