হল্যান্ড-উৎসবের রং কমলা? by সোলায়মান

চার বছর আগেও তকমাটা ছিল স্পেনের গায়ে। দল হিসেবে খুব ভালো, খেলা দেখাটাও চোখের জন্য আরামদায়ক, কিন্তু অর্জনের পাতাটা ছিল প্রায় সাদা। গত চার বছরে অবস্থাটা পাল্টেছে। স্পেন এখন একাধারে ইউরো ও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তবে তাদের জায়গাটা ফাঁকা পড়ে নেই। ফুটবল বিশ্বে সবচয়ে বড় ‘চোকার’ এখন ওলন্দাজরাই।


ইউরো বা বিশ্বকাপ যেটাই হোক না কেন, ডাচরা চিরকাল অন্যতম ফেবারিট। কিন্তু ওই পর্যন্তই, সেই ১৯৮৮ সালে জেতা একমাত্র ইউরোটা ছাড়া কিছুই জেতা হয়নি বিশ্বকাপের তিনবারের রানার্সআপদের। এবং যথারীতি এবারও ইউরোতে ফেবারিটদের অন্যতম তারা।
২০০৮ ইউরোতে গ্রুপপর্বে রীতিমতো হুলস্থুল কাণ্ড করেছিল ডাচরা। দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইতালি (৩-০) ও ফ্রান্সকে (৪-১) নিয়ে করেছিল ছেলেখেলা। যখন মনে হচ্ছিল এবার আর কেউ থামাতে পারবে না হল্যান্ডকে, তখনই ছন্দপতন। শেষ আটে রাশিয়ার কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ।
এরপর কোচ হয়ে এলেন বার্ট ফন মারউইক। চেষ্টা করলেন ঐতিহাসিক ব্যর্থতাকে বিদায় দেওয়ার। যেকোনো প্রকারে জয় পাওয়াটাকেই করলেন মূলমন্ত্র। সাফল্য প্রায় ধরাও দিয়েছিল। গত বিশ্বকাপের ফাইনালটাই তাঁর প্রমাণ। কিন্তু দেশের ফুটবল ঐতিহ্যকে বিসর্জন দেওয়ায় ইয়োহান ক্রুইফের মতো কিংবদন্তিদের তিরস্কার কম জোটেনি মারউইকের।
কিন্তু এবার যেভাবে পোল্যান্ড ও ইউক্রেনে জায়গা করে নিল হল্যান্ড, কেউ একঘেয়ে ফুটবলের অপবাদ দিতে পারবে না। ১০ ম্যাচের নয়টিতেই জেতা ডাচরাই করেছে বাছাইপর্বে সবচেয়ে বেশি ৩৭টি গোল। সবচেয়ে বড় জয়টিও তাদের। স্যান ম্যারিনোকে ধ্বংস করে পাওয়া জয়টি ছিল ১১-০ গোলের। দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়।
১২ গোল নিয়ে বাছাইপর্বের সর্বোচ্চ গোলদাতা ক্লাস-ইয়ান হান্টেলার। শালকের হয়ে বুন্দসলিগারও সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। তাঁর সঙ্গে আছেন ইংলিশ লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা রবিন ফন পার্সি। আছেন বায়ার্ন তারকা আরিয়ান রোবেন। সবমিলিয়ে ডাচদের আক্রমণভাগটাকেই টুর্নামেন্ট সেরা বলা চলে।
তবে গ্রুপ অব ডেথে জার্মানি, পর্তুগাল ও ডেনমার্কের সঙ্গী হওয়াতে কিছুটা অস্বস্তিও আছে। তার ওপর প্রস্তুতি ম্যাচগুলোর ফলও অনুকূলে যায়নি। বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষেও হারতে হয়েছে। তাই ৯ তারিখ ডেনমার্কের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটিতে যাতে পা না হড়কায় সেদিকেই দৃষ্টি কোচের।
গতবার ঘুচেছিল স্পেনের ৪৪ বছরের শিরোপা খরা। এবার কি পোল্যান্ড-ইউক্রেনে শেষ হবে ডাচদের ২৪ বছরের প্রতীক্ষার প্রহর?

চূড়ান্তপর্ব
১০ (১৯৬৪, ১৯৭৬, ১৯৮০, ১৯৮৮, ১৯৯২, ১৯৯৬, ২০০০, ২০০৪, ২০০৮, ২০১২)
সেরা পারফরম্যান্স: চ্যাম্পিয়ন (১৯৮৮), সেমিফাইনাল (১৯৭৬, ১৯৯২, ২০০৪), কোয়ার্টার ফাইনাল (১৯৯৬, ২০০৮)
বড় জয়: ৬-১, যুগোস্লাভিয়া (২০০০)
বড় পরাজয়: ১-৪, ইংল্যান্ড (১৯৯৬)
সবচেয়ে বেশি গোল: ৬, প্যাট্রিক ক্লাইভার্ট, রুড ফন নিস্টলরুয়
ইউরো রেকর্ড
ম্যাচ জয় ড্র হার স্ব./বি.
৩২ ১৭ ৮ ৭ ৫৫/৩২

No comments

Powered by Blogger.