বুক অব ফ্যাক্টস-জীবাশ্ম by আইজ্যাক আজিমভ
কিছু ডায়নোসর মুরগির মতো ছোট ছিল। পৃথিবীর অস্তিত্বশীল সব ধরনের জীবনের ৯৯ শতাংশ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অজানা কারণে প্রাগৈতিহাসিক ঘোড়া প্রায় ৩০ হাজার বছর আগে আমেরিকা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়। বর্তমানে পশ্চিমের ঘোড়াগুলো ইউরোপীয়দের আমদানিকৃত, মধ্য এশিয়ার বুনো ঘোড়াগুলোর সরাসরি বংশধর।
স্টেগোসরাস ছিল এমন ডায়নোসর, যার মাথা ছিল এতই ক্ষুদ্র যে এর পিঠের মাঝখানের স্নায়ুকুণ্ডলী ছিল এর মস্তিষ্কের চেয়ে বড়।
১৯৩৮ সালে মাদাগাস্কারের উপকূলে একটি কোয়েলাকাস্থ পাওয়া যায়। সে সময়ের আগ পর্যন্ত বিশ্বাস করা হতো, এই আদিম মাছ বাতাসে শ্বাস নেওয়া উভচরদের পূর্বপুরুষ, ৬০ মিলিয়নেরও বেশি বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
ভ্রমণরত পিটার দ্য গ্রেট ডাচ ফ্রেডরিখ রাইখের প্রাকৃতিক ইতিহাসের ১৩০০ তরল সংরক্ষিত নমুনার সংগ্রহ—জীবাশ্ম পাথর বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ এবং মানুষ ও প্রাণীর ভ্রুণ পর্যায়—রাশিয়ায় ফেরত নিয়ে যায়। সংগ্রহটি সেন্ট পিটার্সবার্গে পৌঁছানোর মধ্যেই, নাবিকেরা ব্র্যান্ডি মনে করে খেয়ে ফেলেন যাতে নমুনাগুলো সংরক্ষিত ছিল।
ডায়নোসর যুগে ‘টির্যানোসরাস রেক্স’ ছিল সবচেয়ে বড় মাংসাশী সরীসৃপ। কিন্তু এটি সবচেয়ে বড় ডায়নোসর ছিল না। স্বাতন্ত্র্য ছিল তৃণভোজী সরোপডদের যেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টা ব্র্যাকিওমরাসের ওজন ছিল ৫০ টন।
তাদের বিশাল আকার ও মাংসাশী চেহারা সত্ত্বেও অধিকাংশ ডায়নোসর ছিল তৃণভোজী। একটি ব্যতিক্রম ছিল বিশাল টির্যানোসরাস রেক্স, যেটি অন্য ডায়নোসরদের খেয়ে ফেলত। টির্যানোসরের এক কামড়ের খাবার চারজনের এক মনুষ্য পরিবারের পুরো এক মাসের খাবারের সমতুল্য।
কাঠের নিজস্ব অমরত্ব রয়েছে। কাঠের বেড়া, যেগুলো উত্তর ইতালির হ্রদের তীরবর্তী প্রাগৈতিহাসিক বাসিন্দাদের রক্ষা করেছিল, এখনো অক্ষত আছে, যেমন অক্ষত রয়েছে ১০০০ বছর ধরে ভেনিসের নিচে চাপা পড়ে থাকা স্তূপ। ভার্জিনিয়ার জলাভূমিতে আনুমানিক ৩০০০ বছর নিমগ্ন থাকা সিডার গাছগুলোকে তোলা হয়েছে এবং চিরে তক্তা বানানো হয়েছে যেগুলো আরও ১০০০ বছর দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
জীবাশ্ম থেকে নির্মাণ করা বিশাল কঙ্কালগুলো পরিষ্কারভাবে সরীসৃপ প্রকৃতির হওয়ায় উনিশ শতকের প্রাণীবিজ্ঞানী স্যার রিচার্ড ওয়েন এদের বলতেন ‘টেরিবল লিজার্ড’, যার গ্রিক অর্থ হলো ডায়নোসরিয়া। কিন্তু প্রাচীন দানবীয় গিরগিটিগুলো গিরগিটির চেয়ে কুমিরের সঙ্গেই বেশি সম্পর্কিত এবং নামকরণ হওয়া উচিত ছিল ডায়নোক্রোকোডিলিয়া।
