সোহেল তাজকে কি রেলমন্ত্রী করা যায়? by শাখাওয়াৎ নয়ন
মহাজোট সরকারের তিন বছরে এ পর্যন্ত তিন মন্ত্রী বিদায় নিয়েছেন। প্রথমেই বিদায় নিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংসদ সোহেল তাজ। তার বিদায় ছিল একটু ভিন্ন রকম। কোনো দুর্নীতির অভিযোগে নয়। প্রকৃত কারণ এখনও অজানা।
সংবাদ মাধ্যমের বরাতে জেনেছি, তিনি ভীষণ অভিমানে, রাগে, ক্ষোভে পদত্যাগ করেছিলেন। কোনোভাবেই নিজের আত্মসম্মানকে মন্ত্রিত্বের কাছে বিকিয়ে দেননি। নিরবে পদত্যাগপত্র দিয়ে বিদেশে চলে গিয়েছিলেন। বিভিন্ন মিডিয়া ঘটনাটির ব্যাপারে বারবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। সুশীল সমাজ তার চলে যাওয়ার ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করেছিল। অনেকেই তখন মত প্রকাশ করেছিলেন, যে দেশে টেনে নামাতে চাইলেও কেউ মন্ত্রিত্ব ছাড়তে চায় না, সে দেশে তাজউদ্দিন আহম্মদের ছেলের পক্ষেই কেবল স্বেচ্ছায় মন্ত্রিত্ব ছেড়ে চলে যাওয়া সম্ভব।
যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। যার প্রতি বিশ্বমোড়ল বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে। যদিও তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আগে থেকেই উচ্চারিত হচ্ছিল। সরকার শেষমেষ কোনো উপায়ান্ত না দেখে তাকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। সরকার তাকে অন্য দপ্তরে পাঠিয়ে একটু টেকনিক্যালি ম্যানেজ করেছে। তা না করেও উপায় ছিল না। বিশ্বব্যাংকের তথা পৃথিবীর কাছে সরকারের ভাবমূর্তি-সংকটের ব্যাপার।
হাল-আমলে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর কেলেংকারিটি সরকারের জন্য একটি হার্টঅ্যাটাক। একদিকে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়। অন্যদিকে বিরোধীদলের তত্তাবধায়ক সরকারের দাবি, শেয়ার কেলেংকারি, পুরানো সমস্যা লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্যের উবর্ধগতিসহ নানা সমস্যা। এ অবস্থায় রেলমন্ত্রীর কেলেংকারির দায় কাঁধে নেয়ার ক্ষমতা সরকারের নেই। সুতরাং সরকারের জন্য তাকে রান আউট করা ছাড়া উপায় ছিল না। এখন কথা হচ্ছে, এত বড় অভিযোগ থেকে শুধু কি পদত্যাগ করলেই পার পাওয়া উচিৎ? কোনো সভ্য দেশে কেউ পার পায় না।
ওই ঘটনায় আরো কিছু বিষয় উল্লেখযোগ্য, যেমন বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে মন্ত্রীদের দুর্নীতির কথা তো ওপেন সিক্রেট। তাহলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এভাবে ধরা খেলেন কেন? বাংলাদেশে এভাবে কি আর কেউ মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন? হারাননি। তাহলে কি দুর্নীতি ধরার পিছনে বড় কোনো দুর্নীতি আছে? কিংবা ভবিষ্যৎ দূর্নীতির পরিকল্পনা? নাকি কথিত নিয়োগ-বাণিজ্যের টাকা বন্টনে সমস্যা? সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তো বলেছিলেন, রেলের কালো বিড়ালের কথা। তার মানে কি? ওখানে শক্তিশালী কালো বিড়াল আছে? যদি না থাকত তাহলে তো একজন মন্ত্রী এভাবে বলতেন না। সেই কালো বিড়ালের খবর কি? সেটা কি কেউ খুঁজে দেখবে না? কেউ কেউ বলছেÑ কালো বিড়ালরাই তার মন্ত্রিত্ব খেয়েছে। বিষয়টি অনুসন্ধানের দাবি রাখে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- কে হবেন নতুন রেলমন্ত্রী? এত কালো বিড়ালের মাঝে নিশ্চয়ই একজন সৎ, সুযোগ্য, আস্থাভাজন রেলমন্ত্রী দরকার। এরই মধ্যে নিশ্চয়ই অনেকে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। যারা আগেরবার মন্ত্রী হয়েছিলেন কিন্তু এবার হতে পারেননি। তাদের কারো কারো অসততা, ওয়ান ইলেভেনে নেত্রীর প্রতি কারো কারো, দলের প্রতি আনুগত্যের অভাব লক্ষ্যণীয় ছিল। যারা কখনও মন্ত্রী হননি তারা হয়তো সুযোগের অভাবে চরিত্রবান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দেশের মানুষ এখনও সোহেল তাজকে যোগ্য বাবার যোগ্য সন্তানই মনে করে। সময় এসেছে তাকে মূল্যায়ন করবার। এই মুহুর্তে একজন সৎ, সুযোগ্য, আস্থাভাজন মন্ত্রীই আপনার সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারে। আপনি কি সোহেল তাজকে রেলমন্ত্রী হিসাবে বিবেচনা করে দেখবেন?
