প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রীর বাড়তি দাবি-শতভাগ সফল বনাম দেশ বিক্রি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেদিন তাঁর ভারত সফরকে শতভাগ সফল বলে দাবি করলেন, তার পরদিনই বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দেশ বিক্রির অভিযোগ আনলেন। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ফলাফল নিয়ে দেশের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল নিজেদের যে অবস্থান প্রকাশ করল, তা খুবই হতাশাজনক।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ফলাফলকে আমরা এই সম্পাদকীয় কলামে ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করেছি। এই সফর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে এক নতুন সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। নিরাপত্তা, যোগাযোগ, উন্নয়ন—এসব ক্ষেত্রে দেশ দুটির মধ্যে সহযোগিতা ও সমঝোতার মনোভাব দেখা গেছে, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া বাণিজ্য-ঘাটতি দূর করার উদ্যোগ নেওয়া, তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে একটি সমঝোতায় আসা ও সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ মেটানোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে দুই পক্ষ একমত হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়গুলোর সমাধান না হলেও দুই পক্ষের সমঝোতায় আসার বিষয়টিকে আমরা অগ্রগতি হিসেবেই বিবেচনা করতে চাই। দেশ দুটি পারস্পরিক সহযোগিতার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা বাস্তবে কার্যকর করতে কাজে নেমে পড়াই এখন গুরুত্বপূর্ণ।
এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী যখন তাঁর ভারত সফরকে শতভাগ সফল বলে দাবি করে বসেন, তখন তাঁকে বাড়তি দাবি বলেই মনে হয়। কারণ, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। বাংলাদেশের জনগণ বছরের পর বছর ঝুলে থাকা সেসব সমস্যার দ্রুত সমাধান দেখতে চায়। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর শতভাগ সফলের দাবিকে তাই অতিরঞ্জিত বলেই মানতে হবে। দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে কোনো সফর কখনো শতভাগ সফল হওয়ার সুযোগ নেই। এ ধরনের সফর ও পারস্পরিক সহযোগিতা একটি অব্যাহত প্রক্রিয়া। এই সফরে যেসব সাফল্য পাওয়া গেছে, তাকে নিজের দেশের অনুকূলে কাজে লাগানোই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
অন্যদিকে বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দাবি করে বসলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিয়ে এসেছেন। তাঁর মন্তব্যকে এককথায় দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে মানতেই হচ্ছে। বাংলাদেশের সংসদে যিনি বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তাঁর কাছ থেকে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। বিরোধীদলীয় নেত্রী যদি তাঁর বক্তব্যে কীভাবে দেশ বিক্রি হয়ে গেল, তার সপক্ষে কোনো যুক্তি তুলে ধরতে পারতেন, তবে আমরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় পেতাম। ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি যদি দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়, তবে তার সমালোচনা করা ও প্রয়োজনে বিরোধিতা করা একটি দায়িত্বশীল বিরোধী দলের দায়িত্ব। আমরা খুশি হতাম, যদি তিনি সুনির্দিষ্ট করে ভারতের সঙ্গে কোন কোন চুক্তি বা সমঝোতা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছে বা কেন তা দেশের জন্য ক্ষতিকর হয়েছে, তা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতেন। সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া নিজেই বলেছেন যে চুক্তির বিষয়ে তাঁরা এখনো কিছু্ই জানেন না।
এখানে আরও একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে বাংলাদেশ কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে, বাংলাদেশের চাওয়া বা অগ্রাধিকারের বিষয় কী বা কোন কোন বিষয়ে চুক্তি হবে, তা নিয়ে জাতীয় সংসদে আলোচনা হলে ভালো হতো।
