অভিমত ভিন্নমত

ভাবের ভাবনায় জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশ গত ২১ ডিসেম্বর ২০০৯ প্রথম আলোয় এমাজউদ্দীন আহমদের ‘সংবিধান সংশোধন, না ’৭২-এর সংবিধানে প্রত্যাবর্তন’ শীর্ষক লেখাটি পড়ে কিছু কথা বলার এই প্রয়াস। এক. স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানকে তিনি ত্রুটিপূর্ণ ও অবিন্যস্ত অনুকরণ বলে সমালোচনা করেছেন।


পৃথিবীর কোনো দেশের সংবিধানই মৌলিক নয়, বিভিন্ন দেশের সংবিধানের মধ্যে মিল থাকতে পারে। ত্রুটিও থাকতে পারে। সেই আলোকে প্রথম সংবিধানটিও অবশ্যই ত্রুটিমুক্ত নয়। কিন্তু ’৭২-এর সংবিধান আধুনিক শাস্ত্রীয় সূত্র দ্বারা স্বীকৃত। তা ছাড়া একে অবিন্যস্ত অনুকরণ বলা ঠিক নয়। পাকিস্তান রাষ্ট্রটির সংবিধান থেকে বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানের মৌলিক পার্থক্য বিস্তর। পাকিস্তানের সংবিধান একটি নির্দিষ্ট ধর্মকে মৌল নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছিল, যা অনাধুনিক। পক্ষান্তরে ’৭২-এর সংবিধানে সব ধর্মের অধিকারকে স্বীকৃত দেওয়া হয়েছে, যা আধুনিক।
দুই. লেখক মন্তব্য করেছেন যে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের মর্মবাণী এবং সরকার পরিচালনার মূলনীতি বিধ্বস্ত হয়েছে। এটা কীভাবে হতে পারে? চতুর্থ সংশোধনীতে যা যা হয়েছে তার মধ্যে একটা হলো প্রধানমন্ত্রী শাসিত সরকারব্যবস্থার স্থলে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের প্রবর্তন। এটা পদ্ধতির পরিবর্তন, কী করে এটা মূলনীতির পরিবর্তন হতে পারে। নীতি আর পদ্ধতির তফাতটা স্মরণ রাখা দরকার। তা ছাড়া চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের মর্মবাণী বিধ্বস্ত হয়েছে, এ বক্তব্যের পক্ষে তিনি কোনো শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা দেননি।
তিন. পঞ্চম সংশোধনীর প্রশংসা করেছেন এমাজউদ্দীন আহমদ। হবস, লক, রুশো, মাকিয়াভিলি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আধুনিক দার্শনিক। তাঁদের দর্শন দ্বারা রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রকৃত বিজ্ঞানের রূপ লাভ করেছে। তাঁদের রাজনৈতিক দর্শনে ধর্মকে রাজনীতি থেকে বিযুক্ত করা হয়েছে সর্বজনীন মানবকল্যাণের স্বার্থে। মধ্যযুগে ইউরোপে রাজনীতির গতিধারা ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত হতো, যার ফল ছিল ভয়াবহ। পোপ আর রাজার দ্বন্দ্বে জর্জরিত ছিল শাসনব্যবস্থা। রাষ্ট্রের নীতি, পদ্ধতি, পরিচালনব্যবস্থা—সবকিছুই ধর্ম দ্বারা নির্ধারিত হতো। ইতালিতে পোপ কোনো কোনো নাগরিককে স্বর্গের সনদ দিত। দেখা দিত নানা বিশৃঙ্খলা। রাষ্ট্রের শাসক পোপের আধিপত্যের কাছে নতজানু ছিল। সুষ্ঠু স্বাভাবিক সাধারণ কোনো রাষ্ট্রীয় নীতি প্রণীত হতে পারত না। ইতালি ছিল খণ্ড-বিখণ্ড। ধর্মীয় অধ্যাত্মবাদের পরাকাষ্টে রাজনীতির বৈজ্ঞানিক কাঠামো কিংবা রাজনীতির শাস্ত্রীয় চরিত্র তলিয়েছিল অন্ধকার গহ্বরে। এমন অবস্থায় আবির্ভাব ঘটে মাকিয়াভিলি নামের দার্শনিকের, যিনি প্রথম আধুনিক রাজনৈতিক তাত্ত্বিক হিসেবে খ্যাত এবং যার দর্শন বিশ্লেষণে প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্র এবং মার্কসের সাম্যবাদী রাষ্ট্রের ভাবনাকে ইউটোপিয় বলা হয়। সেই মাকিয়াভিলি ধর্মকে রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ বিযুক্ত করে উদার রাষ্ট্রব্যবস্থা নির্মাণের পথ করে দেন। