গণতন্ত্র ও সুশাসনের বিকল্প নেই-মানব উন্নয়ন সূচকে অগ্রগতি
গত ৩০ বছরে বাংলাদেশের মানব উন্নয়ন সূচক ৮১ শতাংশ বেড়েছে—এটি আমাদের জন্য এক বড় আনন্দের সংবাদ। এই সূচক বাংলাদেশের বিরাট অগ্রগতির ইঙ্গিতবাহী এবং আরও উন্নয়নের ধারায় দেশকে এগিয়ে নেওয়ার পথে নিশ্চয়ই নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টিতে সহায়ক হবে।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রকাশিত জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির ‘দ্য রিয়েল ওয়েলথ অব নেশনস: পাথওয়েস টু হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনের সবচেয়ে উৎসাহব্যঞ্জক তথ্য হচ্ছে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৪টি দেশের মধ্যে মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি অর্জনকারী দুটি দেশের একটি বাংলাদেশ। উন্নয়নধারায় অগ্রসরমাণ বিশ্বের ৯৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ তৃতীয় আর সামগ্রিক মানবসম্পদ উন্নয়নে বিশ্বের ১৬৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৯। বাংলাদেশের অগ্রগতির আরেকটি বড় সূচক হলো এই যে গত ৪০ বছরে এ দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে ২৩ বছর। পার্শ্ববর্তী ভারত, যে দেশটি অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, সেখানেও মানুষের গড় আয়ু গত ৪০ বছরে বেড়েছে মাত্র ১৬ বছর।
লক্ষ করার বিষয়, বাংলাদেশ মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে এই অগ্রগতি সাধন করেছে উপর্যুপরি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও। এ দেশের জনসাধারণের শক্তি ও সম্ভাবনার আভাস এ থেকেই পরিষ্কার হয়ে ওঠে। ইউএনডিপির বাংলাদেশ প্রতিনিধি স্টেফান প্রিয়েসনার যথার্থই বলেছেন, বড় বড় বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে স্থিতিশীল উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা বাংলাদেশের জন্য খুবই উল্লেখযোগ্য অর্জন। এটা এ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য বিরাট জাতীয় গৌরবের উৎস হতে পারে।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আয় বা অর্থনৈতিক অবস্থা, দারিদ্র্য পরিস্থিতি, নারীর অবস্থা—ইত্যাদি মৌলিক ক্ষেত্রে অগ্রগতিকে মানবসম্পদ উন্নয়নের সূচকে বিবেচনা করা হয়। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে আশির দশকের পর থেকে গত ৩০ বছরে। বিশেষভাবে লক্ষণীয় হলো, এই সময়জুড়ে এ দেশে সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাত অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিশেষত নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে বেসরকারি সংস্থাগুলো বড় ভূমিকা পালন করেছে। লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে, শিশু ও প্রসূতি মায়ের মৃত্যুহার হ্রাসে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন বলেছেন, বাংলাদেশের এই অগ্রগতি অবশ্যই উচ্ছ্বসিত হওয়ার মতো। কিন্তু বিপন্ন মানবের কল্যাণ ও স্বাধীনতার নতুন হুমকি মোকাবিলায় সহায়তা দেওয়ার পথগুলো খোলা রাখতে হবে। আমাদের মনে হয়, এটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য। বাংলাদেশের সামনে কয়েকটি বিপদ রয়েছে, যা আগামী দিনগুলোতে মোকাবিলা করতে গিয়ে আমাদের হিমশিম খেতে হবে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের নেতিবাচক ফলাফল আমাদের জন্য বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যার কিছু আলামত ইতিমধ্যেই দৃশ্যমান হয়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আড়াই কোটি উপকূলীয় মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উদ্বাস্তু হলে বা সে অঞ্চলের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে কীভাবে আমরা পরিস্থিতি সামাল দেব, সে বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। আর সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন যাতে প্রান্তিক মানুষের জীবনমান উন্নয়নেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য নিরবচ্ছিন্ন গণতন্ত্র ও সত্যিকারের ন্যায্যতাভিত্তিক সুশাসনের কোনো বিকল্প নেই।
লক্ষ করার বিষয়, বাংলাদেশ মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে এই অগ্রগতি সাধন করেছে উপর্যুপরি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও। এ দেশের জনসাধারণের শক্তি ও সম্ভাবনার আভাস এ থেকেই পরিষ্কার হয়ে ওঠে। ইউএনডিপির বাংলাদেশ প্রতিনিধি স্টেফান প্রিয়েসনার যথার্থই বলেছেন, বড় বড় বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে স্থিতিশীল উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা বাংলাদেশের জন্য খুবই উল্লেখযোগ্য অর্জন। এটা এ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য বিরাট জাতীয় গৌরবের উৎস হতে পারে।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আয় বা অর্থনৈতিক অবস্থা, দারিদ্র্য পরিস্থিতি, নারীর অবস্থা—ইত্যাদি মৌলিক ক্ষেত্রে অগ্রগতিকে মানবসম্পদ উন্নয়নের সূচকে বিবেচনা করা হয়। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে আশির দশকের পর থেকে গত ৩০ বছরে। বিশেষভাবে লক্ষণীয় হলো, এই সময়জুড়ে এ দেশে সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাত অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিশেষত নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে বেসরকারি সংস্থাগুলো বড় ভূমিকা পালন করেছে। লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে, শিশু ও প্রসূতি মায়ের মৃত্যুহার হ্রাসে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন বলেছেন, বাংলাদেশের এই অগ্রগতি অবশ্যই উচ্ছ্বসিত হওয়ার মতো। কিন্তু বিপন্ন মানবের কল্যাণ ও স্বাধীনতার নতুন হুমকি মোকাবিলায় সহায়তা দেওয়ার পথগুলো খোলা রাখতে হবে। আমাদের মনে হয়, এটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য। বাংলাদেশের সামনে কয়েকটি বিপদ রয়েছে, যা আগামী দিনগুলোতে মোকাবিলা করতে গিয়ে আমাদের হিমশিম খেতে হবে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের নেতিবাচক ফলাফল আমাদের জন্য বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যার কিছু আলামত ইতিমধ্যেই দৃশ্যমান হয়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আড়াই কোটি উপকূলীয় মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উদ্বাস্তু হলে বা সে অঞ্চলের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে কীভাবে আমরা পরিস্থিতি সামাল দেব, সে বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। আর সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন যাতে প্রান্তিক মানুষের জীবনমান উন্নয়নেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য নিরবচ্ছিন্ন গণতন্ত্র ও সত্যিকারের ন্যায্যতাভিত্তিক সুশাসনের কোনো বিকল্প নেই।
No comments