ধর্ষণের পর পপিকে হত্যা করা হয় নির্মমভাবে by এস এম আজাদ
বখাটে রিপন প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১৪ বছরের কিশোরী পপি আক্তারকে। আর সম্পর্কের শুরুতেই প্রেমিকের চরিত্র উন্মোচিত হয়েছিল কিশোরীর কাছে। তাই তাকে এড়িয়েও চলছিল সে। কিন্তু রিপন ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা পপির পিছু ছাড়ছিল না।
বোনের বাসা থেকে নিজের বাসায় ফেরার পথে তাকে রিকশা থেকে নামিয়ে জোর করে একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায় ওই চক্রটি। ধর্ষণের পর রিপন নিজেই সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দেয় পপিকে। সেখানে আটজন রাতভর ধর্ষণ করে এই কিশোরীকে। এরপর হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তার মুখ থেঁতলে দেওয়া হয়। পাষণ্ড ধর্ষকরা ধারালো অস্ত্র দিয়েও জখম করে পপির মুখমণ্ডল। শ্বাসরোধ করে হত্যার পর হত্যাকারীরা হাত-পা বেঁধে ঝুট কাপড়ের বস্তায় ভরে পপির লাশ। এরপর ফেলে দেয় ঘটনাস্থলের কিছু দূরে ড্রেনের পাশের রাস্তায়। পুলিশ বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এমন পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর মিরপুরে। গত রবিবার ১০ নম্বর সেকশনের 'সি' ব্লক থেকে হতভাগ্য মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্বজনরা তাকে শনাক্ত করে ধর্ষক রিপনসহ অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে। এরপর রিপনসহ চার আসামি গ্রেপ্তার হয়। আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। তবে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামিকে বাঁচানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
নিহতের স্বজনরা বলছে, পুলিশ সোর্সের মাধ্যমে সমঝোতা করে রিপনকে মামলা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে মিরপুর থানার পুলিশ। আগের একটি হত্যা মামলার আসামি এবং রিপনের সহযোগী রানাকে পপির প্রেমিক সাজিয়ে মামলার প্রধান আসামি বানানোর চেষ্টাও করা হচ্ছে। দরিদ্র মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা ন্যায়বিচার ও নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে রয়েছেন উৎকণ্ঠায়।
কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা যায়, বখাটে রিপন এলাকার সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য। ১৩ নম্বর টিনশেড কলোনির রানা ও গাইট্টা বাবু গ্রুপের সদস্যরা পপিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে। এ সন্ত্রাসী গ্রুপে আরো আছে সুমন, বিল্লাল, হাসান, শামীম, রুবেল ওরফে চান্দু ও আরিফ। ঝুটপট্টি, জল্লাদখানাসহ আশপাশের এলাকায় গাঁজা বিক্রি ও সেবন করে গ্রুপটি।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনের কচুক্ষেত বালুরমাঠ এলাকার বাসা থেকে গত শনিবার বিকেলে ১০ নম্বর সেকশনে ঝুটপট্টি বিদ্যুৎ অফিসের পেছনে বোন ঝর্ণার বাসায় যায় পপি। বিকেলে ফেরার পথে রিকশা থেকে নামিয়ে ১৩ নম্বর টিনশেড কলোনির একটি চার তলা নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে রাতভর ধর্ষণ ও হত্যার পর পপির লাশ ফেলে রাখা হয় ৮ নম্বর সেকশনের সংযোগ সড়কে গ্লোরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে ড্রেনের পাশে। সাদা রঙের প্লাস্টিকের বস্তায় ছিল লাশটি। নিহতের কপাল, মাথা, চোখ, নাখ ও থুতনির নিচে কাটা জখমের দাগ ছিল। তার হাত দুটি বাঁধা ছিল কালো ওড়নায়।
গতকাল শুক্রবার কচুক্ষেত বালুরমাঠ এলাকায় পপি আক্তারের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে শোকের মাতম। মা জোবেদা খাতুন বিলাপ করে বলেন, 'রিপন আমরা মাইয়াডারে এইভাবে মারছে। এমনে কোনো পশুও মানুষরে মারতে পারে। হে আল্লাহ, আমি এর বিচার চাই। আমরা গরিব মানুষ, আল্লাহ ছাড়া আমাগো কোনো সহায় নাই...।' পপির দরিদ্র বাবা অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। মা জোবেদার বাঁ হাত নেই। তিনি ভিক্ষা করেন। চার মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে পপি তৃতীয়। একমাত্র ছেলে রিপন লেগুনা চালায়। পপি পুরনো কচুক্ষেতের লালন শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছিল। এ বছরই পরিবারের দারিদ্র্যের কারণে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়।
পপির ভগি্নপতি আলমগীর বলেন, রিপনকে বাঁচাতে একটি গ্রুপ এখন সক্রিয়। তারা রিপনের বদলে সন্ত্রাসী রানাকে পপির প্রেমিক সাজাতে চাইছে। সন্ত্রাসী রানার গ্রুপের সদস্য ছিল রিপন। রানা আরো একটি হত্যা মামলার আসামি।
গতকাল হত্যাকাণ্ডের স্থান ১৩ নম্বর টিনশেড কলোনির ১৮৩/৩ নম্বর নির্মাণাধীন ভবনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটি তালাবদ্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, দারোয়ান মনা গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার পরিবারও চলে গেছে। বাড়িটিতে সন্ত্রাসীরা মাদক সেবন ও নিয়মিত আড্ডা দিত।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, রিপনের সহযোগী রানা এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম হোতা। গাইট্টা বাবু, সুমন, বিল্লাল, হাসান, শামীম, রুবেল ওরফে চান্দু ও আরিফ এই গ্রুপের সদস্য। এসব সন্ত্রাসী 'সি' ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় আড্ডা দেয়। মহল্লার মধ্যে গাঁজা বিক্রি ও সেবন করে তারা। স্কুল-কলেজগামী ছাত্রী ও গার্মেন্টকর্মীদের উত্ত্যক্ত করাই তাদের মূল কাজ। এ চক্রটির সবাই পপি হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক।