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার—বক্তব্যটি মূলত তাঁরই দর্শনের প্রকাশ, যা বিশ্বসভ্যতার অন্যতম উন্নতি। তারই উপস্থিতি ছিল বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার নাম নিয়ে। বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান ছিল আধুনিক রাজনৈতিক দর্শন দ্বারা নির্মিত। পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে এর পরিবর্তন করে একটি নির্দিষ্ট ধর্মকে রাষ্ট্রের মূলনীতি করার ফলে সংবিধান আবার মধ্যযুগের ইউরোপের মতো অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে গেল। (পঞ্চম ও অষ্টম সংশোধনী খুব কাছাকাছি) পাঠক, এ লেখা আমি অন্ধভক্তি থেকে লিখিনি। শাস্ত্র দ্বারা তাড়িত হয়ে লিখেছি। আমাদের রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ঐতিহাসিক মদিনা সনদ দেখুন। সেখানে তিনি কোনো নির্দিষ্ট ধর্মকে অগ্রাধিকার দেননি। সব ধর্মের সমঅধিকার নিশ্চিত করেছিলেন।
এমাজউদ্দীন আহমদ পঞ্চম সংশোধনীকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ভিত্তি বলেছেন। এটা কেমন কথা! ১৯৭৬ সালের রাজনৈতিক দলবিধির আওতায় (পিপিআর) যে বহুদলীয় গণতন্ত্রের উন্মেষ তত্কালীন সামরিক শাসক ঘটিয়েছিলেন, তার মাধ্যমে তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে পুনরুজ্জীবিত করেছেন। ১৯৭১ সালে জামায়াতের ভূমিকা বলার জন্য ঢোল পেটানোর প্রয়োজন আছে কি? তা ছাড়া পিপিআর-৭৬ কোনোভাবেই বহুদলীয় ব্যবস্থার ভিত্তি নয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল একটি রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তোলা, যার ভাবাদর্শ হবে পাকিস্তানপন্থী। এর মাধ্যমেই প্রথম জাগদল, যা পরবর্তী সময়ে জাতীয়তাবাদী দল নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। আধুনিক শাস্ত্র এ প্রক্রিয়ায় গঠিত দলকে স্বীকৃতি দেয় না।
চার. লেখক ভাষা-সংস্কৃতির ভিত্তিতে গঠিত জাতীয়তাবাদকে সংকীর্ণ বলেছেন। এটা স্ববিরোধী কথা। রাষ্ট্র একটি কৃত্রিম প্রতিষ্ঠান। আর জাতি বিষয়টি প্রাকৃতিক। রাষ্ট্র দিয়ে জাতির পরিচয় হয় না। রাষ্ট্র বদলায় কিন্তু জাতিত্ব বদলায় না। যেমন পূর্ব পাকিস্তান এখন বাংলাদেশ।
হাজার বছর ধরে ভাষা, সংস্কৃতি, উত্পাদনব্যবস্থা, খাদ্য, পোশাক, সংগীত, চিন্তা, অর্থনীতি, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, আচরণ ইত্যাদির ভিত্তিতে সংহত হয়ে গড়ে উঠেছে বাঙালির মানসপট এবং তারা রূপ নিয়েছে একটি জাতিতে এবং এটি একটি ভাব। এই ভাবের ভাবনায় রাজনৈতিক বোধ থেকে সৃষ্টি হয়েছে জাতীয়তাবাদের, যার বাস্তব পরিণতি আজকের বাংলাদেশ। এ জন্যই বলা হয়, রাষ্ট্র হচ্ছে জাতির রাজনৈতিক অভিপ্রকাশ। নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ একটি জাতিরাষ্ট্র, অবশ্যই আমরা আগে বাঙালি। আমরা মূলত বাংলাদেশি বাঙালি। বাঙালি হয়েছি কয়েক হাজার বছর ধরে, আর বাংলাদেশি হয়েছি অর্ধ শতাব্দীও হয়নি।
ইফতেখার আহমেদ খান
উন্নয়নকর্মী, গবেষক, ঢাকা। kutir1977@yahoo.com

ভারতের সঙ্গে সহাবস্থানে অন্তরায় নেই
আমাদের সবার পিতামহ-প্রপিতামহ ও আরও কত যে পূর্বপুরুষের দেশ ছিল অখণ্ড ভারতবর্ষ। তাদের অনেকেই এসেছেন যুদ্ধ জয় করে এ দেশে। তা হলে কী হবে, তাঁরা মিশে গেছেন এ দেশের মানুষের সঙ্গে। থেকে গেছেন এই দেশে। তাই তাঁদের জাতিসত্তা এ দেশের। কিন্তু এ দেশে আগত অন্যান্য জাতির সঙ্গে ব্রিটিশ জাতির একটু ব্যতিক্রম রয়েছে। তারা স্থায়ীভাবে এ দেশে থাকার চেষ্টা করেনি। গোটা ভারতবর্ষ যখন একট্টা হয়ে স্বাধীনতার ডাক দিল, তখন ব্রিটিশ ভাবল এ দেশ ছাড়তেই যখন হবে, এরা যাতে এক দিনের জন্যও শান্তিতে না থাকতে পারে তাই নতুন কৃত্রিম জাতিসত্তার সৃষ্টি করে ভারত ভাগ করে চলে গেল ১৯৪৭ সালে। আমরা অনেক জাতির নাম শুনেছি: চীনা, জাপানি, ইরানি, তুর্কি, রুশ আরও কত কী। কিন্তু হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান—এগুলো যে একেকটি জাতির নাম, তা আগে কখনো শুনিনি। ব্রিটিশরা তা শোনাল, শেখাল।
