জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়-সবার অংশগ্রহণে ভিসি নির্বাচন by আনু মুহাম্মদ
সর্বজনের বিশ্ববিদ্যালয় এবং সর্বজনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে যাতে তা শিক্ষার পরিবেশকে সুষ্ঠু ও স্বাধীনভাবে এগিয়ে নিতে পারে, তার জন্য ’৭৩-এর অধ্যাদেশের মাধ্যমে স্বায়ত্তশাসনের বিধিব্যবস্থা তৈরি হয়েছিল। স্বাধীনতার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী পরিচালিত হতে থাকে।
’৭৩-এর অধ্যাদেশের অভিজ্ঞতা আমাদের কাছে কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করেছে। প্রথমত, ’৭৩-এর অধ্যাদেশ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রযোজ্য হওয়া উচিত। দ্বিতীয়ত, ’৭৩-এর অধ্যাদেশের আরও গণতান্ত্রিক সম্প্রসারণ দরকার। তৃতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসন প্রকৃতপক্ষে কতটা কার্যকর হবে, সেটা আসলে নির্ভর করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ও ভূমিকার ওপর।
অভিজ্ঞতা বলছে, গত কয়েক দশকে যাঁরাই সরকারে এসেছেন, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাঁদের দলীয় নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছেন। যেখানে স্বায়ত্তশাসন নেই, সেখানে সরকারের সরাসরি আদেশ ও নিয়োগের মাধ্যমে সেই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। যেখানে স্বায়ত্তশাসন আছে সেখানে শিক্ষকদের মধ্যে সরকারি দল তৈরি করা, বিভিন্ন ধরনের নিয়োগ ও সুবিধায় আকর্ষণ তৈরি করে দল ভারী করার চেষ্টা হবে। সিনেটে সরকারে অংশীদারি দিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা, সর্বোপরি সরকারি ছাত্রসংগঠন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস ও প্রশাসনের ওপর অব্যাহত চাপ সৃষ্টি করা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি চরম আকার ধারণ করেছে। বেশ কয়েক বছর ধরে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচিত উপাচার্য নেই।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জোবায়ের হত্যার পর কয়েক মাস ধরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অনির্বাচিত উপাচার্য শরিফ এনামুল কবীর পদত্যাগ করেন। অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর ’৭৩-এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় অঙ্গীকার করে ব্যক্ত করেন। সেই অনুযায়ী ভিসি প্যানেলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক নির্বাচন হওয়ার কথা। সাবেক উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অন্যতম অভিযোগ ছিল, নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকৃত পরিস্থিতি উন্মোচন ও দোষীদের চিহ্নিত করার বিষয়টি প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু সে ক্ষেত্রে কিছু হয়নি। এরই মধ্যে ২০ জুলাই ভিসি প্যানেল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এ অবস্থায় সম্মিলিত শিক্ষক পরিষদ ভিসি প্যানেল নির্বাচনের আগে অন্য সব প্রতিনিধি নির্বাচন সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে। উপাচার্যের যুক্তি, এটা করা সময়সাপেক্ষ।
এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে আমার কথাবার্তা হয়েছে। আমার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ছিল, উপাচার্য হিসেবে তিনি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালু করাতে চান, তাহলে ২০ জুলাইয়ের প্রস্তাবিত নির্বাচন ১০ দিন পিছিয়ে দিয়ে অন্ততপক্ষে ডিন ও সিন্ডিকেট নির্বাচন করে ভিসি প্যানেল নির্বাচন দিন সবার অংশগ্রহণে ভিসি প্যানেল নির্বাচন করা হলে শুধু নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে তাই নয়, নবনির্বাচিত উপাচার্যের পদে বিশ্ববিদ্যালয় কাঙ্ক্ষিত পরিবেশের সূচনা করা সম্ভব হবে।
সরকার যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত রাখার নীতি পরিবর্তন করে, তাহলে এটা কঠিন কোনো কাজ নয়।
আনু মুহাম্মদ: শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
অভিজ্ঞতা বলছে, গত কয়েক দশকে যাঁরাই সরকারে এসেছেন, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাঁদের দলীয় নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছেন। যেখানে স্বায়ত্তশাসন নেই, সেখানে সরকারের সরাসরি আদেশ ও নিয়োগের মাধ্যমে সেই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। যেখানে স্বায়ত্তশাসন আছে সেখানে শিক্ষকদের মধ্যে সরকারি দল তৈরি করা, বিভিন্ন ধরনের নিয়োগ ও সুবিধায় আকর্ষণ তৈরি করে দল ভারী করার চেষ্টা হবে। সিনেটে সরকারে অংশীদারি দিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা, সর্বোপরি সরকারি ছাত্রসংগঠন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস ও প্রশাসনের ওপর অব্যাহত চাপ সৃষ্টি করা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি চরম আকার ধারণ করেছে। বেশ কয়েক বছর ধরে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচিত উপাচার্য নেই।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জোবায়ের হত্যার পর কয়েক মাস ধরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অনির্বাচিত উপাচার্য শরিফ এনামুল কবীর পদত্যাগ করেন। অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর ’৭৩-এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় অঙ্গীকার করে ব্যক্ত করেন। সেই অনুযায়ী ভিসি প্যানেলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক নির্বাচন হওয়ার কথা। সাবেক উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অন্যতম অভিযোগ ছিল, নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকৃত পরিস্থিতি উন্মোচন ও দোষীদের চিহ্নিত করার বিষয়টি প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু সে ক্ষেত্রে কিছু হয়নি। এরই মধ্যে ২০ জুলাই ভিসি প্যানেল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এ অবস্থায় সম্মিলিত শিক্ষক পরিষদ ভিসি প্যানেল নির্বাচনের আগে অন্য সব প্রতিনিধি নির্বাচন সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে। উপাচার্যের যুক্তি, এটা করা সময়সাপেক্ষ।
এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে আমার কথাবার্তা হয়েছে। আমার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ছিল, উপাচার্য হিসেবে তিনি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালু করাতে চান, তাহলে ২০ জুলাইয়ের প্রস্তাবিত নির্বাচন ১০ দিন পিছিয়ে দিয়ে অন্ততপক্ষে ডিন ও সিন্ডিকেট নির্বাচন করে ভিসি প্যানেল নির্বাচন দিন সবার অংশগ্রহণে ভিসি প্যানেল নির্বাচন করা হলে শুধু নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে তাই নয়, নবনির্বাচিত উপাচার্যের পদে বিশ্ববিদ্যালয় কাঙ্ক্ষিত পরিবেশের সূচনা করা সম্ভব হবে।
সরকার যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত রাখার নীতি পরিবর্তন করে, তাহলে এটা কঠিন কোনো কাজ নয়।
আনু মুহাম্মদ: শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments