এ সপ্তাহের বিজ্ঞানী-ক্যারোলাস লিনিয়াস
গত ২৩ মে ছিল তাঁর জন্মদিন। ভুলে যাওয়ারই কথা। তিনি তো নিউটন বা ডারউইনের সমতুল্য কেউ নন, আঠারো শতকের এক প্রকৃতি বিজ্ঞানী মাত্র। জীববিদ্যার ছাত্ররা অবশ্য মাঝেমধ্যে তাঁকে স্মরণ করে ‘স্বাভাবিক শ্রেণীবিন্যাস তত্ত্ব’র জন্য। সুইডিশ ক্যারোলাস লিনিয়াসই প্রথম জীবজগৎকে উদ্ভিদ ও প্রাণিকুলে শ্রেণীভাগ করেন।
এই অর্থে তিনি হলেন জীবজগৎ শৃঙ্খলাবদ্ধ করার প্রথম প্রবক্তা।লিনিয়াস উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতিগুলোর নামকরণের নৈরাজ্য দূর করে দ্বিপদী নামকরণ চালু করেন। তাঁর প্রবর্তিত নামকরণের আগে বিভিন্ন প্রজাতির বৈজ্ঞানিক নাম ছিল অনেক দীর্ঘ। লিনিয়াস মানুষ প্রজাতির নাম রাখেন হোমো স্যাপিয়েন্স। বানিয়েছি জ্ঞানী জীব। আসলে লিনিয়াস ভিন্নার্থে এটি ব্যবহার করেছিলেন—হোমো স্যাপিয়েন্স হলো—হোমো ‘নসে তে ইপসাম’ অর্থাৎ ম্যান নো দাইসেলফ—আত্মানং বিধ্বি, মানুষ নিজেকে জানো। গভীরতর অর্থবহ এই অভিধা। আমাদের আগেও মানুষ ছিল হোমো ইরেকটাস, হোমো হ্যাবিলিস, হোমো নিয়ানডারথেলেনসিস ইত্যাদি। তারা লোপ পেয়ে গেছে। আমরা লিনিয়ানকৃত মনুষ্যপ্রজাতির নামের মর্মার্থ বুঝতে পারলে জীবজগতে নিজেদের সঠিক অবস্থান ও দায়বদ্ধতা উপলব্ধি করতে পারতাম। তাতে আমাদের ও জীবকুলের নিরাপত্তা বাড়ত, আমরাও কর্তৃত্বপরায়ণ ও নৃকেন্দ্রিক হয়ে উঠতাম না।
সাত হাজার ৭০০ প্রজাতির উদ্ভিদ ও চার হাজার ৪০০ প্রাণীর নামকরণ ছাড়াও তিনি স্পিসিস প্লান্টারাম (১৭৫৩), জেনেরা প্লান্টারাম (১৭৫৪) ও সিস্টেমা ন্যাচারই (১৭৫৮) বইয়ের লেখক। প্রথম দুটি উদ্ভিদ ও তৃতীয়টি প্রাণীর শ্রেণীবিন্যাস ও নামকরণবিষয়ক এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আধুনিক বিবর্তন-প্রভাবিত নতুন নতুন শ্রেণীবিন্যাস পদ্ধতির দ্বারা লিনিয়াসের যৌন শ্রেণীবিন্যাস প্রতিস্থাপিত হলেও তাঁর নামকরণের নিয়ম এবং ক্রিয়াপদবর্জিত বর্ণনা পদ্ধতি আজও চালু আছে।
ক্যারোলাস লিনিয়াসের জন্ম ১৭০৭ সালে সুইডেনের স্মেলেন প্রদেশের র্যাশাল গ্রামে। পিতা নিলস লিনিয়াস গির্জার পাদরি। মা-বাবা চেয়েছেন তিনিও যাজক হবেন, কিন্তু হলেন চিকিৎসক। খনিজ, উদ্ভিদ নিয়ে লেখালেখি করে পরিচিতি লাভ করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে আপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা শাস্ত্রে অধ্যাপক নিযুক্ত হন। এ ছাড়া ও তিনি চিকিৎসাবিদ্যার ছাত্রদের উদ্ভিদবিদ্যা পড়ান। উদ্ভিদবিদ হিসেবে এখানেই অর্জন করেন বিশ্বখ্যাতি। তিনি ১৭৭৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন। কবরের নামফলকে শেষ ইচ্ছানুসারে লিনিয়াসের নামের পাশে হোমো স্যাপিয়েন্স শব্দটি যুক্ত হয়েছে।
