বরফ যুগের সমাপ্তি

দেখতে অনেকটা লিচুর মতো। আদতে সেটা ওক গাছের ফল। এই একটা ফলের পিছে ঘুরে ঘুরে হয়রান দেঁতো কাঠবিড়ালি স্ক্র্যাট। আইস এজ সিরিজে স্ক্র্যাট সেই অর্থে মূল গল্পে কখনোই থাকে না। কিন্তু ছবির গল্প শুরু করে দেয় সে-ই। অনেক সময়, শেষটাও স্ক্র্যাটকে দিয়েই।


ছবির শুরুতে সে সেই ওক ফলের পিছে ছুটছিল। ছবির শেষে? সেই ফলের পেছনেই!
আইস এজের তিনটা ছবি এরই মধ্যে হয়ে গেছে। এ সপ্তাহে মুক্তি পেল সিরিজের চতুর্থ ছবি আইস এজ: কন্টিনেন্টাল ড্রিফট। অ্যানিমেশন ছবির ভক্তদের জন্য এটা অনেক বড় সুখবর সন্দেহ নেই। মাদাগাস্কার সিরিজের নতুন ছবির স্বাদ জিভে লেগে থাকতে থাকতেই আইস এজ। সোনায় সোহাগা বলে ঠিক বোঝানো যাচ্ছে না। এ তো রীতিমতো হিরেতে পান্না!
চতুর্থ দফায় এসে অবশ্য পরিচালক পাল্টেছে। কার্লোস সালড্যানহার বদলে এসেছেন স্টিভ মার্টিনহো আর মাইক থার্মিয়ার। তবে মজাটা সেই আগের মতোই আছে। বরং ছবিটি যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা বলছেন, আইস এজ সিরিজের এটাই সবচেয়ে দুর্দান্ত ছবি। ম্যামথ দম্পতি ম্যানি-এলি আর তাঁদের মেয়ে পিচেস; নিঃসঙ্গ স্লথ সিড, বুড়ো বাঘ ডিয়েগোদের নিয়েই এবারের গল্পটাও।
সিরিজের প্রথম ছবি আইস এজ মুক্তি পেয়েছিল ঠিক ১০ বছর আগে। এর চার বছর পর মুক্তি পায় দ্বিতীয় ছবি দ্য মেল্টডাউন, তারও তিন বছর পর ডন অব দ্য ডাইনোসরস। ডন অব দ্য ডাইনোসরস-এর গল্পের একদম শেষে নিয়েছিল পিচেস। এবার দেখা যাবে, সেদিনের ফুটফুটে মেয়েটি এখন ১৯ বছরের ছটফটে এক দুরন্ত রূপবতী ম্যামথ! এথানের সঙ্গে যাঁর গভীর প্রণয়।
ছবির গল্পটা এবারও শুরু করে দেবে দেঁতো কাঠবিড়ালি স্ক্র্যাটই। ওক ফলটায় যেই না কামড় বসাবে, ওমনি বরফের চাঁইয়ে দেখা দেবে ফাটল। সে এক মহা ফাটল। আসলে বরফ যুগ পেরিয়ে পৃথিবী তখন সাতটি মহাদেশে ভাগ হতে শুরু করেছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে অবিচ্ছিন্ন ভূখণ্ড। ওদিকে বাড়ন্ত মেয়েকে নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় ম্যানি। মেয়েকে পইপই করে বারণ করে দিয়েছে কোনো ছেলে ছোকরার সঙ্গে না মিশতে। কিন্তু পিচেস কিছুতেই বারণ শোনে না। এ নিয়ে বাবা আর মেয়েতে ভীষণ ঝগড়া।
বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডের ভিন্ন একটা অংশে পড়ে ম্যানি আলাদা হয়ে যায় তার পরিবার থেকে। সঙ্গে অবশ্য বিশ্বস্ত বন্ধু সিড আর ডিয়েগো আছে। এলি, পিচেস আর এথানসহ প্রাণীদের আলাদা একটি অংশ চলে যায় অন্য ভূখণ্ডে। ভাসতে থাকে সবাই। এরই মধ্যে স্ক্র্যাট খুঁজে পায় ওক আকৃতির একটা মানচিত্র। সে ঠিক করে, মানচিত্র ধরে যাবে সেই ওক-ভূমিতে, যার নাম স্ক্র্যাটলান্টিস।
কিন্তু পথিমধ্যে জলদস্যু গরিলা বন্দী করে স্ক্র্যাটকে। বন্দী হয় ম্যানি ও তাঁর বন্ধুরাও। গাট ম্যানিদের প্রস্তাব দেয়, পরিবারের কথা ভুলে দস্যু বাহিনীতে যোগ দিতে। কিন্তু ম্যানির মতো পরিবার অন্তপ্রাণ আর কে আছে! এই প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। অপমানে ফুঁসতে ফুঁসতে ভয়ানক এক শাস্তির ফন্দি আঁটে গাট।
ম্যানিরা কি গাটের হাত থেকে মুক্তি পাবে? বিচ্ছিন্ন পরিবার কি আবারও মিলবে একসঙ্গে? স্ক্র্যাট কি পাবে তার স্বপ্নভূমি স্ক্র্যাটলান্টিসের দেখা? যে স্ক্র্যাটলান্টিসে ওক ফলের ছড়াছড়ি!
প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে ছবিটা দেখতেই হবে। শোনা যাচ্ছে, আইস এজ সিরিজ নাকি এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে কোনো রা কাড়েননি নির্মাতারা।
 রাজীব হাসান
হলিউড রিপোর্ট অবলম্বনে

No comments

Powered by Blogger.