অস্থিতিশীল বাজার-তদারকি বাড়াতে হবে
আমদানিনির্ভর বাংলাদেশের বাজারে প্রায় সব পণ্যের দামই নির্ভর করে আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর। আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো জিনিসের দাম বাড়লে সেই পণ্যের দাম এখানেও বাড়ে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম ওঠানামা করে। কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে পণ্যমূল্য কেবলই উঠতে জানে, নামতে জানে না।
আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে যাঁরা এ পণ্যটির মূল্য বাড়িয়ে থাকেন, তাঁরা দাম কমাতে সব সময়ই নারাজ। এই প্রবণতার নেপথ্য কারণ অধিক মুনাফার উদগ্র বাসনা। বাংলাদেশের বাজারে ভোজ্য তেলের ক্ষেত্রে তেমনটিই ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদে।
দেশের বাজারে ভোজ্য তেলের দাম সাধারণের আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে অনেক আগেই। বরাবরের মতোই দাম যখন বেড়েছে তখন আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দরপতনের সুফল বাংলাদেশের বাজারে পড়েনি। আমাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম টনপ্রতি প্রায় দেড় শ ডলার কমে গেছে। মাস দুয়েক আগেও বিশ্ববাজারে যে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম টনপ্রতি এক হাজার ৩০০ ডলারের বেশি ছিল, এখন তা এক হাজার ১৫০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রেতারা এর সুফল থেকে বঞ্চিত। এখানকার বাজারে ভোজ্য তেলের দাম তো কমেইনি; বরং অতিসম্প্রতি বাড়ানো হয়েছে লিটারে দুই টাকা। বাড়তি দাম ধরে রাখতে নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বাড়তি দাম ধরে রাখার অসৎ উদ্দেশ্যে একদিকে আমদানিমূল্য বেশি দেখিয়ে ঋণপত্র খোলা হচ্ছে, অন্যদিকে বাজারে সরবরাহ কমিয়ে সৃষ্টি করা হচ্ছে সংকট। ভোজ্য তেল আমদানির তথ্যেও পড়তি দামের প্রতিফলন নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তেল আমদানির ঋণপত্রে ভাড়া ও অন্যান্য খরচসহ অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের গড় দাম প্রতি লিটারে প্রায় আট টাকা বেশি দেখানো হয়েছে।
দেশের বাজারে আরেকটি নিত্যপণ্য ডিম। সস্তায় দরিদ্রের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে নির্ভর করা যেত ডিমের ওপর। এই ডিমও এখন আক্রা। চাহিদার চেয়ে উৎপাদন কমে যাওয়ায় ডিমের বাজারও ঊর্ধ্বমুখী। বাংলাদেশে ডিমের চাহিদা বছরে এক হাজার ৪৬৪ কোটি পিস। কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে বছরে মাত্র ৫৭৪ কোটি পিস। অর্থাৎ মোট চাহিদার তিন ভাগের দুই ভাগই ঘাটতি রয়েছে। ডিমের এই বিপুল ঘাটতির সুযোগ নিয়েই উৎপাদকরা অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। অথচ এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি দীর্ঘদিন ধরে আমদানির কোনো সুযোগই দেয়নি বাণিজ্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। আমদানি নীতি ২০০৯-১২-তে ডিম আমদানি নিষিদ্ধ নয়। কিন্তু আমদানি বন্ধ করে রাখার ক্ষমতা রয়েছে আমলাদের হাতে। আমদানি নীতি অনুযায়ী প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি সাপেক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ডিম আমদানি করতে হবে। ব্যবসায়ীরা বছরজুড়ে ডিম আমদানির অনুমোদন চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ধরনা দিলেও কর্মকর্তারা সে সুযোগ দেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। শেষ পর্যন্ত জুনের প্রথম দিকে কেবল ৩০ জুন পর্যন্ত ডিম আমদানি উন্মুক্ত করা হয়। এ ক্ষেত্রে জুলাই ও আগস্ট মাসে রমজানের সময় ডিমের সংকট আরো বাড়বে।
