ব্যাংক ঋণে ঘুষ-কৃষক তাহলে যাবে কোথায়?

কৃষিকাজে কৃষককে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার জন্যই কৃষিঋণের প্রবর্তন করা হয়েছে। সে ঋণ পেতেই যদি কৃষকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয় তবে তা খুবই দুঃখজনক। রোববার সমকালের লোকালয় পাতায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, জামালপুরের মেলান্দহে কৃষি ব্যাংকের শাখায় কৃষিঋণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।


দালাল ছাড়া ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া যায় না। দালালের মাধ্যমে অগ্রিম ঘুষ প্রদান করলেই কেবল ঋণের অনুমোদন মেলে। কৃষকরা এমনিতেই তদবির ও প্রয়োজনে অভিযোগ করার সুযোগ কম পান। ঋণের জন্য কৃষি ব্যাংকে গেলে তাদের নানা ধরনের জটিলতার মুখে পড়তে হয়। ব্যাংক কর্তৃক ঠিক করা নানা জটিল কাজ শেষেই তারা ঋণ পান। ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কথার সামনে পাল্টা কোনো কথা বলতে ভয় পান তারা। তার ওপর যদি ঋণ পেতে ঘুষ প্রদান করতে হয় তবে তা 'মড়ার উপর খঁাঁড়ার ঘা'। আমরা মনে করি, কৃষি ব্যাংকগুলোতে কৃষকের সহজগম্যতা নিশ্চিত করা জরুরি। মনে রাখা জরুরি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ১৯৭৩ সালের যে প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাতে স্পষ্টভাবেই কৃষকের স্বার্থ-সুবিধা দেখার কথা স্বীকার করা হয়েছে। কৃষি ব্যাংক শতভাগ সরকারি ব্যাংক। এর ভোক্তাশ্রেণী কৃষক, যারা আমাদের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। সুতরাং কৃষকের সুবিধা, চাওয়া-পাওয়াকে উপেক্ষা করে কৃষি ব্যাংকের কোনো শাখাই পরিচালিত হতে পারে না। কৃষকরা যাতে তাদের প্রত্যাশিত সেবাগুলো সহজভাবে পান সেটি নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি কৃষি ব্যাংকের কোনো শাখা যাতে কৃষিঋণের জন্য কৃষকদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ না করে তারও নিশ্চয়তা দরকার। ঋণের জন্য জমা দেওয়া কাগজপত্র কোনো ধরনের মূল্যায়ন ছাড়াই মাসের পর মাস ফাইলবন্দি হয়ে থাকলে তা কৃষকের অধিকারকে কোনোভাবেই প্রতিফলিত করে না। কোনো শাখার কর্মকর্তা যদি এ ধরনের হীন কাজে জড়িত থাকেন তবে সেসব কর্মকর্তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। নিয়মনীতি মেনে স্বচ্ছতার সঙ্গে যেন কৃষিঋণ প্রদান করা হয় তাও নিশ্চিত করতে হবে।
 

No comments

Powered by Blogger.