এই লাইনেরে নিব আমরা সেই লাইনেরও কাছে...-এই লাইন লাইন নয় আরও লাইন আছে

সেই কবে নাম না জানা কোনো এক কবি লিখে রেখে গিয়েছিলেন, ওরে লাইন দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার টিকিট হাসে। কিন্তু আজ সে কবি নেই, লাইনের আড়ালে তাই টিকিটও হাসে না। কিন্তু আজকালকার ছেলেছোকড়াদের কথা কি আর বলব! তারা পড়াশোনাও করে না তাই জানেও না যে ওই কবি মারা গেছেন, এখন লাইনে দাঁড়ালেই টিকিট পাওয়া যাবে না।


শীতের রাতের কনকনে বাতাস উপেক্ষা করে দিন নেই রাত নেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েছে, কিন্তু তারা টিকিট পায়নি। একদম ঠিক কাজ হয়েছে। বিশ্বকাপের টিকিট কি সরকারের কম দামে চাল বিতরণের ‘ওএমএস’ নাকি যে দাঁড়ালেই মিলবে। এটা তো একটা গণতান্ত্রিক দেশ নাকি! এ দেশে মন্ত্রী-সচিবেরা আছেন। তাঁরা একেকজন ২০টি করে টিকিট চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে (যদিও প্রধানমন্ত্রী তাঁদের এই আবেদনে সাড়া দেননি)। তাঁদের তো আত্মীয়-স্বজন আছে। তারাও তো খেলা দেখবেন, নাকি! কিন্তু তাদের কি লাইনে দাঁড়ানো মানায়! সারা জীবন ওনারা দিয়েছেন আর আমরা আমজনতারা লাইনে দাঁড়িয়েছি। লাইন একটু এগুতে না এগোতেই শুনেছি বরাদ্দ শেষ। তারপর লাইনে দাঁড়ানো আমজনতার অসন্তোষ আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। পুলিশ এসেছে, লাঠিপেটা হয়েছে। এর ভেতর কয়েকজন হাসপাতালে গিয়েছে।
বাঙালি নাকি বড় উচ্ছৃঙ্খল জাতি, এরা লাইন ধরতে জানে না। কিন্তু কই, এবার তো আমরা বড় আশা করে লাইন ধরলাম, টিকিট তো পেলাম না! কিন্তু বন্ধুগণ, হতাশ হলে চলবে না, টিকিট পাই আর না পাই লাইন যখন আমরা ধরেছি আরও লাইন ধরব। জীবনের সবক্ষেত্রেই লাইন বহাল রাখব। আর আমরা লাইনচ্যুত হব না। প্রয়োজনে লাইন ধরে টিভির সামনে বসে বিশ্বকাপ দেখব। এভাবে একদিন এই লাইনকেই আমরা নিয়ে যাব সেই লাইনেরও কাছে, যে লাইনে সবাই টিকিট পাবে। আমি আজ আর লিখছি না। টিকিটের লাইনে দাঁড়িয়ে লিখছি তো, তাই আমার লাইন হইয়া যায় আঁকাবাঁকা।

No comments

Powered by Blogger.