বিশ্বব্যাপী রথযাত্রা by রবিন কুমার সাহা
পৃথিবীতে সবচেয়ে ব্যাপক, সবচেয়ে জনবহুল, সবচেয়ে বৃহৎ, মহামিলনমেলার আনন্দ, যে ভক্তিমূলক ঐতিহ্যবাহী আকর্ষণীয় মহোৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে, সেই মহোৎসবটি হলো শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। ব্রহ্মা ও বৈকুণ্ঠ উভয় জগতের সর্বারাধ্য প্রভু জগন্নাথ শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে রথযাত্রা অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়।
হাজার হাজার বছর আগে থেকেই ভারতের শ্রীজগন্নাথপুরী ধামে এই রথযাত্রা মহোৎসবের প্রচলন হয়। বাংলাদেশেও অতি প্রাচীনকাল থেকে ঢাকার ধামরাই, কুমিল্লার জগন্নাথপুর ও কিশোরগঞ্জের আচমিতাতে রথযাত্রা উদযাপিত হয়ে আসছে।
কিন্তু সারা জগতে জগন্নাথ দেবের জগৎ কল্যাণকর রথযাত্রা মহোৎসব প্রচার করলেন আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইস্কন) প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ। জগতের প্রভু জগন্নাথের এই মহোৎসব আনে সর্বদেশের সর্ববিচিত্র অধিবাসীর অন্তঃকরণে এক নিদারুণ ঐক্য, মিলনমেলার মহাআনন্দ ও জীবনের উৎফুল্লতা। শ্রীল প্রভুপাদ প্রতিষ্ঠিত ইস্কনের কল্যাণে আজ সারা পৃথিবীতে এই রথযাত্রা মহোৎসব পালিত হচ্ছে।
ভারতের বাইরে শ্রীল প্রভুপাদ সর্বপ্রথম রথযাত্রা অনুষ্ঠানের প্রচলন করেন আমেরিকার সানফ্রান্সিস্কোতে। সেটা ছিল ১৯৬৭ সালের ২৫ জুলাই। তারপর ১৯৭২ সালে লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো পালিত হয়। সেখানে একটি স্তম্ভ রয়েছে। তাকে বলা হয় নেলসন কলাম। আর তখনকার রথটি এত উঁচু ছিল যে, দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা তার সমালোচনা করে লিখেছিল, 'এই রথযাত্রা নেলসন কলামের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে।' এরপর থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস, প্যারিস, রোম, সিডনি, ফিলাডেলফিয়া, ভ্যাঙ্কুভার, টরন্টো, মেক্সিকো, জুরিখ, মেলবোর্ন_ এমনকি ইরাকেও প্রতি বছর পালিত হচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, নতুন নতুন স্থানে ইস্কনের পরিচালনায় পৃথিবীর ছোট-বড় বিভিন্ন স্থানে শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব ছড়িয়ে পড়ছে।
রথযাত্রা আজ শুধু ভারতের হিন্দুদের উৎসব নয়; শ্রীজগন্নাথ দেব সবার। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে ১৯৭৮ সালে বিধিবদ্ধভাবে ইস্কনের প্রচার কার্যক্রম শুরু হয়। আর ১৯৯৬ সাল থেকে ইস্কন স্বামীবাগের উদ্যোগে ঢাকা মহানগরীতে রথযাত্রা উৎসব বৃহত্তর পরিসরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এটি আজ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা মিলনমেলা।
শুধু ঢাকাতেই নয়, এখন চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, যশোর, বরিশাল, রংপুর, ফরিদপুর, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ থেকে শুরু করে প্রায় ৫০টি শহরে ইস্কনের পরিচালনায় সাড়ম্বরে রথযাত্রা উৎসব প্রতি বছর পালিত হচ্ছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এই রথযাত্রা উৎসব এখন মহীরূপ ধারণ করেছে।
কলিযুগের পৃথিবীতে সব স্থানেই কলহ, দ্বন্দ্ব, অশান্তি লক্ষ্য করা যায়। রথযাত্রার মাহাত্ম্যে বলা হয়েছে, 'প্রভু জগন্নাথ রথে চড়ে যে যে স্থান দর্শন করেন, সেই সেই স্থান স্বর্গের মতো সুন্দর স্থানে পরিণত হয়।'
কলিযুগের মানুষ আমরা স্বভাবতই মন্দবুদ্ধি। আমাদের মধ্যে সৎ গুণ প্রকাশিত হয় না। কিন্তু আমরাও তো সৎ হতে চাই। রথযাত্রার মাহাত্ম্যে বলা হয়েছে, 'কৌতূহলবশত রথের উপরে জগন্নাথকে দর্শন করলে চণ্ডাল প্রভৃতি লোকও দেব গুণসম্পন্ন হতে পারে।'
