সমর্থন আদায়ের মিশনে এরশাদ এবার যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে by রাজন ভট্টাচার্য
ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি। লক্ষ্য সফল করতে বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোর পক্ষ থেকে সমর্থন আদায়ের মিশনে নেমেছেন জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ইতোমধ্যে এক সপ্তাহ ভারত সফর শেষে দেশে ফিরেছেন তিনি। আগামী মাসের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন।
ভারত সরকারের আমন্ত্রণে সফর শেষে দেশে ফিরে রাজনীতির মাঠে একেক দিন একেক বার্তা দিয়ে যাচ্ছেন সাবেক এই সেনাশাসক। দেশের ভবিষ্যত রাজনীতিতে নেতৃত্বের পরিবর্তনেরও জোরালো ইঙ্গিত দিচ্ছেন তিনি। তবে রাজনৈতিক নেতা ও বিশ্লেষকদের বক্তব্য ভিন্ন। তাঁরা বলছেন, একক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার মতো শক্তিশালী অবস্থানে নেই জাতীয় পার্টি। জোট গঠন করেই তাকে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। তেমনি আগামী নির্বাচনেও ক্ষমতায় যেতে হলে শীর্ষ দুই রাজনৈতিক দলকে জাপার রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে নিশ্চিত করতে হবে। এদিকে আগামী শনিবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভারত সফরের বিস্তারিত তুলে ধরবেন এরশাদ।
বিএনপি-জামায়াত তথা ১৮ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসুক তা চায় না মহাজোট। এমন বাস্তবতায় তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে বিএনপি নির্বাচনের বাইরে থাকতে চাইলে সুযোগ নেবে জাতীয় পার্টি। অর্থাৎ বিরোধী দলে গিয়ে নির্বাচন করবে জাপা। ১৪ দলের শরিকরাও পৃথক পৃথকভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। পরবর্তীতে একসঙ্গে সরকার গঠন। এর মূল কারণ হলো গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাসহ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা। যদিও এ রকম নির্বাচন করার বিষয়ে বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকে আগে থেকেই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হচ্ছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, বিএনপি ছাড়া নির্বাচন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গ্রহণযোগ্য হবে না। স্বপ্ন পূরণ হবে না আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও জাপা চেয়ারম্যান এরশাদের।
এদিকে রাজনীতির মাঠের অপর একটি পক্ষ বলছেÑ তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান না হলে একটি বিকল্প সরকার গঠন করা হতে পারে, যার নেতৃত্ব দেবেন এরশাদ। তিন থেকে পাঁচ বছরমেয়াদী এই সরকারের মন্ত্রী পরিষদে থাকবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। অর্থাৎ রাজনীতির মাঠের তৃতীয় শক্তি হিসেবে এই সরকারের আত্মপ্রকাশ হতে পারে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শক্তিশালী দেশগুলোতে সফরের সময় বিকল্প এই ফর্মুলা বাস্তবায়ন নিয়েও কথা বলবেন এরশাদ। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এরশাদ বলেছেন, রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি বলতে কিছুই নেই। তৃতীয় শক্তি হলো জাতীয় পার্টি। মানুষ এখন এই দলকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। তাই তৃতীয় শক্তি হিসেবে আমরা আগামীতে ক্ষমতায় আসব।
ভারতের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ‘আনন্দবাজার’ এরশাদের ভারত সফর নিয়ে লিখেছে, ‘বাংলাদেশের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ, হাসিনা সরকারের মহাজোটের অন্তর্গত ঠিকই, কিন্তু যত দিন যাচ্ছে হাসিনার সঙ্গে সংঘাত বাড়ছে এরশাদের। সম্প্রতি রংপুরে একটি অনুষ্ঠানে তিনি ‘মাইনাস টু’ সূত্র ঘোষণা করেছেন। সেই সূত্রটি হলো, দুই প্রমীলা নেতা বাংলাদেশকে অনেকটা পিছিয়ে দিয়েছেন। ফলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এদের দু’জনকে বাদ দিয়েই চলতে হবে।
