সবুজের নিচে কালো কীট by আফরোজা নাজনীন
ঈশ্বরদী ও কুষ্টিয়ার গ্রামগুলোয় মাইলের পর মাইল শুধু সবুজ আর সবুজ। এ সবুজের নিচেই লুকিয়ে রয়েছে কালো কীট। সবুজের চারপাশ অবশ্য বৃক্ষশূন্য প্রায়। লিচুপাতা এখন আর সবুজ নেই। হয়ে গেছে লাল। এ সবুজের সমারোহ কেবল তামাক চাষের কারণেই। এ এলাকার চাষিরা এখন তামাক চাষেই শ্রম দিচ্ছে বেশি।
তামাক কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন প্রলোভন এসব চাষিকে ধান, পাট ও গম থেকে মুখ ফেরাতে বাধ্য করছে। দরিদ্র চাষিরা জানে তারা স্বাস্থ্যগতভাবে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, তবু কেবল লাভের কারণেই তারা তামাক চাষ করছে।
ভেড়ামার আল্লার দর্গা বাজার, দৌলতপুর সব জায়গার রাস্তার আশপাশে রয়েছে মাটির চুিল্ল। এ চুলি্লতেই পোড়ানো হয় তামাকপাতা। তামাক চাষ যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তা এখানকার চাষিরা জানে। তাই তামাক পোড়ানোর চুলি্লটি তৈরি করে নিজের বাসগৃহের বাইরে। দৌলতপুরের দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা নিজাম (৩০) জানান, দুইশ' পাতা মাটির চুলি্লতে পোড়ানো হয় দু'দিন এক রাত বসে। নিজাম জানান, এক টন তামাকপাতা পোড়াতে ৫ টন জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন হয়। এ জন্য এ এলাকায় গাছ কমে যাচ্ছে। তামাকচাষিরা এখন পাট ও খড় দিয়ে তামাক পোড়ায়। ধোয়ায় তাদের চোখ-মুখ কালো হয়ে যায়। তবু নিরুপায় হয়ে তারা এ কাজ করেন। কারণ, তামাক পোড়ানোর কাজে পারিশ্রমিক বেশি। প্রতিদিন দুইশ' টাকা। নিজাম নিজেও তামাক জাতীয় নেশায় অভ্যস্ত। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ৪ কোটি ১৩ লাখ মানুষ কোনো না কোনোভাবে তামাক ব্যবহার করছে। নিজাম জানেন তামাক শরীরের নানাবিধ ক্ষতি করে। তবু সে তামাক ছাড়তে পারছে না। তবে ভালো কোনো কাজ অর্থাৎ বেশি টাকার চাকরি পেলে তিনি তামাক থেকে দূরে থাকবেন। দুই সন্তানের পিতা নিজাম জানান, তার কাশি লেগেই থাকে। মাঝে মধ্যেই জ্বর হয়।
রমজান আলী (৪৮)। এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা জানান, একজন সাধারণ মানুষের শারীরিক কর্মক্ষমতা ও আমরা যারা তামাক চাষ করি তাদের কর্মক্ষমতায় আকাশ-পাতাল তফাত। বর্তমানে তিন বিঘা জমিতে তামাক চাষ করে। আগে করত ছয় বিঘা জমিতে। কারণ রমজান বুঝতে পারছেন, জমিতে দীর্ঘদিন তামাক চাষের কারণে জমির উর্বরা শক্তি কমে গেছে। সে জন্য রমজান তামাক চাষ থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
বড় গাংদিয়া বাজারের পাশে একটি দোকানের বারান্দায় তারা তিন নারী তামাক পাতা সাজাচ্ছেন। এখানে প্রতি রোব, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার তামাকের বাজার বসে। সেই বাজারের পাশের দোকানে বসেন সুজিতা (৩০)। আট ঘণ্টা একটানা তামাকপাতা একের পর এক সাজান। যা পড়ে আটি বেঁধে বাজারে নেওয়া হয় বিক্রির জন্য। সুজিতা আট ঘণ্টায় প্রতিদিন পান ১৫০ টাকা। কোনো ছুটি নেই। সারা সপ্তাহ সুজিতা কাজ করেন। তারা তিনজন মিলে দশটি বাক্স ভরেন। এ টাকায় তার সংসার চলে। স্বামী অসুস্থ। কাজ করেন না। এক ছেলে নিয়ে কোনোমতে দু'বেলা এক মুঠো খেয়ে চলে জীবন। এগারো বছরের ছেলে টোকন এখন লেখাপড়া করে। ছেলে বড় হলে সুজিতা তাকে ভালো কাজে লাগাবেন। এ কাজটি ভালো নয়। দেহের ক্ষতি করে। জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর তামাক ব্যবহারের ফলে ৫৭ হাজার মানুষ মারা যায় এবং ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করে।
