ডায়াবেটিস প্রতিরোধক সামুদ্রিক শৈবাল by মাহবুব আলম
‘সামুদ্রিক শৈবাল’ বিশ্বব্যাপী একটি গুরুত্বপূর্ণ জলজ সম্পদ হিসেবে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে মানুষের ভক্ষণযোগ্য ও শিল্পের কাচাঁমাল ছাড়াও রপ্তানি পণ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে এ জলজ উদ্ভিদ। এটি উচ্চ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং ঔষুধি ও শিল্পের কাঁচামালে সমৃদ্ধ প্রজাতি।
এর ক্যরাজিনান নামক পদার্থ মানবদেহে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। এমনকি ক্যান্সার, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধক হিসেবেও এটি ব্যবহার করা হয়।
সামুদ্রিক শৈবালের এমনসব গুণসহ নানা তথ্য উঠে এসেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজ এর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জাফর পরিচালিত এক গবেষণায়।
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বিশেষ করে সেন্টমার্টিনস দ্বীপে ১৪০ প্রজাতিরও বেশি শৈবাল পাওয়া যায়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এ সম্পদ দেশের অর্থনীতিতে কোন ভূমিকাই রাখছে না, বরং সমুদ্রতটে অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হচ্ছে।
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধশালী হিসেবে গড়ে তুলতে পারে সেন্টমার্টিনস দ্বীপ ও ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের লবণাক্ত জলরাশিতে অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হওয়া এই ‘সামুদ্রিক শৈবাল’ যার বৈজ্ঞানিক নাম Hypnea sp ও Caulerpa racemosa।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে ড. মোহাম্মদ জাফর বলেন, ‘জলজ উদ্ভিদ শৈবাল আমরা প্রতি নিয়ত অবচেতন মনে ব্যবহার করছি। চকলেক, ট্যাবলেটের বাইন্ডিংসহ নানাভাবে একে আমরা ব্যবহার করি।’
ব্রিটিশ সরকারের আর্ন্তর্জাতিক সংস্থা ডিএফআইডি (DFID) এর সোফার (SUFER) প্রকল্প এবং বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আর্থিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজের কারিগরি সহযোগিতায় এ গবেষণা সম্পন্ন করেছেন প্রফেসর ড. জাফর। যা দেশের জলজ উপকারী উদ্ভিদ চাষের ক্ষেত্রে একটি নতুন ও সম্ভবনাময় দ্বার খুলে দিয়েছে।
এক গবেষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শুধু ঔষুধই নয়- অর্থনীতিতেও এর অবদান রয়েছে। বিশ্বের অন্যতম উন্নত দেশ জাপানে জিডিপির শতকরা ১ শতাংশ অবদান রাখছে শৈবাল। চীন ও জাপানে জনগণের খাদ্যভাসে শৈবাল রাখায় ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক কম। অনেক সময় ডায়রিয়ার ঔষধ হিসেবেও এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। টিউমার বৃদ্ধি রহিতকরণের পদার্থ তো এতে আছেই।’
বাংলাদেশেও শৈবাল হতে অন্যতম রপ্তানি পণ্য। এই প্রয়োজনীয় জলজ উদ্ভিদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও রক্ষায় সরকারি পৃষ্টপোষকতার পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ের উদ্যোগ দরকার বলে মনে করেন তিনি।
দেশে শৈবাল চাষ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন জানিয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে গবেষক ড. জাফর বলেন, ‘বিশ্বে সামুদ্রিক শৈবালের বার্ষিক উৎপাদন প্রায় ১০ মিলিয়ন মেট্রিকটন। বাংলাদেশের জন্য সামুদ্রিক শৈবাল চাষ সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারণা।’
‘দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে (প্রধানত সেন্টমার্টিনস দ্বীপে) সামুদ্রিক শৈবাল চাষ শুরু হয়েছে। ম্যানগ্রোভ এলাকাও প্রায় ১০ প্রজাতির শৈবাল আছে। এগুলো সংগ্রহ ও চাষাবাদ করে অনেক বেকার স্বাবলম্বীও হচ্ছে।’-জানালেন জাফর।
তবে স্থানীয় লোকদের আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা নেই বলেও জানান তিনি।
