ব্যাংক ঋণে মজুদদারি
দেশে পর পর তিন বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এই উৎপাদন দেশের মোট চাহিদার ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশই পূরণ করে। তার পরও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে লাখ লাখ টন চাল আমদানি করা হয়েছে। ফলে বাজারে মোট চাহিদার তুলনায় বেশিই রয়েছে চালের সরবরাহ। অথচ চালের দাম কমছে না। কেন? কারণ মজুদদারি।
আর সে মজুদদারিতে মদদ দিয়ে যাচ্ছে কিছু ব্যাংক। ফলে স্বাভাবিক বাজারের নিয়মে যে দামে চাল বিক্রি হওয়া উচিত ছিল, ক্ষেত্রবিশেষে কেজিপ্রতি তার চেয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেশি মুনাফা করা হচ্ছে।
কৃষকের উৎপাদন খরচ, চাল মিলের খরচ, পরিবহন খরচসহ অন্যান্য খরচ এবং কৃষক থেকে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত সবার যুক্তিসংগত মুনাফা হিসাবে নিয়েই দেখা যায়, বর্তমান বাজারে সরু চালের দাম কেজিপ্রতি ৩২ টাকার বেশি হওয়ার কথা ছিল না। অথচ বাজারে ৪৪ টাকার নিচে কোনো সরু চালই নেই। মোটা চালেরই সর্বনিম্ন দাম ৩৫ টাকা। সরকার কৃষি খাতে ভর্তুকি, খোলাবাজারে বিক্রিসহ (ওএমএস) নিরাপত্তামূলক বিভিন্ন কর্মসূচিতে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ করেও বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হচ্ছে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এর অন্যতম কারণ লাগামহীন মজুদদারি। একদিকে মজুদবিরোধী আইন প্রায় দুই দশক স্থগিত থাকার পর সম্প্রতি তা পুনর্বহাল হলেও এখনো আইনের প্রয়োগ শুরু হয়নি। অন্যদিকে ব্যাংকগুলোর স্বল্পমেয়াদি বাণিজ্য ঋণ উদারীকরণের কারণে সারা দেশে চালের মজুদদারি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে পণ্যমজুদের জন্য ব্যাংক থেকে 'প্লেজ লোন' নামে যে ঋণ দেওয়া হতো তাতে গুদামের চাবি থাকত ব্যাংকের কাছে। কত চাল বা পণ্য ঢুকছে এবং কবে কী পরিমাণ পণ্য বেরোচ্ছে_তারও হিসাব থাকত ব্যাংকের কাছে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষেও মনিটরিং করা সহজ ছিল। এখন প্লেজ ঋণ নেই বললেই চলে। তার বদলে চলছে ব্যাপক হারে বিশেষ ধরনের সিসি ঋণ। এই ঋণ এক মাসের জন্য হলেও ব্যবসায়ীরা ব্যাংক কর্মচারীদের সঙ্গে আঁতাত করে কাগজে-কলমে টাকা জমা ও পুনরায় উত্তোলন দেখিয়ে মাসের পর মাস ঋণের টাকায় চাল মজুদ করে রাখছে। এই ঋণে মজুদের ব্যাপারে ব্যাংককে কিছুই জানাতে হয় না বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও মজুদ নিয়ন্ত্রণে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে ১০ হাজারের বেশি এ ধরনের মজুদদার রয়েছে। এরা কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা লাভ নিয়ে তবেই বাজারে চাল ছাড়ে। এতে যেমন কৃষকেরা ন্যয্য মূল্যপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি ভোক্তাদেরও অতিরিক্ত দামে চাল কিনতে হচ্ছে।
জনগণের কল্যাণই যদি সরকারের কাম্য হয় এবং সে কারণেই যদি মজুদবিরোধী আইন পুনর্বহাল করা হয়ে থাকে, তাহলে সে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা হচ্ছে না কেন? জানা যায়, মজুদদারদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলেরও অনেক হোমরাচোমরা আছে। তাদের কোনো অদৃশ্য প্রভাব কি এখানে কাজ করছে? চালসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সরকারের জন্য বিপদ ডেকে আনছে। আশা করি, সরকারের উচ্চ মহল তা অনুমান করতে পারছে। তার পরও মজুদবিরোধী আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়াটা খুবই দুঃখজনক। পাশাপাশি ব্যাংক ঋণের এমন অপপ্রয়োগ অবশ্যই বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
