শ্রদ্ধাঞ্জলি-মৃত্যুঞ্জয়ী সূর্য সেন by সুরঞ্জিত বৈদ্য
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদকে উৎখাত করে ভারতবর্ষকে মুক্ত ও স্বাধীন করার লক্ষ্যে আইরিশ বিপ্লবীদের আদলে চট্টগ্রামের সূর্যকুমার আর তাঁর দলের চারজন যথাক্রমে অম্বিকা চক্রবর্তী, নির্মল সেন, গণেশ ঘোষ ও অনন্ত সিংহ মিলে গড়ে তুললেন এক বিপ্লবী বাহিনী, যার নাম ‘ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি’ অর্থাৎ ভারতীয় প্রজাতন্ত্রী বাহিনী।
দলের সবার ইচ্ছায় ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির চট্টগ্রাম শাখার সর্বাধিনায়ক পদে নির্বাচিত হলেন চট্টগ্রামের উমাতারা হাইস্কুলের ২২-২৩ বছরের স্বল্পভাষী অঙ্কের শিক্ষক সূর্যকুমার, যিনি পরবর্তীকালে সবার কাছে মাস্টারদা সূর্য সেন নামে পরিচিতি লাভ করেন।
মাস্টারদা সূর্য সেন আর তাঁর ঘনিষ্ঠ চারজন একদিন গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে ঠিক করেন, চট্টগ্রামের সব ঘাঁটি দখল করে এখানে একটি স্বাধীন সরকার গঠন করতে হবে। তাঁদের মনে হয়, এ ঘটনা সারা দেশের বিপ্লবীদের প্রেরণা দেবে। একদিন দেশজুড়ে আয়ারল্যান্ডের মতো গড়ে উঠবে ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি বা ভারতীয় প্রজাতন্ত্রী বাহিনী। সব প্রস্তুতি শেষে মাস্টারদা সূর্য সেন একদিন ঘোষণা করলেন, চট্টগ্রামের যুববিদ্রোহের রণভেরী বেজে উঠবে আগামী গুডফ্রাইডের দিন, ১৮ এপ্রিল ১৯৩০। সব মিলিয়ে ৭৩ জন যোগ দেবে এই বিদ্রোহে। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন শেষে ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যার পরপরই শুরু হলো ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির চতুর্মুখী আক্রমণ। মুহূর্তেই দখল হলো পুলিশ লাইন ও তার অস্ত্রাগার। দখল হলো মিলিটারি ঘাঁটিও। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী উপড়ে ফেলা হলো রেললাইন, বোমায় বিধ্বস্ত হলো টেলিফোন ভবন, বিচ্ছিন্ন করা হলো টেলিযোগাযোগব্যবস্থা। সবকিছু দখল হওয়ার পর ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির ৫০টি বন্দুক ঊর্ধ্বে তাক করে একসঙ্গে গর্জে উঠে প্রকাশ করল বিজয়োল্লাস।
এবার মাস্টারদা আদেশ করলেন, পুলিশ লাইনে উড়তে থাকা ব্রিটিশ পতাকা ইউনিয়ন জ্যাক পুড়িয়ে স্বাধীন ভারতবর্ষের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে। মাস্টারদার নির্দেশে ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল রাতেই চট্টগ্রাম পুলিশ অস্ত্রাগারের মাথায় স্বাধীন ভারতবর্ষের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকার সম্মানে আবার তিন-তিনবার ৫০টি বন্দুক গর্জন করল।
যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের সূর্য অস্ত যায় না, সেই ব্রিটিশের নাকের ডগায় চট্টগ্রামকে ৪৮ ঘণ্টা স্বাধীন করে রাখল সূর্য সেনের বীর সেনানীরা। দুনিয়া কাঁপানো এই ৪৮ ঘণ্টা পরাধীন ভারতবর্ষের প্রত্যেক মানুষকে যেন ঘুম থেকে জাগিয়ে দিল।
২২ এপ্রিল বিকেল পাঁচটার দিকে জালালাবাদ পাহাড়ে ব্রিটিশ সেনাদের সঙ্গে ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির তুমুল যুদ্ধে ৭০-৮০ জন ব্রিটিশ সেনা নিহত হওয়ায় তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। তিন ঘণ্টাব্যাপী ওই যুদ্ধে ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির আট-নয়জন বিপ্লবীও শহীদ হন। তবুও এই ঐতিহাসিক বিজয়ে উল্লসিত সূর্য সেনের দল। হোক না তার স্থায়িত্বকাল ক্ষণিকের। ভারতীয় স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাসে এ বিজয় তাই বারবার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
