বহুমুখী তাণ্ডবের শিকার নদীঃ শুকিয়ে যাচ্ছে আরও এক ডজন
হাজার নদীর দেশে এখন পানির আকাল। একে একে শুকিয়ে যাচ্ছে নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রমত্তা নদীগুলো। অর্ধশতাধিক নদীই আজ মৃত। কোনো কোনোটির চিহ্নমাত্র নেই। দেখে আন্দাজ করা মুশকিল একসময় এখানে বয়ে যেত কলস্বরা নদী।
অনেক নদী ক্রমেই পরিণত হয়েছে টুকরো টুকরো বদ্ধ জলাশয়ে। কোনোটি শীর্ণকায় খাল, কোনোটি আবার দূষণের শিকার হয়ে পরিণত হয়েছে ভাগাড়ে। নদীর এই দুরবস্থার জন্য দায়ী শুধু জলবায়ুর পরিবর্তন নয়, বরং তার চেয়ে বহু বেশি দায়ী মানুষের অবিমৃষ্যকারিতা। এই দ্বিমুখী আক্রমণে সেদিনও যেসব নদীতে বছরভর নৌযান চলত অবাধে, পাওয়া যেত বিস্তর মাছ, সেচের পর্যাপ্ত পানি—সেগুলোও ক্রমাগত পানিশূন্য হয়ে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খননের অভাবে নদীতে যত্রতত্র জেগে উঠছে চর। এর ওপর দখলবাজ ভূমিদস্যুদের হাতে নদী ভরাট হতে হতে নদীত্ব হারিয়ে ফেলছে অসংখ্য নদী। ফলে বর্ষায় তীর উপচে দেখা দিচ্ছে ভয়াবহ বন্যা, আবার চিকন ধারায় পরিণত হচ্ছে শীতকালে। সারা দেশের মতো বর্তমানে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলেও বদলে যাচ্ছে নদীর চিরায়ত চেহারা। সেখানে এখন শুকিয়ে যাওয়ার পথে ডজনখানেক নদী।
জানা গেছে, এ অঞ্চলে বহমান ১২টি নদীর মধ্যে কোনোমতে টিকে আছে দুটি নদী—ভৈরব ও কপোতাক্ষ। বাকিগুলো বয়ে চলছে খাল-নালার মতো। নদীগুলোর দু’পাড় ভরাট হতে হতে পরিণত হয়েছে ধু-ধু মাঠে। স্থানবিশেষে গড়ে উঠছে স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা, চলছে চাষাবাদ। তুলনামূলকভাবে সচল কপোতাক্ষ এবং ভৈরবের বুকেও চলছে প্রাকৃতিক ও ভূমিদস্যুদের ভরাট প্রক্রিয়া। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এভাবে চললে এ দুটো নদীও অচল নদীর তালিকাভুক্ত হবে দু-এক বছরে। উল্লেখ্য, ভারত উজানে একাধিক বাঁধ দিয়ে আমাদের নদীর বহমানতায় যে বাধার সৃষ্টি করেছে, তাকে আরও প্রকট করে তুলেছে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা। দাতা সংস্থাগুলোর পরামর্শ ও অর্থায়নে অপরিকল্পিত জলকাঠামো নির্মাণ অনেক নদীর জন্যই হয়েছে কাল। এর ওপর রয়েছে ভূমিদস্যুদের প্রতিনিয়ত নদী দখলের তাণ্ডব। রাজনৈতিক নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সরকারের পদস্থ আমলা, কর্মকর্তা এবং স্থানীয় প্রভাবশালীরা কখনও গায়ের জোরে, কখনও ভুয়া দলিল-দস্তাবেজ বানিয়ে ভরাট করছে এমনকি নদীর তলদেশ পর্যন্ত। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলোও স্বাভাবিক কারণেই এ থেকে রেহাই পায়নি। মাঝেমধ্যে সরকারিভাবে খনন কাজ চললেও শেষ পর্যন্ত দুর্নীতির কবলে পড়ে ভেস্তে গেছে গোটা প্রকল্পের উদ্দেশ্য। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় বানানো ব্রিজ-কালভার্ট চাপা পড়েছে বালির নিচে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ নদীর ওপর বিশ্বব্যাংক, ইউএসএইড ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে পানি উন্নয়ন বোর্ড গত চার দশক ধরে যেসব স্থাপনা তৈরি করেছে, সেগুলোই এখন কপোতাক্ষ নদের বহমানতার প্রতিপক্ষ হয়ে দেখা দিয়েছে। আর তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া সইতে হচ্ছে ৫০টি ইউনিয়নের ৬০ লাখ মানুষকে।
উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে, রাজধানী ঢাকার চারপাশের ছয়টি নদীসহ দেশের প্রায় আট ডজন নদীর অবস্থা এখন অত্যন্ত শোচনীয়। অবৈধ দখল, অপরিকল্পিত-অবৈধ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নির্মাণ, খনন কাজে দুর্নীতি ও অপর্যাপ্ততা মিলিয়ে সচল নদীপথের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমছে। এক হিসাবমতে, গত ২৫ বছরে নৌপথের পরিমাণ কমেছে অন্তত দু’হাজার কিলোমিটার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নৌচলাচল মোটামুটি স্বাভাবিক করতে ৫৩টি চিহ্নিত নদী খনন করা জরুরি। এ কাজে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিএ) দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প নেয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। মৃত ও মৃতপ্রায় নদীগুলো সচল করার জন্য অর্থায়ন পাওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