মাঠ পর্যায়ে গবেষণা তথ্যে জানা যায়, Hypnea sp (যা কুমারীর চুল বা সেমাই হিসেবে পরিচিত) একটি দ্রুত-বর্ধনশীল প্রজাতি এবং এটি যে কোন শক্ত বস্তুর উপর জন্মে। প্রবাল, পাথর, রশি, বাঁশসহ অন্য শৈবালের উপরও জন্মে এই জলজ উদ্ভিদ।
গবেষক জানান, সরকার সেন্টমার্টিনস এলাকাকে ‘ক্রিটিক্যাল জোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু ওইখানে বাণিজ্যিকভাবে ও প্রাকৃতিকভাবে শৈবাল চাষ করলে পরিবেশের আরও সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সম্পাদিত এ গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০০২ সালে। এর উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য সামুদ্রিক শৈবাল চাষ প্রদ্ধতির উদ্ভাবন, যা সহজেই স্থাপনযোগ্য ও চাষের অনুকূলে। এ প্রযুক্তি চাষীরা সহজেই ব্যবহার করতে পারে এবং চাষ পদ্ধতির উপাদানগুলো জৈব ও পরিবেশ বান্ধবও বটে।’
সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সামুদ্রিক শৈবালের ব্যাপক চাষের উদ্যোগ, এর পুষ্টিগুণ, অর্থনৈতিক চাহিদা, জনসচেতনতা তৈরিতে প্রচার-প্রচারণা, ক্যাম্পেইনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিলে দেশে এর বৈধ ও স্থায়ী বাজার সৃষ্টি সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন গবেষক ড. জাফর।
‘সেন্টমাটিনস দ্বীপের স্থানীয় লোকজন জোয়ার-ভাটার অর্ন্তবর্তী স্থান থেকে সামুদ্রিক শৈবাল সংগ্রহ করে সূযের্র তাপে শুকিয়ে তা প্রতি মণ ২৫০-৫০০ টাকা (৭ থেকে ৮ ডলার) হারে মিয়ানমারে বিক্রি করছে। যা যুগ যুগ ধরে চলছে।’
জিডিপিতে বিশেষ অবদান রাখতে পরে এই সামুদ্রিক শৈবাল দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই প্রয়োজনীয় জলজ উদ্ভিদের যদি কার্যকর ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়, তবে মিয়ানমার ছাড়াও জাপান, চীন, সিঙ্গাপুর, হংকং, ব্রাজিল, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট ও যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের আন্তর্জাতিক বাজার দখল করা সম্ভব।’
বাংলানিউজকে ড. জাফর এ সর্ম্পকে বলেন, ‘উচ্চ পুষ্টিমান গুণসম্পন্ন এ জলজ উদ্ভিদটি ডায়াবেটিসের প্রতিরোধ হিসেবে অগ্রগণ্য ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপই এই সামুদ্রিক শৈবাল বাংলাদেশের একটি নতুন রপ্তানি পণ্য হিসেবে যোগ হয়ে অর্থনীতি সমৃদ্ধ করতে পারে।’
সামুদ্রিক শৈবালের এমনসব গুণসহ নানা তথ্য উঠে এসেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজ এর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জাফর পরিচালিত এক গবেষণায়।
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বিশেষ করে সেন্টমার্টিনস দ্বীপে ১৪০ প্রজাতিরও বেশি শৈবাল পাওয়া যায়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এ সম্পদ দেশের অর্থনীতিতে কোন ভূমিকাই রাখছে না, বরং সমুদ্রতটে অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হচ্ছে।
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধশালী হিসেবে গড়ে তুলতে পারে সেন্টমার্টিনস দ্বীপ ও ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের লবণাক্ত জলরাশিতে অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হওয়া এই ‘সামুদ্রিক শৈবাল’ যার বৈজ্ঞানিক নাম Hypnea sp ও Caulerpa racemosa।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে ড. মোহাম্মদ জাফর বলেন, ‘জলজ উদ্ভিদ শৈবাল আমরা প্রতি নিয়ত অবচেতন মনে ব্যবহার করছি। চকলেক, ট্যাবলেটের বাইন্ডিংসহ নানাভাবে একে আমরা ব্যবহার করি।’
ব্রিটিশ সরকারের আর্ন্তর্জাতিক সংস্থা ডিএফআইডি (DFID) এর সোফার (SUFER) প্রকল্প এবং বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আর্থিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজের কারিগরি সহযোগিতায় এ গবেষণা সম্পন্ন করেছেন প্রফেসর ড. জাফর। যা দেশের জলজ উপকারী উদ্ভিদ চাষের ক্ষেত্রে একটি নতুন ও সম্ভবনাময় দ্বার খুলে দিয়েছে।
