শেকড়ের ডাক-'কত কী যে সয়ে যেতে হয়!' by ফরহাদ মাহমুদ
বিদ্যুৎ নেই। খুপরি ঘরে গ্রীষ্মের তাপদাহে সেদ্ধ হই। কিছু করার নেই, তাই সয়ে যেতে হবে। ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ। কী করব? নাক চেপে খেয়ে ফেলি। সেই পানিও সময়মতো পাওয়া যায় না। তাই গোসল ছাড়াই অফিসে চলেছি। কাউকে কিছু বলার নেই। নীরবে সহ্য করতে হয়। সহ্য করি।
রাস্তায় যানজটে আটকে আছি, তো আছিই। পত্রিকায় দেখি, রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথেই রোগী মারা যায়। স্বজনদের মনের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করি। প্রতিদিন নাগরিক জীবনের এমনই হাজারো যন্ত্রণা আমাদের সয়ে যেতে হয়। সব কিছুই আমরা সয়ে যাই। সম্প্রতি গুম-খুনের ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। আতঙ্কে থাকতে হয়। এই তো সেদিন বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে কারা যেন তুলে নিয়ে গেল। পত্রিকায় হিসাব বেরিয়েছে, এই সরকারের আমলে শতাধিক ব্যক্তি গুম বা নিখোঁজ হয়েছে। ইলিয়াস আলীর ঘটনায় সারা দেশের মানুষ স্তম্ভিত। আরো স্তম্ভিত এ কারণে যে সরকারের এতগুলো বাহিনী দিনরাত চেষ্টা করে এত দিনেও তাঁকে উদ্ধার করতে পারেনি। এ নিয়ে বিএনপি দুই দফায় পাঁচ দিন হরতাল করেছে। আবার হরতাল আসছে। এই হরতালে ইলিয়াস আলী উদ্ধার হবে কি না জানি না, তবে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি অনেক বেড়ে যাবে- সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। বিগত হরতালের আগে আতঙ্ক বিস্তারের লক্ষ্যে পিকেটাররা একজন বাসচালককে বাসসহ পুড়িয়ে মেরেছে। হরতালের সময় পিকেটারদের ধাওয়া খেয়ে কিংবা সংঘর্ষে আরো চারজন মারা গেছেন। সামনের হরতালে আরো কতজনকে জীবন দিতে হবে, কে জানে? প্রতিটি হরতালের সুযোগে ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়ান। মাছ-তরিতরকারির দাম তো প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। অনেকের পাত থেকেই সেগুলো হাওয়া হয়ে যায়। সবই সয়ে যেতে হয়। সয়ে যেতে হয় আরো অনেক কিছুই। যেমন কষ্ট হলেও সয়ে যেতে হয় অনেকের কথার যন্ত্রণা। এই তো সেদিন বর্তমান সরকারের একজন মান্যবর মন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত জোটের সৃষ্ট 'নৈরাজ্যকর' পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলীয় কর্মীদের লাঠি ধরার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি দৃপ্তকণ্ঠে বলেছেন, 'ওরা জিতলে ওরা থাকবে, আমরা জিতলে আমরা থাকব।' দেশটাকে তাঁরা 'ওরা' আর 'আমরা'-তে বিভক্ত করে নিয়েছেন। অন্যদিকে মন্ত্রীর 'ওরা' তথা বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, তাঁরা এমন কর্মসূচি দেবেন, যাতে 'সারা দেশে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলবে এবং সেই আগুন নেভানোর ক্ষমতা সরকারের থাকবে না।' কিন্তু মাঝখানে থাকা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অতি সাধারণ মানুষ, যাদের নুন আনতে পানতা ফুরোয়, এক বেলা ভাত জোটে তো আরেক বেলা জোটে না- তাদের কী হবে? তারা জিতবে কার সঙ্গে? তারা কি এই দেশে থাকবে না? মান্যবর মন্ত্রী ও বিরোধী দলের শীর্ষ নেতারা স্বীকার করবেন কি না জানি না, তাঁদের এই প্রতিহিংসার রাজনীতির জ্বালাতনে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রাণ আজ ওষ্ঠাগত। তারা আজ রাজনীতির ছায়া মাড়াতেও ভয় পায়।
নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনে অনেক রক্তের বিনিময়ে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেয়েছিল। তারপর দুই দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। পালা করে দুটি দল বা জোটই ক্ষমতায় আসছে। মাঝখানে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুটি বছর ছাড়া পুরো সময়টাই আমরা 'গণতান্ত্রিক' শাসনামলে ছিলাম। গণতান্ত্রিক শব্দটিকে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে রাখাটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু এ ছাড়া কোনো উপায় আছে কি? এই দুই দশকে দেশে গণতন্ত্র কতটুকু বিকাশ লাভ করেছে? আমাদের বিচার বিভাগ কতটুকু স্বাধীন হয়েছে? আমাদের নির্বাচন কমিশনকে কতটুকু শক্তিশালী করা হয়েছে? দলীয়করণ থেকে প্রশাসনকে কতটা মুক্ত করা হয়েছে? সংসদীয় গণতন্ত্রে রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয় সংসদ। সেই সংসদ কতটুকু কার্যকর হয়েছে? গণতন্ত্রে সহনশীলতা, পরমতসহিষ্ণুতা, পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হয়। আমাদের প্রধান দুটি পক্ষের আচরণে তার কতটা বিদ্যমান আছে? সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার উন্নতি হয়েছে কি? সম্ভবত কেউই প্রশ্নগুলোর ইতিবাচক উত্তর দিতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে আমরা বর্তমান রাজনীতিকে গণতান্ত্রিক রাজনীতি বলতে পারি কি না, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন। উল্টোভাবে বলতে গেলে বলা যায়, এই সময়ে সারা দেশে বিরোধী শিবির ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা দেখতে হয়েছে। সারা দেশে একযোগে পাঁচ শতাধিক স্থানে বোমা হামলা দেখতে হয়েছে। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টার এমপিকে জনসভাস্থলে হত্যা করা হয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতার জনসভায় বোমা ও গ্রেনেড হামলার ফলে ২৪ জন নিহত ও দুই শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছিল। এমনি আরো কত কী? তার চেয়ে পীড়াদায়ক ঘটনা ছিল, সেসবের সঠিক তদন্ত না করে 'জজ মিয়া' ধরনের প্রহসন তৈরি করা হয়েছিল। আমাদের আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশনও দেখতে হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ আদালতে জাল সনদধারীকেও বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেতে দেখেছি। লগি-বৈঠা আর কাস্তে-লাঠির মহড়াকেও আমাদের 'গণতন্ত্র' বলে মেনে নিতে হয়েছিল। কী অদ্ভুত ভাগ্য আমাদের!
'গণতান্ত্রিক' শাসনামলে সরকারের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে টাকার বস্তা লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। সরকারি ক্রয়প্রক্রিয়ায় লাগাতার দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়। একসময় বিশেষ ভবনের 'টেন পারসেন্ট' তো মুখে মুখে প্রচলিত ছিল। সরকারি পদে নিয়োগ এখন পুরোপুরি পণ্যে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতাধর কিংবা তাদের সন্তানদের অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ পাচারের অভিযোগ বিদেশের অনেক আদালতেই প্রমাণিত হয়েছে। ৩০ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত এই দেশকে বিশ্ববাসী পরপর পাঁচ বছর শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিনেছে। এত লজ্জা আমরা রাখি কোথায়! জানি না, জনগণের কল্যাণ-চিন্তায় যাঁদের ঘুম হয় না, গলা ফাটিয়ে বক্তৃতা করতে করতে গলা দিয়ে রক্ত আসে- তাঁদেরও লজ্জা হয় কি না! তাঁদের ন্যায়-অন্যায় বোধেরও তারিফ করতে হয়। ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা 'রাজনৈতিক মামলা' নাম দিয়ে চোর-ডাকাত-খুনিদেরও হাজার হাজার মামলা তুলে নেন। ক্ষমতা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দলীয় চোর-ডাকাত-খুনিরাও কারা-ফটক দিয়ে সদর্পে বেরিয়ে আসে। এমনকি আদালতে প্রমাণিত এবং শাস্তি হওয়া খুনিরাও ক্ষমা পেয়ে যায়। যাঁরা ক্ষমতায় থাকেন, তাঁরা বিরোধীদের দমন-পীড়নে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। আর যাঁরা বিরোধী দলে থাকেন, তাঁরা ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতে নানা কৌশলের আশ্রয় নেন। তাতে দেশের কিংবা দেশের মানুষের কী হলো- তা তাঁদের দেখার বিষয় নয়। আর আমরা তো জনগণ অথবা বলা যায়, আমজনতা। আমাদের সব কিছুই সয়ে যেতে হবে। এ ছাড়া আর উপায় কী?