আমাদের কারও বিশাল বড় বাড়ি থাকলে সেখানে থাকে একাধিক পুকুর, ফুলবাগান, অতিথিশালা, গোশালা, বসতঘর ইত্যাদি থাকে। আরও থাকে এগুলোর সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী রাস্তা ও নালা-নর্দমা। কিন্তু প্রপুত্রদের সময় যখন আলাদা হতে হয় তখন পুকুর, রাস্তা, নর্দমা, বাগান—এগুলো যৌথভাবে থাকে। ঠিক তেমনটিই তো ভারতবর্ষের ক্ষেত্রেও হয়েছে। এক ভারতবর্ষ আজ তিন ভাগে বিভক্ত। পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ। তাই বলে কি সড়কপথ, রেলপথ, নদীও ভাগ হবে? ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত কিন্তু এসব ভাগ হয়নি। ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তানের উভয় অংশের মধ্য দিয়ে রেলগাড়ি চলাচল করেছে। মনে আছে, সাঁ সাঁ শব্দে কলকাতার শিয়ালদহে এবং আসামের বদরপুর পর্যন্ত চলেছে রেলগাড়ি। আর এখন এটা চললেই নাকি ট্রানজিট বা করিডর দেওয়া হয়ে যায়।
বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ করে পাকিস্তানের নিগড় থেকে মুক্ত হলেও মুক্তি পেল না ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান-ভারতের যুদ্ধের পরের অবস্থান থেকে। ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বরের আগে পর্যন্ত ভারতে থাকা উপার্জনকারী ছেলেরা বৃদ্ধ মা-বাবার জন্য পাকিস্তানে নিয়মিত টাকা পাঠাতে পারত, যখন-তখন আসা-যাওয়া করতে পারত, ব্রিটিশের করা রেলপথ উভয় দেশ যৌথভাবে ব্যবহার করতে পারত, নদীবন্দর, নদীপথ, রাস্তা সবই দুই দেশের মানুষ ব্যবহার করতে পারত। আর আজ শুধুই শোনা যায়, ভারত আমাদের ওপর দিয়ে গেলে সার্বভৌমত্ব নাকি চলে যাবে। এ যেন হিন্দু মহিলাদের তোলা জলের মতো। কেউ ছুঁলেই ফেলে দিতে হবে। বলি, ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বরের আগে ঘোর পাকিস্তানের আমলে যৌথভাবে রেলপথ, সড়কপথ, নৌবন্দর ভারত ও পাকিস্তান যখন যৌথভাবে ব্যবহার করত, তখন তো তাদের সার্বভৌমত্ব চলে যায়নি। তবে এখন চলে যাবে কেন? পাকিস্তানকে তাড়িয়েছি, পাকিস্তানের ভালো জিনিসগুলোকে তাড়িয়েছি। শুধু আঁকড়ে ধরে আছে তাদের খারাপ জিনিসগুলোকে। তাই তো শত্রু সম্পত্তির নাম বদলে করেছেন অর্পিত সম্পত্তি, জিনিস তো একই রয়ে গেছে।
আর একটা কথা শোনা যায়, ভারত উজানে বলে নদীগুলোর পানি সব সময় আটকে দেয়। বলি, আসল যে নদী ব্রহ্মপুত্র ময়মনসিংহের পরে যমুনা নামে বিস্তার লাভ করেছে তার উত্সস্থল চীন, ভারত নয়। খোঁজ কি রাখা হয় চীন কী করছে? সে তার উত্সস্থল থেকে চীনের বহু উত্তরে গোবি মরুভূমিতে পানি নিয়ে শস্যশ্যামল করে তুলছে। এ নিয়ে আমাদের তো কোনো উচ্চবাচ্য নেই। আশির দশকে একবার বন্যার সময় প্রেসিডেন্ট এরশাদ মাঠে বক্তব্যে বললেন, ‘এ পানি আমার নয়, যার পানি সে নিয়ে যাক। আমাদের মানুষকে বন্যায় ভাসতে দেওয়া যায় না।’ কী মজার কথা! বন্যার দোষও ভারতের, খরার দোষও ভারতের! এভাবে এ দেশের সহজ-সরল জনগণকে বিভ্রান্ত করা যায়, সমস্যার সমাধান করা যায় না। সমস্যা সমাধানের জন্য ভারতের সঙ্গে যৌথ পানি-ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় সবাই তাঁকে উপদেশ-পরামর্শ-হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন। দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে যেন বাংলাদেশের স্বার্থ আদায় হয়। ভারতের সঙ্গে যৌথ নদীগুলোর অবশ্যই ন্যায্য আনুপাতিক হিস্যা আদায় করতে হবে। ভারতকে বোঝাতে হবে, নিজেকে বাঁচতে হবে, অন্যকেও বাঁচতে দিতে হবে। এটাই হলো আজকের সহাবস্থানের নীতি।
