জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এখনও কাটেনি আঁধার by আলী হোসাইন
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বাংলাদেশের একটি অন্যতম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে রয়েছে পড়াশোনার মনোরম পরিবেশ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সমবয়সী এই বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত ইতিহাস গৌরবোজ্জ্বল।
এখানে আছেন অনেক খ্যাতিমান শিক্ষক, যাদের জন্য আমরা সত্যিই গর্বিত। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র সুনামের সঙ্গে অন্যান্য জায়গায় তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।
আজ অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আমরা নিজেদের স্বকীয়তা হারাতে বসেছি। যার অন্যতম কারণ, শিক্ষকদের রাজনীতি। শিক্ষকদের দলাদলির মাশুল দিতে হয় সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের। এ বছরের ৯ জানুয়ারি ছাত্রলীগের এক পক্ষের হামলায় মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের মেধাবী ছাত্র জুবায়ের আহমেদ। শোকে নিমজ্জিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শুরু হয় তীব্র আন্দোলন।
সাবেক উপাচার্যের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। গুরুতর অভিযোগ হলো, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, দলীয়করণ ও বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত নিয়োগ। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করেন প্রগতিশীল শিক্ষকরা। প্রথমে তাদের দাবি-দাওয়া উপাচার্যের কাছে পেশ করেন। উপাচার্য তাদের দাবি অগ্রাহ্য করলে তারা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এক দফা আন্দোলনে যান। এর মধ্যে ছাত্রলীগ সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ হামলার কারণে আন্দোলনের নতুন মাত্রা যোগ হয়, যদিও এ ক্যাম্পাসে আগে থেকেই ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড বিতর্কিত। এসব নানামুখী আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় চার মাস অচল হয়ে পড়ে। এতে ক্যাম্পাসে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। অবশেষে নানামুখী চাপের কারণে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
সবাই মনে করেছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে; কিন্তু বর্তমান ক্যাম্পাসের অবস্থা উল্টো। সবাই ভেবেছিলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে; কিন্তু ক্যাম্পাসে আবারও অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে।
শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নাসিম আক্তার হোসাইনের একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে কিছু শিক্ষক ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেছেন, এতে শিক্ষার পরিবেশ নতুন করে ব্যাহত হচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা নতুন করে সেশনজটের আশঙ্কা করছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। শিক্ষকদের প্রধান কাজ হচ্ছে ছাত্রদের পড়ানো ও গবেষণা করা; কিন্তু আমরা আজ দেখছি, আমাদের অভিভাবক (শিক্ষক) তাদের মূল দায়িত্ব থেকে সরে এসেছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আজ চরম অরাজকতার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। ক্যাম্পাসে নতুন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন শুরু করেছেন তাদের এক কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগে। গত ক'দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কোনো বিভাগেই নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না। এসব আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে। এর শেষ কোথায় আমরা জানি না। বর্তমান উপাচার্যকে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা চাই, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সঠিক ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হোক। সব শিক্ষক ক্লাসে পাঠদানে ফিরে আসুক।
সআলী হোসাইন
শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
আজ অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আমরা নিজেদের স্বকীয়তা হারাতে বসেছি। যার অন্যতম কারণ, শিক্ষকদের রাজনীতি। শিক্ষকদের দলাদলির মাশুল দিতে হয় সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের। এ বছরের ৯ জানুয়ারি ছাত্রলীগের এক পক্ষের হামলায় মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের মেধাবী ছাত্র জুবায়ের আহমেদ। শোকে নিমজ্জিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শুরু হয় তীব্র আন্দোলন।
সাবেক উপাচার্যের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। গুরুতর অভিযোগ হলো, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, দলীয়করণ ও বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত নিয়োগ। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করেন প্রগতিশীল শিক্ষকরা। প্রথমে তাদের দাবি-দাওয়া উপাচার্যের কাছে পেশ করেন। উপাচার্য তাদের দাবি অগ্রাহ্য করলে তারা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এক দফা আন্দোলনে যান। এর মধ্যে ছাত্রলীগ সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ হামলার কারণে আন্দোলনের নতুন মাত্রা যোগ হয়, যদিও এ ক্যাম্পাসে আগে থেকেই ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড বিতর্কিত। এসব নানামুখী আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় চার মাস অচল হয়ে পড়ে। এতে ক্যাম্পাসে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। অবশেষে নানামুখী চাপের কারণে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
সবাই মনে করেছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে; কিন্তু বর্তমান ক্যাম্পাসের অবস্থা উল্টো। সবাই ভেবেছিলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে; কিন্তু ক্যাম্পাসে আবারও অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে।
শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নাসিম আক্তার হোসাইনের একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে কিছু শিক্ষক ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেছেন, এতে শিক্ষার পরিবেশ নতুন করে ব্যাহত হচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা নতুন করে সেশনজটের আশঙ্কা করছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। শিক্ষকদের প্রধান কাজ হচ্ছে ছাত্রদের পড়ানো ও গবেষণা করা; কিন্তু আমরা আজ দেখছি, আমাদের অভিভাবক (শিক্ষক) তাদের মূল দায়িত্ব থেকে সরে এসেছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আজ চরম অরাজকতার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। ক্যাম্পাসে নতুন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন শুরু করেছেন তাদের এক কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগে। গত ক'দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কোনো বিভাগেই নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না। এসব আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে। এর শেষ কোথায় আমরা জানি না। বর্তমান উপাচার্যকে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা চাই, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সঠিক ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হোক। সব শিক্ষক ক্লাসে পাঠদানে ফিরে আসুক।
সআলী হোসাইন
শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
No comments