তাছাড়া ‘বাংলাদেশ তথা যে কোন প্রতিবেশী রাষ্ট্র সম্পর্কে ভারতের নীতি খুবই স্পষ্ট। সেটি হলো, যখন যে দল ক্ষমতার শীর্ষে থাকবে তার সঙ্গেই ‘কাজ’ করতে প্রস্তুত ভারত। অন্য দেশের কে বা কারা ক্ষমতাসীন হবে সে ব্যাপারে নাক গলাতে চায় না নয়াদিল্লী। তবে শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ভারত এবং বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দীর্ঘদিন পরে যথেষ্ট ইতিবাচক দিকেই এগোচ্ছে বলে মনে করছে মনমোহন সরকার। হাসিনা সরকারকে বিভিন্ন পরিকাঠামো প্রকল্পে সাহায্য করার জন্য খুব কম সুদে আর্থিক ঋণও দেয়া হয়েছে। এই সময়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গতিমুখ কোন কারণে ব্যাহত হোক এমনটা চাইছেন না প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংও। সে কারণেই এরশাদের সঙ্গে বৈঠককে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে ভারত। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভোট পর্যন্ত যাতে স্থিতিশীল থাকে সে ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা নেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে এরশাদকে অনুরোধ করা হচ্ছে।’
ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন এরশাদ। কখনও বলছেন, একক নির্বাচন করে ক্ষমতায় যেতে সমর্থন দিয়েছে ভারত। আবার কখনও বলছেন, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাপার জোট রাজনীতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিকল্প নেই। আগামী নির্বাচনে আগেই মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে জাপা এ কথাও গণমাধ্যমকে বলেছেন তিনি। সব কিছুর মধ্যে কোন্টি সত্য কোন্টি রাজনৈতিক বক্তব্য তা এরশাদই হয়ত ভাল জানেন। তবে রাজনৈতিক পালা বদলের ক্ষেত্রে তার বক্তব্যের যথেষ্ট মিল রয়েছে।
দেশে ফেরার পর রবিবার প্রেসিডিয়াম বৈঠক হয় জাতীয় পার্টির। বৈঠকে এরশাদ বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি বলেছেনÑ ‘আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নিরাপদে থাকবে। আর বিএনপি-জামায়াত তথা ১৮ দলীয় জোট ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশের এক কোটি হিন্দুকে ভারতে আশ্রয় দিতে হবে।’
বৈঠকে জাতীয় পার্টিকে চাঙ্গা করতে তিন মাসের বিশেষ কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে জেলায় জেলায় কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে কর্মিসভা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে মহা-সমাবেশ। প্রেসিডিয়াম বৈঠকে আগামী মাসে আমেরিকা সফর নিয়েও কথা বলেছেন এরশাদ। তবে অনেকটা গোপন রেখেই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রে সফর করতে যাচ্ছেন তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মেয়েকে দেখার নাম করে প্রথমে লন্ডনে যাবেন তিনি। পরবর্তীতে লন্ডন থেকে আমেরিকা যাবেন। সেখানে প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা শোনা যাচ্ছে।
বিএনপি-জামায়াত তথা ১৮ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসুক তা চায় না মহাজোট। এমন বাস্তবতায় তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে বিএনপি নির্বাচনের বাইরে থাকতে চাইলে সুযোগ নেবে জাতীয় পার্টি। অর্থাৎ বিরোধী দলে গিয়ে নির্বাচন করবে জাপা। ১৪ দলের শরিকরাও পৃথক পৃথকভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। পরবর্তীতে একসঙ্গে সরকার গঠন। এর মূল কারণ হলো গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাসহ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা। যদিও এ রকম নির্বাচন করার বিষয়ে বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকে আগে থেকেই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হচ্ছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, বিএনপি ছাড়া নির্বাচন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গ্রহণযোগ্য হবে না। স্বপ্ন পূরণ হবে না আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও জাপা চেয়ারম্যান এরশাদের।
