কোনো অজুহাতে যেন স্থগিত না হয়-ডিসিসি নির্বাচন

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। মেয়র ও কাউন্সিলর পদের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। আবার আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে একজন সম্ভাব্য প্রার্থী নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নোটিশও পেয়েছেন। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের আগে কোনো পোস্টার,


ব্যানার, প্রচারপত্র বিলি বা সমাবেশ করা নিষেধ। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন তা মোটামুটি মেনে চলছেন। খেয়াল-খুশিমতো অনেকে যে প্রচারাভিযান শুরু করেছিলেন, তা বন্ধ হওয়ায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আবহাওয়া ফিরে এসেছে। রাজধানীর মানুষ আশাবাদী যে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।
ঠিক এ সময়ে হঠাৎ একটি মানবাধিকার সংস্থার সম্পাদকের পক্ষে একজন আইনজীবী ইসিকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন। তাঁর কথা হলো, সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার আগে সরকারের সীমানা নির্ধারণ করার কথা। সেটা করা হয়নি বলে ইসিকে নির্বাচনের কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এ কারণে ডিসিসি নির্বাচন নিয়ে একটা সংশয় দেখা দিয়েছে। আইনি জটিলতার কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো সমস্যা দেখা দেবে কি না, এ রকম আশঙ্কা অনেকে করছেন।
গত ১ ডিসেম্বর ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড সংখ্যা ও নম্বর সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করে গেজেট প্রকাশিত হয়। কিন্তু নির্বাচনের আগে আইন অনুযায়ী জনসংখ্যার অনুপাতে ওয়ার্ডের সীমানা পুনর্নির্ধারণের কথা থাকলেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তা করেনি। সে জন্য প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। আইনে যখন আছে, মন্ত্রণালয়ের নিশ্চয়ই তা মেনে কাজ করার কথা। এখন মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্টভাবে জানানো উচিত যে তারা সেই আইন বিবেচনায় নিয়েছিল কি না। এর আগে বিভিন্ন সময় জনসংখ্যার অনুপাতে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। সে বিবেচনায় যদি মন্ত্রণালয় মনে করে থাকে যে পুনর্নির্ধারণের আর প্রয়োজন নেই, তাহলে বিষয়টি যৌক্তিক ভিত্তি পাবে। এটা পরিষ্কার করার দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের। নির্বাচন কমিশন যেহেতু এ নিয়ে এ পর্যন্ত প্রশ্ন তোলেনি, তাই আমরা ধরে নেব যে ইসির কোনো সংশয় নেই। সংশয় না থাকাটাই সবার কাম্য।
শনিবার প্রকাশিত প্রথম আলোর প্রতিবেদনে জানা গেছে যে ক্ষমতাসীন দলের কোনো কোনো নেতা এ সময় সিটি করপোরেশন নির্বাচন না করার পক্ষে। তাঁরা মনে করেন, যেহেতু বর্তমানে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যা রয়েছে, তাই এখন নির্বাচন করলে জনমত দলের সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে থাকবে না। তবে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, তাঁদের দল ডিসিসি নির্বাচনের পক্ষে। এটাই স্বাভাবিক। সরকারের এখন দায়িত্ব সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসিকে সহায়তা দেওয়া। নির্বাচনের ফলাফল সরকারি দলের জন্য ভালো, না খারাপ হবে—তার ওপর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠান নির্ভর করে না।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল আরও পাঁচ বছর আগে। এখন কোনো অজুহাতে নির্বাচন স্থগিত রাখার সুযোগ নেই। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হওয়া সবার জন্যই ভালো।

No comments

Powered by Blogger.