সামনে রোজা আসছে। রোজার মাসে এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। ডিম ও ভোজ্য তেল নিয়ে যে কারসাজি করে রাখা হয়েছে, তাতে এ দুটি পণ্য নিয়ে কোনো সুখবর নেই। নিত্যপণ্যের বাজার বরাবরের মতো এবারও রমজানে যাতে অস্থির হয়ে না ওঠে, সে জন্য সরকারের উচিত এখন থেকেই বাজার তদারকিতে মনোযোগ দেওয়া। তা না হলে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
দেশের বাজারে ভোজ্য তেলের দাম সাধারণের আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে অনেক আগেই। বরাবরের মতোই দাম যখন বেড়েছে তখন আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দরপতনের সুফল বাংলাদেশের বাজারে পড়েনি। আমাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম টনপ্রতি প্রায় দেড় শ ডলার কমে গেছে। মাস দুয়েক আগেও বিশ্ববাজারে যে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম টনপ্রতি এক হাজার ৩০০ ডলারের বেশি ছিল, এখন তা এক হাজার ১৫০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রেতারা এর সুফল থেকে বঞ্চিত। এখানকার বাজারে ভোজ্য তেলের দাম তো কমেইনি; বরং অতিসম্প্রতি বাড়ানো হয়েছে লিটারে দুই টাকা। বাড়তি দাম ধরে রাখতে নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বাড়তি দাম ধরে রাখার অসৎ উদ্দেশ্যে একদিকে আমদানিমূল্য বেশি দেখিয়ে ঋণপত্র খোলা হচ্ছে, অন্যদিকে বাজারে সরবরাহ কমিয়ে সৃষ্টি করা হচ্ছে সংকট। ভোজ্য তেল আমদানির তথ্যেও পড়তি দামের প্রতিফলন নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তেল আমদানির ঋণপত্রে ভাড়া ও অন্যান্য খরচসহ অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের গড় দাম প্রতি লিটারে প্রায় আট টাকা বেশি দেখানো হয়েছে।
দেশের বাজারে আরেকটি নিত্যপণ্য ডিম। সস্তায় দরিদ্রের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে নির্ভর করা যেত ডিমের ওপর। এই ডিমও এখন আক্রা। চাহিদার চেয়ে উৎপাদন কমে যাওয়ায় ডিমের বাজারও ঊর্ধ্বমুখী। বাংলাদেশে ডিমের চাহিদা বছরে এক হাজার ৪৬৪ কোটি পিস। কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে বছরে মাত্র ৫৭৪ কোটি পিস। অর্থাৎ মোট চাহিদার তিন ভাগের দুই ভাগই ঘাটতি রয়েছে। ডিমের এই বিপুল ঘাটতির সুযোগ নিয়েই উৎপাদকরা অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। অথচ এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি দীর্ঘদিন ধরে আমদানির কোনো সুযোগই দেয়নি বাণিজ্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। আমদানি নীতি ২০০৯-১২-তে ডিম আমদানি নিষিদ্ধ নয়। কিন্তু আমদানি বন্ধ করে রাখার ক্ষমতা রয়েছে আমলাদের হাতে। আমদানি নীতি অনুযায়ী প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি সাপেক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ডিম আমদানি করতে হবে। ব্যবসায়ীরা বছরজুড়ে ডিম আমদানির অনুমোদন চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ধরনা দিলেও কর্মকর্তারা সে সুযোগ দেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। শেষ পর্যন্ত জুনের প্রথম দিকে কেবল ৩০ জুন পর্যন্ত ডিম আমদানি উন্মুক্ত করা হয়। এ ক্ষেত্রে জুলাই ও আগস্ট মাসে রমজানের সময় ডিমের সংকট আরো বাড়বে।
সামনে রোজা আসছে। রোজার মাসে এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। ডিম ও ভোজ্য তেল নিয়ে যে কারসাজি করে রাখা হয়েছে, তাতে এ দুটি পণ্য নিয়ে কোনো সুখবর নেই। নিত্যপণ্যের বাজার বরাবরের মতো এবারও রমজানে যাতে অস্থির হয়ে না ওঠে, সে জন্য সরকারের উচিত এখন থেকেই বাজার তদারকিতে মনোযোগ দেওয়া। তা না হলে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
No comments