রাজধানীতে পানি সঙ্কট ভয়াবহ হবে গ্রীষ্মেঃ ওয়াসা বলছে হবে না!
বিদ্যুৎ ও গ্যাস সঙ্কটে নাজেহাল রাজধানীবাসীর সামনে অপেক্ষা করছে আরেক বিপদ। আসন্ন গ্রীষ্মে পানি সঙ্কটের আশঙ্কা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেড়ে গেছে। বিদ্যুত্ ঘাটতির কারণে লোডশেডিং বাড়ার ফলে পানি সঙ্কট না বেড়ে পারে না।
রাজধানীতে লোডশেডিং বাড়বে—এমন ঘোষণাই দিয়েছে সরকার। সেচ কাজে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতেই শহরে বিদ্যুত্ সরবরাহ কমানোর কথা বলা হয়েছে। তখন পানির পাম্প অচল থাকলে পানির ঘাটতি ৫০ থেকে ৬০ কোটি লিটার হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজধানীতে দৈনিক পানির চাহিদা ২২০ থেকে ২২৫ কোটি লিটার। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নগরীতে পানির চাহিদা বাড়ছে বছরে কমপক্ষে ১০ কোটি লিটার। কিন্তু উত্পাদন বাড়ছে না। বর্তমানে ওয়াসার দৈনিক পানি উত্পাদন ক্ষমতা ২০০ কোটি লিটার হলেও লোডশেডিং ও যান্ত্রিক কারণে ১৯০ কোটি লিটারের বেশি উত্পাদন হয় না। গ্রীষ্মকালে এর পরিমাণ নেমে দাঁড়ায় ১৬০ থেকে ১৭০ কোটি লিটার। তাই স্বাভাবিকভাবেই তখন পানির ঘাটতি দাঁড়াবে ৫০ থেকে ৬০ কোটি লিটার। পরিস্থিতি অনুকূল না হলে এ ঘাটতি বেড়ে যাবে সন্দেহ নেই।
গ্রীষ্মকালে পরিস্থিতি ভালো হবে, এমন আশা দুরাশা মাত্র। বিদ্যুত্ ঘাটতি ছাড়াও তখন ভোল্টেজ নেমে যায় বাস্তব কারণেই। গত মৌসুমে ৯০০ থেকে ১২০০ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে ভোল্টেজের কারণেই। ফলে পানির পাম্প দৈনিক ২ থেকে ৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকায় জেনারেটর চালিয়ে পানি তুলতে হয়েছে। জেনারেটরের ক্ষমতা কম হওয়ায় পানির সরবরাহে ঘাটতি এড়ানো যায়নি। তবে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জেনারেটর ও পাম্পের সংখ্যা বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন। অন্যদিকে লোডশেডিং এড়ানোর জন্য বিদ্যুতের লাইন ডাবল করা হয়েছে। যাতে এক লাইনে বিদ্যুত্ না থাকলে অন্য লাইনের বিদ্যুত্ নিয়ে পাম্প চালানো যায়। এভাবে ওয়াসা পানি উত্তোলন ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলেও গ্রাহক পর্যায়ে প্রাপ্তি নিশ্চিত থাকবে, এটা জোর দিয়ে বলা যায় না।
কারণ রাজধানীজুড়ে রয়েছে ওয়াসার লাইনে অসংখ্য অবৈধ সংযোগ। নিত্যনতুন গড়ে ওঠা বহুতল ভবন, শিল্প কারখানা, গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি, হোটেল রেস্তোরাঁ প্রভৃতির মালিকরা নিয়মিত মোটা অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ পানি ব্যবহার করে। এ জন্য তারা বিশাল আকারের ট্যাঙ্কে পানি জমিয়ে রাখে। ফলে পানির উত্পাদন স্বাভাবিক থাকলেও সরবরাহের ঘাটতি দূর হয় না। বেড়ায় ক্ষেত খাওয়ার মতো ওয়াসার লোকজন এর সঙ্গে জড়িত থাকার ফলে এ নিয়ে হইচই হলেও বাস্তবে কিছু হয় না। তাছাড়া বিপদের আরও দরজা খোলা রয়েছে। ক্রমাগত পানি তোলার ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১০ ফুট করে নেমে যাচ্ছে। এতে করে ভূমিধসের আশঙ্কা ছাড়াও পানির স্বাভাবিক উত্পাদন ধরে রাখা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। রাজধানীর আশপাশে নদী-খাল-জলাশয়গুলো দূষিত ও পানিশূন্য হয়ে পড়ায় বিকল্প উত্স ব্যবহারে সুফলও পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এবার নগরীর কোনো এলাকাতেই পানির সঙ্কট হবে না বলে বড় গলায় আশ্বস্ত করলেও তার ওপর কতটা ভরসা রাখা যায় সে প্রশ্নটা থেকেই যায়।
সরকার যদি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাজধানীর পানি সঙ্কটের সমাধানে আগ্রহী হয় তবে ভিন্নকথা। পানি চুরি ও ওয়াসার ভেতরে বিরাজমান অব্যবস্থা-দুর্নীতি কঠোর হাতে বন্ধ করা গেলে তাত্ক্ষণিক কিছু ফল পাওয়া যেতে পারে। এর পাশাপাশি ওয়াসার হাতে দীর্ঘমেয়াদি যে প্রকল্পগুলো ফাইল চাপা পড়ে আছে সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়িত হলে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে তা জোর দিয়েই বলা যায়। খিলক্ষেতে ৫০ কোটি লিটার উত্পাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি পানি শোধনাগার তৈরির পরিকল্পনা বহুদিন ধরে আটকে আছে। এছাড়া পদ্মা ও মেঘনা নদী থেকে পানি এনে ৪৫ কোটি লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি পানি শোধনাগার প্রকল্প হাতে নিলেও সে দুটোও সম্ভবত হিমাগারেই ঘুমিয়ে আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়া এ কালঘুম ভাঙবে—এমনটি আশা করা কঠিন।
