তত্ত্বাবধায়ক আমলে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের দাপট কমেনি- সরকারের কাছে বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট by মহিউদ্দিন আহমেদ
বদলি, নিয়োগবাণিজ্য, টেন্ডার এবং দুর্নীতি, ঘুষ, অর্থআত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগে চিহ্নিত, সাজাপ্রাপ্ত ও আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজরা এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন । এদের অনেকেই সাময়িক বরখাস্ত ও চাকরিচ্যুত হলেও তারা ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে সরকারী প্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তার করছেন আগের মতোই।
সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন কেউ কেউ। একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে দু’একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে তাদের অনেকেই সরকারের প্রভাবশালীদের সেল্টার নিয়ে নিজেরদের অবস্থান ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১/১১ পরবর্তী সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শীর্ষ দুর্নীতিবাজের তৃতীয় তালিকায় ছিলেন বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা জাফরুল হাসান। ২০০৭ সালের ৯ জুলাই যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন তিনি। ৭৯ লাখ ৬৩ হাজার ৬০৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। মামলার বিচারে তাঁর ১৩ বছর সাজা হয়। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর আইনের ফাঁকে দুদকের জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হন। বর্তমানে তিনি পিডিবির অস্থায়ী নিয়োগ, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও বদলিবাণিজ্যের সঙ্গে আগের মতো জড়িয়ে পড়েন। তাঁর দাপটে পিডিবির অনেক কর্মকর্তা অসহায় হয়ে পড়েন।
রেজিস্ট্রেশন বিভাগে নকলনবিস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন ও একই সংগঠনের সহ-সভাপতি এম এ ওয়াদুদ দুর্নীতি করার কথা স্বীকার করে ট্রুথ কমিশনের অনুকম্পা হাসিল করেন। এ দুই আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে করে নানাভাবে পূর্বের মতো দাপট খাটাচ্ছেন তাঁরা।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের রেকর্ড কিপার সালেহ উদ্দিন সেলিমের বিরুদ্ধে এমপিওভুক্তি আটক এবং ভুয়া এমপিও করে দেয়াসহ নানাবিধ দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে। দুর্নীতির অভিযোগে বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরো তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিলের পর ২০০৪ সালের ১৯ মে তাঁকে বরখাস্ত করারও সুপারিশ করা হয়। তবে তিনি তৎকালীন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তদবির করে বরখাস্ত ঠেকাতে সমর্থ হন। একই সঙ্গে আদায় করে নেন পদোন্নতি। দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়েই তিনি চতুর্থ শ্রেণীর সরকারী কর্মচারী সমিতির সভাপতি ও সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এলে তিনি সুকৌশলে সচিবালয়ের কর্মচারীদের সুসংগঠিত করে সরকারবিরোধী আন্দোলনের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ আছে। সরকারের বিশেষ একটি গোয়েন্দা সংস্থা দীর্ঘদিনের অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারা সালেহউদ্দিনের এসব তথ্য তুলে ধরে চলতি বছর মার্চ মাসে সরকারের কাছে একটি গোপন প্রতিবেদন জমা দেন। ওই প্রতিবেদনে সালেহউদ্দিনকে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ করা হয়। সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার ৩ জুলাই এক আদেশে সালেহউদ্দিনকে বরখাস্ত করে। বরখাস্ত হলেও এখনও সালেহউদ্দিনের সরকারী কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী সমন্বয় পরিষদে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। বদলি, নিয়োগ, টেন্ডারসহ নানা কর্মকা- সালেহউদ্দিনের অনুসারিরা তাঁর আদেশ-নির্দেশ অনুযায়ী চালাচ্ছেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শীর্ষ দুর্নীতিবাজের দ্বিতীয় তালিকাভুক্ত ছিলেন ডেসা শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি কাজী মোশারফ হোসেন। তখনকার সময়ে কয়েকবার তাঁকে গ্রেফতার করতে অভিযান চালায় দুর্নীতিবিরোধী টাস্কফোর্স (বর্তমানে বিলুপ্ত)। গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হলেও দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এ মামলায় ১৩ বছর সাজা হয় মোশাররফ হোসেনের। গ্রেফতারী পরোয়ানার কারণে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। সাজার বিরুদ্ধে আপীল করে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান । তারপর তিনি প্রকাশ্যে আসেন। সে সময় তাঁর চাকরি চলে যায়। চাকরি ফিরে পেতে নানা ধরনের চেষ্টা চালান তিনি। একই সঙ্গে সিবিএ নেতা হিসেবে নিয়মিত অফিসে যাতায়াত অব্যাহত ছিল তাঁর। বদলি বাণিজ্য ও টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে ক্ষমতা ও প্রভাব রয়েছে আগের মতোই।