রশিদ (৪০)। তার নয় বিঘা জমি রয়েছে। এ জমির তিন বিঘায় তিনি তামাক চাষ করেন। বাকি জমিতে পাট ও রোপা ধান করেন। কিন্তু রশিদ তামাক চাষেই আগ্রহী। কারণ, পাট চাষ করে তিনি ন্যায্য দাম পান না। তামাক চাষের জন্য তিনি বড় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভর্তুকি পান, সার দেন, ঋণ নিতে পারেন। বিদেশি তামাক কোম্পানিগুলো তাদের এসব সহায়তা করে। তামাক কোম্পানিগুলো তাদের নানা রকম উপহার দেয়।
ভেড়ামার আল্লার দর্গা বাজার, দৌলতপুর সব জায়গার রাস্তার আশপাশে রয়েছে মাটির চুিল্ল। এ চুলি্লতেই পোড়ানো হয় তামাকপাতা। তামাক চাষ যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তা এখানকার চাষিরা জানে। তাই তামাক পোড়ানোর চুলি্লটি তৈরি করে নিজের বাসগৃহের বাইরে। দৌলতপুরের দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা নিজাম (৩০) জানান, দুইশ' পাতা মাটির চুলি্লতে পোড়ানো হয় দু'দিন এক রাত বসে। নিজাম জানান, এক টন তামাকপাতা পোড়াতে ৫ টন জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন হয়। এ জন্য এ এলাকায় গাছ কমে যাচ্ছে। তামাকচাষিরা এখন পাট ও খড় দিয়ে তামাক পোড়ায়। ধোয়ায় তাদের চোখ-মুখ কালো হয়ে যায়। তবু নিরুপায় হয়ে তারা এ কাজ করেন। কারণ, তামাক পোড়ানোর কাজে পারিশ্রমিক বেশি। প্রতিদিন দুইশ' টাকা। নিজাম নিজেও তামাক জাতীয় নেশায় অভ্যস্ত। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ৪ কোটি ১৩ লাখ মানুষ কোনো না কোনোভাবে তামাক ব্যবহার করছে। নিজাম জানেন তামাক শরীরের নানাবিধ ক্ষতি করে। তবু সে তামাক ছাড়তে পারছে না। তবে ভালো কোনো কাজ অর্থাৎ বেশি টাকার চাকরি পেলে তিনি তামাক থেকে দূরে থাকবেন। দুই সন্তানের পিতা নিজাম জানান, তার কাশি লেগেই থাকে। মাঝে মধ্যেই জ্বর হয়।
রমজান আলী (৪৮)। এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা জানান, একজন সাধারণ মানুষের শারীরিক কর্মক্ষমতা ও আমরা যারা তামাক চাষ করি তাদের কর্মক্ষমতায় আকাশ-পাতাল তফাত। বর্তমানে তিন বিঘা জমিতে তামাক চাষ করে। আগে করত ছয় বিঘা জমিতে। কারণ রমজান বুঝতে পারছেন, জমিতে দীর্ঘদিন তামাক চাষের কারণে জমির উর্বরা শক্তি কমে গেছে। সে জন্য রমজান তামাক চাষ থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
বড় গাংদিয়া বাজারের পাশে একটি দোকানের বারান্দায় তারা তিন নারী তামাক পাতা সাজাচ্ছেন। এখানে প্রতি রোব, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার তামাকের বাজার বসে। সেই বাজারের পাশের দোকানে বসেন সুজিতা (৩০)। আট ঘণ্টা একটানা তামাকপাতা একের পর এক সাজান। যা পড়ে আটি বেঁধে বাজারে নেওয়া হয় বিক্রির জন্য। সুজিতা আট ঘণ্টায় প্রতিদিন পান ১৫০ টাকা। কোনো ছুটি নেই। সারা সপ্তাহ সুজিতা কাজ করেন। তারা তিনজন মিলে দশটি বাক্স ভরেন। এ টাকায় তার সংসার চলে। স্বামী অসুস্থ। কাজ করেন না। এক ছেলে নিয়ে কোনোমতে দু'বেলা এক মুঠো খেয়ে চলে জীবন। এগারো বছরের ছেলে টোকন এখন লেখাপড়া করে। ছেলে বড় হলে সুজিতা তাকে ভালো কাজে লাগাবেন। এ কাজটি ভালো নয়। দেহের ক্ষতি করে। জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর তামাক ব্যবহারের ফলে ৫৭ হাজার মানুষ মারা যায় এবং ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করে।
রশিদ (৪০)। তার নয় বিঘা জমি রয়েছে। এ জমির তিন বিঘায় তিনি তামাক চাষ করেন। বাকি জমিতে পাট ও রোপা ধান করেন। কিন্তু রশিদ তামাক চাষেই আগ্রহী। কারণ, পাট চাষ করে তিনি ন্যায্য দাম পান না। তামাক চাষের জন্য তিনি বড় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভর্তুকি পান, সার দেন, ঋণ নিতে পারেন। বিদেশি তামাক কোম্পানিগুলো তাদের এসব সহায়তা করে। তামাক কোম্পানিগুলো তাদের নানা রকম উপহার দেয়।
No comments