'ভানুর কৌতুক'-এর সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। তাঁর একটি কৌতুকে আলুর দমের নাম রাখা হয়েছিল 'জনগণ আলুর দম'। আসলে জনগণ আলুর দম ছাড়া আর কী? তাকে যত খুশি পিষে মারুন। তাদের কিছুই বলার উপায় নেই। বড়জোর এই দল রেখে সেই দলে যাবে, আবার সেই দল থেকে এই দলে আসবে। আর আলুর দমের মতোই মথিত হতে থাকবে। আর ওই সব দলের নেতার জনগণের নামে অপকর্ম করে যাবে। সেদিন কাগজে দেখলাম, বর্তমান বিরোধী দলের এক শীর্ষ নেতা বলেছেন, জনগণ চেয়েছে বলেই তাঁরা হরতাল দিয়েছেন। সত্যিই তো, জনগণ কী না চায়! জনগণই তো চেয়েছিল, দরিদ্র বাসচালক বদর আলীকে পুড়িয়ে মারা হোক! সত্যিই, বড় বিচিত্র আমাদের এই দেশ! তার চেয়েও বিচিত্র এ দেশের রাজনীতি। আমরা যে সর্বংসহা, আমাদের সব কিছু সয়ে যেতেই হবে।
লেখক : সাংবাদিক
নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনে অনেক রক্তের বিনিময়ে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেয়েছিল। তারপর দুই দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। পালা করে দুটি দল বা জোটই ক্ষমতায় আসছে। মাঝখানে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুটি বছর ছাড়া পুরো সময়টাই আমরা 'গণতান্ত্রিক' শাসনামলে ছিলাম। গণতান্ত্রিক শব্দটিকে উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে রাখাটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু এ ছাড়া কোনো উপায় আছে কি? এই দুই দশকে দেশে গণতন্ত্র কতটুকু বিকাশ লাভ করেছে? আমাদের বিচার বিভাগ কতটুকু স্বাধীন হয়েছে? আমাদের নির্বাচন কমিশনকে কতটুকু শক্তিশালী করা হয়েছে? দলীয়করণ থেকে প্রশাসনকে কতটা মুক্ত করা হয়েছে? সংসদীয় গণতন্ত্রে রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয় সংসদ। সেই সংসদ কতটুকু কার্যকর হয়েছে? গণতন্ত্রে সহনশীলতা, পরমতসহিষ্ণুতা, পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হয়। আমাদের প্রধান দুটি পক্ষের আচরণে তার কতটা বিদ্যমান আছে? সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার উন্নতি হয়েছে কি? সম্ভবত কেউই প্রশ্নগুলোর ইতিবাচক উত্তর দিতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে আমরা বর্তমান রাজনীতিকে গণতান্ত্রিক রাজনীতি বলতে পারি কি না, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন। উল্টোভাবে বলতে গেলে বলা যায়, এই সময়ে সারা দেশে বিরোধী শিবির ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা দেখতে হয়েছে। সারা দেশে একযোগে পাঁচ শতাধিক স্থানে বোমা হামলা দেখতে হয়েছে। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টার এমপিকে জনসভাস্থলে হত্যা করা হয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতার জনসভায় বোমা ও গ্রেনেড হামলার ফলে ২৪ জন নিহত ও দুই শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছিল। এমনি আরো কত কী? তার চেয়ে পীড়াদায়ক ঘটনা ছিল, সেসবের সঠিক তদন্ত না করে 'জজ মিয়া' ধরনের প্রহসন তৈরি করা হয়েছিল। আমাদের আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশনও দেখতে হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ আদালতে জাল সনদধারীকেও বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেতে দেখেছি। লগি-বৈঠা আর কাস্তে-লাঠির মহড়াকেও আমাদের 'গণতন্ত্র' বলে মেনে নিতে হয়েছিল। কী অদ্ভুত ভাগ্য আমাদের!