পাহাড়ে যুদ্ধজয়ের পর মাস্টারদা ইংরেজদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মাস্টারদার নির্দেশে প্রথম গেরিলা আক্রমণে ব্রিটিশের দালাল পুলিশ অফিসার আসানুল্লাহকে হত্যা করে ১৯ বছরের টগবগে যুবক হরিপদ ভট্টাচার্য যে বীরত্ব দেখিয়েছেন, তা সত্যিই বিস্ময়কর। এরপর সেই ঐতিহাসিক ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৩২ সাল। পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাবের গেটে লাগানো একটি সাইনবোর্ড। তাতে লেখা, ‘কুকুর ও ভারতীয়দের’ প্রবেশ নিষেধ। সন্ধ্যার পর সাহেবরা এখানে নাচানাচি করে। কথায় কথায় তারা এ দেশের মানুষকে কালো ‘নেটিভ’ বলে অসম্মান করে। তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া চাই। মাস্টারদার নির্দেশে ২৪ সেপ্টেম্বর রাত আটটার দিকে অতর্কিতে আক্রমণ করা হলো পাহাড়তলী ক্লাব। ঘন ঘন গুলি আর বোমার আওয়াজে মুহূর্তে ক্লাবের চেহারা পাল্টে গেল। কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্ধকার ক্লাবঘরে পড়ে রইল বেশ কিছু সাহেবের মৃতদেহ। অভিযান শেষে অন্যরা পালিয়ে গেলেও তাদের দলনেতা রেললাইন অতিক্রম করার সময় শত্রুর ছোড়া গুলিতে বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অবশেষে নিজের কাছে থাকা পটাশিয়াম সায়ানাইট খেয়ে আত্মাহুতি দেন। ব্রিটিশ বাহিনী সামরিক পোশাক পরিহিত মৃত বিপ্লবীর মাথার পাগড়ি খুলতেই লম্বা চুল দেখে হতবাক হলো। তারা বুঝল এবং দেশের মানুষও জানল, সূর্য সেনের লড়াইয়ে মেয়েরাও আছেন। তাঁরাও মারতে জানেন, মরতেও জানেন। সেদিনের সেই মহীয়সী নারীই ছিলেন বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। সূর্য সেনের নেতৃত্বে একের পর এক গেরিলা আক্রমণে নাজেহাল ব্রিটিশ প্রশাসনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ব্রিটিশ সরকার সূর্য সেনকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৩ সাল ছিল এ দেশের মুক্তিকামী মানুষের জন্য এক চরম দুঃসংবাদ। চট্টগ্রাম শহরের ১০ মাইল দূরে পটিয়া থানার গৈরলা গ্রামের এক বাড়িতে সূর্য সেন আশ্রয় নিয়েছেন। রাত আটটায় বোঝা গেল গ্রামের কোনো বিশ্বাসঘাতকের সাহায্যে ব্রিটিশ সেনারা ঘিরে ফেলেছে এই আশ্রয়। গ্রেপ্তার হলেন সূর্য সেন। অতঃপর বিচার ও ফাঁসির আদেশ। ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে সাথিদের উদ্দেশে সূর্য সেন লিখে গেলেন, ‘আমি তোমাদের জন্য রেখে গেলাম মাত্র একটি জিনিস, তা হলো আমার এটি সোনালি স্বপ্ন। স্বাধীনতার স্বপ্ন। প্রিয় কমরেডস, এগিয়ে চলো। সাফল্য আমাদের সুনিশ্চিত।’
১২ জানুয়ারি ১৯৩৪ ভোর পাঁচটায় একবার, শুধু একবার একটু সূর্য সেনের কণ্ঠে বন্দেমাতরম শোনা গেল, তার পরপরই ফাঁসির মঞ্চের পাটাতন সরানোর আওয়াজ। সূর্য সেনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেও ক্ষান্ত হয়নি ব্রিটিশ সরকার। তারা মৃত সূর্য সেনকেও ভয় পায়। তাই তাঁর লাশ বস্তাবন্দী করে দূরসমুদ্রে ফেলে দিয়ে এল। বাংলার মাটিতে কোথাও যেন তাঁর চিহ্ন না থাকে। কিন্তু বিপ্লবী আত্মার যে মৃত্যু নেই। সূর্য সেন এ দেশের নির্যাতিত মানুষের হূদয়ে তাই আজও অমর। তাঁর দেখানো পথে বছরের পর বছর অত্যাচারীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে এ দেশের মানুষ। আজ ২২ মার্চ মাস্টারদা সূর্য সেনের ১১৭তম জন্ম দিবস। জন্ম দিবসের এই দিনে মহান বিপ্লবীর প্রতি রইল আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
