বিলুপ্তির পথে পান চাষ, নানা সমস্যায় চাষীরা by টি. এম. মামুন
বিয়ে বাড়ি বা যে কোন সামাজিক বৈঠক-অনুষ্ঠানে ভুরিভোজের পর এক খিলি পান চিবুনো যেন প্রতিষ্ঠিত সামাজিক রীতি। যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে পান খাওয়ার এ রীতি। এ রীতি না মানলে যেন অনেকটাই অতৃপ্ত থেকে যায় অনুষ্ঠান বা আসর।
অথচ সরকারি গুরুত্বের অভাবে ব্যাপক সম্ভাবনাময় পান চাষ আজ বিলুপ্তির পথে। প্রায় ৩০ বছর আগে পান চাষে বিখ্যাত ছিল বগুড়া অঞ্চল। সে সময় এখানে উৎপাদিত পান দেশের চাহিদা মিটিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হতো। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বগুড়ায় পান কিনতে আসতো ক্রেতারা। কিন্তু এখন আর সে দিন নেই। কেবল পচন রোগের কারণে দিন দিন পান চাষ থেকে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে সাধারণ কৃষক।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন পান চাষকে গুরুত্বপূর্ণ ও সম্ভাবনাময় কৃষিখাত উল্লেখ করে বাংলানিউজকে জানান, ১ একর পান চাষে সর্বাচ্চ ৩ লাখ টাকা খরচ হলেও রোগের আক্রমণ না হলে এ মৌসুমে এখান থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকাও আয় করা সম্ভব।
এক সময় বগুড়া জেলার সদর উপজেলাসহ শেরপুর, শিবগঞ্জ ও শাজাহানপুর উপজেলায় পানের ভাল চাষ হতো। জঙ্গল কেটে মাটি সমতল করে পানের বরজ তৈরি করতো কৃষক। সে সময় পান চাষীদের যেমন ছিল কদর, তেমনি আর্থিকভাবেও সচ্ছল ছিল তারা। বর্তমান সময়ে পানে পচন রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকরা।
কৃষি অফিস সবসময় কৃষকদের সহযোগিতা করবে উল্লেখ করে তিনি জানান, পচন রোগ খুব মারাত্বক রোগ। একবার এ রোগ হলে এক সঙ্গে জমির সব পান নষ্ট হয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেক লেখালেখি করেছেন তারা, কিন্তু কোনরকম কাজ হয়নি তাতে। এছাড়া প্রতি বছর মে থেকে জুনের মধ্যে পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বহু অলোচনা হয়েছে, কিন্তু তাতেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। এমন চলতে থাকলে সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, যেদিন পান হবে মানুষের সর্বনাশ। বগুড়ার কোন কৃষক তখন পান চাষ করবেন না।
জেলার শাজাহানপুর উপজেলার কাটাবাড়িয়া মধ্যপাড়ার মৃত হামেদ আলীর ছেলে বয়োজ্যেষ্ঠ পানচাষী আবু বকর সিদ্দিক বাংলানিউজকে জানান, অতীতে পান চাষে ব্যপক সাফল্য এলেও বর্তমানে সরকার বা কৃষি অফিস পানচাষীদের কোন ধরনের খোঁজ খবর না নেওয়ায় ভাটা পড়েছে পান চাষে। অথচ এই পান চাষ এত লাভজনক যে সামান্য ১৬ শতাংশ জমিতে পান চাষ করে তিনি স্বচ্ছলতার সঙ্গেই তার সংসার চালাচ্ছেন।
দাদারকাল থেকে বংশ পরম্পরায় পাওয়া প্রবীণ এই পান ব্যবসায়ী জানান, মাঘ, ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে পানের সবচেয়ে বেশি দাম পাওয়া যায়। তবে কোন কোন সময় বৈশাখেও এর ভাল দাম পাওয়া যায়।
তিনি জানান, উপজেলায় খবির, তালেব ও আখের আলীসহ ৮/১০ ব্যবসায়ী আছে যারা ভাল পান চাষ করেন।
আদর্শ পান চাষী আবু তালেব, চান মিয়া, শাজাহান কৃষি অফিসসহ কর্মকর্তাদের অনিহা ও সদিচ্ছার অভাব উল্লেখ করে বাংলানিউজকে জানান, সরকার যদি পানের পচন রোগ ভাল করতে পারে তাহলে মনে হয়, দেশের অধিকাংশ কৃষকই পান চাষে উৎসাহী হয়ে উঠবে।
তারা বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়ে বলেন, ‘পানের পচন রোগ না হলে ধান, গম, পাট কোন ফসলই এর সঙ্গে পারবে না।
কথা হয় রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলার তশোপাড়া এলাকার প্রবীন পান চাষী মো. ইউনুস আলীর সঙ্গে।