রাধাকান্ত রায়
নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা।

প্রধানমন্ত্রীর ব্যতিক্রমী বক্তব্য
৭ জানুয়ারি প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওসমানী মিলনায়তনে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যতিক্রমী বক্তব্য দিয়েছেন।
পূর্বলিখিত ভাষ্য পরিহার করে নিজের উপলব্ধি ও পর্যবেক্ষণ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পিঠভাঙা পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যবইয়ের বোঝা প্রাথমিক পর্যায়ের শিশুদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। ‘শুধু পাঠ্যক্রমে অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা ও পাঠ্যপুস্তকের সংখ্যা বৃদ্ধি শিশুর শিক্ষার মান নিশ্চিত করে না,’ শেখ হাসিনা বলেন। ‘পাঠ্যবিষয় হতে হবে আকর্ষণীয় ও পাঠ আনন্দময়। অনেক বইয়ের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে শিশুদের পণ্ডিত বানানো যাবে না।’ পাঠ্যবিষয়ের ভার কমানোর এবং সেসবের মান উন্নয়নের বিষয় বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
শিক্ষা-বিজ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যথার্থ। প্রাথমিক শিক্ষায় বিশ্বব্যাপী মূল লক্ষ্য হচ্ছে মাতৃভাষায় পড়া ও লেখার দক্ষতা অর্জন ও গণিতের মূল চারটি নিয়মের ব্যবহার আয়ত্ত করা। এই মৌলিক দক্ষতাসমষ্টি পরবর্তী পর্যায়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার ভিত্তিস্বরূপ। নিজের ভাষায় পড়া ও লেখার দক্ষতা অর্থাত্ ভাব আদান-প্রদানের ক্ষমতা শিশুর বুদ্ধিবৃত্তি, মনন ও মেধা বিকাশের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করেন শিক্ষা বিজ্ঞানী ও শিশু মনস্তত্ত্ববিদেরা। তেমনি প্রয়োজন গাণিতিক যুক্তি ও নিয়মের ধারণা।
প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যক্রমে অন্যান্য বিষয়ও থাকে। পরিবেশ, সমাজ, শিল্পকলা, ধর্ম, ক্রীড়া ইত্যাদি। কিন্তু অগ্রসর শিক্ষাব্যবস্থার দেশগুলোতে ভাষা ও গণিতের দক্ষতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ জন্য সর্বাধিক পাঠের সময় ব্যয় করা হয়। শিক্ষকদের প্রস্তুতিতে, পাঠ্যপুস্তক ও উপকরণ তৈরিতে এবং শিক্ষার্থী মূল্যায়নে এই দুই বিষয়ের জন্য সবচেয়ে বেশি চেষ্টা ও সময় নির্ধারিত থাকে।
বাংলাদেশের প্রবণতা হচ্ছে পাঠ্যক্রমের সব বিষয়কে একইভাবে দেখা। ভাষা ও গণিতের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে প্রাথমিক স্তরে যে সময় ব্যয় করা হয় তার অর্ধেকও বাংলাদেশে হয় না। দুই শিফটের বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কারণে এই পরিস্থিতি।
শিক্ষাবিদেরা প্রাথমিক শিক্ষায় পাঠ্য বিষয়ের বোঝা এবং ভাষা ও গণিতের আপেক্ষিক গুরুত্বের প্রশ্নটি তুলেছেন বিভিন্ন সময়। কিন্তু এ সম্বন্ধে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। শিক্ষানীতির খসড়ায়ও এ সম্বন্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী নিজের উপলব্ধি থেকে যে কথা বলেছেন সেটিকে যথার্থ গুরুত্ব দিয়ে উপযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পাঠ্যক্রমের অর্জিত দক্ষতা ও জ্ঞানে বাংলা ভাষা ও গণিতের ভিত্তি তৈরিকে প্রাধান্য দিতে হবে। অন্যান্য বিষয়ের আপেক্ষিক গুরুত্ব, পাঠের সময়, পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষাসামগ্রী তৈরি, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার্থী মূল্যায়নের বিষয়গুলোও এ আলোকে পুনর্বিবেচিত হওয়া প্রয়োজন।
