মন্ত্রী হলে মাথা পাগল পাগল লাগে! by স্বদেশ রায়
ক্ষমতার চেয়ারটি বড়ই সর্বনেশে। এখানে বিপ্লবীকে করে তোলে মৌলবাদী, গণতন্ত্রীকে করে তোলে স্বৈরাচারী। এটা আসলে যেন এক হীরক রাজার দেশ। এখানে ঢুকলে অধিকাংশই কেবল অদ্ভুত আচরণ করে। স্বাভাবিক থাকে খুব কমই। আর ওই কমসংখ্যক যারা স্বাভাবিক থাকে, যাদের মাথা পাগল পাগল লাগে না।
মানুষের কাতারে শেষ অবধি তারাই কেবল ফিরে আসতে পারে। ইতিহাসের পাতায় দুই চার লাইন শোভন ভাষা কেবল তাদের জন্য ব্যবহার হয়।
এক সময় ধারণা করা হতো, এখানে কেবল উঁচুতলার মানুষরা আসে বলেই এমনটি ঘটে। শ্র্রমজীবী মানুষ এলে এমন হবে না। অবশ্য রবীন্দ্রনাথ, মুজতবা আলী সবাই আকারে ইঙ্গিতে লিখেছিলেন সোভিয়েতে জারের স্থানটি কমরেডরা দখল করে বসে আছেন। রস সম্রাট রাজশেখর বসু অবশ্য তাঁর গল্পে লেখেন, শ্রমিকরা ক্ষমতায় গেলে ফাইল সই করবে কোন ভাষায়? এ সব কথার পরেও কিন্তু এ পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ চায় শ্রমজীবীরা রাষ্ট্র চালনা করুক। আর মিডিয়া সব সময়ই শ্রমজীবীদের প্রতিই থাকে সহানুভূতিশীল। যে কারণে আরাম আয়েশের নিরাপদ জীবন ছেড়ে শিক্ষিতজনরা যদি রাজনীতিতে আসেন তাদের কিন্তু মিডিয়া বাড়তি কোন প্রশংসা করে না। বলে না এই মানুষটি তার নিরাপদ জীবন ছেড়ে, তার শিক্ষা, তার অভিজ্ঞতা, রাজনীতিকে দেশের মানুষকে দিতে এসেছে। বরং অনেক সময় তাকে সুবিধাভোগী এবং বুর্জোয়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এর পরিবর্তে, যখন মন্ত্রী হবার আগে বেগম মন্নুজান সুফিয়ান নবাবপুরের আড়াই শ’ টাকা ভাড়ার হোটেল থেকে বঙ্গভবনে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে আসেন তখন মিডিয়া তাঁকে নিয়েই হই চই করে। ধারণা করা হয় রাজনীতির জন্য বিশাল ঘটনা ঘটে গেল। আমাদের দেশের মিডিয়া বাস্তবে কোন কিছু নিয়ে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে না। একটি ঘটনার চাপে আরেকটি ঘটনা তলিয়ে যায়। তাই হয়ত রক্ষা করা সম্ভব হয় না ধারাবাহিকতা। তা না হলে মিডিয়া হয়ত এতদিনে সংবাদ পরিবেশন করত, ওই ২৫০ টাকার হোটেলের বাসিন্দা এখন কত টাকা দামের গাড়িতে চড়েন। সাধারণ গাড়িতে তিনি চড়েন কি না?