তিনি জানান, দেশ স্বাধীনের পর থেকেই তিনি পান চাষ করেন। এ বছর তার দেড় বিঘা জমিতে পান চাষ করতে সবমিলে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা, সবকিছু ঠিক থাকলে তিনি ওই জমি থেকে প্রায় আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা আয় করবেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, স্থান ভেদে এ মুহূর্তে জমি থেকে তারা ১ বিড়া (৬৪ টি) পান বিক্রি করেন ৯০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায়। যা খুচরা পর্যায়ে দোকানিরা কেনেন ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় এবং গ্রাহক পর্যায়ে এসে তা সর্বোচ্চ প্রায় ২৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন পান চাষকে গুরুত্বপূর্ণ ও সম্ভাবনাময় কৃষিখাত উল্লেখ করে বাংলানিউজকে জানান, ১ একর পান চাষে সর্বাচ্চ ৩ লাখ টাকা খরচ হলেও রোগের আক্রমণ না হলে এ মৌসুমে এখান থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকাও আয় করা সম্ভব।
এক সময় বগুড়া জেলার সদর উপজেলাসহ শেরপুর, শিবগঞ্জ ও শাজাহানপুর উপজেলায় পানের ভাল চাষ হতো। জঙ্গল কেটে মাটি সমতল করে পানের বরজ তৈরি করতো কৃষক। সে সময় পান চাষীদের যেমন ছিল কদর, তেমনি আর্থিকভাবেও সচ্ছল ছিল তারা। বর্তমান সময়ে পানে পচন রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকরা।
কৃষি অফিস সবসময় কৃষকদের সহযোগিতা করবে উল্লেখ করে তিনি জানান, পচন রোগ খুব মারাত্বক রোগ। একবার এ রোগ হলে এক সঙ্গে জমির সব পান নষ্ট হয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেক লেখালেখি করেছেন তারা, কিন্তু কোনরকম কাজ হয়নি তাতে। এছাড়া প্রতি বছর মে থেকে জুনের মধ্যে পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বহু অলোচনা হয়েছে, কিন্তু তাতেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। এমন চলতে থাকলে সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, যেদিন পান হবে মানুষের সর্বনাশ। বগুড়ার কোন কৃষক তখন পান চাষ করবেন না।
জেলার শাজাহানপুর উপজেলার কাটাবাড়িয়া মধ্যপাড়ার মৃত হামেদ আলীর ছেলে বয়োজ্যেষ্ঠ পানচাষী আবু বকর সিদ্দিক বাংলানিউজকে জানান, অতীতে পান চাষে ব্যপক সাফল্য এলেও বর্তমানে সরকার বা কৃষি অফিস পানচাষীদের কোন ধরনের খোঁজ খবর না নেওয়ায় ভাটা পড়েছে পান চাষে। অথচ এই পান চাষ এত লাভজনক যে সামান্য ১৬ শতাংশ জমিতে পান চাষ করে তিনি স্বচ্ছলতার সঙ্গেই তার সংসার চালাচ্ছেন।
দাদারকাল থেকে বংশ পরম্পরায় পাওয়া প্রবীণ এই পান ব্যবসায়ী জানান, মাঘ, ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে পানের সবচেয়ে বেশি দাম পাওয়া যায়। তবে কোন কোন সময় বৈশাখেও এর ভাল দাম পাওয়া যায়।
তিনি জানান, উপজেলায় খবির, তালেব ও আখের আলীসহ ৮/১০ ব্যবসায়ী আছে যারা ভাল পান চাষ করেন।
আদর্শ পান চাষী আবু তালেব, চান মিয়া, শাজাহান কৃষি অফিসসহ কর্মকর্তাদের অনিহা ও সদিচ্ছার অভাব উল্লেখ করে বাংলানিউজকে জানান, সরকার যদি পানের পচন রোগ ভাল করতে পারে তাহলে মনে হয়, দেশের অধিকাংশ কৃষকই পান চাষে উৎসাহী হয়ে উঠবে।
তারা বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়ে বলেন, ‘পানের পচন রোগ না হলে ধান, গম, পাট কোন ফসলই এর সঙ্গে পারবে না।
কথা হয় রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলার তশোপাড়া এলাকার প্রবীন পান চাষী মো. ইউনুস আলীর সঙ্গে।
তিনি জানান, দেশ স্বাধীনের পর থেকেই তিনি পান চাষ করেন। এ বছর তার দেড় বিঘা জমিতে পান চাষ করতে সবমিলে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা, সবকিছু ঠিক থাকলে তিনি ওই জমি থেকে প্রায় আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা আয় করবেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, স্থান ভেদে এ মুহূর্তে জমি থেকে তারা ১ বিড়া (৬৪ টি) পান বিক্রি করেন ৯০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায়। যা খুচরা পর্যায়ে দোকানিরা কেনেন ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় এবং গ্রাহক পর্যায়ে এসে তা সর্বোচ্চ প্রায় ২৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়।
No comments