শিক্ষানীতিতে প্রাথমিকের প্রথম দুই বছরে ইংরেজি ভাষা বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পরবর্তী তিন বছরে ইংরেজিসহ বিভিন্ন বিষয়ের জন্য পাঠ্যসময় ও অর্জিত দক্ষতা বাস্তবসম্মত হওয়া দরকার। শিক্ষার্থীর অর্জন মূল্যায়নে পাঠ্যপুস্তক ও মুখস্থনির্ভরতা শিশুদের জন্য বড় চাপ ও মানসিক উদ্বেগের কারণ। বিশেষত, নব প্রবর্তিত সমাপনী পরীক্ষায় বাংলা ভাষা ও গণিতের প্রায়োগিক দক্ষতাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এই মূল্যায়নের যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে এবং শিশুদের ওপর মানসিক চাপ কমানো যেতে পারে।
মনজুর আহমদ
শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, ব্র্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

একটি দৃষ্টিকটু প্রবণতা
বাংলাদেশের যেকোনো টিভি প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতিবেদকদের পেছনে একদল উত্সুক মানুষের মুখ। কাকে ধাক্কা দিয়ে কে সামনে আসবে এবং টিভিতে চেহারাটা দেখাবে, তার প্রতিযোগিতা দেখলে অবাক হতে হয়। এমনকি কখনো কখনো দেখা যায়, কর্তব্যরত কোনো পুলিশকর্মী বা কর্তৃপক্ষ স্বাভাবিক কর্তব্য ফেলে রেখে মুখ বাড়িয়ে রাখছেন যেন টিভিতে তাঁদের দেখা যায়।
একজন ভদ্রলোক বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন এক গ্রামের বিদ্যালয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী উত্সবে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একজন প্রতিমন্ত্রী। শুরুতে তাঁকে নিতে লোকজন এল এবং দুজনে পাশাপাশি এগিয়ে গেলেন। একসময় ভদ্রলোক দেখলেন, তিনি মানুষের ধাক্কায় অনেক পেছনে পড়ে গেছেন এবং অনেক লোক প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের পাশাপাশি হাঁটছে। প্রথমেই ছিল দুটো পতাকা উত্তোলনের বিষয়। প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথি দুজনে দুটি পতাকা উত্তোলন করবেন। কিন্ত ভদ্রলোক পতাকার কাছেই যেতে পারলেন না, সেখানে প্রতিমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে আছে সাত-আটজন লোক। পেছন থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাঁকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে কোনো রকমে স্ট্যান্ডের শেষ প্রান্তে দাঁড় করিয়ে দিলেন। বলাবাহুল্য, প্রধান শিক্ষকও স্ট্যান্ডে দাঁড়ানোর কোনো সুযোগ পাননি।
প্রতিদিনই ঘটছে এমন ঘটনা। এখানেই শেষ নয়! মঞ্চে প্রধান ব্যক্তির বক্তৃতার সময় দেখবেন পেছনে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য মানুষ। এমনকি কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যও তাঁর কাজ ফেলে বক্তার পেছনে দাঁড়িয়ে থাকেন। পৃথিবীর অন্য কোথাও কিন্তু এমনটা দেখা যায় না। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও আমরা এ প্রবণতা দেখি না।
সরকারি পর্যায়েও আমরা দেখি বক্তৃতারত প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির পেছনে বা পাশে দাঁড়িয়ে আছেন বেশ কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সাংসদের পাশে থাকার জন্য উত্সুক রাজনৈতিককর্মীদের প্রতিযোগিতা ভীষণ দৃষ্টিকটু। বিষয়টি একদিকে খুবই ছোট বিষয় হলেও এটি আমাদের সামাজিক এবং রাজনৈতিক চরিত্রের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে বলে এটিকে ছোট করে দেখার অবকাশ নেই।
