লিবিয়ায় হস্তক্ষেপ, অতঃপর-
অবশেষে লিবিয়ায় গাদ্দাফি বাহিনীর ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়ে গেছে। শনিবার মধ্যরাতে শুরু হওয়া এ হামলায় ফ্রান্সের ১৮টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়। গতকাল যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র শক্তিগুলোও আক্রমণ শুরু করে।
লিবিয়ার বিমান বাহিনী ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে ১১২টি টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয় বলে জানা গেছে। এই হামলার উদ্দেশ্য লিবিয়ার যুদ্ধবিমানগুলো যেন আকাশে উড়তে না পারে। এর আগে গত শুক্রবার জাতিসংঘ লিবিয়ায় 'নো ফ্লাই জোন' ঘোষণা করে এবং গাদ্দাফিবিরোধীদের ওপর সামরিক হামলা না চালানোর আহ্বান জানায়। জাতিসংঘের দীর্ঘ বৈঠকে উপস্থিত আরব লীগ নেতারাও এই প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানান। কিন্তু গাদ্দাফি বাহিনী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে, এমনকি নিজের দেওয়া যুদ্ধবিরতির ঘোষণা উপেক্ষা করে বেনগাজিতে বিদ্রোহীদের ট্যাংক নিয়ে হামলা চালালে শনিবার রাতেই গাদ্দাফি বাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য এ হামলা
শুরু হয়।
প্রায় চার দশক ধরে লিবিয়ার ক্ষমতায় থাকা স্বৈরশাসক গাদ্দাফির ক্ষমতা ছাড়ার দাবিতে লিবিয়ার জনগণ মাসাধিককাল ধরে ব্যাপক আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। প্রথমে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালায় তারা। কিন্তু গাদ্দাফির বাহিনী ও অনুগতদের গুলিতে বহু বিক্ষোভকারী নিহত হয়। এরপর বিক্ষোভকারীরাও অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। তারা বেশ কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এর পরই শুরু হয় ব্যাপক সামরিক অভিযান। বিমান থেকে বোমাবর্ষণও করা হয়। বাংলাদেশিসহ লিবিয়ায় থাকা বিদেশিরা যে যেভাবে পেরেছে, প্রাণ নিয়ে পালিয়েছে। অনেক বিদেশিও গাদ্দাফি বাহিনীর আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছে। বিশ্ব নেতারা গাদ্দাফিকে অবিলম্বে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার এবং গণহত্যা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু গাদ্দাফি কোনো কিছুতেই কর্ণপাত করেননি। তিনি শক্তি দিয়ে নিজের পতন ঠেকাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। এমতাবস্থায় বিদ্রোহী নেতারাও গাদ্দাফি বাহিনীর বর্বরোচিত এ হামলা বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সে ক্ষেত্রে জাতিসংঘের নেতৃত্বে এমন একটি উদ্যোগ অনেক বেশি প্রত্যাশিত হয়ে পড়েছিল।
কিন্তু যতদূর জানা যাচ্ছে, গাদ্দাফি এত সহজে দমার পাত্র নন। এর আগে তিনি ঘোষণাও দিয়েছেন, বিদেশি হস্তক্ষেপ হলে তাঁর অনুগত একজন মানুষ জীবিত থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি এমন হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করা হয়েছিল যে বিদেশি হস্তক্ষেপ হলে লিবিয়ার পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। এখন দেখার পালা, গাদ্দাফির সেই 'ভয়াবহ পরিস্থিতি' এখন কোনদিকে মোড় নেয়। স্বাভাবিকভাবেই তা হবে, বিদেশিদের জিম্মি করা এবং গণহত্যার মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া। তার সেই ভয়াবহতাকে কি দ্রুত রুখে দিতে পারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। আরব দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্দান লিবিয়া অভিযানে ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছে। আরব বিশ্বের আরো কয়েকটি দেশও অভিযানে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছে। তবে বেশ কিছু আরব দেশেই এখন এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। কাজেই তাদের পক্ষে নিজেদের পরিস্থিতি সামাল দিয়ে এখানে ব্যাপক অংশগ্রহণের সম্ভাবনা খুবই কম। তার পরও তাদের নৈতিক সমর্থনও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আরব লীগের অস্বীকৃতি থাকলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষে লিবিয়ায় হামলা চালানো বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের মধ্যে বিরূপ মনোভাবের জন্ম দিতে পারত। কিন্তু সে সম্ভাবনা এখন খুবই ক্ষীণ।