যাহোক শ্রমিক রাজনীতিতে মন্নুজান সুফিয়ানের একটি দীর্ঘ অতীত আছে। তিনি হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠেননি। আজকের যে অবস্থানে এসেছেন এর জন্য তিনি দীর্ঘকাল রাজপথে সেøাগান দিয়েছেন। মন্ত্রিত্ব চালানোর জন্য আমাদের দেশের কোন রাজনীতিবিদ ওইভাবে নিজেকে তৈরি করেন না। যে কাজ শুরু করেছিল বিংশ শতাব্দীর শুরুতে এখানকার রাজনীতিবিদরা। সে সব এখন অতীতের গর্ভে। তাই মন্ত্রিত্বের জন্য কে কতটুকু তৈরি, কিভাবে তাঁরা দেশ চালান এ নিয়ে এখন আর কেউ ভাবে না। আল্লাহর ইচ্ছায় দেশটা চললে হলো আর কি? তাই মন্নুজান সুফিয়ান কেমন চালাচ্ছেন দেশ এ নিয়ে কেউ কোন খোঁজখবরও রাখেন না। বরং একজন দীর্ঘদিনের রাজপথের নেতা মন্ত্রী হয়েছেন এতেই খুশি হন অনেকে। যে কারণে কোন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বা আরও অনেকে যখন মন্নুজান সুফিয়ানের সামনে তাঁর বাড়ির পাশে মন্নুজানের বাড়ি এ কথা বলাতে অপমানিত হন মন্ত্রীর দ্বারা তখনও তাঁরা কিছু মনে করেন না। বরং রেওয়াজটি জেনে নেন যে এখন থেকে বলতে হবে মন্ত্রীর বাড়ির পাশে আমার বাড়ি। এটা না জানা যে এতদিন তাঁদের অজ্ঞতা ছিল এটাও তাঁরা নিজগুণে শুধরে নেন। কারণ, হাজার হোক মন্ত্রী বলে কথা! তাঁর বাড়ি কি অন্য কারও বাড়ির পাশে হতে পারে! আর এসব ঘটনা শুনেও কিন্তু কেউ ভাবে না, ক্ষমতা পেয়ে বা মন্ত্রী হয়ে মাথাটি একটু পাগল পাগল লাগছে। কিন্তু যেখানে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হয়েছেন। তাঁকে খুঁজে বের করার জন্য গোটা প্রশাসন কাজ করছে। ১১৭টির বেশি অপারেশন চালানো হয়েছে তাঁকে খুঁজে পেতে। অন্যদিকে বিরোধী দল তাঁর জন্য ইতোমধ্যে পাঁচটি হরতাল করেছে। পাঁচ জন মানুষ হত্যার কারণ হয়েছে। ঘুমন্ত এক বাস ড্রাইভারকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। রাস্তায় নির্বিচারে গণপরিবহন ভাঙছে। প্রাইভেট পরিবহন ভাঙছে। পেট্রোল বোমা ছুড়ছে। অর্থাৎ তারা ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়া নিয়ে রাজনীতি করছে। এ সব দেখে হয়ত ইলিয়াস আলীর স্ত্রী বুঝতে পেরেছেন তাঁর স্বামী এখন রাজনীতির ঘুঁটি মাত্র। অথচ যাঁকে নিয়ে এই রাজনীতি করা হচ্ছে তিনি তাঁর প্রিয়তম স্বামী, তাঁর সন্তানদের প্রিয়তম বাবা। স্বামী ব্যক্তি জীবনে যাই হোক না কেন, স্ত্রীর কাছে তিনি প্রিয়তম। আর বাবা সব সময়ই সন্তানের কাছে সূর্যের আলো। তাই দেখা যাচ্ছে, ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দু’জনেই তথাকথিত রাজনীতির দেয়াল ভেঙ্গে উঠে গেলেন মানবিকতার উচ্চ আসনে। ইলিয়াস আলীর স্ত্রী দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। আর শেখ হাসিনা তাঁকে বুকে নিয়ে দিলেন সর্বোচ্চ আশ্বাস।
