গ্রামীণ ব্যাংক এবং কিছু কথা by জগদীশ ভগবতী
বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণের উদ্যোক্তা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রতিক তিক্ততাকে কেউ কেউ 'মহাভারতের' অসাধু কৌরব এবং পুণ্যবান পাণ্ডবের দ্বৈরথের পুনর্চিত্রায়ণ বলছেন। বিষয়টিকে অনেকে এভাবে পর্যন্ত উপস্থাপন করছেন যে প্রতিহিংসাপরায়ণ প্রধানমন্ত্রী সাধু ইউনূস, যাঁর অভিলাষ রয়েছে রাজনীতিতে
আসার, তাঁকে শাস্তি দেওয়ার জন্য সম্প্রতি বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। নিন্দুকেরা শেখ হাসিনার কার্যক্রমকে এমনকি রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তুলনা করছেন, যিনি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর শাসক মিখাইল খোদরকোভস্কির বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইনে লিপ্ত রয়েছেন। বাস্তবে গ্রামীণ ব্যাংকের বিষয়টি অত সহজ নয়। বিষয়টি প্রচারণায় সিদ্ধহস্ত ইউনূসের দৃষ্টিভঙ্গি ও সাধাসিধে বক্তব্যের চেয়েও অনেক গভীর। প্রথমত, শেখ হাসিনা কোনো সাধারণ রাজনীতিবিদ নন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, ক্যারিশম্যাটিক নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা, যিনি বাঙালি জাতির জনক হিসেবে পরিচিত, ১৯৭৫ সালে যিনি সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যের অপঘাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছিলেন।
এক নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। তিনি স্বল্পসংখ্যক মহিলার মধ্যে একজন, যিনি উত্তরাধিকার সূত্রে নয়, বরং নিজ যোগ্যতায় পিতামাতা, আত্মীয়স্বজন নিহত হওয়ার দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ১৯৭৫ সালে জার্মানিতে থাকায় সে সময়ের নৃশংসতা থেকে বেঁচে যান। অনেক দিন যাবৎ ধৈর্য ও রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরে আসেন এবং সর্বোচ্চ পদে আসীন হন শেখ হাসিনা।
অধিকন্তু, একজন নারী হয়ে শেখ হাসিনা একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রে রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন করেছেন ভোটের মাধ্যমে, যা কোনো সাধারণ ব্যাপার নয়। ড. ইউনূসের ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন যে অবস্থান নিয়েছেন, তা একটি স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নগ্ণ হস্তক্ষেপেরই শামিল। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উদারপন্থী নীতিও হিলারির এ আচরণকে সমর্থন করে ন।
দ্বিতীয়ত, এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে যাঁরা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন, তাঁরা মূলত ইউনূসের কর্মকাণ্ডে অতিরঞ্জনের প্রলেপ চড়াতেই ব্যস্ত। এ মাত্রাটি আরো ছাড়িয়ে যায়, যখন তাঁরা ড. ইউনূসকে ক্ষুদ্র ঋণ আন্দোলনের অগ্রনায়কের আসনে অধিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাস্তবতা এই, প্রকৃতপক্ষে ক্ষুদ্র ঋণের প্রবর্তক হচ্ছেন ভারতের আহমেদাবাদের একজন অসামান্য নারী, শ্রীমতি ইলা ভাট। মহাত্মা গান্ধীর একনিষ্ঠ অনুসারী ইলা ১৯৭৪ সালের এপ্রিলেই 'সেওয়া' (ঝবষভ ঊসঢ়ষড়ুবফ ডড়সবহ'ং অংংড়পরধঃরড়হ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন, যার দুই বছর পর বাংলাদেশের জোবরা গ্রামে গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প শুরু হয় ড. ইউনূসের মাধ্যমে।
'সেওয়া' ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (দ্য রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া) আইনের দ্বারা সুনিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, বিশেষ কোনো সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে না। গ্রামীণ ব্যাংকের মতো কোনো বিদেশি অর্থ তারা গ্রহণ করেনি (যেমন-ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে নরওয়ে থেকে প্রাপ্ত ১০০ মিলিয়ন ডলার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে)। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এ 'সেওয়া' ব্যাংক উপকারভোগীদের মধ্যে ৯ থেকে ১২ শতাংশ লভ্যাংশ বিতরণ করে আসছে। অন্যদিকে বিদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ অর্থ এনে গ্রামীণের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে ইউনূসকে সন্দেহ করা হয়। সেখানে 'সেওয়া' দেখিয়েছে, আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত দরিদ্র মহিলারা বাইরের কোনো সাহায্য ছাড়াই নিজ উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান চালাতে পারে।