কৃষকের উৎপাদন খরচ, চাল মিলের খরচ, পরিবহন খরচসহ অন্যান্য খরচ এবং কৃষক থেকে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত সবার যুক্তিসংগত মুনাফা হিসাবে নিয়েই দেখা যায়, বর্তমান বাজারে সরু চালের দাম কেজিপ্রতি ৩২ টাকার বেশি হওয়ার কথা ছিল না। অথচ বাজারে ৪৪ টাকার নিচে কোনো সরু চালই নেই। মোটা চালেরই সর্বনিম্ন দাম ৩৫ টাকা। সরকার কৃষি খাতে ভর্তুকি, খোলাবাজারে বিক্রিসহ (ওএমএস) নিরাপত্তামূলক বিভিন্ন কর্মসূচিতে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ করেও বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হচ্ছে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এর অন্যতম কারণ লাগামহীন মজুদদারি। একদিকে মজুদবিরোধী আইন প্রায় দুই দশক স্থগিত থাকার পর সম্প্রতি তা পুনর্বহাল হলেও এখনো আইনের প্রয়োগ শুরু হয়নি। অন্যদিকে ব্যাংকগুলোর স্বল্পমেয়াদি বাণিজ্য ঋণ উদারীকরণের কারণে সারা দেশে চালের মজুদদারি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে পণ্যমজুদের জন্য ব্যাংক থেকে 'প্লেজ লোন' নামে যে ঋণ দেওয়া হতো তাতে গুদামের চাবি থাকত ব্যাংকের কাছে। কত চাল বা পণ্য ঢুকছে এবং কবে কী পরিমাণ পণ্য বেরোচ্ছে_তারও হিসাব থাকত ব্যাংকের কাছে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষেও মনিটরিং করা সহজ ছিল। এখন প্লেজ ঋণ নেই বললেই চলে। তার বদলে চলছে ব্যাপক হারে বিশেষ ধরনের সিসি ঋণ। এই ঋণ এক মাসের জন্য হলেও ব্যবসায়ীরা ব্যাংক কর্মচারীদের সঙ্গে আঁতাত করে কাগজে-কলমে টাকা জমা ও পুনরায় উত্তোলন দেখিয়ে মাসের পর মাস ঋণের টাকায় চাল মজুদ করে রাখছে। এই ঋণে মজুদের ব্যাপারে ব্যাংককে কিছুই জানাতে হয় না বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও মজুদ নিয়ন্ত্রণে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে ১০ হাজারের বেশি এ ধরনের মজুদদার রয়েছে। এরা কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা লাভ নিয়ে তবেই বাজারে চাল ছাড়ে। এতে যেমন কৃষকেরা ন্যয্য মূল্যপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি ভোক্তাদেরও অতিরিক্ত দামে চাল কিনতে হচ্ছে।
জনগণের কল্যাণই যদি সরকারের কাম্য হয় এবং সে কারণেই যদি মজুদবিরোধী আইন পুনর্বহাল করা হয়ে থাকে, তাহলে সে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা হচ্ছে না কেন? জানা যায়, মজুদদারদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলেরও অনেক হোমরাচোমরা আছে। তাদের কোনো অদৃশ্য প্রভাব কি এখানে কাজ করছে? চালসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সরকারের জন্য বিপদ ডেকে আনছে। আশা করি, সরকারের উচ্চ মহল তা অনুমান করতে পারছে। তার পরও মজুদবিরোধী আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়াটা খুবই দুঃখজনক। পাশাপাশি ব্যাংক ঋণের এমন অপপ্রয়োগ অবশ্যই বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
No comments