পদ্মা সেতু-আবার নতুন ঋণচুক্তি করতে হবে by শওকত হোসেন
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে হলে নতুন করে আবার ঋণচুক্তি করতে হবে। আর এ জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানাতে হবে বাংলাদেশকে। বিশ্বব্যাংক গত ২৯ জুন ঋণ বাতিল করায় পুরো চুক্তিই বাতিল হয়ে গেছে। এই অবস্থায় আবার নতুন করে সব শুরু করতে হবে।
তবে সব ধরনের প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন হওয়ায় নতুন চুক্তি করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হবে না। এ জন্য বিশ্বব্যাংকের দেওয়া শর্ত নিয়ে আলোচনা শেষ করতে হবে।+
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বব্যাংককে আলোচনা শুরু করার কোনো প্রস্তাব দেয়নি। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাংক মনে করে, নতুন প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম মাত্রই দায়িত্ব নিলেন। ফলে তিনিও খানিকটা সময় নেবেন। তাই বাংলাদেশ কিছুটা সময় পাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, এর আগে ২০১১ সালের আগস্টে কম্বোডিয়ায় সব ধরনের ঋণ কর্মসূচি স্থগিত করে দিয়েছিল। এর আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছোট ছোট কিছু প্রকল্পের ঋণসহায়তা স্থগিত বা বাতিল করলেও পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্পে ঋণ বাতিল করা হয়নি। আবার ঋণ ছাড় করার আগে ঋণ বাতিল করার উদাহরণও কেউ দিতে পারেননি।
চিঠি দেবেন অর্থমন্ত্রী: অর্থ মন্ত্রণালয় এখন চিঠি লেখার কাজটি করছে। পাশাপাশি জাতীয় সংসদে দেওয়া অর্থমন্ত্রীর বিবৃতিটিও ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে। তবে এই চিঠি কবে পাঠানো হবে, তা চূড়ান্ত হয়নি।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. এস এ সামাদ গতকাল শনিবার রাতে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের বৈঠকে যোগ দিতে নিউইয়র্কে গেছেন। সেখানে বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রেসিডেন্টও থাকবেন। এই বৈঠকের কোনো এক সময়ে এস এ সামাদ পূর্বপরিচয়ের সুবাদে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করবেন। এরপর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় এখনো বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী।
বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু অর্থায়নে মূল তিনটি প্রস্তাব দেয়। এগুলো হলো: যেসব সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের ছুটি প্রদান, অভিযোগ তদন্তের জন্য দুদকের অধীনে একটি বিশেষ তদন্ত দল নিয়োগ এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত বিশ্বব্যাংকের নিয়োগকৃত একটি প্যানেলের কাছে তদন্তসংশ্লিষ্ট সব তথ্যের পূর্ণ ও পর্যাপ্ত প্রবেশাধিকারে সরকারের সম্মতি প্রদান, যাতে এই প্যানেল তদন্তের অগ্রগতি, ব্যাপকতা ও সুষ্ঠুতার ব্যাপারে উন্নয়ন-সহযোগীদের নির্দেশনা দিতে পারে।
এসব প্রস্তাব মানা অসম্মানজনক বলে সংসদে জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। তবে এখন বাংলাদেশের মনোভাব হচ্ছে, বিশ্বব্যাংক ইতিবাচক সাড়া দিলে সরকার নতুন কিছু পদক্ষেপ নেবে। তবে তার আগে বিশ্বব্যাংক থেকে আশ্বাস পেতে হবে।
এ নিয়ে বিশ্বব্যাংক সূত্র বলছে, সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব বা চিঠি দিলে তবেই আলোচনা শুরু হতে পারে। তার আগে এ নিয়ে কোনো বক্তব্য দেবে না বিশ্বব্যাংক। তবে অর্থমন্ত্রী সংসদে যে বিবৃতি দিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াশিংটন থেকে একটি বক্তব্য দেওয়া হতে পারে।
কম্বোডিয়ার পর পদ্মা: বিশ্বব্যাংক ২০১১ সালের আগস্টে কম্বোডিয়ায় সব ধরনের ঋণ কর্মসূচি স্থগিত করেছিল। এর আগে কোনো দেশের সব কর্মসূচি স্থগিতের ঘটনা ঘটেনি। আবাসন প্রকল্প করার সময় তিন হাজার দরিদ্র মানুষকে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া ছাড়া উচ্ছেদ করা হলে বিশ্বব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নেয়। কম্বোডিয়া সরকার প্রথমে বিশ্বব্যাংকের ঋণের প্রয়োজন নেই বললেও পরে দাতা সংস্থাটির শর্ত মেনে নেয়। ফলে আবার চালু হয়েছে ঋণ কর্মসূচি। গুরুত্ব ও ঋণের পরিমাণ বিচারে কম্বোডিয়ার পরে পদ্মাই বিশ্বব্যাংকের ইতিহাসে ঋণচুক্তি বাতিলের বড় ঘটনা।
বিকল্প অর্থায়নের চিন্তা: সরকার পদ্মা সেতু অর্থায়নে বিকল্প পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করছে। বিশ্বব্যাংক না হলে আইডিবি ও জাইকার সঙ্গে নতুন করে আলোচনা হবে। তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা করবে বাংলাদেশ। জাপানের সাহায্য সংস্থা জাইকার দেওয়ার কথা ৪১.৫ কোটি ডলার এবং আইডিবির ১৪ কোটি ডলার।