আলোচিত এই হত্যা মামলার তদন্ত করছেন মিরপুর থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী। তিনিও কালের কণ্ঠকে বলেন, 'রানাই এ হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক। গণধর্ষণের পর অত্যন্ত নৃশংসভাবে পপিকে হত্যা করেছে তারা। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।'
এমন পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর মিরপুরে। গত রবিবার ১০ নম্বর সেকশনের 'সি' ব্লক থেকে হতভাগ্য মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্বজনরা তাকে শনাক্ত করে ধর্ষক রিপনসহ অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে। এরপর রিপনসহ চার আসামি গ্রেপ্তার হয়। আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। তবে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামিকে বাঁচানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
নিহতের স্বজনরা বলছে, পুলিশ সোর্সের মাধ্যমে সমঝোতা করে রিপনকে মামলা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে মিরপুর থানার পুলিশ। আগের একটি হত্যা মামলার আসামি এবং রিপনের সহযোগী রানাকে পপির প্রেমিক সাজিয়ে মামলার প্রধান আসামি বানানোর চেষ্টাও করা হচ্ছে। দরিদ্র মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা ন্যায়বিচার ও নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে রয়েছেন উৎকণ্ঠায়।
কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা যায়, বখাটে রিপন এলাকার সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য। ১৩ নম্বর টিনশেড কলোনির রানা ও গাইট্টা বাবু গ্রুপের সদস্যরা পপিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে। এ সন্ত্রাসী গ্রুপে আরো আছে সুমন, বিল্লাল, হাসান, শামীম, রুবেল ওরফে চান্দু ও আরিফ। ঝুটপট্টি, জল্লাদখানাসহ আশপাশের এলাকায় গাঁজা বিক্রি ও সেবন করে গ্রুপটি।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনের কচুক্ষেত বালুরমাঠ এলাকার বাসা থেকে গত শনিবার বিকেলে ১০ নম্বর সেকশনে ঝুটপট্টি বিদ্যুৎ অফিসের পেছনে বোন ঝর্ণার বাসায় যায় পপি। বিকেলে ফেরার পথে রিকশা থেকে নামিয়ে ১৩ নম্বর টিনশেড কলোনির একটি চার তলা নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে রাতভর ধর্ষণ ও হত্যার পর পপির লাশ ফেলে রাখা হয় ৮ নম্বর সেকশনের সংযোগ সড়কে গ্লোরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে ড্রেনের পাশে। সাদা রঙের প্লাস্টিকের বস্তায় ছিল লাশটি। নিহতের কপাল, মাথা, চোখ, নাখ ও থুতনির নিচে কাটা জখমের দাগ ছিল। তার হাত দুটি বাঁধা ছিল কালো ওড়নায়।
গতকাল শুক্রবার কচুক্ষেত বালুরমাঠ এলাকায় পপি আক্তারের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে শোকের মাতম। মা জোবেদা খাতুন বিলাপ করে বলেন, 'রিপন আমরা মাইয়াডারে এইভাবে মারছে। এমনে কোনো পশুও মানুষরে মারতে পারে। হে আল্লাহ, আমি এর বিচার চাই। আমরা গরিব মানুষ, আল্লাহ ছাড়া আমাগো কোনো সহায় নাই...।' পপির দরিদ্র বাবা অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। মা জোবেদার বাঁ হাত নেই। তিনি ভিক্ষা করেন। চার মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে পপি তৃতীয়। একমাত্র ছেলে রিপন লেগুনা চালায়। পপি পুরনো কচুক্ষেতের লালন শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছিল। এ বছরই পরিবারের দারিদ্র্যের কারণে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়।
পপির ভগি্নপতি আলমগীর বলেন, রিপনকে বাঁচাতে একটি গ্রুপ এখন সক্রিয়। তারা রিপনের বদলে সন্ত্রাসী রানাকে পপির প্রেমিক সাজাতে চাইছে। সন্ত্রাসী রানার গ্রুপের সদস্য ছিল রিপন। রানা আরো একটি হত্যা মামলার আসামি।
গতকাল হত্যাকাণ্ডের স্থান ১৩ নম্বর টিনশেড কলোনির ১৮৩/৩ নম্বর নির্মাণাধীন ভবনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটি তালাবদ্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, দারোয়ান মনা গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার পরিবারও চলে গেছে। বাড়িটিতে সন্ত্রাসীরা মাদক সেবন ও নিয়মিত আড্ডা দিত।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, রিপনের সহযোগী রানা এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম হোতা। গাইট্টা বাবু, সুমন, বিল্লাল, হাসান, শামীম, রুবেল ওরফে চান্দু ও আরিফ এই গ্রুপের সদস্য। এসব সন্ত্রাসী 'সি' ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় আড্ডা দেয়। মহল্লার মধ্যে গাঁজা বিক্রি ও সেবন করে তারা। স্কুল-কলেজগামী ছাত্রী ও গার্মেন্টকর্মীদের উত্ত্যক্ত করাই তাদের মূল কাজ। এ চক্রটির সবাই পপি হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক।
আলোচিত এই হত্যা মামলার তদন্ত করছেন মিরপুর থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী। তিনিও কালের কণ্ঠকে বলেন, 'রানাই এ হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক। গণধর্ষণের পর অত্যন্ত নৃশংসভাবে পপিকে হত্যা করেছে তারা। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।'
No comments