নিটোর বিরুদ্ধে ভোট কেনার অভিযোগ
গত ১ জুলাই মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইনস্টিটিউশনাল রেভ্যুলুশনারি পার্টির প্রার্থী এনরিক পেনা নিটো বিজয়ী হয়েছেন। তিনি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বামপন্থী শক্তির প্রতিনিধিত্বকারী লোপেজ ওব্রাডরকে ৬ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন। ভোটার সংখ্যার হিসাবে এই ব্যবধান ত্রিশ লাখের বেশি।
প্রেসিডেন্ট ফিলিপ ক্যালডেরন নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু বলে দাবি করলেও এতে ব্যাপক কারচুপি ও অনিয়মের দাবি উঠেছে। ওব্রাডর অভিযোগ করেছেন যে, পেনা নিটো প্রচুর পয়সা ঢেলে ভোট কিনে নিয়েছেন। তিনি পুরোপুরি নতুন করে ভোট গণনার দাবি জানান। তবে এই অভিযোগে হয়ত তেমন কাজ হবে না। ইতোমত্যে প্রেসিডেন্ট ওবামা ও অন্যান্য বিদেশী নেতা এই বিজয় উপলক্ষে পেনা নিটোকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
নির্বাচিত হলেও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণে পেনা নিটোর ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। দায়িত্ব হস্তান্তরে এই পাঁচ মাস সময়কালটা বর্তমান প্রেসিডেন্ট ক্যালডেরনের জন্য খুবই ব্যস্ততাপূর্ণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসময় বিদায়ী কংগ্রেস শ্রমসংস্কার বিল অনুমোদন করতে পারে। তাছাড়া ট্রাইব্যুনালের শুনানি ত্বরান্বিত করারও ব্যবস্থা করা হবে।
পেনা নিটো যে এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবে মেক্সিকোর রাজনৈতিক হাওয়ায় সেই ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছিল। প্রায় ৭ দশক পেনা নিটোর পার্টি ইনস্টিটিউশনাল রেভ্যুলুশনারি পার্টি (পিআরআই) দেশ শাসনের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং দলটির প্রতিষ্ঠাতা প্লুটারকো এলিয়াস ক্যালের পরিবার কোন না কোনভাবে শাসকের ভূমিকায় ছিল। এই অবস্থা চলে ১৯৯৩ সালের আগ পর্যন্ত। সে বছর দলটি কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। আর ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট পদটি দলের হাত ছাড়া হয়ে যায়। এবারের নির্বাচনে নিটোর ১০ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করার কথা ছিল। কংগ্রেসের নিম্ন পরিষদে না হলেও সিনেটে সংখ্যগরিষ্ঠতা পাওয়ার এবং আরও দুটি গবর্নরের পদ পাওয়ার কথা ছিল। ৩১টি প্রদেশের মধ্যে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ প্রদেশের প্রশাসন এই দলটির নিয়ন্ত্রণে।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট পদটি হাতছাড়া হয়ে যাবার পর পিআরআই এতদিন ক্ষমতার বাইরে ছিল। ২০০৬ সালের নির্বাচনে এটি তৃতীয় স্থান দখল করে। এবারের প্রার্থী পেনা নিটো কোন বৃদ্ধিজীবী ছিলেন না। অনেকে তাকে দুর্বল প্রার্থী বলে নাকচ করে দিয়েছিল। তারপরও তার জয়লাভের পিছনে প্রতিপক্ষের অবদানই বেশি বলে ধারণা করা যায়। ২০০০ সাল থেকে মেক্সিকোর শাসন ক্ষমতায় রক্ষণশীল ন্যাশনাল এ্যাকশন পার্টি (পিএএন)। ক্যালডেরনের নেতৃত্বাধীন এই দলের সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোর উন্নতির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় সে চেষ্টা বহুলাংশেই ব্যর্থ হয়। মেক্সিকোর রাজনৈতিক ব্যবস্থা বহুদলীয় গণতন্ত্রের উপযোগী নয়। অর্থনীতিতেও প্রাইভেট অলিগোপলির একাধিপত্য। এই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার না হলে দেশ আগাতে পারছিল না। অথচ এই আর্থ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার বা তা ঢেলে সাজানোর জন্য যে রাজনৈতিক জোট গড়ে তোলা দরকার ক্যালডেরন তা গড়ে তুলতে অসমর্থ ও অনিচ্ছুক ছিলেন। মাদক যুদ্ধ চালিয়েছিলেন ক্যালডেরন। কিন্তু জয়ী হতে পারেননি। সমালোচকরা বলেন, ক্যালডেরন যুদ্ধ শুরু করেছিলেন কিন্তু তার যুদ্ধজয়ের কৌশল ও হাতিয়ার কোনটাই ছিল না। এসব কারণে জনমত তার ও দলের বিরুদ্ধে চলে যায় এবং পেনা নিটো ও তার দল পিআরআই জনপ্রিয়তা ফিরে পায় যার প্রতিফলন নির্বাচনী।