শিল্পসভ্যতার আগ্রাসনে বনভূমি যেখানে বিরান ভূমি, দূরদর্শনের সম্মোহিত শক্তির কাছে মানুষের অফুরান সৃজনী সময় যখন অপব্যয়িত, আধুনিক সব শ্রেণীবিন্যাসে যখন লিনিয়াসের যৌন শ্রেণীবিন্যাসের প্রতিস্থাপিত লিনিয়াস নামটি অপসৃতপ্রায়, তখনো লিনিয়াস সুইডেনবাসীর কাছে জাতীয় বীর। লিনিয়াসকে ভুলে যাওয়া জীববিজ্ঞানীর কাছে অপরাধতুল্য।
সুধীর কুমার দত্ত
সাত হাজার ৭০০ প্রজাতির উদ্ভিদ ও চার হাজার ৪০০ প্রাণীর নামকরণ ছাড়াও তিনি স্পিসিস প্লান্টারাম (১৭৫৩), জেনেরা প্লান্টারাম (১৭৫৪) ও সিস্টেমা ন্যাচারই (১৭৫৮) বইয়ের লেখক। প্রথম দুটি উদ্ভিদ ও তৃতীয়টি প্রাণীর শ্রেণীবিন্যাস ও নামকরণবিষয়ক এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আধুনিক বিবর্তন-প্রভাবিত নতুন নতুন শ্রেণীবিন্যাস পদ্ধতির দ্বারা লিনিয়াসের যৌন শ্রেণীবিন্যাস প্রতিস্থাপিত হলেও তাঁর নামকরণের নিয়ম এবং ক্রিয়াপদবর্জিত বর্ণনা পদ্ধতি আজও চালু আছে।
ক্যারোলাস লিনিয়াসের জন্ম ১৭০৭ সালে সুইডেনের স্মেলেন প্রদেশের র্যাশাল গ্রামে। পিতা নিলস লিনিয়াস গির্জার পাদরি। মা-বাবা চেয়েছেন তিনিও যাজক হবেন, কিন্তু হলেন চিকিৎসক। খনিজ, উদ্ভিদ নিয়ে লেখালেখি করে পরিচিতি লাভ করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে আপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা শাস্ত্রে অধ্যাপক নিযুক্ত হন। এ ছাড়া ও তিনি চিকিৎসাবিদ্যার ছাত্রদের উদ্ভিদবিদ্যা পড়ান। উদ্ভিদবিদ হিসেবে এখানেই অর্জন করেন বিশ্বখ্যাতি। তিনি ১৭৭৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন। কবরের নামফলকে শেষ ইচ্ছানুসারে লিনিয়াসের নামের পাশে হোমো স্যাপিয়েন্স শব্দটি যুক্ত হয়েছে।
শিল্পসভ্যতার আগ্রাসনে বনভূমি যেখানে বিরান ভূমি, দূরদর্শনের সম্মোহিত শক্তির কাছে মানুষের অফুরান সৃজনী সময় যখন অপব্যয়িত, আধুনিক সব শ্রেণীবিন্যাসে যখন লিনিয়াসের যৌন শ্রেণীবিন্যাসের প্রতিস্থাপিত লিনিয়াস নামটি অপসৃতপ্রায়, তখনো লিনিয়াস সুইডেনবাসীর কাছে জাতীয় বীর। লিনিয়াসকে ভুলে যাওয়া জীববিজ্ঞানীর কাছে অপরাধতুল্য।
সুধীর কুমার দত্ত
No comments