এদিকে রাজনীতির মাঠের অপর একটি পক্ষ বলছেÑ তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান না হলে একটি বিকল্প সরকার গঠন করা হতে পারে, যার নেতৃত্ব দেবেন এরশাদ। তিন থেকে পাঁচ বছরমেয়াদী এই সরকারের মন্ত্রী পরিষদে থাকবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। অর্থাৎ রাজনীতির মাঠের তৃতীয় শক্তি হিসেবে এই সরকারের আত্মপ্রকাশ হতে পারে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শক্তিশালী দেশগুলোতে সফরের সময় বিকল্প এই ফর্মুলা বাস্তবায়ন নিয়েও কথা বলবেন এরশাদ। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এরশাদ বলেছেন, রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি বলতে কিছুই নেই। তৃতীয় শক্তি হলো জাতীয় পার্টি। মানুষ এখন এই দলকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। তাই তৃতীয় শক্তি হিসেবে আমরা আগামীতে ক্ষমতায় আসব।
ভারতের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ‘আনন্দবাজার’ এরশাদের ভারত সফর নিয়ে লিখেছে, ‘বাংলাদেশের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ, হাসিনা সরকারের মহাজোটের অন্তর্গত ঠিকই, কিন্তু যত দিন যাচ্ছে হাসিনার সঙ্গে সংঘাত বাড়ছে এরশাদের। সম্প্রতি রংপুরে একটি অনুষ্ঠানে তিনি ‘মাইনাস টু’ সূত্র ঘোষণা করেছেন। সেই সূত্রটি হলো, দুই প্রমীলা নেতা বাংলাদেশকে অনেকটা পিছিয়ে দিয়েছেন। ফলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এদের দু’জনকে বাদ দিয়েই চলতে হবে।
তাছাড়া ‘বাংলাদেশ তথা যে কোন প্রতিবেশী রাষ্ট্র সম্পর্কে ভারতের নীতি খুবই স্পষ্ট। সেটি হলো, যখন যে দল ক্ষমতার শীর্ষে থাকবে তার সঙ্গেই ‘কাজ’ করতে প্রস্তুত ভারত। অন্য দেশের কে বা কারা ক্ষমতাসীন হবে সে ব্যাপারে নাক গলাতে চায় না নয়াদিল্লী। তবে শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ভারত এবং বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দীর্ঘদিন পরে যথেষ্ট ইতিবাচক দিকেই এগোচ্ছে বলে মনে করছে মনমোহন সরকার। হাসিনা সরকারকে বিভিন্ন পরিকাঠামো প্রকল্পে সাহায্য করার জন্য খুব কম সুদে আর্থিক ঋণও দেয়া হয়েছে। এই সময়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গতিমুখ কোন কারণে ব্যাহত হোক এমনটা চাইছেন না প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংও। সে কারণেই এরশাদের সঙ্গে বৈঠককে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে ভারত। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভোট পর্যন্ত যাতে স্থিতিশীল থাকে সে ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা নেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে এরশাদকে অনুরোধ করা হচ্ছে।’
ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন এরশাদ। কখনও বলছেন, একক নির্বাচন করে ক্ষমতায় যেতে সমর্থন দিয়েছে ভারত। আবার কখনও বলছেন, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাপার জোট রাজনীতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিকল্প নেই। আগামী নির্বাচনে আগেই মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে জাপা এ কথাও গণমাধ্যমকে বলেছেন তিনি। সব কিছুর মধ্যে কোন্টি সত্য কোন্টি রাজনৈতিক বক্তব্য তা এরশাদই হয়ত ভাল জানেন। তবে রাজনৈতিক পালা বদলের ক্ষেত্রে তার বক্তব্যের যথেষ্ট মিল রয়েছে।
দেশে ফেরার পর রবিবার প্রেসিডিয়াম বৈঠক হয় জাতীয় পার্টির। বৈঠকে এরশাদ বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি বলেছেনÑ ‘আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নিরাপদে থাকবে। আর বিএনপি-জামায়াত তথা ১৮ দলীয় জোট ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশের এক কোটি হিন্দুকে ভারতে আশ্রয় দিতে হবে।’
বৈঠকে জাতীয় পার্টিকে চাঙ্গা করতে তিন মাসের বিশেষ কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে জেলায় জেলায় কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে কর্মিসভা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে মহা-সমাবেশ। প্রেসিডিয়াম বৈঠকে আগামী মাসে আমেরিকা সফর নিয়েও কথা বলেছেন এরশাদ। তবে অনেকটা গোপন রেখেই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রে সফর করতে যাচ্ছেন তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মেয়েকে দেখার নাম করে প্রথমে লন্ডনে যাবেন তিনি। পরবর্তীতে লন্ডন থেকে আমেরিকা যাবেন। সেখানে প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা শোনা যাচ্ছে।
No comments