টির্যানোসর বাস্তবিক অর্থেই বিপদের সীমাবদ্ধতায় পৌঁছে গিয়েছিল। এর শরীরের পুরো দৈর্ঘ্য ছিল মুখ থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত সম্ভবত ৫০ ফুট। এর চার ফুট লম্বা মাথা ছিল মাটি থেকে প্রায় ১৯ ফুট ওপরে। এর পপায়ের উরুর দিকটা ছিল বিশাল কিন্তু সামনের পা ছিল ছোট, মানুষের পায়ের চেয়েও লম্বা নয় এবং সামনের এই পা আসলে কোনো কাজে ব্যবহূত হত না বেশি ছোট হওয়ায়। এমনকি ওগুলো মুখ পর্যন্তও পৌঁছাত না।
খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দী ও বর্তমানের মধ্যে কোনো একসময়, পুসুলুলি ও বে অব নেপলসের চারপাশের উপকূলরেখা ভূমধ্যসাগরের নিচে তলিয়ে গিয়েছিল এবং তারপর আবার জেগে ওঠে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় সেরাপিসের ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরের মার্বেল স্তম্ভগুলোয়। অনেক আগে মৃত ঝিনুকের খোলসগুলো এখনো জায়গামতো আছে।
ফিলাডেলফিয়ার ইন্ডিপেনডেন্স বলের ছাদ এবং ঐতিহাসিক আমেরিকান বাড়িগুলোর তিন কাষ্ঠফলক সাদা সিডার কাঠের তৈরি যেগুলো ১০০০ বছর পানির নিচে ছিল। ১৮০০ সালের মধ্যে নিউজার্সির সিডার জলাভূমি জীবিত সাদা সিডার গাছবিহীন হয়ে যায়। তখন আবিষ্কৃত হয়, পড়ে থাকা সিডারগুঁড়ি জলাভূমির তলায় ১২ ফুট গভীর এলাকা দখল করে রেখেছে। এসব প্রাচীন কাঠের গুঁড়িগুলোকে ওপরে তোলা হয় এবং হালকা দীর্ঘস্থায়ী সাদা সিডার কাঠে পরিণত করা হয়।
কার্ডিফ দানব, একটি ১০ ফুট লম্বা ৩০০০ পাউন্ডের ‘প্রস্তরীভূত মানুষ আবিষ্কৃত’ হয় যখন ১৮৬৯ সালে নিউইয়র্ক রাজ্যের একটি খামারে একটি কুয়ো খনন করা হয়। দানবটাকে ডাক্তার ও পুরাতত্ত্ববিদেরা আসল জীবাশ্ম বলে গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু তা ছিল এক বছর আগে আইওয়া জিপসামের একটি টুকরো খোদাই করে তৈরি। দানবটা চড়া মূল্যে বিক্রি হয়।
ভাষান্তর: হাসান খুরশীদ
১৯৩৮ সালে মাদাগাস্কারের উপকূলে একটি কোয়েলাকাস্থ পাওয়া যায়। সে সময়ের আগ পর্যন্ত বিশ্বাস করা হতো, এই আদিম মাছ বাতাসে শ্বাস নেওয়া উভচরদের পূর্বপুরুষ, ৬০ মিলিয়নেরও বেশি বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
ভ্রমণরত পিটার দ্য গ্রেট ডাচ ফ্রেডরিখ রাইখের প্রাকৃতিক ইতিহাসের ১৩০০ তরল সংরক্ষিত নমুনার সংগ্রহ—জীবাশ্ম পাথর বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ এবং মানুষ ও প্রাণীর ভ্রুণ পর্যায়—রাশিয়ায় ফেরত নিয়ে যায়। সংগ্রহটি সেন্ট পিটার্সবার্গে পৌঁছানোর মধ্যেই, নাবিকেরা ব্র্যান্ডি মনে করে খেয়ে ফেলেন যাতে নমুনাগুলো সংরক্ষিত ছিল।
ডায়নোসর যুগে ‘টির্যানোসরাস রেক্স’ ছিল সবচেয়ে বড় মাংসাশী সরীসৃপ। কিন্তু এটি সবচেয়ে বড় ডায়নোসর ছিল না। স্বাতন্ত্র্য ছিল তৃণভোজী সরোপডদের যেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টা ব্র্যাকিওমরাসের ওজন ছিল ৫০ টন।
তাদের বিশাল আকার ও মাংসাশী চেহারা সত্ত্বেও অধিকাংশ ডায়নোসর ছিল তৃণভোজী। একটি ব্যতিক্রম ছিল বিশাল টির্যানোসরাস রেক্স, যেটি অন্য ডায়নোসরদের খেয়ে ফেলত। টির্যানোসরের এক কামড়ের খাবার চারজনের এক মনুষ্য পরিবারের পুরো এক মাসের খাবারের সমতুল্য।