এ ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শীর্ষ দুর্নীতিবাজের তালিকাভুক্ত ডেসকোর শওকত আলী চৌধুরী, সওজের মোল্লা আবুল কালাম সামসুদ্দিন, সিবিএ নেতা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজী মোঃ সাইফুল হক, টিএন্ডটির তৌফিকুলের সাজা হলেও এখনও তাঁরা আগের মতোই আছেন। তবে পূর্বে ধাক্কা খাওয়ার কারণে সবাই অনেক কৌশলে কর্মকা- চালান বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১/১১ পরবর্তী সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শীর্ষ দুর্নীতিবাজের তৃতীয় তালিকায় ছিলেন বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা জাফরুল হাসান। ২০০৭ সালের ৯ জুলাই যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন তিনি। ৭৯ লাখ ৬৩ হাজার ৬০৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। মামলার বিচারে তাঁর ১৩ বছর সাজা হয়। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর আইনের ফাঁকে দুদকের জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হন। বর্তমানে তিনি পিডিবির অস্থায়ী নিয়োগ, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও বদলিবাণিজ্যের সঙ্গে আগের মতো জড়িয়ে পড়েন। তাঁর দাপটে পিডিবির অনেক কর্মকর্তা অসহায় হয়ে পড়েন।
রেজিস্ট্রেশন বিভাগে নকলনবিস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন ও একই সংগঠনের সহ-সভাপতি এম এ ওয়াদুদ দুর্নীতি করার কথা স্বীকার করে ট্রুথ কমিশনের অনুকম্পা হাসিল করেন। এ দুই আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে করে নানাভাবে পূর্বের মতো দাপট খাটাচ্ছেন তাঁরা।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের রেকর্ড কিপার সালেহ উদ্দিন সেলিমের বিরুদ্ধে এমপিওভুক্তি আটক এবং ভুয়া এমপিও করে দেয়াসহ নানাবিধ দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে। দুর্নীতির অভিযোগে বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরো তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিলের পর ২০০৪ সালের ১৯ মে তাঁকে বরখাস্ত করারও সুপারিশ করা হয়। তবে তিনি তৎকালীন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তদবির করে বরখাস্ত ঠেকাতে সমর্থ হন। একই সঙ্গে আদায় করে নেন পদোন্নতি। দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়েই তিনি চতুর্থ শ্রেণীর সরকারী কর্মচারী সমিতির সভাপতি ও সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এলে তিনি সুকৌশলে সচিবালয়ের কর্মচারীদের সুসংগঠিত করে সরকারবিরোধী আন্দোলনের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ আছে। সরকারের বিশেষ একটি গোয়েন্দা সংস্থা দীর্ঘদিনের অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারা সালেহউদ্দিনের এসব তথ্য তুলে ধরে চলতি বছর মার্চ মাসে সরকারের কাছে একটি গোপন প্রতিবেদন জমা দেন। ওই প্রতিবেদনে সালেহউদ্দিনকে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ করা হয়। সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার ৩ জুলাই এক আদেশে সালেহউদ্দিনকে বরখাস্ত করে। বরখাস্ত হলেও এখনও সালেহউদ্দিনের সরকারী কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী সমন্বয় পরিষদে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। বদলি, নিয়োগ, টেন্ডারসহ নানা কর্মকা- সালেহউদ্দিনের অনুসারিরা তাঁর আদেশ-নির্দেশ অনুযায়ী চালাচ্ছেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শীর্ষ দুর্নীতিবাজের দ্বিতীয় তালিকাভুক্ত ছিলেন ডেসা শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি কাজী মোশারফ হোসেন। তখনকার সময়ে কয়েকবার তাঁকে গ্রেফতার করতে অভিযান চালায় দুর্নীতিবিরোধী টাস্কফোর্স (বর্তমানে বিলুপ্ত)। গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হলেও দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এ মামলায় ১৩ বছর সাজা হয় মোশাররফ হোসেনের। গ্রেফতারী পরোয়ানার কারণে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। সাজার বিরুদ্ধে আপীল করে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান । তারপর তিনি প্রকাশ্যে আসেন। সে সময় তাঁর চাকরি চলে যায়। চাকরি ফিরে পেতে নানা ধরনের চেষ্টা চালান তিনি। একই সঙ্গে সিবিএ নেতা হিসেবে নিয়মিত অফিসে যাতায়াত অব্যাহত ছিল তাঁর। বদলি বাণিজ্য ও টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে ক্ষমতা ও প্রভাব রয়েছে আগের মতোই।
এ ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শীর্ষ দুর্নীতিবাজের তালিকাভুক্ত ডেসকোর শওকত আলী চৌধুরী, সওজের মোল্লা আবুল কালাম সামসুদ্দিন, সিবিএ নেতা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজী মোঃ সাইফুল হক, টিএন্ডটির তৌফিকুলের সাজা হলেও এখনও তাঁরা আগের মতোই আছেন। তবে পূর্বে ধাক্কা খাওয়ার কারণে সবাই অনেক কৌশলে কর্মকা- চালান বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
No comments