খালি কনটেইনারের স্তূপ জমেছে বন্দর ইয়ার্ডে

চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে খালি কনটেইনারের স্তূপ জমেছে। এ কারণে বন্দর ইয়ার্ড থেকে পণ্য সরবরাহ নেওয়ার পর কনটেইনার খালি হলেও সেগুলো রাখার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। এতে কনটেইনার পরিচালন কর্মকাণ্ড ব্যাঘাত হচ্ছে।


এ পরিস্থিতিতে খালি কনটেইনার দ্রুত অপসারণের জন্য নোটিশ দিচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত সময়ে খালি কনটেইনার অপসারণ করা না হলে পড়ে থাকা কনটেইনারের ওপর স্বাভাবিকের চেয়ে চারগুণ বেশি ভাড়া আরোপ করা হবে বলে বন্দর সূত্রে জানা গেছে।
বন্দরের পরিবহন বিভাগের পরিচালক গোলাম সরওয়ার গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘খালি কনটেইনারের অপসারণ করতে আজকালের মধ্যে নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খালি কনটেইনার অপসারণ করা না হলে দণ্ডভাড়া আরোপ করা হবে।’
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বন্দরে কনটেইনার রাখার ধারণক্ষমতা এখন ৩০ হাজার ৮৮৬ একক। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রপ্তানি, খালি ও পণ্যভর্তি কনটেইনার পড়েছিল প্রায় ২৫ হাজার একক। অর্থাৎ ধারণক্ষমতার প্রায় ৮০ শতাংশ জায়গা দখল করে আছে কনটেইনার। নিয়মানুযায়ী, ধারণক্ষমতার ৭০ শতাংশের বেশি কনটেইনার পড়ে থাকলে বন্দরের কনটেইনার পরিচালন কর্মকাণ্ডের ব্যাঘাত হয়।
বন্দরে কনটেইনার রাখার ধারণক্ষমতার মধ্যে খালি কনটেইনার ইয়ার্ডের ধারণক্ষমতা চার হাজার ৫৪৫ একক। গত বুধবার খালি কনটেইনার পড়েছিল চার হাজার ১৪১ একক। গত বৃহস্পতিবার পড়েছিল চার হাজার ১৮০ একক কনটেইনার। অর্থাৎ ধারণক্ষমতার কাছাকাছি কনটেইনার পড়ে থাকায় এই ইয়ার্ডে এখন কনটেইনার ওঠানো-নামানো ও স্থানান্তর কার্যক্রমে ব্যাঘাত হচ্ছে।
বন্দর সূত্র আরও জানায়, বন্দরে কনটেইনার ব্যবস্থাপনায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু হওয়ার পর পণ্যভর্তি কনটেইনার সংরক্ষণের জন্য বাড়তি জায়গা দরকার হচ্ছে।
এ জন্য পণ্য খালাস হওয়ার পর খালি কনটেইনার বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে স্থানান্তর বা জাহাজে তুলে বিদেশে পাঠানোর জন্য শিপিং এজেন্ট ও কনটেইনার মালিকপক্ষকে বারবার বন্দর কর্তৃপক্ষ তাগাদা দিচ্ছে। গত ৩১ জানুয়ারিও খালি কনটেইনার অপসারণের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।
বন্দরে কনটেইনার ব্যবস্থাপনায় স্বয়ংক্রিয় প্রকল্পের পরিচালক খায়রুল গতকাল মোস্তফা প্রথম আলোকে জানান, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু হওয়ার পর থেকে কনটেইনার রাখার বাড়তি জায়গা প্রয়োজন হচ্ছে। কিন্তু খালি কনটেইনার বেশি পড়ে থাকায় পরিকল্পিতভাবে কনটেইনার রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির কার্যক্রম ব্যাঘাত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বন্দরে কনটেইনার রাখার তিন স্তরের ভাড়া রয়েছে। সময়ভেদে ২০ ফুট দীর্ঘ খালি কনটেইনার রাখার জন্য প্রতিদিন ছয় ডলার, ১২ ডলার এবং ২৪ ডলার হারে ভাড়া নির্ধারণ করা আছে। খালি কনটেইনার অপসারণের জন্য স্তরভেদে এই স্বাভাবিক ভাড়ার ওপর চারগুণ হারে ভাড়া আরোপ করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.