হালুমের বক্তৃতা

সিসিমপুর একটা মজার জায়গা। ছয় বছরের মেয়ে টুকটুকি স্কুলে যায়, পড়তে ভালোবাসে। তিন বছরের ইকরি প্রশ্ন করতে ভালোবাসে। ছয় বছরের শিকু, নেশা তার আবিষ্কার। প্রকৃতিপ্রেমী হালুমের প্রিয় মাছ-সবজি। এ ছাড়া রয়েছে দোকানদার গুণী ময়রা,


লাইব্রেরিয়ান আশা, খামারি মুকুল, স্কুলশিক্ষক সুমনা, ফেরিওয়ালা বাহাদুর, গরু পার্বতী, মোরগ শেরালী, মুরগি বিজলি আর দুই ভেড়া—মানিক ও রতন। এদের নিয়েই সিসিমপুরের গল্প, যা ছাপা হচ্ছে গোল্লাছুটে

হালুম একটি আলোচনা সভায় বক্তৃতা দিচ্ছে। বক্তৃতার বিষয় হলো কথা বলার অধিকার। হালুম মাইক্রোফোন হাতে কথা বলা শুরু করল, ভাইসব, আমি আপনাদের...!
কিন্তু হালুমের কথা ঠিকমতো শোনা যাচ্ছে না। কী হলো! শোনা যাচ্ছে না কেন! শিকু খেয়াল করল, হালুম মাইক্রোফোনটা উল্টো করে ধরেছে। সে উঠে এসে হালুমের গায়ে টোকা দিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল, হালুম হালুম...শোনো...।
শিকুকে থামিয়ে দিয়ে হালুম ফিসফিসিয়ে বলল, শিকু, আমি এখন কথা বলছি। আমার কথা শেষ হলে তুমি অবশ্যই কথা বলার সুযোগ পাবে। তারপর হালুম আবার বক্তৃতা শুরু করল।
শিকু ভাবতে লাগল কীভাবে সে হালুমের ভুলটা ঠিক করে দেবে! হালুম তো কোনো কথাই শুনছে না। সে আবার হালুমের গায়ে টোকা দিয়ে বলল, হালুম, মাইক্রোফোন...!
হালুম শিকুকে থামিয়ে দিয়ে বলল, শিকু, আমি বুঝতে পেরেছি যে তুমি মাইক্রোফোনে কথা বলতে চাও। তুমি অবশ্যই কথা বলতে পারবে। তবে আমার কথা শেষ হলে তারপর...!
হালুম আবার বক্তৃতা দেওয়া শুরু করল, ভাইসব, আমি যা বলছিলাম, প্রত্যেকেরই নিজের নিজের কথা বলার অধিকার আছে। নিজের মত প্রকাশ করারও অধিকার আছে। আমিও আমার মত প্রকাশ করলাম।
কথা শেষ করে মাইক্রোফোনটা শিকুর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, শিকু, আমার কথা বলা শেষ। এবার তুমি তোমার কথা বলো।
শিকু হেসে বলল, তুমি এতক্ষণ মাইক্রোফোনটা উল্টো করে ধরে কথা বললে, হালুম।
হালুম হাতের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল কী ভুলটাই না সে করেছে। সে মাইক্রোফোনটা ঠিক করে নিল। তারপর চেঁচিয়ে বলল, প্রত্যেকেরই নিজের নিজের কথা বলার যেমন অধিকার আছে, তেমনি উল্টো করে মাইক ধরার অধিকারও আছে...তাই না!
হালুমের কথায় সবাই হাততালি দিয়ে উঠল।

No comments

Powered by Blogger.