ইউপি চেয়ারম্যান হত্যা-কুষ্টিয়ায় অশনিসংকেত
বেশ কিছুদিন শান্ত থাকার পর এক সময়ের চরমপন্থি অধ্যুষিত এলাকায় পুনরায় অশান্তির দাবানল ছড়িয়ে পড়ার অশনিসংকেত পাওয়া গেছে। চরমপন্থিরা মঙ্গলবার প্রকাশ্যে গুলি ও জবাই করে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলামকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে জানান দিয়েছে যে,
এর বীজ বিনাশ করা অত সহজ নয়। হতভাগ্য চেয়ারম্যানের দুই সঙ্গীও তাদের হাতে নিহত হয়েছে। সাধারণত চরমপন্থি দলগুলোর মধ্যকার অভ্যন্তরীণ বিরোধ, দল বা গ্রুপ ত্যাগ করা এবং চাঁদাবাজিসহ এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির উদ্দেশ্যে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়ে থাকে। তবে ঠিক কী কারণে চরমপন্থি দলের সাবেক সদস্য এই ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যা করা হয়েছে, তা জানা না গেলেও তার দেহ থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যাওয়ার নৃশংসতা দেখে মনে হয়, মানুষের মনে তাদের সম্পর্কে ভয় মিশ্রিত সম্ভ্রম জাগানোও এর উদ্দেশ্যের মধ্যে থাকতে পারে। তবে যে কারণেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটানো হোক না কেন, তাকে কোনো অজুহাতেই সমর্থন করা চলে না। এর হোতাদেরও চরমপন্থি পরিচয়ের কারণে ক্ষমা করা চলে না। তদুপরি দেখা গেছে, চরমপন্থি দলের নামে ওই জোনটিতে অতীতে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, গুম-খুন, নারী নিগ্রহের মতো অপরাধ সংঘটিত হতো। এক সময় সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে এবং ক্ষমা ঘোষণার পর এলাকাতে চরমপন্থি দলের নামে সন্ত্রাসী তৎপরতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। কিন্তু মঙ্গলবার ইউপি চেয়ারম্যানকে তার দুই সঙ্গীসহ হত্যার ঘটনা প্রমাণ করেছে, এই চরম বামপন্থি দলের পরিচয়ধারী শক্তি পুনরায় এলাকায় মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা যদি প্রান্তিক কৃষক, গ্রামের অবহেলিত মানুষের জন্য সুনির্দিষ্ট দাবি ও আদর্শের ভিত্তিতে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত, তাতেও এর একটা সামাজিক-রাজনৈতিক কার্যকারণ খুঁজে পাওয়া যেত। কিন্তু তাদের সত্যিকার জনমুক্তির কোনো সুনির্দিষ্ট কর্মসূচিও নেই। তারা মূলত এখন সমাজবিরোধী শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাই সরকারের উচিত, শুরুতেই তাদের নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার জন্য সতর্ক পদক্ষেপ নেওয়া। প্রকাশ্যে একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে হত্যার পর তারা যদি আত্মগোপনে থেকে পার পেয়ে যেতে সক্ষম হয়, তাহলে একটা সময় আসবে, যখন এলাকার সাধারণ মানুষের জীবন, শান্তি, সম্ভ্রম_ সবই তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়বে। আমরা প্রশাসনকে এ ব্যাপারে বিশেষ দৃষ্টি দিতে অনুরোধ করছি।
No comments