রাজধানীতে দৈনিক পানির চাহিদা ২২০ থেকে ২২৫ কোটি লিটার। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নগরীতে পানির চাহিদা বাড়ছে বছরে কমপক্ষে ১০ কোটি লিটার। কিন্তু উত্পাদন বাড়ছে না। বর্তমানে ওয়াসার দৈনিক পানি উত্পাদন ক্ষমতা ২০০ কোটি লিটার হলেও লোডশেডিং ও যান্ত্রিক কারণে ১৯০ কোটি লিটারের বেশি উত্পাদন হয় না। গ্রীষ্মকালে এর পরিমাণ নেমে দাঁড়ায় ১৬০ থেকে ১৭০ কোটি লিটার। তাই স্বাভাবিকভাবেই তখন পানির ঘাটতি দাঁড়াবে ৫০ থেকে ৬০ কোটি লিটার। পরিস্থিতি অনুকূল না হলে এ ঘাটতি বেড়ে যাবে সন্দেহ নেই।
গ্রীষ্মকালে পরিস্থিতি ভালো হবে, এমন আশা দুরাশা মাত্র। বিদ্যুত্ ঘাটতি ছাড়াও তখন ভোল্টেজ নেমে যায় বাস্তব কারণেই। গত মৌসুমে ৯০০ থেকে ১২০০ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে ভোল্টেজের কারণেই। ফলে পানির পাম্প দৈনিক ২ থেকে ৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকায় জেনারেটর চালিয়ে পানি তুলতে হয়েছে। জেনারেটরের ক্ষমতা কম হওয়ায় পানির সরবরাহে ঘাটতি এড়ানো যায়নি। তবে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জেনারেটর ও পাম্পের সংখ্যা বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন। অন্যদিকে লোডশেডিং এড়ানোর জন্য বিদ্যুতের লাইন ডাবল করা হয়েছে। যাতে এক লাইনে বিদ্যুত্ না থাকলে অন্য লাইনের বিদ্যুত্ নিয়ে পাম্প চালানো যায়। এভাবে ওয়াসা পানি উত্তোলন ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলেও গ্রাহক পর্যায়ে প্রাপ্তি নিশ্চিত থাকবে, এটা জোর দিয়ে বলা যায় না।
কারণ রাজধানীজুড়ে রয়েছে ওয়াসার লাইনে অসংখ্য অবৈধ সংযোগ। নিত্যনতুন গড়ে ওঠা বহুতল ভবন, শিল্প কারখানা, গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি, হোটেল রেস্তোরাঁ প্রভৃতির মালিকরা নিয়মিত মোটা অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ পানি ব্যবহার করে। এ জন্য তারা বিশাল আকারের ট্যাঙ্কে পানি জমিয়ে রাখে। ফলে পানির উত্পাদন স্বাভাবিক থাকলেও সরবরাহের ঘাটতি দূর হয় না। বেড়ায় ক্ষেত খাওয়ার মতো ওয়াসার লোকজন এর সঙ্গে জড়িত থাকার ফলে এ নিয়ে হইচই হলেও বাস্তবে কিছু হয় না। তাছাড়া বিপদের আরও দরজা খোলা রয়েছে। ক্রমাগত পানি তোলার ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১০ ফুট করে নেমে যাচ্ছে। এতে করে ভূমিধসের আশঙ্কা ছাড়াও পানির স্বাভাবিক উত্পাদন ধরে রাখা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। রাজধানীর আশপাশে নদী-খাল-জলাশয়গুলো দূষিত ও পানিশূন্য হয়ে পড়ায় বিকল্প উত্স ব্যবহারে সুফলও পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এবার নগরীর কোনো এলাকাতেই পানির সঙ্কট হবে না বলে বড় গলায় আশ্বস্ত করলেও তার ওপর কতটা ভরসা রাখা যায় সে প্রশ্নটা থেকেই যায়।
সরকার যদি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাজধানীর পানি সঙ্কটের সমাধানে আগ্রহী হয় তবে ভিন্নকথা। পানি চুরি ও ওয়াসার ভেতরে বিরাজমান অব্যবস্থা-দুর্নীতি কঠোর হাতে বন্ধ করা গেলে তাত্ক্ষণিক কিছু ফল পাওয়া যেতে পারে। এর পাশাপাশি ওয়াসার হাতে দীর্ঘমেয়াদি যে প্রকল্পগুলো ফাইল চাপা পড়ে আছে সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়িত হলে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে তা জোর দিয়েই বলা যায়। খিলক্ষেতে ৫০ কোটি লিটার উত্পাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি পানি শোধনাগার তৈরির পরিকল্পনা বহুদিন ধরে আটকে আছে। এছাড়া পদ্মা ও মেঘনা নদী থেকে পানি এনে ৪৫ কোটি লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি পানি শোধনাগার প্রকল্প হাতে নিলেও সে দুটোও সম্ভবত হিমাগারেই ঘুমিয়ে আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়া এ কালঘুম ভাঙবে—এমনটি আশা করা কঠিন।
No comments