মাস্টারদা সূর্য সেন আর তাঁর ঘনিষ্ঠ চারজন একদিন গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে ঠিক করেন, চট্টগ্রামের সব ঘাঁটি দখল করে এখানে একটি স্বাধীন সরকার গঠন করতে হবে। তাঁদের মনে হয়, এ ঘটনা সারা দেশের বিপ্লবীদের প্রেরণা দেবে। একদিন দেশজুড়ে আয়ারল্যান্ডের মতো গড়ে উঠবে ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি বা ভারতীয় প্রজাতন্ত্রী বাহিনী। সব প্রস্তুতি শেষে মাস্টারদা সূর্য সেন একদিন ঘোষণা করলেন, চট্টগ্রামের যুববিদ্রোহের রণভেরী বেজে উঠবে আগামী গুডফ্রাইডের দিন, ১৮ এপ্রিল ১৯৩০। সব মিলিয়ে ৭৩ জন যোগ দেবে এই বিদ্রোহে। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন শেষে ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যার পরপরই শুরু হলো ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির চতুর্মুখী আক্রমণ। মুহূর্তেই দখল হলো পুলিশ লাইন ও তার অস্ত্রাগার। দখল হলো মিলিটারি ঘাঁটিও। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী উপড়ে ফেলা হলো রেললাইন, বোমায় বিধ্বস্ত হলো টেলিফোন ভবন, বিচ্ছিন্ন করা হলো টেলিযোগাযোগব্যবস্থা। সবকিছু দখল হওয়ার পর ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির ৫০টি বন্দুক ঊর্ধ্বে তাক করে একসঙ্গে গর্জে উঠে প্রকাশ করল বিজয়োল্লাস।
এবার মাস্টারদা আদেশ করলেন, পুলিশ লাইনে উড়তে থাকা ব্রিটিশ পতাকা ইউনিয়ন জ্যাক পুড়িয়ে স্বাধীন ভারতবর্ষের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে। মাস্টারদার নির্দেশে ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল রাতেই চট্টগ্রাম পুলিশ অস্ত্রাগারের মাথায় স্বাধীন ভারতবর্ষের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকার সম্মানে আবার তিন-তিনবার ৫০টি বন্দুক গর্জন করল।
যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের সূর্য অস্ত যায় না, সেই ব্রিটিশের নাকের ডগায় চট্টগ্রামকে ৪৮ ঘণ্টা স্বাধীন করে রাখল সূর্য সেনের বীর সেনানীরা। দুনিয়া কাঁপানো এই ৪৮ ঘণ্টা পরাধীন ভারতবর্ষের প্রত্যেক মানুষকে যেন ঘুম থেকে জাগিয়ে দিল।
২২ এপ্রিল বিকেল পাঁচটার দিকে জালালাবাদ পাহাড়ে ব্রিটিশ সেনাদের সঙ্গে ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির তুমুল যুদ্ধে ৭০-৮০ জন ব্রিটিশ সেনা নিহত হওয়ায় তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। তিন ঘণ্টাব্যাপী ওই যুদ্ধে ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির আট-নয়জন বিপ্লবীও শহীদ হন। তবুও এই ঐতিহাসিক বিজয়ে উল্লসিত সূর্য সেনের দল। হোক না তার স্থায়িত্বকাল ক্ষণিকের। ভারতীয় স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাসে এ বিজয় তাই বারবার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