এই ঘটনা যখন দেশে ঘটতে যাচ্ছে তার পূর্ব মুহূর্তে জনসভায় দাঁড়িয়ে, মন্নুজান সুফিয়ান বললেন, ‘ইলিয়াস আলীর বিধবা স্ত্রী।’ এবং এও বললেন, কে তার স্বামীকে খুন করেছে সেটা প্রধানমন্ত্রীকে বলার জন্য। যেখানে প্রধানমন্ত্রী ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টার আশ্বাস দিচ্ছেন। যেখানে প্রশাসন ইতোমধ্যে ১১৭টি অভিযান চালিয়েছে তাঁকে খুঁজে পেতে, সেখানে মন্নুজান সুফিয়ান কিভাবে জানলেন, ইলিয়াস আলীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি কিভাবে স্বামী নিখোঁজ হওয়া এক শোককাতর স্ত্রীকে ‘বিধবা’ বলে জনসভায় উল্লেখ করেন? মন্নুজান সুফিয়ানের এই আচরণের পরে সত্যি আর বলার কিছু থাকে না। তাছাড়া বলার বা আমরা কে? কারণ তাঁরা মন্ত্রী। তাঁদের অনেক ক্ষমতা। কিন্তু সাধারণ মানুষ অন্তত এই সত্যটুকু বুঝতে পারে, আসলেই মন্ত্রী হলে মাথা পাগল পাগল লাগে।
এক সময় ধারণা করা হতো, এখানে কেবল উঁচুতলার মানুষরা আসে বলেই এমনটি ঘটে। শ্র্রমজীবী মানুষ এলে এমন হবে না। অবশ্য রবীন্দ্রনাথ, মুজতবা আলী সবাই আকারে ইঙ্গিতে লিখেছিলেন সোভিয়েতে জারের স্থানটি কমরেডরা দখল করে বসে আছেন। রস সম্রাট রাজশেখর বসু অবশ্য তাঁর গল্পে লেখেন, শ্রমিকরা ক্ষমতায় গেলে ফাইল সই করবে কোন ভাষায়? এ সব কথার পরেও কিন্তু এ পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ চায় শ্রমজীবীরা রাষ্ট্র চালনা করুক। আর মিডিয়া সব সময়ই শ্রমজীবীদের প্রতিই থাকে সহানুভূতিশীল। যে কারণে আরাম আয়েশের নিরাপদ জীবন ছেড়ে শিক্ষিতজনরা যদি রাজনীতিতে আসেন তাদের কিন্তু মিডিয়া বাড়তি কোন প্রশংসা করে না। বলে না এই মানুষটি তার নিরাপদ জীবন ছেড়ে, তার শিক্ষা, তার অভিজ্ঞতা, রাজনীতিকে দেশের মানুষকে দিতে এসেছে। বরং অনেক সময় তাকে সুবিধাভোগী এবং বুর্জোয়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এর পরিবর্তে, যখন মন্ত্রী হবার আগে বেগম মন্নুজান সুফিয়ান নবাবপুরের আড়াই শ’ টাকা ভাড়ার হোটেল থেকে বঙ্গভবনে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে আসেন তখন মিডিয়া তাঁকে নিয়েই হই চই করে। ধারণা করা হয় রাজনীতির জন্য বিশাল ঘটনা ঘটে গেল। আমাদের দেশের মিডিয়া বাস্তবে কোন কিছু নিয়ে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে না। একটি ঘটনার চাপে আরেকটি ঘটনা তলিয়ে যায়। তাই হয়ত রক্ষা করা সম্ভব হয় না ধারাবাহিকতা। তা না হলে মিডিয়া হয়ত এতদিনে সংবাদ পরিবেশন করত, ওই ২৫০ টাকার হোটেলের বাসিন্দা এখন কত টাকা দামের গাড়িতে চড়েন। সাধারণ গাড়িতে তিনি চড়েন কি না?
যাহোক শ্রমিক রাজনীতিতে মন্নুজান সুফিয়ানের একটি দীর্ঘ অতীত আছে। তিনি হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠেননি। আজকের যে অবস্থানে এসেছেন এর জন্য তিনি দীর্ঘকাল রাজপথে সেøাগান দিয়েছেন। মন্ত্রিত্ব চালানোর জন্য আমাদের দেশের কোন রাজনীতিবিদ ওইভাবে নিজেকে তৈরি করেন না। যে কাজ শুরু করেছিল বিংশ শতাব্দীর শুরুতে এখানকার রাজনীতিবিদরা। সে সব এখন অতীতের গর্ভে। তাই মন্ত্রিত্বের জন্য কে কতটুকু তৈরি, কিভাবে তাঁরা দেশ চালান এ নিয়ে এখন আর কেউ ভাবে না। আল্লাহর ইচ্ছায় দেশটা চললে হলো আর কি? তাই মন্নুজান সুফিয়ান কেমন চালাচ্ছেন দেশ এ নিয়ে কেউ কোন খোঁজখবরও রাখেন না। বরং একজন দীর্ঘদিনের রাজপথের নেতা মন্ত্রী হয়েছেন এতেই খুশি হন অনেকে। যে কারণে কোন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বা আরও অনেকে যখন মন্নুজান সুফিয়ানের সামনে তাঁর বাড়ির পাশে মন্নুজানের বাড়ি এ কথা বলাতে অপমানিত হন মন্ত্রীর দ্বারা তখনও তাঁরা কিছু মনে করেন না। বরং রেওয়াজটি জেনে নেন যে এখন থেকে বলতে হবে মন্ত্রীর বাড়ির পাশে আমার বাড়ি। এটা না জানা যে এতদিন তাঁদের অজ্ঞতা ছিল এটাও তাঁরা নিজগুণে শুধরে নেন। কারণ, হাজার হোক মন্ত্রী বলে কথা! তাঁর বাড়ি কি অন্য কারও বাড়ির পাশে হতে পারে! আর এসব ঘটনা শুনেও কিন্তু কেউ ভাবে না, ক্ষমতা পেয়ে বা মন্ত্রী হয়ে মাথাটি একটু পাগল পাগল লাগছে। কিন্তু যেখানে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হয়েছেন। তাঁকে খুঁজে বের করার জন্য গোটা প্রশাসন কাজ করছে। ১১৭টির বেশি অপারেশন চালানো হয়েছে তাঁকে খুঁজে পেতে। অন্যদিকে বিরোধী দল তাঁর জন্য ইতোমধ্যে পাঁচটি হরতাল করেছে। পাঁচ জন মানুষ হত্যার কারণ হয়েছে। ঘুমন্ত এক বাস ড্রাইভারকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। রাস্তায় নির্বিচারে গণপরিবহন ভাঙছে। প্রাইভেট পরিবহন ভাঙছে। পেট্রোল বোমা ছুড়ছে। অর্থাৎ তারা ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়া নিয়ে রাজনীতি করছে। এ সব দেখে হয়ত ইলিয়াস আলীর স্ত্রী বুঝতে পেরেছেন তাঁর স্বামী এখন রাজনীতির ঘুঁটি মাত্র। অথচ যাঁকে নিয়ে এই রাজনীতি করা হচ্ছে তিনি তাঁর প্রিয়তম স্বামী, তাঁর সন্তানদের প্রিয়তম বাবা। স্বামী ব্যক্তি জীবনে যাই হোক না কেন, স্ত্রীর কাছে তিনি প্রিয়তম। আর বাবা সব সময়ই সন্তানের কাছে সূর্যের আলো। তাই দেখা যাচ্ছে, ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দু’জনেই তথাকথিত রাজনীতির দেয়াল ভেঙ্গে উঠে গেলেন মানবিকতার উচ্চ আসনে। ইলিয়াস আলীর স্ত্রী দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। আর শেখ হাসিনা তাঁকে বুকে নিয়ে দিলেন সর্বোচ্চ আশ্বাস।
এই ঘটনা যখন দেশে ঘটতে যাচ্ছে তার পূর্ব মুহূর্তে জনসভায় দাঁড়িয়ে, মন্নুজান সুফিয়ান বললেন, ‘ইলিয়াস আলীর বিধবা স্ত্রী।’ এবং এও বললেন, কে তার স্বামীকে খুন করেছে সেটা প্রধানমন্ত্রীকে বলার জন্য। যেখানে প্রধানমন্ত্রী ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টার আশ্বাস দিচ্ছেন। যেখানে প্রশাসন ইতোমধ্যে ১১৭টি অভিযান চালিয়েছে তাঁকে খুঁজে পেতে, সেখানে মন্নুজান সুফিয়ান কিভাবে জানলেন, ইলিয়াস আলীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি কিভাবে স্বামী নিখোঁজ হওয়া এক শোককাতর স্ত্রীকে ‘বিধবা’ বলে জনসভায় উল্লেখ করেন? মন্নুজান সুফিয়ানের এই আচরণের পরে সত্যি আর বলার কিছু থাকে না। তাছাড়া বলার বা আমরা কে? কারণ তাঁরা মন্ত্রী। তাঁদের অনেক ক্ষমতা। কিন্তু সাধারণ মানুষ অন্তত এই সত্যটুকু বুঝতে পারে, আসলেই মন্ত্রী হলে মাথা পাগল পাগল লাগে।
No comments