লেখক: গল্পকার, গবেষক। ইউনিভার্সিটি অফ নিউক্যাসল। অস্ট্রেলিয়া।
nayonshakhawat@yahoo.com
যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। যার প্রতি বিশ্বমোড়ল বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে। যদিও তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আগে থেকেই উচ্চারিত হচ্ছিল। সরকার শেষমেষ কোনো উপায়ান্ত না দেখে তাকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। সরকার তাকে অন্য দপ্তরে পাঠিয়ে একটু টেকনিক্যালি ম্যানেজ করেছে। তা না করেও উপায় ছিল না। বিশ্বব্যাংকের তথা পৃথিবীর কাছে সরকারের ভাবমূর্তি-সংকটের ব্যাপার।
হাল-আমলে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর কেলেংকারিটি সরকারের জন্য একটি হার্টঅ্যাটাক। একদিকে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়। অন্যদিকে বিরোধীদলের তত্তাবধায়ক সরকারের দাবি, শেয়ার কেলেংকারি, পুরানো সমস্যা লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্যের উবর্ধগতিসহ নানা সমস্যা। এ অবস্থায় রেলমন্ত্রীর কেলেংকারির দায় কাঁধে নেয়ার ক্ষমতা সরকারের নেই। সুতরাং সরকারের জন্য তাকে রান আউট করা ছাড়া উপায় ছিল না। এখন কথা হচ্ছে, এত বড় অভিযোগ থেকে শুধু কি পদত্যাগ করলেই পার পাওয়া উচিৎ? কোনো সভ্য দেশে কেউ পার পায় না।
ওই ঘটনায় আরো কিছু বিষয় উল্লেখযোগ্য, যেমন বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে মন্ত্রীদের দুর্নীতির কথা তো ওপেন সিক্রেট। তাহলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এভাবে ধরা খেলেন কেন? বাংলাদেশে এভাবে কি আর কেউ মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন? হারাননি। তাহলে কি দুর্নীতি ধরার পিছনে বড় কোনো দুর্নীতি আছে? কিংবা ভবিষ্যৎ দূর্নীতির পরিকল্পনা? নাকি কথিত নিয়োগ-বাণিজ্যের টাকা বন্টনে সমস্যা? সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তো বলেছিলেন, রেলের কালো বিড়ালের কথা। তার মানে কি? ওখানে শক্তিশালী কালো বিড়াল আছে? যদি না থাকত তাহলে তো একজন মন্ত্রী এভাবে বলতেন না। সেই কালো বিড়ালের খবর কি? সেটা কি কেউ খুঁজে দেখবে না? কেউ কেউ বলছেÑ কালো বিড়ালরাই তার মন্ত্রিত্ব খেয়েছে। বিষয়টি অনুসন্ধানের দাবি রাখে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- কে হবেন নতুন রেলমন্ত্রী? এত কালো বিড়ালের মাঝে নিশ্চয়ই একজন সৎ, সুযোগ্য, আস্থাভাজন রেলমন্ত্রী দরকার। এরই মধ্যে নিশ্চয়ই অনেকে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। যারা আগেরবার মন্ত্রী হয়েছিলেন কিন্তু এবার হতে পারেননি। তাদের কারো কারো অসততা, ওয়ান ইলেভেনে নেত্রীর প্রতি কারো কারো, দলের প্রতি আনুগত্যের অভাব লক্ষ্যণীয় ছিল। যারা কখনও মন্ত্রী হননি তারা হয়তো সুযোগের অভাবে চরিত্রবান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দেশের মানুষ এখনও সোহেল তাজকে যোগ্য বাবার যোগ্য সন্তানই মনে করে। সময় এসেছে তাকে মূল্যায়ন করবার। এই মুহুর্তে একজন সৎ, সুযোগ্য, আস্থাভাজন মন্ত্রীই আপনার সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারে। আপনি কি সোহেল তাজকে রেলমন্ত্রী হিসাবে বিবেচনা করে দেখবেন?
লেখক: গল্পকার, গবেষক। ইউনিভার্সিটি অফ নিউক্যাসল। অস্ট্রেলিয়া।
nayonshakhawat@yahoo.com
No comments