নতুন ব্যান্ডদল ঝ.ও.ঢ-এর যাত্রা

দেশে প্রথমবারের মতো মিউজিশিয়ানদের নিয়ে প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নেসক্যাফ। ২০১১ সালের নম্ব^র থেকে সারাদেশে সৃজনশীল মিউজিশিয়ানদের খোঁজার উদ্যোগ নেয় এই প্রতিষ্ঠানটি। সারাদেশ থেকে ৮৪ জনকে এই প্রতিযোগিতার প্রাথমিক বাছাইয়ের জন্য নির্বাচন করা হয়।


এরপর তাদেরকে ১৪ জনের ৬টি ব্যান্ড দলে ভাগ করা হয়। এরপর বছরব্যাপী বিভিন্ন অডিশনে ৫টি রাউন্ডের মাধ্যমে ৬ জনকে সেরা মিউজিশিয়ান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। এবং এই ছয় জনকে নিয়ে ঝ.ও.ঢ নামের ব্রান্ডদল তৈরি করে নেসক্যাফ। দেড় বছরব্যাপী এই বাছাই যজ্ঞের চূড়ান্ত সমাপ্তি ঘটে এই বছরের জানুয়ারিতে। নতুন সৃষ্ট এই ব্যান্ডদল এবং তাদের ভাবনা নিয়ে কথা হয়েছিল এই দলের অন্যতম সদস্য বেস গিটারিস্ট রাকিবুল আজম রোমান্সের সঙ্গে। ঢাকার ছেলে রোমান্স ছোট সময় থেকেই ছিল মিউজিকের প্রতি আগ্রহী। মিউজিকে তাঁর যাত্রা শুরু ২০০১ সালে মামার হাত ধরে মহল্লার বন্ধুরা মিলে এর নামও দেয়া হয় ‘কেডস’। এরপর চলতে থাকে পড়াশোনার পাশাপাশি অবিরাম অনুশীলন। তখন থেকেই পরিচিতদের বিভিন্ন অনুরোধে বিভিন্ন সময় স্টেজ শো করা হতো। কথা বলতে বলতে জানা গেল মিউজিকের প্রতি তার আগ্রহ সৃষ্টির কারণ এবং নেসক্যাফের প্রতিযোগিতায় আসার ইতিহাস। রোমান্স বলেন, “ছোট সময় থেকেই আমার মিউজিকের প্রতি বিশেষ আগ্রহ ছিল। খেলাধুলা বা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা আমাকে কখনো টানতে পারেনি। আর এই আগ্রহের পেছনে আমার মামার বিশেষ অবদান রয়েছে।” এরপর ২০১১ সালে পত্রিকার মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতার তথ্য পাওয়া এবং এরপর অংশগ্রহণ। এর মাঝে মাঝে বিভিন্ন চ্যারিটিমূলক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ। জানা গেল তাদের নতুন ব্যান্ড ঝ.ও.ঢ সম্পর্কে। ছয় জন তরুণ মিউজিশিয়ানদের নিয়ে এই দল। এতে ভোকালে রয়েছে দ্বীপ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছেলে দ্বীপ। ফটোগ্রাফার বাবার অনুপ্রেরণায় মিউজিকে এবং নেসকাফের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা। ব্যক্তিগতভাবে লালন ভক্ত যদিও মডার্ন মিউজিকেও বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। এই দলটির গিটারে রয়েছেন রেজোয়ান। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রেজোয়ান ২০০৫ সালে মিউজিকে তার হাতেখড়ি। এরপর থেকে মায়ের অনুপ্রেরণা এবং বন্ধুদের উৎসাহ নেসক্যাফের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ এবং সফলতা। ড্রামে রয়েছে চট্টগ্রামের ছেলে শিশির এই দলের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র সদস্য সদ্য পড়াশোনা শেষ করলেও মিউজিকের প্রতি আগ্রহ কোন অংশে কম নয়। জানা গেল চাকরির পাশাপাশি ড্রামের অনুশীলন করে যাচ্ছে ২০০১ থেকে। বন্ধুদের অনুপ্রেরণা এবং সাধনাই তার সফলতার পেছনের শক্তি বলে জানা যায়। কী-বোর্ডে রয়েছে সোহাগ। সারাক্ষণ হাসিখুশি প্রকৃতির শান্তশিষ্ট ছেলে সোহাগ। বগুরা শহরেই যার বাড়ি। ২০০৫ সাল থেকেই মিউজিকের সঙ্গে জড়িত। একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ শেষ করে বর্তমানে এমবিএ করছে। মিউজিকের টানে বারবার পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটলেও অনুশীলন থেমে নেই। নেসকাফে আসার ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের এবং বন্ধুদের উৎসাহই বেশি কাজ করেছে। ছয় সদ্যসের এই দলের মধ্যে সবচেয়ে বয়সে ছোট প্রতিভাবান সদস্য হচ্ছে পাবলো; যিনি রাপার স্পেশালিস্ট। বরিশালের ছেলে পাবলো আগামী ২০১৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী। বাংলাদেশ বেতারে কর্মকর্তা পিসি হাওলাদারের ছেলে পাবলো। সংগীতপিয়াসু বাবার উৎ্সাহ এবং অনুপ্রেরণায় পাবলোর মিউজিকের প্রতি আগ্রহ। দীর্ঘ নয় বছর যাবত ক্লাসিকাল ইন্সটুমেন্টের অনুশীলন। নেসকাফের মতো দেশ জোড়া বড় অনুষ্ঠানে চ্যাম্পিয়ন হতে পেরে দারুণ উজ্জীবিত পাবলো। এরই মধ্যে বিভিন্ন চ্যারিটিমূলক অনুষ্ঠানে পারফম করেছেন তরুণ পাবলো।
প্রায় দুই বছর আগে থেকে বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হলেও তখন সবাইকে প্রতিযোগী ভাবলেও আজ এই ছয় জন সেরা মিউজিশিয়ান হওয়ার পর নিজেদের আর প্রতিযোগী ভাবে না এখন তারা একে অপরের বন্ধু। এরকমই বলল এই প্রতিযোগিতার অন্যতম বিজয়ী বেসে গিটারিস্ট রোমান্স। জানা গেল আগামী নবেম্ব^রে নেসক্যাফের ব্যানারে তাদের প্রথম এ্যালবাম বাজারে বের হবে। গতানুগতিক ধারার বাইরে এই এ্যালবামটিতে ভিন্নমাত্রার সাউন্ডসিস্টেমের ব্যবহার রয়েছে বলে জানা যায়। নেসক্যাফের মাধ্যমে তাদের নতুন এই ব্যান্ডদলের যাত্রা হলেও ভবিষ্যত্-এ একসাথেই তারা কাজ করতে চায়। সুমন রহমান

No comments

Powered by Blogger.