পতিতপাবন শ্রীজগন্নাথ, ভক্তিবলদাতা শ্রীবলরাম, অশুভ মানসিকতা থেকে আমাদের রক্ষয়িত্রী শ্রীসুভদ্রাদেবী এবং ভক্তিবিঘ্ন অমঙ্গল বিনাশকারী শ্রীসুদর্শন, যারা রথোপরি উপবিষ্ট হয়ে সবাইকে দর্শন দান করছেন, তাদের রাতুল পাদপদ্মে অনন্ত কোটি প্রণাম জানাই। প্রার্থনা করি, হে প্রভু জগন্নাথ, আমাদের জীবন ধন্য করুন; সবার জীবন আনন্দে পরিপূর্ণ করুন।
কিন্তু সারা জগতে জগন্নাথ দেবের জগৎ কল্যাণকর রথযাত্রা মহোৎসব প্রচার করলেন আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইস্কন) প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ। জগতের প্রভু জগন্নাথের এই মহোৎসব আনে সর্বদেশের সর্ববিচিত্র অধিবাসীর অন্তঃকরণে এক নিদারুণ ঐক্য, মিলনমেলার মহাআনন্দ ও জীবনের উৎফুল্লতা। শ্রীল প্রভুপাদ প্রতিষ্ঠিত ইস্কনের কল্যাণে আজ সারা পৃথিবীতে এই রথযাত্রা মহোৎসব পালিত হচ্ছে।
ভারতের বাইরে শ্রীল প্রভুপাদ সর্বপ্রথম রথযাত্রা অনুষ্ঠানের প্রচলন করেন আমেরিকার সানফ্রান্সিস্কোতে। সেটা ছিল ১৯৬৭ সালের ২৫ জুলাই। তারপর ১৯৭২ সালে লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো পালিত হয়। সেখানে একটি স্তম্ভ রয়েছে। তাকে বলা হয় নেলসন কলাম। আর তখনকার রথটি এত উঁচু ছিল যে, দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা তার সমালোচনা করে লিখেছিল, 'এই রথযাত্রা নেলসন কলামের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে।' এরপর থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস, প্যারিস, রোম, সিডনি, ফিলাডেলফিয়া, ভ্যাঙ্কুভার, টরন্টো, মেক্সিকো, জুরিখ, মেলবোর্ন_ এমনকি ইরাকেও প্রতি বছর পালিত হচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, নতুন নতুন স্থানে ইস্কনের পরিচালনায় পৃথিবীর ছোট-বড় বিভিন্ন স্থানে শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব ছড়িয়ে পড়ছে।
রথযাত্রা আজ শুধু ভারতের হিন্দুদের উৎসব নয়; শ্রীজগন্নাথ দেব সবার। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে ১৯৭৮ সালে বিধিবদ্ধভাবে ইস্কনের প্রচার কার্যক্রম শুরু হয়। আর ১৯৯৬ সাল থেকে ইস্কন স্বামীবাগের উদ্যোগে ঢাকা মহানগরীতে রথযাত্রা উৎসব বৃহত্তর পরিসরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এটি আজ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা মিলনমেলা।
শুধু ঢাকাতেই নয়, এখন চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, যশোর, বরিশাল, রংপুর, ফরিদপুর, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ থেকে শুরু করে প্রায় ৫০টি শহরে ইস্কনের পরিচালনায় সাড়ম্বরে রথযাত্রা উৎসব প্রতি বছর পালিত হচ্ছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এই রথযাত্রা উৎসব এখন মহীরূপ ধারণ করেছে।
কলিযুগের পৃথিবীতে সব স্থানেই কলহ, দ্বন্দ্ব, অশান্তি লক্ষ্য করা যায়। রথযাত্রার মাহাত্ম্যে বলা হয়েছে, 'প্রভু জগন্নাথ রথে চড়ে যে যে স্থান দর্শন করেন, সেই সেই স্থান স্বর্গের মতো সুন্দর স্থানে পরিণত হয়।'
কলিযুগের মানুষ আমরা স্বভাবতই মন্দবুদ্ধি। আমাদের মধ্যে সৎ গুণ প্রকাশিত হয় না। কিন্তু আমরাও তো সৎ হতে চাই। রথযাত্রার মাহাত্ম্যে বলা হয়েছে, 'কৌতূহলবশত রথের উপরে জগন্নাথকে দর্শন করলে চণ্ডাল প্রভৃতি লোকও দেব গুণসম্পন্ন হতে পারে।'
পতিতপাবন শ্রীজগন্নাথ, ভক্তিবলদাতা শ্রীবলরাম, অশুভ মানসিকতা থেকে আমাদের রক্ষয়িত্রী শ্রীসুভদ্রাদেবী এবং ভক্তিবিঘ্ন অমঙ্গল বিনাশকারী শ্রীসুদর্শন, যারা রথোপরি উপবিষ্ট হয়ে সবাইকে দর্শন দান করছেন, তাদের রাতুল পাদপদ্মে অনন্ত কোটি প্রণাম জানাই। প্রার্থনা করি, হে প্রভু জগন্নাথ, আমাদের জীবন ধন্য করুন; সবার জীবন আনন্দে পরিপূর্ণ করুন।
No comments