কাঠের নিজস্ব অমরত্ব রয়েছে। কাঠের বেড়া, যেগুলো উত্তর ইতালির হ্রদের তীরবর্তী প্রাগৈতিহাসিক বাসিন্দাদের রক্ষা করেছিল, এখনো অক্ষত আছে, যেমন অক্ষত রয়েছে ১০০০ বছর ধরে ভেনিসের নিচে চাপা পড়ে থাকা স্তূপ। ভার্জিনিয়ার জলাভূমিতে আনুমানিক ৩০০০ বছর নিমগ্ন থাকা সিডার গাছগুলোকে তোলা হয়েছে এবং চিরে তক্তা বানানো হয়েছে যেগুলো আরও ১০০০ বছর দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
জীবাশ্ম থেকে নির্মাণ করা বিশাল কঙ্কালগুলো পরিষ্কারভাবে সরীসৃপ প্রকৃতির হওয়ায় উনিশ শতকের প্রাণীবিজ্ঞানী স্যার রিচার্ড ওয়েন এদের বলতেন ‘টেরিবল লিজার্ড’, যার গ্রিক অর্থ হলো ডায়নোসরিয়া। কিন্তু প্রাচীন দানবীয় গিরগিটিগুলো গিরগিটির চেয়ে কুমিরের সঙ্গেই বেশি সম্পর্কিত এবং নামকরণ হওয়া উচিত ছিল ডায়নোক্রোকোডিলিয়া।
টির্যানোসর বাস্তবিক অর্থেই বিপদের সীমাবদ্ধতায় পৌঁছে গিয়েছিল। এর শরীরের পুরো দৈর্ঘ্য ছিল মুখ থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত সম্ভবত ৫০ ফুট। এর চার ফুট লম্বা মাথা ছিল মাটি থেকে প্রায় ১৯ ফুট ওপরে। এর পপায়ের উরুর দিকটা ছিল বিশাল কিন্তু সামনের পা ছিল ছোট, মানুষের পায়ের চেয়েও লম্বা নয় এবং সামনের এই পা আসলে কোনো কাজে ব্যবহূত হত না বেশি ছোট হওয়ায়। এমনকি ওগুলো মুখ পর্যন্তও পৌঁছাত না।
খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দী ও বর্তমানের মধ্যে কোনো একসময়, পুসুলুলি ও বে অব নেপলসের চারপাশের উপকূলরেখা ভূমধ্যসাগরের নিচে তলিয়ে গিয়েছিল এবং তারপর আবার জেগে ওঠে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় সেরাপিসের ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরের মার্বেল স্তম্ভগুলোয়। অনেক আগে মৃত ঝিনুকের খোলসগুলো এখনো জায়গামতো আছে।
ফিলাডেলফিয়ার ইন্ডিপেনডেন্স বলের ছাদ এবং ঐতিহাসিক আমেরিকান বাড়িগুলোর তিন কাষ্ঠফলক সাদা সিডার কাঠের তৈরি যেগুলো ১০০০ বছর পানির নিচে ছিল। ১৮০০ সালের মধ্যে নিউজার্সির সিডার জলাভূমি জীবিত সাদা সিডার গাছবিহীন হয়ে যায়। তখন আবিষ্কৃত হয়, পড়ে থাকা সিডারগুঁড়ি জলাভূমির তলায় ১২ ফুট গভীর এলাকা দখল করে রেখেছে। এসব প্রাচীন কাঠের গুঁড়িগুলোকে ওপরে তোলা হয় এবং হালকা দীর্ঘস্থায়ী সাদা সিডার কাঠে পরিণত করা হয়।
কার্ডিফ দানব, একটি ১০ ফুট লম্বা ৩০০০ পাউন্ডের ‘প্রস্তরীভূত মানুষ আবিষ্কৃত’ হয় যখন ১৮৬৯ সালে নিউইয়র্ক রাজ্যের একটি খামারে একটি কুয়ো খনন করা হয়। দানবটাকে ডাক্তার ও পুরাতত্ত্ববিদেরা আসল জীবাশ্ম বলে গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু তা ছিল এক বছর আগে আইওয়া জিপসামের একটি টুকরো খোদাই করে তৈরি। দানবটা চড়া মূল্যে বিক্রি হয়।
ভাষান্তর: হাসান খুরশীদ
No comments