বাস্তবতা হচ্ছে, নদীকে নাব্য করতে এ ধরনের বিস্তর কথাবার্তা হয়েছে। কিন্তু নদীর মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না, নদী থেকে দখলদার ভূমিদস্যুদের হঠানোর কাজ ঠিকমত চলছে না, খননের নামে লুটপাট বন্ধ হচ্ছে না। বর্তমান সরকার নদী সংস্কার ও নদী খননের কথা খুব জোরেশোরেই বলছে। কমবেশি কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু গতি খুব ঢিলেঢালা। এভাবে চলতে থাকলে মৃত নদী দূরের কথা, মৃতপ্রায় নদীগুলোও নাব্য ফিরে পাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে।
জানা গেছে, এ অঞ্চলে বহমান ১২টি নদীর মধ্যে কোনোমতে টিকে আছে দুটি নদী—ভৈরব ও কপোতাক্ষ। বাকিগুলো বয়ে চলছে খাল-নালার মতো। নদীগুলোর দু’পাড় ভরাট হতে হতে পরিণত হয়েছে ধু-ধু মাঠে। স্থানবিশেষে গড়ে উঠছে স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা, চলছে চাষাবাদ। তুলনামূলকভাবে সচল কপোতাক্ষ এবং ভৈরবের বুকেও চলছে প্রাকৃতিক ও ভূমিদস্যুদের ভরাট প্রক্রিয়া। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এভাবে চললে এ দুটো নদীও অচল নদীর তালিকাভুক্ত হবে দু-এক বছরে। উল্লেখ্য, ভারত উজানে একাধিক বাঁধ দিয়ে আমাদের নদীর বহমানতায় যে বাধার সৃষ্টি করেছে, তাকে আরও প্রকট করে তুলেছে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা। দাতা সংস্থাগুলোর পরামর্শ ও অর্থায়নে অপরিকল্পিত জলকাঠামো নির্মাণ অনেক নদীর জন্যই হয়েছে কাল। এর ওপর রয়েছে ভূমিদস্যুদের প্রতিনিয়ত নদী দখলের তাণ্ডব। রাজনৈতিক নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সরকারের পদস্থ আমলা, কর্মকর্তা এবং স্থানীয় প্রভাবশালীরা কখনও গায়ের জোরে, কখনও ভুয়া দলিল-দস্তাবেজ বানিয়ে ভরাট করছে এমনকি নদীর তলদেশ পর্যন্ত। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলোও স্বাভাবিক কারণেই এ থেকে রেহাই পায়নি। মাঝেমধ্যে সরকারিভাবে খনন কাজ চললেও শেষ পর্যন্ত দুর্নীতির কবলে পড়ে ভেস্তে গেছে গোটা প্রকল্পের উদ্দেশ্য। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় বানানো ব্রিজ-কালভার্ট চাপা পড়েছে বালির নিচে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ নদীর ওপর বিশ্বব্যাংক, ইউএসএইড ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে পানি উন্নয়ন বোর্ড গত চার দশক ধরে যেসব স্থাপনা তৈরি করেছে, সেগুলোই এখন কপোতাক্ষ নদের বহমানতার প্রতিপক্ষ হয়ে দেখা দিয়েছে। আর তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া সইতে হচ্ছে ৫০টি ইউনিয়নের ৬০ লাখ মানুষকে।
উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে, রাজধানী ঢাকার চারপাশের ছয়টি নদীসহ দেশের প্রায় আট ডজন নদীর অবস্থা এখন অত্যন্ত শোচনীয়। অবৈধ দখল, অপরিকল্পিত-অবৈধ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নির্মাণ, খনন কাজে দুর্নীতি ও অপর্যাপ্ততা মিলিয়ে সচল নদীপথের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমছে। এক হিসাবমতে, গত ২৫ বছরে নৌপথের পরিমাণ কমেছে অন্তত দু’হাজার কিলোমিটার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নৌচলাচল মোটামুটি স্বাভাবিক করতে ৫৩টি চিহ্নিত নদী খনন করা জরুরি। এ কাজে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিএ) দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প নেয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। মৃত ও মৃতপ্রায় নদীগুলো সচল করার জন্য অর্থায়ন পাওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
বাস্তবতা হচ্ছে, নদীকে নাব্য করতে এ ধরনের বিস্তর কথাবার্তা হয়েছে। কিন্তু নদীর মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না, নদী থেকে দখলদার ভূমিদস্যুদের হঠানোর কাজ ঠিকমত চলছে না, খননের নামে লুটপাট বন্ধ হচ্ছে না। বর্তমান সরকার নদী সংস্কার ও নদী খননের কথা খুব জোরেশোরেই বলছে। কমবেশি কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু গতি খুব ঢিলেঢালা। এভাবে চলতে থাকলে মৃত নদী দূরের কথা, মৃতপ্রায় নদীগুলোও নাব্য ফিরে পাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে।
No comments