দৃষ্টিকটু অনেক কিছুই আছে আমাদের দেশে ও সমাজে। এসব যতটুকু কমিয়ে ফেলা যায়, ততটাই ভালো। বাংলাদেশ অনেক দিক দিয়েই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দিনবদলের পালা চলছে আমাদের। আমরা একদিন পৃথিবীর অনেকের কাছেই আমাদের বৈশিষ্ট্য দিয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করব, এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সুধীর সাহা, ঢাকা।

১ ফেব্রুয়ারি হোক বাংলা ইশারা ভাষা দিবস
বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী নাগরিকদের মধ্যে শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী মানুষই সংখ্যাগরিষ্ঠ—প্রায় ২৬ লাখ। শ্রবণপ্রতিবন্ধিতার কারণে এই মানুষেরা কথ্য ভাষার মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারে না। বাংলা ইশারা ভাষা এই মানুষদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। ভাষাগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইশারাভাষী জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও সরকার তাদের ভাষার স্বীকৃতি বা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে এখন পর্যন্ত কোনো প্রচেষ্টা গ্রহণ করেনি।
বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘ ঘোষিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সনদ এবং ঐচ্ছিক প্রতিপালনীয় বিধিবিধান অনুসমর্থন করেছে। জাতিসংঘ ঘোষিত এই সনদ ইশারা ভাষার স্বীকৃতি ও পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। এই সনদ বাস্তবায়নের নৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকে সনদের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলা ইশারা ভাষার স্বীকৃতি, প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ও সর্বত্র ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ‘দিনবদলের সনদ’ এর মানবসম্পদ উন্নয়ন অনুচ্ছেদের ১০.৬-এ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নয়নের বিষয়ে সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গত ১ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ‘বাংলা ইশারা ভাষা এ দেশের অন্যতম ভাষা।’ তিনি এই বক্তব্যে শ্রবণপ্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে বিটিভিসহ সব টেলিভিশন চ্যানেলের প্রধান সংবাদে ইশারা ভাষা উপস্থাপনের কথা বলেন। একই সময়ে তিনি এ নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য তথ্যমন্ত্রীকে সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে বিভিন্ন দিবস পালিত হয়ে আসছে। যেমন, ১৫ অক্টোবর বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস ও ২ এপ্রিল বিশ্ব অটিজম দিবস। কিন্তু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সবচেয়ে বড় অংশ শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী মানুষদের অধিকার ও মর্যাদার বিষয়টি অবহেলিত হয়ে আসছে। শ্রবণপ্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীসহ শ্রবণপ্রতিবন্ধী নাগরিকদের সংগঠনগুলো মনে করে, দেশের শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী নাগরিকের জন্য বাংলা ইশারা ভাষা একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। শ্রবণপ্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে এ বৈশিষ্ট্যের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে ভাষা এবং ফেব্রুয়ারি মাসের সম্পর্ক একান্ত অবিচ্ছেদ্য। ২১ ফেব্রুয়ারি বর্তমানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে সারা বিশ্বে উদ্যাপিত হচ্ছে। বাংলা ইশারাভাষী জনগোষ্ঠী দীর্ঘদিন বাংলা ইশারা ভাষার স্বীকৃতির দাবি করে আসছে।