তৃতীয়ত, ৪০ বছর আগে এ দেশে সংঘটিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংস গণহত্যার স্তূপের ওপর দিয়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল, সেই স্বাধীনতার বিরুদ্ধচারী ও বিপক্ষ শক্তিই এখন গণতান্ত্রিক সরকার এবং ড. ইউনূস, গ্রামীণ ব্যাংক ও তার মাধ্যমে আসা বৈদেশিক মুদ্রার অবাধ প্রবাহকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে, যা কোনো সরকারের পক্ষেই সহজে মেনে নেওয়ার নয়। বস্তুত ইউনূস ও শেখ হাসিনার সংঘাতে মিসেস ক্লিনটনের অযাচিতভাবে জড়িয়ে যাওয়া একটি স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি শক্তির নগ্ণ হস্তক্ষেপের মূর্ত রূপায়ণকেই প্রতিফলিত করেছে।
পরিশেষে, ক্ষুদ্র অর্থ সংস্থান নিজেই একটি ইস্যু, যা দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে একটি পরীক্ষিত নীতি ও কর্মকৌশল। বিশেষ করে এটি আরো জোরালো হয় তখন, যখন সমাজের অবহেলিত বা পশ্চাৎপদ নারী সমাজের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্রে কার্যকর অবদান রাখে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, ১৯৯১ সালে সূচিত ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কার সে দেশে দারিদ্র্য বিমোচনে ইতিবাচক অবদান রেখেছে এবং নারীসহ পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর আয়ের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণার পরিসংখ্যানগুলোতেও এ সত্য উঠে এসেছে। বিপরীতে, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। দশকের পর দশক ধরে বাংলাদেশ অগ্রগতির হ্রাসমান মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করে চলছে, যা দুই বছর আগে ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা অনুধাবনও করেছিলেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, অর্ধশতক আগে ক্যামব্রিজ ও লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস থেকে শিক্ষা অর্জন করা বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রভাবশালী অর্থনীতিবিদ উন্নয়নকে চেপে ধরা সমাজ অর্থনীতির পাকে আবদ্ধ ছিলেন।
ভারতের সংস্কারবাদী সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতিমালার কারণে ইলা ভাট সূচিত 'সেওয়া' ব্যাংক দরিদ্র এবং পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ব্যাপক উপকার সাধন করেছে। বাংলাদেশের ভঙ্গুর সামষ্টিক অর্থনীতির বাঁধে ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংক বড়জোর একটি ছিদ্রযুক্ত বোল্ডার। এ প্রেক্ষাপটে এতটুকু আশা কি আছে যে বাংলাদেশের মুক্ত অর্থনীতির সংস্কারের ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংক কার্যকর কোনো ভূমিকা বা অবদান সত্যিই রাখতে পারবে? (অনুদিত)
লেখক : কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি ও আইন বিভাগের অধ্যাপক এবং কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো। GATT-এর মহাপরিচালক আর্থার ডানকেলের অর্থনৈতিক নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি ব্রিটেন, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া ও তুরস্ক সরকারের মনোনীত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বাণিজ্যবিষয়ক এঙ্পার্ট গ্রুপের কো-চেয়ার।
এক নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। তিনি স্বল্পসংখ্যক মহিলার মধ্যে একজন, যিনি উত্তরাধিকার সূত্রে নয়, বরং নিজ যোগ্যতায় পিতামাতা, আত্মীয়স্বজন নিহত হওয়ার দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ১৯৭৫ সালে জার্মানিতে থাকায় সে সময়ের নৃশংসতা থেকে বেঁচে যান। অনেক দিন যাবৎ ধৈর্য ও রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরে আসেন এবং সর্বোচ্চ পদে আসীন হন শেখ হাসিনা।
অধিকন্তু, একজন নারী হয়ে শেখ হাসিনা একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রে রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন করেছেন ভোটের মাধ্যমে, যা কোনো সাধারণ ব্যাপার নয়। ড. ইউনূসের ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন যে অবস্থান নিয়েছেন, তা একটি স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নগ্ণ হস্তক্ষেপেরই শামিল। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উদারপন্থী নীতিও হিলারির এ আচরণকে সমর্থন করে ন।
দ্বিতীয়ত, এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে যাঁরা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন, তাঁরা মূলত ইউনূসের কর্মকাণ্ডে অতিরঞ্জনের প্রলেপ চড়াতেই ব্যস্ত। এ মাত্রাটি আরো ছাড়িয়ে যায়, যখন তাঁরা ড. ইউনূসকে ক্ষুদ্র ঋণ আন্দোলনের অগ্রনায়কের আসনে অধিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাস্তবতা এই, প্রকৃতপক্ষে ক্ষুদ্র ঋণের প্রবর্তক হচ্ছেন ভারতের আহমেদাবাদের একজন অসামান্য নারী, শ্রীমতি ইলা ভাট। মহাত্মা গান্ধীর একনিষ্ঠ অনুসারী ইলা ১৯৭৪ সালের এপ্রিলেই 'সেওয়া' (ঝবষভ ঊসঢ়ষড়ুবফ ডড়সবহ'ং অংংড়পরধঃরড়হ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন, যার দুই বছর পর বাংলাদেশের জোবরা গ্রামে গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প শুরু হয় ড. ইউনূসের মাধ্যমে।