যাহোক, আমরা যেমন গাদ্দাফি বাহিনীর গণহত্যাকে সমর্থন করতে পারি না, তেমনি পশ্চিমা শক্তিগুলোরও দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতি কিংবা দেশটিকে দখল করে নেওয়ার মতো কোনো পদক্ষেপ প্রত্যাশা করি না। আপাতত গাদ্দাফি বাহিনীর আক্রমণাত্মক ভূমিকা প্রতিহত করার জাতিসংঘ যে পদক্ষেপ নিয়েছে তার যথাযথ বাস্তবায়ন দেখতে চাই। একই সঙ্গে বলতে চাই, লিবিয়ার জনগণই দেশটির ভাগ্য নির্ধারণ করুক। অন্য কোনো অশুভ শক্তি যেন তাদের ফায়দা হাসিল করতে না পারে সেদিকেও জাতিসংঘের দৃষ্টি রাখতে হবে।
শুরু হয়।
প্রায় চার দশক ধরে লিবিয়ার ক্ষমতায় থাকা স্বৈরশাসক গাদ্দাফির ক্ষমতা ছাড়ার দাবিতে লিবিয়ার জনগণ মাসাধিককাল ধরে ব্যাপক আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। প্রথমে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালায় তারা। কিন্তু গাদ্দাফির বাহিনী ও অনুগতদের গুলিতে বহু বিক্ষোভকারী নিহত হয়। এরপর বিক্ষোভকারীরাও অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। তারা বেশ কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এর পরই শুরু হয় ব্যাপক সামরিক অভিযান। বিমান থেকে বোমাবর্ষণও করা হয়। বাংলাদেশিসহ লিবিয়ায় থাকা বিদেশিরা যে যেভাবে পেরেছে, প্রাণ নিয়ে পালিয়েছে। অনেক বিদেশিও গাদ্দাফি বাহিনীর আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছে। বিশ্ব নেতারা গাদ্দাফিকে অবিলম্বে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার এবং গণহত্যা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু গাদ্দাফি কোনো কিছুতেই কর্ণপাত করেননি। তিনি শক্তি দিয়ে নিজের পতন ঠেকাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। এমতাবস্থায় বিদ্রোহী নেতারাও গাদ্দাফি বাহিনীর বর্বরোচিত এ হামলা বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সে ক্ষেত্রে জাতিসংঘের নেতৃত্বে এমন একটি উদ্যোগ অনেক বেশি প্রত্যাশিত হয়ে পড়েছিল।
কিন্তু যতদূর জানা যাচ্ছে, গাদ্দাফি এত সহজে দমার পাত্র নন। এর আগে তিনি ঘোষণাও দিয়েছেন, বিদেশি হস্তক্ষেপ হলে তাঁর অনুগত একজন মানুষ জীবিত থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি এমন হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করা হয়েছিল যে বিদেশি হস্তক্ষেপ হলে লিবিয়ার পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। এখন দেখার পালা, গাদ্দাফির সেই 'ভয়াবহ পরিস্থিতি' এখন কোনদিকে মোড় নেয়। স্বাভাবিকভাবেই তা হবে, বিদেশিদের জিম্মি করা এবং গণহত্যার মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া। তার সেই ভয়াবহতাকে কি দ্রুত রুখে দিতে পারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। আরব দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্দান লিবিয়া অভিযানে ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছে। আরব বিশ্বের আরো কয়েকটি দেশও অভিযানে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছে। তবে বেশ কিছু আরব দেশেই এখন এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। কাজেই তাদের পক্ষে নিজেদের পরিস্থিতি সামাল দিয়ে এখানে ব্যাপক অংশগ্রহণের সম্ভাবনা খুবই কম। তার পরও তাদের নৈতিক সমর্থনও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আরব লীগের অস্বীকৃতি থাকলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষে লিবিয়ায় হামলা চালানো বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের মধ্যে বিরূপ মনোভাবের জন্ম দিতে পারত। কিন্তু সে সম্ভাবনা এখন খুবই ক্ষীণ।
যাহোক, আমরা যেমন গাদ্দাফি বাহিনীর গণহত্যাকে সমর্থন করতে পারি না, তেমনি পশ্চিমা শক্তিগুলোরও দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতি কিংবা দেশটিকে দখল করে নেওয়ার মতো কোনো পদক্ষেপ প্রত্যাশা করি না। আপাতত গাদ্দাফি বাহিনীর আক্রমণাত্মক ভূমিকা প্রতিহত করার জাতিসংঘ যে পদক্ষেপ নিয়েছে তার যথাযথ বাস্তবায়ন দেখতে চাই। একই সঙ্গে বলতে চাই, লিবিয়ার জনগণই দেশটির ভাগ্য নির্ধারণ করুক। অন্য কোনো অশুভ শক্তি যেন তাদের ফায়দা হাসিল করতে না পারে সেদিকেও জাতিসংঘের দৃষ্টি রাখতে হবে।
No comments