কিন্তু অভিযোগ আছে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। পিআরআই কর্মীরা কোন কোন জেলায় গ্রসারি চেইন সরিয়েনা থেকে ভোটারদের প্রিপেইড গিফট্কার্ড বিতরণ করেছে। এই কার্ড নিয়ে আরেক কা- হয়েছে। কার্ড অকার্যকর হয়ে যাবে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর আতঙ্কিত কার্ডধারীরা মেক্সিকো সিটির উপকণ্ঠের একটি দোকানে চড়াও হয়ে লুটপাট করে। প্রতিটি কার্ডের মূল্যমান ছিল একশ পেসো বা প্রায় সাড়ে সাত ডলার। এ ছিল ব্যাপক পরিসরে ঘুষ। এক কর্মকর্তার ভাষায় দেশের ইতিহাসে নির্বাচনে ভোট কেনা আর জবরদস্তির আশ্রয় নেয়ার এতবড় কর্মকা- আগে আর হয়নি। বলা বাহুল্য, গিফট দিয়ে সরাসরি ভোট কেনা মেক্সিকোর নির্বাচনী আইনে নিষিদ্ধ।
সূত্র : ইকোনোমিস্ট
নির্বাচিত হলেও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণে পেনা নিটোর ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। দায়িত্ব হস্তান্তরে এই পাঁচ মাস সময়কালটা বর্তমান প্রেসিডেন্ট ক্যালডেরনের জন্য খুবই ব্যস্ততাপূর্ণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসময় বিদায়ী কংগ্রেস শ্রমসংস্কার বিল অনুমোদন করতে পারে। তাছাড়া ট্রাইব্যুনালের শুনানি ত্বরান্বিত করারও ব্যবস্থা করা হবে।
পেনা নিটো যে এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবে মেক্সিকোর রাজনৈতিক হাওয়ায় সেই ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছিল। প্রায় ৭ দশক পেনা নিটোর পার্টি ইনস্টিটিউশনাল রেভ্যুলুশনারি পার্টি (পিআরআই) দেশ শাসনের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং দলটির প্রতিষ্ঠাতা প্লুটারকো এলিয়াস ক্যালের পরিবার কোন না কোনভাবে শাসকের ভূমিকায় ছিল। এই অবস্থা চলে ১৯৯৩ সালের আগ পর্যন্ত। সে বছর দলটি কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। আর ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট পদটি দলের হাত ছাড়া হয়ে যায়। এবারের নির্বাচনে নিটোর ১০ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করার কথা ছিল। কংগ্রেসের নিম্ন পরিষদে না হলেও সিনেটে সংখ্যগরিষ্ঠতা পাওয়ার এবং আরও দুটি গবর্নরের পদ পাওয়ার কথা ছিল। ৩১টি প্রদেশের মধ্যে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ প্রদেশের প্রশাসন এই দলটির নিয়ন্ত্রণে।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট পদটি হাতছাড়া হয়ে যাবার পর পিআরআই এতদিন ক্ষমতার বাইরে ছিল। ২০০৬ সালের নির্বাচনে এটি তৃতীয় স্থান দখল করে। এবারের প্রার্থী পেনা নিটো কোন বৃদ্ধিজীবী ছিলেন না। অনেকে তাকে দুর্বল প্রার্থী বলে নাকচ করে দিয়েছিল। তারপরও তার জয়লাভের পিছনে প্রতিপক্ষের অবদানই বেশি বলে ধারণা করা যায়। ২০০০ সাল থেকে মেক্সিকোর শাসন ক্ষমতায় রক্ষণশীল ন্যাশনাল এ্যাকশন পার্টি (পিএএন)। ক্যালডেরনের নেতৃত্বাধীন এই দলের সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোর উন্নতির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কংগ্রেসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় সে চেষ্টা বহুলাংশেই ব্যর্থ হয়। মেক্সিকোর রাজনৈতিক ব্যবস্থা বহুদলীয় গণতন্ত্রের উপযোগী নয়। অর্থনীতিতেও প্রাইভেট অলিগোপলির একাধিপত্য। এই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার না হলে দেশ আগাতে পারছিল না। অথচ এই আর্থ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার বা তা ঢেলে সাজানোর জন্য যে রাজনৈতিক জোট গড়ে তোলা দরকার ক্যালডেরন তা গড়ে তুলতে অসমর্থ ও অনিচ্ছুক ছিলেন। মাদক যুদ্ধ চালিয়েছিলেন ক্যালডেরন। কিন্তু জয়ী হতে পারেননি। সমালোচকরা বলেন, ক্যালডেরন যুদ্ধ শুরু করেছিলেন কিন্তু তার যুদ্ধজয়ের কৌশল ও হাতিয়ার কোনটাই ছিল না। এসব কারণে জনমত তার ও দলের বিরুদ্ধে চলে যায় এবং পেনা নিটো ও তার দল পিআরআই জনপ্রিয়তা ফিরে পায় যার প্রতিফলন নির্বাচনী।
কিন্তু অভিযোগ আছে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। পিআরআই কর্মীরা কোন কোন জেলায় গ্রসারি চেইন সরিয়েনা থেকে ভোটারদের প্রিপেইড গিফট্কার্ড বিতরণ করেছে। এই কার্ড নিয়ে আরেক কা- হয়েছে। কার্ড অকার্যকর হয়ে যাবে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর আতঙ্কিত কার্ডধারীরা মেক্সিকো সিটির উপকণ্ঠের একটি দোকানে চড়াও হয়ে লুটপাট করে। প্রতিটি কার্ডের মূল্যমান ছিল একশ পেসো বা প্রায় সাড়ে সাত ডলার। এ ছিল ব্যাপক পরিসরে ঘুষ। এক কর্মকর্তার ভাষায় দেশের ইতিহাসে নির্বাচনে ভোট কেনা আর জবরদস্তির আশ্রয় নেয়ার এতবড় কর্মকা- আগে আর হয়নি। বলা বাহুল্য, গিফট দিয়ে সরাসরি ভোট কেনা মেক্সিকোর নির্বাচনী আইনে নিষিদ্ধ।
সূত্র : ইকোনোমিস্ট
No comments