'সেওয়া' ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (দ্য রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া) আইনের দ্বারা সুনিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, বিশেষ কোনো সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে না। গ্রামীণ ব্যাংকের মতো কোনো বিদেশি অর্থ তারা গ্রহণ করেনি (যেমন-ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে নরওয়ে থেকে প্রাপ্ত ১০০ মিলিয়ন ডলার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে)। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এ 'সেওয়া' ব্যাংক উপকারভোগীদের মধ্যে ৯ থেকে ১২ শতাংশ লভ্যাংশ বিতরণ করে আসছে। অন্যদিকে বিদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ অর্থ এনে গ্রামীণের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে ইউনূসকে সন্দেহ করা হয়। সেখানে 'সেওয়া' দেখিয়েছে, আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত দরিদ্র মহিলারা বাইরের কোনো সাহায্য ছাড়াই নিজ উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান চালাতে পারে।
তৃতীয়ত, ৪০ বছর আগে এ দেশে সংঘটিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংস গণহত্যার স্তূপের ওপর দিয়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল, সেই স্বাধীনতার বিরুদ্ধচারী ও বিপক্ষ শক্তিই এখন গণতান্ত্রিক সরকার এবং ড. ইউনূস, গ্রামীণ ব্যাংক ও তার মাধ্যমে আসা বৈদেশিক মুদ্রার অবাধ প্রবাহকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে, যা কোনো সরকারের পক্ষেই সহজে মেনে নেওয়ার নয়। বস্তুত ইউনূস ও শেখ হাসিনার সংঘাতে মিসেস ক্লিনটনের অযাচিতভাবে জড়িয়ে যাওয়া একটি স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি শক্তির নগ্ণ হস্তক্ষেপের মূর্ত রূপায়ণকেই প্রতিফলিত করেছে।
পরিশেষে, ক্ষুদ্র অর্থ সংস্থান নিজেই একটি ইস্যু, যা দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে একটি পরীক্ষিত নীতি ও কর্মকৌশল। বিশেষ করে এটি আরো জোরালো হয় তখন, যখন সমাজের অবহেলিত বা পশ্চাৎপদ নারী সমাজের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্রে কার্যকর অবদান রাখে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, ১৯৯১ সালে সূচিত ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কার সে দেশে দারিদ্র্য বিমোচনে ইতিবাচক অবদান রেখেছে এবং নারীসহ পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর আয়ের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণার পরিসংখ্যানগুলোতেও এ সত্য উঠে এসেছে। বিপরীতে, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। দশকের পর দশক ধরে বাংলাদেশ অগ্রগতির হ্রাসমান মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করে চলছে, যা দুই বছর আগে ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা অনুধাবনও করেছিলেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, অর্ধশতক আগে ক্যামব্রিজ ও লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস থেকে শিক্ষা অর্জন করা বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রভাবশালী অর্থনীতিবিদ উন্নয়নকে চেপে ধরা সমাজ অর্থনীতির পাকে আবদ্ধ ছিলেন।
ভারতের সংস্কারবাদী সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতিমালার কারণে ইলা ভাট সূচিত 'সেওয়া' ব্যাংক দরিদ্র এবং পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ব্যাপক উপকার সাধন করেছে। বাংলাদেশের ভঙ্গুর সামষ্টিক অর্থনীতির বাঁধে ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংক বড়জোর একটি ছিদ্রযুক্ত বোল্ডার। এ প্রেক্ষাপটে এতটুকু আশা কি আছে যে বাংলাদেশের মুক্ত অর্থনীতির সংস্কারের ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংক কার্যকর কোনো ভূমিকা বা অবদান সত্যিই রাখতে পারবে? (অনুদিত)
লেখক : কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি ও আইন বিভাগের অধ্যাপক এবং কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো। GATT-এর মহাপরিচালক আর্থার ডানকেলের অর্থনৈতিক নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি ব্রিটেন, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া ও তুরস্ক সরকারের মনোনীত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বাণিজ্যবিষয়ক এঙ্পার্ট গ্রুপের কো-চেয়ার।
No comments