২০০৯ সালে একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বাংলা ইশারা ভাষাকে বাংলাদেশের একটি অন্যতম ভাষা হিসেবে ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলা ইশারা ভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির আন্দোলন একটি মাইলফলক অতিক্রম করেছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই ঐতিহাসিক ঘোষণার দিবসকে বাংলা ইশারা ভাষার স্বীকৃতির ক্ষেত্রে শ্রবণপ্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী ঐতিহাসিক দিন হিসেবে বিবেচনা করে। এ বিবেচনা থেকে গত ৩০ অক্টোবর ২০০৯ এসডিএসএল আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ২৫টি জেলা পর্যায়ের শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী নাগরিকদের সংগঠনগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবছর ১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ইশারা ভাষা দিবস হিসেবে উদ্যাপনের বিশেষ দাবি জানায়। শ্রবণপ্রতিবন্ধী নাগরিকদের সংগঠনগুলো ইতিমধ্যে এ দাবি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালকের কাছে উপস্থাপন করেছে। ১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ইশারা ভাষা দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যাপনের দাবি বাস্তবায়নের অনুরোধ জানাচ্ছি।
এম ওসমান খালেদ ও এম আই চৌধুরী
শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের ২৮টি নাগরিক সংগঠনের পক্ষে।

তিনি ব্যর্থ মানুষ ছিলেন না
গত ৩১ ডিসেম্বর প্রথম আলোর খোলা কলমে ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা মোহাম্মদ সুলতানকে নিয়ে একটি লেখা চোখে পড়ল। লেখক তাঁকে নিয়ে বলতে গিয়ে একটি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন—মোহাম্মদ সুলতান কি ব্যর্থ মানুষ? এ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলতে চাই।
মোহাম্মদ সুলতান আমার স্যার ছিলেন। তিনি কখনোই ব্যর্থ মানুষ ছিলেন না। ভাষা আন্দোলনের বছর ১৯৫২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাস করেন। ওই সাল থেকে ১৯৫৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি ঢাকা ওয়েস্ট অ্যান্ড হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। এ স্কুলে ১৯৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের শতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে সিপাহি বিদ্রোহের ওপর একটি নাটক মঞ্চস্থ করান সুলতান স্যার।
১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় ভাষা আন্দোলনের পক্ষে যে মিটিং হয়, মোহাম্মদ সুলতান সেখানে মিছিল করার পক্ষে প্রস্তাব পাঠ করেন। এ ছাড়া তিনি তত্কালীন বিশ্ববিদ্যালয় ভবনের ওপরে কালো পতাকা উত্তোলন করেন। অথচ তিনি একুশে পদক পাননি।
মোহাম্মদ সুলতানের ‘পুথিপত্র’ গ্রন্থাগার থেকে ১৯৫৩ সালে হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত ‘একুশে ফেব্রুয়ারী’ সংকলনটি প্রকাশিত হয়। সংকলনটি প্রকাশিত হওয়ার পরপরই সরকার তা বাজেয়াপ্ত করে এবং স্যারের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। বারবার আত্মগোপন করেও স্যার বারবার কারাবরণ করেন। সবশেষে আইয়ুব খানের সময় ১৯৫৮ সালের অক্টোবর মাসে তাকে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে গ্রেপ্তার করা হয়। দীর্ঘ চার বছর কারারুদ্ধ থাকার পর ১৯৬২ সালে তিনি মুক্তি পান।
স্যার ব্যর্থ মানুষ ছিলেন না। স্যারকে আবারও সালাম। তাঁর অবদানের কথা ভেবে তাঁকে একুশে পদক দেওয়া হবে—এ কামনাই করি।
মু. আবদুল মান্নান
সরিষাবাড়ী, জামালপুর।

No comments

Powered by Blogger.