তত্ত্বাবধায়ক, না অন্তর্বর্তী সরকার-দেশের স্বার্থে সমঝোতায় আসুন
আর মাত্র দেড় বছর বাকি, অথচ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখনো সংশয় কাটেনি। কোন ধরনের সরকারব্যবস্থার অধীনে সেই নির্বাচন হবে, তা নিয়ে সরকারি ও বিরোধী দলের মধ্যে এখনো কোনো ঐকমত্য বা সমঝোতা হয়নি। বরং উভয় পক্ষের কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে, দুই দলের মধ্যে দূরত্ব যেন আরো বেড়ে যাচ্ছে।
সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে আবারও তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পুনর্বহাল অসম্ভব বলে জানিয়েছেন এবং নির্বাচনের সময় অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব করেছেন। সেই সরকারে চাইলে বিএনপিও অংশগ্রহণ করতে পারবে বলে তিনি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাৎক্ষণিকভাবে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটকে নিয়ে রোজার ঈদের পর তীব্রতর আন্দোলন গড়ে তোলার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ফলে সহসা কোনো সমঝোতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলেই মনে করেন দেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এ অবস্থায় দেশ কি আবার 'লগি-বৈঠা' কিংবা 'কাস্তে-লাঠি'র সহিংস রাজনীতিতে ফিরে যাবে? পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আবারও কি তৃতীয় কোনো শক্তির আবির্ভাব ঘটবে? এসব প্রশ্ন আজ শুধু রাজনীতি বিশ্লেষক নয়, সাধারণ মানুষকেও ভাবিয়ে তুলেছে। তারা আশা করে, দুই যুগ ধরে পালা করে ক্ষমতায় আসা প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের দুই নেত্রীর এই যে অনমনীয় মনোভাব ও বৈরী অবস্থান, তা থেকে তাঁরা বেরিয়ে আসবেন, দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে আলোচনায় বসবেন এবং সমঝোতায় পৌঁছবেন। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। ফলে দেশের মানুষ কেবলই হতাশ হচ্ছে।
আসন্ন রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী অন্তর্বর্তী সরকারের যে ঘোষণা দিয়েছেন, তাকে আমরা স্বাগত জানাই। পাশাপাশি এ কথাও বলতে চাই, ঘোষণাটি দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে হলে তা কার্যকর হতো এবং আরো বেশি অর্থবহ হতো। অন্যদিকে, বিরোধীদলীয় নেত্রী আরো কিছুটা সময় নিতে পারতেন এবং দলীয় ফোরামে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনার পরই একটি সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত দিতে পারতেন। বিদ্যমান ও আসন্ন রাজনৈতিক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে যে ধরনের সুবিবেচনা প্রয়োজন, আমরা কোনো পক্ষ থেকেই সেই সুবিবেচনার পরিচয় পাচ্ছি না। অথচ রাজনীতি বিশ্লেষক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে এখনই নানা রকম পদক্ষেপ নেওয়া খুবই জরুরি। আর সে জন্য সবার আগে প্রয়োজন প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, উভয় দলের মধ্যেই সেই ধরনের সদিচ্ছার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তার বদলে আমরা দেখছি কেবলই কৌশলী আচরণ ও বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা। আমরা দেখছি, পারস্পরিক অশ্রদ্ধা ও অসহিষ্ণুতা, যা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না।
বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। জনসংখ্যার বেশির ভাগই নিম্ন আয়ের মানুষ, কোনো রকমে জীবনযাপন করছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী চার দশকেও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো অর্জনে আজও আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। এ অবস্থায় আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সমঝোতার ভিত্তিতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়া, দেশকে স্বনির্ভর করা। কিন্তু বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি মানুষের সেই প্রত্যাশার সঙ্গে মোটেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আমরা দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি, দেশের ও মানুষের স্বার্থে বৈরী রাজনীতির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসুন। আসন্ন নির্বাচনের ব্যাপারে একটি ঐকমত্যে উপনীত হোন।
আসন্ন রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী অন্তর্বর্তী সরকারের যে ঘোষণা দিয়েছেন, তাকে আমরা স্বাগত জানাই। পাশাপাশি এ কথাও বলতে চাই, ঘোষণাটি দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে হলে তা কার্যকর হতো এবং আরো বেশি অর্থবহ হতো। অন্যদিকে, বিরোধীদলীয় নেত্রী আরো কিছুটা সময় নিতে পারতেন এবং দলীয় ফোরামে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনার পরই একটি সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত দিতে পারতেন। বিদ্যমান ও আসন্ন রাজনৈতিক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে যে ধরনের সুবিবেচনা প্রয়োজন, আমরা কোনো পক্ষ থেকেই সেই সুবিবেচনার পরিচয় পাচ্ছি না। অথচ রাজনীতি বিশ্লেষক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে এখনই নানা রকম পদক্ষেপ নেওয়া খুবই জরুরি। আর সে জন্য সবার আগে প্রয়োজন প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, উভয় দলের মধ্যেই সেই ধরনের সদিচ্ছার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তার বদলে আমরা দেখছি কেবলই কৌশলী আচরণ ও বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা। আমরা দেখছি, পারস্পরিক অশ্রদ্ধা ও অসহিষ্ণুতা, যা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না।
বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। জনসংখ্যার বেশির ভাগই নিম্ন আয়ের মানুষ, কোনো রকমে জীবনযাপন করছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী চার দশকেও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো অর্জনে আজও আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। এ অবস্থায় আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সমঝোতার ভিত্তিতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়া, দেশকে স্বনির্ভর করা। কিন্তু বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি মানুষের সেই প্রত্যাশার সঙ্গে মোটেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আমরা দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি, দেশের ও মানুষের স্বার্থে বৈরী রাজনীতির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসুন। আসন্ন নির্বাচনের ব্যাপারে একটি ঐকমত্যে উপনীত হোন।
No comments