পাহাড়ে যুদ্ধজয়ের পর মাস্টারদা ইংরেজদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মাস্টারদার নির্দেশে প্রথম গেরিলা আক্রমণে ব্রিটিশের দালাল পুলিশ অফিসার আসানুল্লাহকে হত্যা করে ১৯ বছরের টগবগে যুবক হরিপদ ভট্টাচার্য যে বীরত্ব দেখিয়েছেন, তা সত্যিই বিস্ময়কর। এরপর সেই ঐতিহাসিক ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৩২ সাল। পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাবের গেটে লাগানো একটি সাইনবোর্ড। তাতে লেখা, ‘কুকুর ও ভারতীয়দের’ প্রবেশ নিষেধ। সন্ধ্যার পর সাহেবরা এখানে নাচানাচি করে। কথায় কথায় তারা এ দেশের মানুষকে কালো ‘নেটিভ’ বলে অসম্মান করে। তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া চাই। মাস্টারদার নির্দেশে ২৪ সেপ্টেম্বর রাত আটটার দিকে অতর্কিতে আক্রমণ করা হলো পাহাড়তলী ক্লাব। ঘন ঘন গুলি আর বোমার আওয়াজে মুহূর্তে ক্লাবের চেহারা পাল্টে গেল। কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্ধকার ক্লাবঘরে পড়ে রইল বেশ কিছু সাহেবের মৃতদেহ। অভিযান শেষে অন্যরা পালিয়ে গেলেও তাদের দলনেতা রেললাইন অতিক্রম করার সময় শত্রুর ছোড়া গুলিতে বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অবশেষে নিজের কাছে থাকা পটাশিয়াম সায়ানাইট খেয়ে আত্মাহুতি দেন। ব্রিটিশ বাহিনী সামরিক পোশাক পরিহিত মৃত বিপ্লবীর মাথার পাগড়ি খুলতেই লম্বা চুল দেখে হতবাক হলো। তারা বুঝল এবং দেশের মানুষও জানল, সূর্য সেনের লড়াইয়ে মেয়েরাও আছেন। তাঁরাও মারতে জানেন, মরতেও জানেন। সেদিনের সেই মহীয়সী নারীই ছিলেন বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। সূর্য সেনের নেতৃত্বে একের পর এক গেরিলা আক্রমণে নাজেহাল ব্রিটিশ প্রশাসনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ব্রিটিশ সরকার সূর্য সেনকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৩ সাল ছিল এ দেশের মুক্তিকামী মানুষের জন্য এক চরম দুঃসংবাদ। চট্টগ্রাম শহরের ১০ মাইল দূরে পটিয়া থানার গৈরলা গ্রামের এক বাড়িতে সূর্য সেন আশ্রয় নিয়েছেন। রাত আটটায় বোঝা গেল গ্রামের কোনো বিশ্বাসঘাতকের সাহায্যে ব্রিটিশ সেনারা ঘিরে ফেলেছে এই আশ্রয়। গ্রেপ্তার হলেন সূর্য সেন। অতঃপর বিচার ও ফাঁসির আদেশ। ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে সাথিদের উদ্দেশে সূর্য সেন লিখে গেলেন, ‘আমি তোমাদের জন্য রেখে গেলাম মাত্র একটি জিনিস, তা হলো আমার এটি সোনালি স্বপ্ন। স্বাধীনতার স্বপ্ন। প্রিয় কমরেডস, এগিয়ে চলো। সাফল্য আমাদের সুনিশ্চিত।’
১২ জানুয়ারি ১৯৩৪ ভোর পাঁচটায় একবার, শুধু একবার একটু সূর্য সেনের কণ্ঠে বন্দেমাতরম শোনা গেল, তার পরপরই ফাঁসির মঞ্চের পাটাতন সরানোর আওয়াজ। সূর্য সেনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেও ক্ষান্ত হয়নি ব্রিটিশ সরকার। তারা মৃত সূর্য সেনকেও ভয় পায়। তাই তাঁর লাশ বস্তাবন্দী করে দূরসমুদ্রে ফেলে দিয়ে এল। বাংলার মাটিতে কোথাও যেন তাঁর চিহ্ন না থাকে। কিন্তু বিপ্লবী আত্মার যে মৃত্যু নেই। সূর্য সেন এ দেশের নির্যাতিত মানুষের হূদয়ে তাই আজও অমর। তাঁর দেখানো পথে বছরের পর বছর অত্যাচারীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে এ দেশের মানুষ। আজ ২২ মার্চ মাস্টারদা সূর্য সেনের ১১৭তম জন্ম দিবস। জন্ম দিবসের এই দিনে মহান বিপ্লবীর প্রতি রইল আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
No comments