'গণতান্ত্রিক' শাসনামলে সরকারের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে টাকার বস্তা লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। সরকারি ক্রয়প্রক্রিয়ায় লাগাতার দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়। একসময় বিশেষ ভবনের 'টেন পারসেন্ট' তো মুখে মুখে প্রচলিত ছিল। সরকারি পদে নিয়োগ এখন পুরোপুরি পণ্যে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতাধর কিংবা তাদের সন্তানদের অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ পাচারের অভিযোগ বিদেশের অনেক আদালতেই প্রমাণিত হয়েছে। ৩০ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত এই দেশকে বিশ্ববাসী পরপর পাঁচ বছর শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিনেছে। এত লজ্জা আমরা রাখি কোথায়! জানি না, জনগণের কল্যাণ-চিন্তায় যাঁদের ঘুম হয় না, গলা ফাটিয়ে বক্তৃতা করতে করতে গলা দিয়ে রক্ত আসে- তাঁদেরও লজ্জা হয় কি না! তাঁদের ন্যায়-অন্যায় বোধেরও তারিফ করতে হয়। ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা 'রাজনৈতিক মামলা' নাম দিয়ে চোর-ডাকাত-খুনিদেরও হাজার হাজার মামলা তুলে নেন। ক্ষমতা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দলীয় চোর-ডাকাত-খুনিরাও কারা-ফটক দিয়ে সদর্পে বেরিয়ে আসে। এমনকি আদালতে প্রমাণিত এবং শাস্তি হওয়া খুনিরাও ক্ষমা পেয়ে যায়। যাঁরা ক্ষমতায় থাকেন, তাঁরা বিরোধীদের দমন-পীড়নে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। আর যাঁরা বিরোধী দলে থাকেন, তাঁরা ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতে নানা কৌশলের আশ্রয় নেন। তাতে দেশের কিংবা দেশের মানুষের কী হলো- তা তাঁদের দেখার বিষয় নয়। আর আমরা তো জনগণ অথবা বলা যায়, আমজনতা। আমাদের সব কিছুই সয়ে যেতে হবে। এ ছাড়া আর উপায় কী?
'ভানুর কৌতুক'-এর সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। তাঁর একটি কৌতুকে আলুর দমের নাম রাখা হয়েছিল 'জনগণ আলুর দম'। আসলে জনগণ আলুর দম ছাড়া আর কী? তাকে যত খুশি পিষে মারুন। তাদের কিছুই বলার উপায় নেই। বড়জোর এই দল রেখে সেই দলে যাবে, আবার সেই দল থেকে এই দলে আসবে। আর আলুর দমের মতোই মথিত হতে থাকবে। আর ওই সব দলের নেতার জনগণের নামে অপকর্ম করে যাবে। সেদিন কাগজে দেখলাম, বর্তমান বিরোধী দলের এক শীর্ষ নেতা বলেছেন, জনগণ চেয়েছে বলেই তাঁরা হরতাল দিয়েছেন। সত্যিই তো, জনগণ কী না চায়! জনগণই তো চেয়েছিল, দরিদ্র বাসচালক বদর আলীকে পুড়িয়ে মারা হোক! সত্যিই, বড় বিচিত্র আমাদের এই দেশ! তার চেয়েও বিচিত্র এ দেশের রাজনীতি। আমরা যে সর্বংসহা, আমাদের সব কিছু সয়ে যেতেই হবে।
লেখক : সাংবাদিক
No comments