যেকোনো দুটি দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা দেওয়া-নেওয়ার ব্যাপার থাকে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর এই ভারত সফর বাংলাদেশের জন্য কী সুফল বয়ে আনবে, সে নিয়ে নানা মূল্যায়ন হতেই পারে। তবে বিষয়টিকে বাস্তবসম্মতভাবে দেখতে হবে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়টি দীর্ঘদিন একটি ‘স্পর্শকাতর’ বিষয় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। দেশ দুটির মধ্যে আস্থাহীনতা ও অবিশ্বাসের বিষয়টিও লুকানো ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের মধ্য দিয়ে এ ক্ষেত্রে একটি বড় অগ্রগতি হয়েছে বলে আমরা মনে করি। পরস্পরের প্রতি আস্থার পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়টি খুবই জরুরি ছিল। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রীর সফর একটি সূচনা মাত্র। পরস্পরের স্বার্থে তাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এই অব্যাহত প্রক্রিয়ায় একটি সফরে শতভাগ সফলতার যেমন সুযোগ নেই, তেমনি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সহযোগিতা বা আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলার সঙ্গে দেশ বিক্রিরও কোনো সম্পর্ক নেই।
এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী যখন তাঁর ভারত সফরকে শতভাগ সফল বলে দাবি করে বসেন, তখন তাঁকে বাড়তি দাবি বলেই মনে হয়। কারণ, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। বাংলাদেশের জনগণ বছরের পর বছর ঝুলে থাকা সেসব সমস্যার দ্রুত সমাধান দেখতে চায়। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর শতভাগ সফলের দাবিকে তাই অতিরঞ্জিত বলেই মানতে হবে। দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে কোনো সফর কখনো শতভাগ সফল হওয়ার সুযোগ নেই। এ ধরনের সফর ও পারস্পরিক সহযোগিতা একটি অব্যাহত প্রক্রিয়া। এই সফরে যেসব সাফল্য পাওয়া গেছে, তাকে নিজের দেশের অনুকূলে কাজে লাগানোই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
অন্যদিকে বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দাবি করে বসলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিয়ে এসেছেন। তাঁর মন্তব্যকে এককথায় দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে মানতেই হচ্ছে। বাংলাদেশের সংসদে যিনি বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তাঁর কাছ থেকে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। বিরোধীদলীয় নেত্রী যদি তাঁর বক্তব্যে কীভাবে দেশ বিক্রি হয়ে গেল, তার সপক্ষে কোনো যুক্তি তুলে ধরতে পারতেন, তবে আমরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় পেতাম। ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি যদি দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়, তবে তার সমালোচনা করা ও প্রয়োজনে বিরোধিতা করা একটি দায়িত্বশীল বিরোধী দলের দায়িত্ব। আমরা খুশি হতাম, যদি তিনি সুনির্দিষ্ট করে ভারতের সঙ্গে কোন কোন চুক্তি বা সমঝোতা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছে বা কেন তা দেশের জন্য ক্ষতিকর হয়েছে, তা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতেন। সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া নিজেই বলেছেন যে চুক্তির বিষয়ে তাঁরা এখনো কিছু্ই জানেন না।
এখানে আরও একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে বাংলাদেশ কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে, বাংলাদেশের চাওয়া বা অগ্রাধিকারের বিষয় কী বা কোন কোন বিষয়ে চুক্তি হবে, তা নিয়ে জাতীয় সংসদে আলোচনা হলে ভালো হতো।
যেকোনো দুটি দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা দেওয়া-নেওয়ার ব্যাপার থাকে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর এই ভারত সফর বাংলাদেশের জন্য কী সুফল বয়ে আনবে, সে নিয়ে নানা মূল্যায়ন হতেই পারে। তবে বিষয়টিকে বাস্তবসম্মতভাবে দেখতে হবে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়টি দীর্ঘদিন একটি ‘স্পর্শকাতর’ বিষয় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। দেশ দুটির মধ্যে আস্থাহীনতা ও অবিশ্বাসের বিষয়টিও লুকানো ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের মধ্য দিয়ে এ ক্ষেত্রে একটি বড় অগ্রগতি হয়েছে বলে আমরা মনে করি। পরস্পরের প্রতি আস্থার পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়টি খুবই জরুরি ছিল। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রীর সফর একটি সূচনা মাত্র। পরস্পরের স্বার্থে তাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এই অব্যাহত প্রক্রিয়ায় একটি সফরে শতভাগ সফলতার যেমন সুযোগ নেই, তেমনি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সহযোগিতা বা আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলার সঙ্গে দেশ বিক্রিরও কোনো সম্পর্ক নেই।
No comments