এক গবেষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শুধু ঔষুধই নয়- অর্থনীতিতেও এর অবদান রয়েছে। বিশ্বের অন্যতম উন্নত দেশ জাপানে জিডিপির শতকরা ১ শতাংশ অবদান রাখছে শৈবাল। চীন ও জাপানে জনগণের খাদ্যভাসে শৈবাল রাখায় ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক কম। অনেক সময় ডায়রিয়ার ঔষধ হিসেবেও এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। টিউমার বৃদ্ধি রহিতকরণের পদার্থ তো এতে আছেই।’
বাংলাদেশেও শৈবাল হতে অন্যতম রপ্তানি পণ্য। এই প্রয়োজনীয় জলজ উদ্ভিদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও রক্ষায় সরকারি পৃষ্টপোষকতার পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ের উদ্যোগ দরকার বলে মনে করেন তিনি।
দেশে শৈবাল চাষ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন জানিয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে গবেষক ড. জাফর বলেন, ‘বিশ্বে সামুদ্রিক শৈবালের বার্ষিক উৎপাদন প্রায় ১০ মিলিয়ন মেট্রিকটন। বাংলাদেশের জন্য সামুদ্রিক শৈবাল চাষ সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারণা।’
‘দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে (প্রধানত সেন্টমার্টিনস দ্বীপে) সামুদ্রিক শৈবাল চাষ শুরু হয়েছে। ম্যানগ্রোভ এলাকাও প্রায় ১০ প্রজাতির শৈবাল আছে। এগুলো সংগ্রহ ও চাষাবাদ করে অনেক বেকার স্বাবলম্বীও হচ্ছে।’-জানালেন জাফর।
তবে স্থানীয় লোকদের আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা নেই বলেও জানান তিনি।
মাঠ পর্যায়ে গবেষণা তথ্যে জানা যায়, Hypnea sp (যা কুমারীর চুল বা সেমাই হিসেবে পরিচিত) একটি দ্রুত-বর্ধনশীল প্রজাতি এবং এটি যে কোন শক্ত বস্তুর উপর জন্মে। প্রবাল, পাথর, রশি, বাঁশসহ অন্য শৈবালের উপরও জন্মে এই জলজ উদ্ভিদ।
গবেষক জানান, সরকার সেন্টমার্টিনস এলাকাকে ‘ক্রিটিক্যাল জোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু ওইখানে বাণিজ্যিকভাবে ও প্রাকৃতিকভাবে শৈবাল চাষ করলে পরিবেশের আরও সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সম্পাদিত এ গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০০২ সালে। এর উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য সামুদ্রিক শৈবাল চাষ প্রদ্ধতির উদ্ভাবন, যা সহজেই স্থাপনযোগ্য ও চাষের অনুকূলে। এ প্রযুক্তি চাষীরা সহজেই ব্যবহার করতে পারে এবং চাষ পদ্ধতির উপাদানগুলো জৈব ও পরিবেশ বান্ধবও বটে।’
সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সামুদ্রিক শৈবালের ব্যাপক চাষের উদ্যোগ, এর পুষ্টিগুণ, অর্থনৈতিক চাহিদা, জনসচেতনতা তৈরিতে প্রচার-প্রচারণা, ক্যাম্পেইনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিলে দেশে এর বৈধ ও স্থায়ী বাজার সৃষ্টি সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন গবেষক ড. জাফর।
‘সেন্টমাটিনস দ্বীপের স্থানীয় লোকজন জোয়ার-ভাটার অর্ন্তবর্তী স্থান থেকে সামুদ্রিক শৈবাল সংগ্রহ করে সূযের্র তাপে শুকিয়ে তা প্রতি মণ ২৫০-৫০০ টাকা (৭ থেকে ৮ ডলার) হারে মিয়ানমারে বিক্রি করছে। যা যুগ যুগ ধরে চলছে।’
জিডিপিতে বিশেষ অবদান রাখতে পরে এই সামুদ্রিক শৈবাল দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই প্রয়োজনীয় জলজ উদ্ভিদের যদি কার্যকর ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়, তবে মিয়ানমার ছাড়াও জাপান, চীন, সিঙ্গাপুর, হংকং, ব্রাজিল, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট ও যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের আন্তর্জাতিক বাজার দখল করা সম্ভব।’
বাংলানিউজকে ড. জাফর এ সর্ম্পকে বলেন, ‘উচ্চ পুষ্টিমান গুণসম্পন্ন এ জলজ উদ্ভিদটি ডায়াবেটিসের প্রতিরোধ হিসেবে অগ্রগণ্য ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপই এই সামুদ্রিক শৈবাল বাংলাদেশের একটি নতুন রপ্তানি পণ্য হিসেবে যোগ হয়ে অর্থনীতি সমৃদ্ধ করতে পারে।’
No comments