পাশাপাশি প্রবাসীদের জন্য বন্ড বা আন্তর্জাতিক বাজারে সভরিন বা সার্বভৌম বন্ড ছাড়ার কথাও সরকারের আলোচনায় আছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়ে বলেন, তবে সবকিছুই নির্ভর করছে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনার পরিণতির ওপর।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বব্যাংককে আলোচনা শুরু করার কোনো প্রস্তাব দেয়নি। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাংক মনে করে, নতুন প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম মাত্রই দায়িত্ব নিলেন। ফলে তিনিও খানিকটা সময় নেবেন। তাই বাংলাদেশ কিছুটা সময় পাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, এর আগে ২০১১ সালের আগস্টে কম্বোডিয়ায় সব ধরনের ঋণ কর্মসূচি স্থগিত করে দিয়েছিল। এর আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছোট ছোট কিছু প্রকল্পের ঋণসহায়তা স্থগিত বা বাতিল করলেও পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্পে ঋণ বাতিল করা হয়নি। আবার ঋণ ছাড় করার আগে ঋণ বাতিল করার উদাহরণও কেউ দিতে পারেননি।
চিঠি দেবেন অর্থমন্ত্রী: অর্থ মন্ত্রণালয় এখন চিঠি লেখার কাজটি করছে। পাশাপাশি জাতীয় সংসদে দেওয়া অর্থমন্ত্রীর বিবৃতিটিও ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে। তবে এই চিঠি কবে পাঠানো হবে, তা চূড়ান্ত হয়নি।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. এস এ সামাদ গতকাল শনিবার রাতে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের বৈঠকে যোগ দিতে নিউইয়র্কে গেছেন। সেখানে বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রেসিডেন্টও থাকবেন। এই বৈঠকের কোনো এক সময়ে এস এ সামাদ পূর্বপরিচয়ের সুবাদে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করবেন। এরপর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় এখনো বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী।
বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু অর্থায়নে মূল তিনটি প্রস্তাব দেয়। এগুলো হলো: যেসব সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের ছুটি প্রদান, অভিযোগ তদন্তের জন্য দুদকের অধীনে একটি বিশেষ তদন্ত দল নিয়োগ এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত বিশ্বব্যাংকের নিয়োগকৃত একটি প্যানেলের কাছে তদন্তসংশ্লিষ্ট সব তথ্যের পূর্ণ ও পর্যাপ্ত প্রবেশাধিকারে সরকারের সম্মতি প্রদান, যাতে এই প্যানেল তদন্তের অগ্রগতি, ব্যাপকতা ও সুষ্ঠুতার ব্যাপারে উন্নয়ন-সহযোগীদের নির্দেশনা দিতে পারে।
এসব প্রস্তাব মানা অসম্মানজনক বলে সংসদে জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। তবে এখন বাংলাদেশের মনোভাব হচ্ছে, বিশ্বব্যাংক ইতিবাচক সাড়া দিলে সরকার নতুন কিছু পদক্ষেপ নেবে। তবে তার আগে বিশ্বব্যাংক থেকে আশ্বাস পেতে হবে।
এ নিয়ে বিশ্বব্যাংক সূত্র বলছে, সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব বা চিঠি দিলে তবেই আলোচনা শুরু হতে পারে। তার আগে এ নিয়ে কোনো বক্তব্য দেবে না বিশ্বব্যাংক। তবে অর্থমন্ত্রী সংসদে যে বিবৃতি দিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াশিংটন থেকে একটি বক্তব্য দেওয়া হতে পারে।
কম্বোডিয়ার পর পদ্মা: বিশ্বব্যাংক ২০১১ সালের আগস্টে কম্বোডিয়ায় সব ধরনের ঋণ কর্মসূচি স্থগিত করেছিল। এর আগে কোনো দেশের সব কর্মসূচি স্থগিতের ঘটনা ঘটেনি। আবাসন প্রকল্প করার সময় তিন হাজার দরিদ্র মানুষকে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া ছাড়া উচ্ছেদ করা হলে বিশ্বব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নেয়। কম্বোডিয়া সরকার প্রথমে বিশ্বব্যাংকের ঋণের প্রয়োজন নেই বললেও পরে দাতা সংস্থাটির শর্ত মেনে নেয়। ফলে আবার চালু হয়েছে ঋণ কর্মসূচি। গুরুত্ব ও ঋণের পরিমাণ বিচারে কম্বোডিয়ার পরে পদ্মাই বিশ্বব্যাংকের ইতিহাসে ঋণচুক্তি বাতিলের বড় ঘটনা।
বিকল্প অর্থায়নের চিন্তা: সরকার পদ্মা সেতু অর্থায়নে বিকল্প পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করছে। বিশ্বব্যাংক না হলে আইডিবি ও জাইকার সঙ্গে নতুন করে আলোচনা হবে। তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা করবে বাংলাদেশ। জাপানের সাহায্য সংস্থা জাইকার দেওয়ার কথা ৪১.৫ কোটি ডলার এবং আইডিবির ১৪ কোটি ডলার।
পাশাপাশি প্রবাসীদের জন্য বন্ড বা আন্তর্জাতিক বাজারে সভরিন বা সার্বভৌম বন্ড ছাড়ার কথাও সরকারের আলোচনায় আছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়ে বলেন, তবে সবকিছুই নির্ভর করছে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনার পরিণতির ওপর।
No comments